alt

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের ধীরগতি বিটিআরসিকে টিক্যাবের চিঠি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কিত একটি চিঠি বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের ইমেইলে প্রেরণ করা হয়। এ চিঠির একটি অনুলিপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের ইমেইলেও প্রেরণ করে সংগঠনটি। টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব) এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে টিক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওকলা প্রকাশিত ‘স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স’ প্রতিবেদনে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির যে চিত্র উঠে এসেছে, তা বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য সত্যিই হতাশাজনক। প্রতিবেদনে ১৩৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮তম। সরকার বিগত বছরগুলোয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার সঙ্গে এ প্রতিবেদন সাংঘর্ষিক। এ সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট, ই—কমার্স, ই—পেপার, ই—এডুকেশন, ই—ব্যাংকিং, ই—বুক, ই—হেলথ সার্ভিস, ই—ফাইলিং, ই—ভোটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হলেও অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি। অপরদিকে মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা নিয়ে গ্রাহক অভিযোগের শেষ নেই। অনেক ভবনে, চলন্ত গাড়িতে কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক দুর্বলতা এখন ওপেন সিক্রেট। অনেক ক্ষেত্রে ৪জি—৩জি তো দূর, ২জি সেবা পান না গ্রাহকরা। টুজি গ্রাহক বিড়ম্বনায় এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কলড্রপ ও কথোপকথনে অস্পষ্টতা। অথচ প্রতিটি সেকেন্ডের জন্য অপারেটরগুলো ঠিকই গ্রাহকদের ব্যালেন্স কেটে নিচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট এখন কোনো বিলাসিতা নয়। বিশ্বের উন্মুক্ত জ্ঞানভাণ্ডারে প্রবেশের চাবিকাঠি হলো ইন্টারনেট। আর ইন্টারনেটের গতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর সব কর্মকাণ্ড। বর্তমানে ব্যবসা—বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন, কৃষি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেক বেশি ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর। অনলাইনে পাঠদান, এমনকি টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণেও অনলাইন নির্ভরতা বেড়েছে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানবসম্পদ তৈরিতে উচ্চগতির ইন্টারনেট এখন একটি মৌলিক অনুষঙ্গ। বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের প্রশ্ন রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন গতিসম্পন্ন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেলে না। এজন্য মোবাইল অপারেটরদের পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনেরও (বিটিআরসি) দায়িত্ব রয়েছে। টিক্যাবের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও এখনো মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেঁধে দিতে পারেনি বিটিআরসি। গ্রাহকরা প্রতিনিয়তই মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ধীরগতির ইন্টারনেট সেবা অনুভব করছেন। এ অবস্থা সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নীতির সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে আমরা মনে করি।

টিক্যাব জানায়, গত ৫ বছরেও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের মান ও গতির ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। অথচ অপারেটরগুলো উচ্চগতি ও উন্নত সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করছে। মোবাইল অপারেটরগুলো তাদের বিভিন্ন প্যাকেজ ও সেবার লোভনীয় বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। অপারেটরগুলো যদি বিজ্ঞাপনের অর্থ মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান উন্নয়নে খরচ করতো, তাতে বরং গ্রাহকরা কিছুটা প্রতিকার পেত। মোবাইল অপারেটরগুলোর, ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান বাড়াতে যে পরিমাণ বেতার তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) প্রয়োজন সেটি তাদের নেই। এ নিয়ে মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ও বিটিআরসির মধ্যে টানাপড়েন রয়েছে। বাংলাদেশে শহর এলাকায় জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। গ্রাহক অনুপাতে অপারেটরদের কাছে যে পরিমাণ তরঙ্গ থাকা প্রয়োজন তা বাংলাদেশের অপারেটরদের কাছে নেই। ভালো সেবা দেওয়ার জন্য একেকটি অপারেটরের কাছে অন্তত ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ প্রয়োজন।

