alt

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

যেভাবে বিশ্বজুড়ে করা হচ্ছে কর্মী ছাঁটাই

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সারা বিশ্বের শ্রমবাজার এখন অস্থিতিশীল। প্রায় সময় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে। ২০২২ সালের শেষ দিকে গুগল, মেটা, টুইটারসহ বড় বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বে প্রথম একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঢল শুরু হয়। সেই ঢল এখনো অব্যাহত। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও অর্থ, গণমাধ্যম, অটোমোটিভসহ আরও নানা সেক্টর থেকে কর্মী ছাঁটাই চলছে।

কর্মী ছাঁটাই নিয়ে বিশেষ প্রতিষ্ঠান লেঅফস ডট ফাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি বছরের জানুয়ারিতেই সারা বিশ্বে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখের বেশি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ৩৫৯টি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এসব কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। এক মাসে এ সংখ্যা অনেক বেশি, যেখানে ২০২২ সালে পুরো বছরে ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত অবস্থায় আছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও রাজস্বঘাটতির কারণে অনেক কোম্পানি আরও কর্মী ছাঁটাই করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব দেখে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও কারণ ছাড়া কর্মী ছাঁটাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে, সে আশঙ্কাও আছে। এর অর্থ, হাজারো কর্মী চাকরি হারাবেন। কর্মীদের এ চাকরি হারানোর খবর জানানোর পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানভেদে আলাদা আলাদা দেখা যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা নানা উপায়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ আবেগঘন বার্তা দিয়ে, কেউ দুঃখ প্রকাশ করছেন, আবার কেউ ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে কর্মীদের জানিয়েছেন। এমন ছাঁটাইয়ের অধিকাংশ খবরই আবার কর্মীরা জানতে পারছেন ই-মেইল বা জুম ভিডিও কলে। এসব ঘটনায় এখন এমন প্রশ্নই সামনে চলে এসেছে, কোনো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কি ‘সহানুভূতি’ দেখিয়ে কর্মীদের ছাঁটাই করেছেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাই করার আরও উপায় আছে। কিন্তু মানবিক ছাঁটাইয়ের আদর্শ কি অসম্ভব ব্যাপার?

ই-মেইল ও জুমে গণছাঁটাইয়ের বার্তা

প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের ছাঁটাইয়ের খবর নানা উপায়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মী হঠাৎ আসা একটি গণ–ই-মেইলের মাধ্যমে তাঁদের চাকরি হারানোর খবর পেয়েছেন। অনেকে অফিসে গিয়ে দেখেছেন দরজায় তাঁদের কার্ডের আর অ্যাকসেস নেই, কেউ কেউ আবার অফিসে ঢুকে দেখছেন তাঁদের ল্যাপটপ ও মেসেজিং চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ থেকেই তাঁরা নিশ্চিত বুঝতে পারছেন, তাঁদের আর চাকরি নেই।

গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো ভিডিও কলের মাধ্যমে কর্মীদের চাকরি হারানোর বার্তা দিচ্ছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জুম ভিডিও কলে মার্কিন মর্টগেজ কোম্পানি বেটার একসঙ্গে ৯০০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল।

কর্মী ছাঁটাইয়ের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকলেও প্রতিষ্ঠানপ্রধান সে প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ভিন্ন পথ অনুসরণ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বেটারের সিইও বিশাল গর্গ বলেছেন, ‘আপনি যদি এই ভিডিও কলে থাকেন, তাহলে আপনি দুর্ভাগ্যজনক একটি পক্ষের সদস্য। এই কলের মাধ্যমে আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে এ নির্দেশ কার্যকর হবে।’ কোনো কোনো সিইও আবার কর্মীদের কাছে ছাঁটাইয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, ব্যক্তিগতভাবে কোনো কোনো কর্মীর দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে সবাই একই যে সুর ব্যবহার করেছেন, তা হলো—প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা নেই, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ।

