চট্টগ্রামে জাতীয় পতাকার অবমাননায় রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ
সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করার অভিযোগে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীসহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে নগরীর কোতোয়ালি থানায় এই মামলা করেন ফিরোজ খান নামের একজন ব্যক্তি।
মামলায় দণ্ডবিধির ১২০(খ)/ ১২৪(ক)/ ১৫৩(ক)/ ১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ফিরোজ খান অভিযোগে বলেন, লালদীঘির মাঠে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমাবেশের দিন জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া রঙের একটি ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যা তিনি রাষ্ট্রের ‘সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
মামলায় আসামিদের নাম ও গ্রেপ্তার
মামলায় সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ছাড়াও ইসকন প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীসহ মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, এ মামলায় ইতোমধ্যে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিউ মার্কেট মোড়ে পতাকা স্থাপনের ঘটনা ও সমালোচনা
গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমাবেশের দিন নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যেখানে পরে গেরুয়া রঙের একটি ধর্মীয় পতাকা বেঁধে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সমালোচনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সেই গেরুয়া পতাকাটি সরিয়ে ফেলা হয়।
লালদীঘির মাঠের সনাতনী জাগরণ মঞ্চের ওই সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে, যেখানে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ এবং ঢাকায় লং মার্চের ঘোষণা দেয়।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ ও মামলা দায়েরের প্রেক্ষাপট
ফিরোজ খান তার দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করেন, “লালদীঘি মাঠের সমাবেশের দিন নিউ মার্কেটে জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যা দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার সমতুল্য।”
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, “জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে এবং দেশকে অকার্যকর করতে অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ করেছে।”
পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
মামলা দায়েরের পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজের ভাষ্য মতে, চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও আটক করতে তৎপর রয়েছে।
এদিকে, জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা স্থাপনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। বর্ণনামতে, এটি রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় সুরক্ষার পরিপন্থী এবং এ ধরনের কার্যকলাপ দেশের সাংবিধানিক অখণ্ডতার পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার গুরুত্ব ও সম্ভাব্য আইনগত পদক্ষেপ
রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হিসেবে এই মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় প্রতীকের ওপর ধর্মীয় প্রতীকের স্থাপনা রাষ্ট্রীয় আইন এবং জাতীয় সংবিধানের সরাসরি লঙ্ঘন। এই মামলায় দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চট্টগ্রামের এই ঘটনাটি জাতীয় স্তরে আলোড়ন তুলেছে, এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
চট্টগ্রামে জাতীয় পতাকার অবমাননায় রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ
সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করার অভিযোগে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীসহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে নগরীর কোতোয়ালি থানায় এই মামলা করেন ফিরোজ খান নামের একজন ব্যক্তি।
মামলায় দণ্ডবিধির ১২০(খ)/ ১২৪(ক)/ ১৫৩(ক)/ ১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ফিরোজ খান অভিযোগে বলেন, লালদীঘির মাঠে সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমাবেশের দিন জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া রঙের একটি ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যা তিনি রাষ্ট্রের ‘সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।
মামলায় আসামিদের নাম ও গ্রেপ্তার
মামলায় সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী ছাড়াও ইসকন প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীসহ মোট ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ জানিয়েছেন, এ মামলায় ইতোমধ্যে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিউ মার্কেট মোড়ে পতাকা স্থাপনের ঘটনা ও সমালোচনা
গত ২৫ অক্টোবর লালদীঘির মাঠে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমাবেশের দিন নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যেখানে পরে গেরুয়া রঙের একটি ধর্মীয় পতাকা বেঁধে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সমালোচনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সেই গেরুয়া পতাকাটি সরিয়ে ফেলা হয়।
লালদীঘির মাঠের সনাতনী জাগরণ মঞ্চের ওই সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে, যেখানে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ এবং ঢাকায় লং মার্চের ঘোষণা দেয়।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ ও মামলা দায়েরের প্রেক্ষাপট
ফিরোজ খান তার দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করেন, “লালদীঘি মাঠের সমাবেশের দিন নিউ মার্কেটে জাতীয় পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা স্থাপন করা হয়, যা দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার সমতুল্য।”
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, “জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে এবং দেশকে অকার্যকর করতে অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ করেছে।”
পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
মামলা দায়েরের পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজের ভাষ্য মতে, চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও আটক করতে তৎপর রয়েছে।
এদিকে, জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পতাকা স্থাপনের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। বর্ণনামতে, এটি রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় সুরক্ষার পরিপন্থী এবং এ ধরনের কার্যকলাপ দেশের সাংবিধানিক অখণ্ডতার পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার গুরুত্ব ও সম্ভাব্য আইনগত পদক্ষেপ
রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হিসেবে এই মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় প্রতীকের ওপর ধর্মীয় প্রতীকের স্থাপনা রাষ্ট্রীয় আইন এবং জাতীয় সংবিধানের সরাসরি লঙ্ঘন। এই মামলায় দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
চট্টগ্রামের এই ঘটনাটি জাতীয় স্তরে আলোড়ন তুলেছে, এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।