স্বল্প ব্যান্ডউইডথ দিয়ে সেবা দেওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন সেবায় বিঘ্ন ঘটছে। সেবার মান বেঁধে দিয়ে বিটিআরসির দেওয়া বিধিমালা অপারেটর যথাযথভাবে অনুসরণ করে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে কিনা, সেটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বিটিআরসিকে ব্যবহারকারী বান্ধব ভূমিকাও পালন করতে অনুরোধ করছি। বিটিআরসি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার দাম (ঊর্ধ্বসীমা) বেঁধে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে এক রেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাবেন গ্রাহকরা। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য উদ্যোগটি নেওয়া হয়নি। বিটিআরসি ইন্টারনেটের কস্ট মডেলিংয়ের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

চিঠিতে মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধানকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে টিক্যাব বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানায়।

ছবি

আবারও বিসিএস সভাপতি সুব্রত সরকার ও মহাসচিব কামরুজ্জামান

ছবি

২০৩১ পর্যন্ত কর অব্যাহতির দাবি তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনসমূহের

ছবি

স্মার্ট বেসিস গঠনের লক্ষ্য টিম স্মার্টের

ছবি

নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ে কাজ করতে বিটিআরসি ও সিসিমপুর এর মধ্যে চুক্তি

ছবি

প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে নারীর ক্ষমতায়নের জোর আইইইই‘র

ছবি

৮ মে বেসিস নির্বাচন: মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ৪২ প্রার্থী

ছবি

তরুনদের তথ্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষন দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কারিগর হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে : স্পীকার

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইলিং, সাবধান হবেন যেভাবে

ছবি

ইনস্টাগ্রামকে ফেসবুক পেজের সঙ্গে কানেক্ট করবেন যেভাবে

ছবি

এবার পুরো যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার হুমকিতে টিকটক

ছবি

হঠাৎ বন্ধ ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম

ছবি

ফোন হ্যাক হয়েছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

ছবি

কাঠ দিয়ে কৃত্রিম উপগ্রহ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিল জাপান

ছবি

৫০ জিবির বেশি ডাটাও এখন যোগ হবে নতুন প্যাকেজে

ছবি

বর্তমান অর্থবছরের মধ্যে বিটিসিএলকে লাভজনক করতে হবে : পলক

ছবি

এক চার্জে ৫০ বছর চলবে এই ব্যাটারি

ছবি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে স্ক্রিন শেয়ার প্রতারণা থেকে বাঁচার কৌশল

ছবি

ইউটিউবে আয় বাড়ানোর নতুন ফিচার

ঢাকায় একটি বিদ্যুৎ বিতরণ পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করবে জাইকা

ছবি

বিটিআরসির নতুন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে নতুন ফিচার, লক করা যাবে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাট

ছবি

বরখাস্ত হলেন ওপেনএআইয়ের সিইও

ছবি

মোবাইল নম্বর ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপ

ছবি

প্রথম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ছয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

ছবি

শেখ রাসেল দিবসে ৫টি ‘স্মার্ট‘ উদ্যোগ চালু করলো এটুআই

ছবি

ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারেও এখন টাকা লাগবে

ছবি

প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে গুগল

ছবি

জাতিসংঘের এসডিজি ডিজিটাল গেম চেঞ্জার অ্যাওয়ার্ড পেলো এটুআই-এর একশপ

ছবি

শিবচরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন

ছবি

ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে ‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ গ্লোবাল ক্যাম্পেইন উদ্বোধন

ছবি

৯ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা আসছে

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে ‘এইচডি কোয়ালিটি’র ছবি পাঠানোর সহজ পদ্ধতি

ছবি

অনুমোদনহীন বেতার যন্ত্র বেচাকেনা,সতর্ক করল বিটিআরসি

ছবি

ইনস্টাগ্রামের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে ১০ লাখ টাকা হারালেন তরুণী!

tab

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের ধীরগতি বিটিআরসিকে টিক্যাবের চিঠি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২

মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কিত একটি চিঠি বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের ইমেইলে প্রেরণ করা হয়। এ চিঠির একটি অনুলিপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের ইমেইলেও প্রেরণ করে সংগঠনটি। টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব) এর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে টিক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওকলা প্রকাশিত ‘স্পিড টেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স’ প্রতিবেদনে মোবাইল ইন্টারনেটের গতির যে চিত্র উঠে এসেছে, তা বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য সত্যিই হতাশাজনক। প্রতিবেদনে ১৩৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮তম। সরকার বিগত বছরগুলোয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার সঙ্গে এ প্রতিবেদন সাংঘর্ষিক। এ সময়ে মোবাইল ইন্টারনেট, ই—কমার্স, ই—পেপার, ই—এডুকেশন, ই—ব্যাংকিং, ই—বুক, ই—হেলথ সার্ভিস, ই—ফাইলিং, ই—ভোটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হলেও অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি। অপরদিকে মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা নিয়ে গ্রাহক অভিযোগের শেষ নেই। অনেক ভবনে, চলন্ত গাড়িতে কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক দুর্বলতা এখন ওপেন সিক্রেট। অনেক ক্ষেত্রে ৪জি—৩জি তো দূর, ২জি সেবা পান না গ্রাহকরা। টুজি গ্রাহক বিড়ম্বনায় এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কলড্রপ ও কথোপকথনে অস্পষ্টতা। অথচ প্রতিটি সেকেন্ডের জন্য অপারেটরগুলো ঠিকই গ্রাহকদের ব্যালেন্স কেটে নিচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট এখন কোনো বিলাসিতা নয়। বিশ্বের উন্মুক্ত জ্ঞানভাণ্ডারে প্রবেশের চাবিকাঠি হলো ইন্টারনেট। আর ইন্টারনেটের গতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর সব কর্মকাণ্ড। বর্তমানে ব্যবসা—বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন, কৃষি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেক বেশি ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর। অনলাইনে পাঠদান, এমনকি টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণেও অনলাইন নির্ভরতা বেড়েছে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানবসম্পদ তৈরিতে উচ্চগতির ইন্টারনেট এখন একটি মৌলিক অনুষঙ্গ। বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের প্রশ্ন রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন গতিসম্পন্ন মোবাইল ইন্টারনেট সেবা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেলে না। এজন্য মোবাইল অপারেটরদের পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনেরও (বিটিআরসি) দায়িত্ব রয়েছে। টিক্যাবের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও এখনো মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেঁধে দিতে পারেনি বিটিআরসি। গ্রাহকরা প্রতিনিয়তই মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ধীরগতির ইন্টারনেট সেবা অনুভব করছেন। এ অবস্থা সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নীতির সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে আমরা মনে করি।

টিক্যাব জানায়, গত ৫ বছরেও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের মান ও গতির ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। অথচ অপারেটরগুলো উচ্চগতি ও উন্নত সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করছে। মোবাইল অপারেটরগুলো তাদের বিভিন্ন প্যাকেজ ও সেবার লোভনীয় বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। অপারেটরগুলো যদি বিজ্ঞাপনের অর্থ মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান উন্নয়নে খরচ করতো, তাতে বরং গ্রাহকরা কিছুটা প্রতিকার পেত। মোবাইল অপারেটরগুলোর, ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান বাড়াতে যে পরিমাণ বেতার তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) প্রয়োজন সেটি তাদের নেই। এ নিয়ে মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ও বিটিআরসির মধ্যে টানাপড়েন রয়েছে। বাংলাদেশে শহর এলাকায় জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। গ্রাহক অনুপাতে অপারেটরদের কাছে যে পরিমাণ তরঙ্গ থাকা প্রয়োজন তা বাংলাদেশের অপারেটরদের কাছে নেই। ভালো সেবা দেওয়ার জন্য একেকটি অপারেটরের কাছে অন্তত ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ প্রয়োজন।

স্বল্প ব্যান্ডউইডথ দিয়ে সেবা দেওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন সেবায় বিঘ্ন ঘটছে। সেবার মান বেঁধে দিয়ে বিটিআরসির দেওয়া বিধিমালা অপারেটর যথাযথভাবে অনুসরণ করে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে কিনা, সেটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বিটিআরসিকে ব্যবহারকারী বান্ধব ভূমিকাও পালন করতে অনুরোধ করছি। বিটিআরসি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার দাম (ঊর্ধ্বসীমা) বেঁধে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে এক রেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পাবেন গ্রাহকরা। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য উদ্যোগটি নেওয়া হয়নি। বিটিআরসি ইন্টারনেটের কস্ট মডেলিংয়ের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

চিঠিতে মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ও ইন্টারনেটের ধীরগতি সমস্যার সমাধানকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে টিক্যাব বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানায়।

back to top