পদ্ধতি ও বার্তা যা–ই হোক না কেন, হোম অফিসের উত্থান ও পরবর্তী সময়ে ভার্চ্যুয়াল ছাঁটাই প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে একটি আলাদা উপাদান যুক্ত করেছে। এটাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সুযোগ নিলে তার অসুবিধাটাও নিতে হবে। তবে এরপরও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাই করার নানা উপায় আছে। অনেক সহজভাবে ‘সহানুভূতিশীল’ হয়েও কর্মী ছাঁটাই করা যায়।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সাংগঠনিক আচরণ এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক জোনাথন বুথ বলেছেন, ই-মেইল বার্তায় কর্মীদের ছাঁটাই করা উচিত নয়—এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সাধারণত একমত হবেন। দ্রুত ও হঠাৎ এমন ই-মেইল কর্মীদের অনেক বিভ্রান্ত করে দেয়। তাঁদের এ বার্তা দেয় যে প্রতিষ্ঠানপ্রধান কর্মীদের সামনে অপরাধীর মতো মুখ দেখাতে পারছেন না, লুকিয়ে আছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিয়োগকর্তারা কর্মীদের তাঁদের পরিস্থিতি বোঝাতে, কর্মীদের কিছুটা নিরাপদ বোধ করাতে সহায়তা করা উচিত।’

কর্মীকে কেন ছাঁটাই করা হলো, এ বিষয়ে ওই কর্মী অন্ধকারে থাকেন। এতে তিনি প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের ওপর অনেক বেশি বিরক্ত হন। বৈশ্বিক মার্কেট রিসার্চ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দ্য হ্যারিস পোল এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ইনটু ২০১৯ সালে লেঅফ অ্যাংজাইটি নিয়ে ২ হাজার ২৪ জন কর্মীর ওপর জরিপ চালিয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বলেছেন, কেন ছাঁটাই হয়েছেন—এ তথ্যের অভাব ছাঁটাইয়ের বেদনাকে আরও উসকে দেয়।

জোনাথন বুথ বলেন, যাঁরা বিমার ওপর নির্ভর করে চলেন, তাঁদের ছাঁটাইয়ের এ ধাক্কা সামাল দেওয়া বেশ কঠিন। আবার সব প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও সব কর্মী রাখা সম্ভব হয় না। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কভারেজের পরিবর্তে ‘সরকারপ্রদত্ত বেকারত্বের সুবিধা’ পেতে কর্মীদের সহায়তা করা উচিত।

ছবি

প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে গুগল

ছবি

জাতিসংঘের এসডিজি ডিজিটাল গেম চেঞ্জার অ্যাওয়ার্ড পেলো এটুআই-এর একশপ

ছবি

শিবচরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অফ ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন

ছবি

ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে ‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ গ্লোবাল ক্যাম্পেইন উদ্বোধন

ছবি

৯ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের সুবিধা আসছে

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপে ‘এইচডি কোয়ালিটি’র ছবি পাঠানোর সহজ পদ্ধতি

ছবি

অনুমোদনহীন বেতার যন্ত্র বেচাকেনা,সতর্ক করল বিটিআরসি

ছবি

ইনস্টাগ্রামের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে ১০ লাখ টাকা হারালেন তরুণী!

ছবি

আইটি মাদ্রাস ও চেন্নাইয়ের রেলা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

‘সুপারফাস্ট’ চার্জিং, ১০ মিনিটের চার্জে চলবে ৪০০ কিলোমিটার

ছবি

ভারতের যেসব খাতে হামলার টার্গেট করেছে বাংলাদেশি হ্যাকাররা

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আসছে নতুন ফিচার

ছবি

ফেসবুক ভিডিওতে আসছে চমৎকার কিছু সুবিধা

ছবি

তিন মাসে বাংলাদেশের ৪২ লাখ ভিডিও ডিলিট করেছে টিকটক

ছবি

কম্পিউটার মনিটর থেকে কত দূরে বসতে হবে

ছবি

ঘোড়াঘাটে বিকাশ কর্মকারের তৈরী বিদ্যুৎচালিত ‘হ্যামার’, কমেছে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম

ছবি

টুইটারকে পেছনে ফেলে দ্রুত বাড়ছে থ্রেডসের জনপ্রিয়তা

ছবি

গুগলের গোপনীয়তা নীতিমালায় হঠাৎ পরিবর্তন, কিন্তু কেন

ছবি

এবার স্টোরি দেওয়া যাবে টেলিগ্রামেও

ছবি

দুই দিনে ঢাকা ছেড়েছেন সাড়ে ৫০ লাখ সিমধারী

ছবি

স্মার্ট ক্যাম্পাস নির্মাণে ঢাবি ছাত্রলীগের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মশালা

ছবি

চিফ ইনফরমেশন অফিসার হিসেবে রবিতে যোগ দিলেন ভারিন্দর

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক সেবা প্রদানে প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি

ছবি

স্পেসএক্সে যোগ দিল ১৪ বছরের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজী

ছবি

মানব মস্তিষ্কে চিপ বসানোর অনুমতি পেল মাস্কের নিউরালিংক

ছবি

উদ্ভাবনী নানা প্রযুক্তিই পারে দেশকে উন্নত করতে : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

ছবি

প্রথমবারের মতো মহাকাশে যাচ্ছেন সৌদি নারী

ছবি

যা থাকছে অ্যাপলের নতুন ল্যাপটপে, হঠাৎ করেই মিলল আভাস

ছবি

নতুন সিইও টুইটারকে ঢেলে সাজাতে ‘প্রস্তুত’

ছবি

টুইটারের প্রধান নির্বাহী কে এই নারী?

ছবি

স্যানগ ৩৯ ‍ও বিডিনগ ১৬ সম্মেলন শুরু

ছবি

হোয়াটসঅ্যাপের ভুয়া কলের তথ্য জানাবে ট্রুকলার

ছবি

৯-১০ জুন স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপো আয়োজন করতে যাচ্ছে জেসিআই বাংলাদেশ

ছবি

৯-১৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্যানগ-৩৯ ও বিডিনগ-১৬ সম্মেলন

ছবি

উবারে জিনিসপত্র ভুলে রেখে যাওয়ার শীর্ষে ঢাকা

tab

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

যেভাবে বিশ্বজুড়ে করা হচ্ছে কর্মী ছাঁটাই

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সারা বিশ্বের শ্রমবাজার এখন অস্থিতিশীল। প্রায় সময় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে। ২০২২ সালের শেষ দিকে গুগল, মেটা, টুইটারসহ বড় বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বে প্রথম একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঢল শুরু হয়। সেই ঢল এখনো অব্যাহত। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও অর্থ, গণমাধ্যম, অটোমোটিভসহ আরও নানা সেক্টর থেকে কর্মী ছাঁটাই চলছে।

কর্মী ছাঁটাই নিয়ে বিশেষ প্রতিষ্ঠান লেঅফস ডট ফাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি বছরের জানুয়ারিতেই সারা বিশ্বে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখের বেশি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ৩৫৯টি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এসব কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। এক মাসে এ সংখ্যা অনেক বেশি, যেখানে ২০২২ সালে পুরো বছরে ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত অবস্থায় আছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও রাজস্বঘাটতির কারণে অনেক কোম্পানি আরও কর্মী ছাঁটাই করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব দেখে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও কারণ ছাড়া কর্মী ছাঁটাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে, সে আশঙ্কাও আছে। এর অর্থ, হাজারো কর্মী চাকরি হারাবেন। কর্মীদের এ চাকরি হারানোর খবর জানানোর পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানভেদে আলাদা আলাদা দেখা যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা নানা উপায়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ আবেগঘন বার্তা দিয়ে, কেউ দুঃখ প্রকাশ করছেন, আবার কেউ ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে কর্মীদের জানিয়েছেন। এমন ছাঁটাইয়ের অধিকাংশ খবরই আবার কর্মীরা জানতে পারছেন ই-মেইল বা জুম ভিডিও কলে। এসব ঘটনায় এখন এমন প্রশ্নই সামনে চলে এসেছে, কোনো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কি ‘সহানুভূতি’ দেখিয়ে কর্মীদের ছাঁটাই করেছেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাই করার আরও উপায় আছে। কিন্তু মানবিক ছাঁটাইয়ের আদর্শ কি অসম্ভব ব্যাপার?

ই-মেইল ও জুমে গণছাঁটাইয়ের বার্তা

প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের ছাঁটাইয়ের খবর নানা উপায়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মী হঠাৎ আসা একটি গণ–ই-মেইলের মাধ্যমে তাঁদের চাকরি হারানোর খবর পেয়েছেন। অনেকে অফিসে গিয়ে দেখেছেন দরজায় তাঁদের কার্ডের আর অ্যাকসেস নেই, কেউ কেউ আবার অফিসে ঢুকে দেখছেন তাঁদের ল্যাপটপ ও মেসেজিং চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ থেকেই তাঁরা নিশ্চিত বুঝতে পারছেন, তাঁদের আর চাকরি নেই।

গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো ভিডিও কলের মাধ্যমে কর্মীদের চাকরি হারানোর বার্তা দিচ্ছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জুম ভিডিও কলে মার্কিন মর্টগেজ কোম্পানি বেটার একসঙ্গে ৯০০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল।

কর্মী ছাঁটাইয়ের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকলেও প্রতিষ্ঠানপ্রধান সে প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ভিন্ন পথ অনুসরণ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বেটারের সিইও বিশাল গর্গ বলেছেন, ‘আপনি যদি এই ভিডিও কলে থাকেন, তাহলে আপনি দুর্ভাগ্যজনক একটি পক্ষের সদস্য। এই কলের মাধ্যমে আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে এ নির্দেশ কার্যকর হবে।’ কোনো কোনো সিইও আবার কর্মীদের কাছে ছাঁটাইয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, ব্যক্তিগতভাবে কোনো কোনো কর্মীর দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে সবাই একই যে সুর ব্যবহার করেছেন, তা হলো—প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা নেই, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ।

পদ্ধতি ও বার্তা যা–ই হোক না কেন, হোম অফিসের উত্থান ও পরবর্তী সময়ে ভার্চ্যুয়াল ছাঁটাই প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে একটি আলাদা উপাদান যুক্ত করেছে। এটাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সুযোগ নিলে তার অসুবিধাটাও নিতে হবে। তবে এরপরও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী ছাঁটাই করার নানা উপায় আছে। অনেক সহজভাবে ‘সহানুভূতিশীল’ হয়েও কর্মী ছাঁটাই করা যায়।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সাংগঠনিক আচরণ এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক জোনাথন বুথ বলেছেন, ই-মেইল বার্তায় কর্মীদের ছাঁটাই করা উচিত নয়—এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সাধারণত একমত হবেন। দ্রুত ও হঠাৎ এমন ই-মেইল কর্মীদের অনেক বিভ্রান্ত করে দেয়। তাঁদের এ বার্তা দেয় যে প্রতিষ্ঠানপ্রধান কর্মীদের সামনে অপরাধীর মতো মুখ দেখাতে পারছেন না, লুকিয়ে আছেন। তিনি বলেছেন, ‘নিয়োগকর্তারা কর্মীদের তাঁদের পরিস্থিতি বোঝাতে, কর্মীদের কিছুটা নিরাপদ বোধ করাতে সহায়তা করা উচিত।’

কর্মীকে কেন ছাঁটাই করা হলো, এ বিষয়ে ওই কর্মী অন্ধকারে থাকেন। এতে তিনি প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানের ওপর অনেক বেশি বিরক্ত হন। বৈশ্বিক মার্কেট রিসার্চ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দ্য হ্যারিস পোল এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ইনটু ২০১৯ সালে লেঅফ অ্যাংজাইটি নিয়ে ২ হাজার ২৪ জন কর্মীর ওপর জরিপ চালিয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ বলেছেন, কেন ছাঁটাই হয়েছেন—এ তথ্যের অভাব ছাঁটাইয়ের বেদনাকে আরও উসকে দেয়।

জোনাথন বুথ বলেন, যাঁরা বিমার ওপর নির্ভর করে চলেন, তাঁদের ছাঁটাইয়ের এ ধাক্কা সামাল দেওয়া বেশ কঠিন। আবার সব প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও সব কর্মী রাখা সম্ভব হয় না। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট কভারেজের পরিবর্তে ‘সরকারপ্রদত্ত বেকারত্বের সুবিধা’ পেতে কর্মীদের সহায়তা করা উচিত।

back to top