টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার গত চৌদ্দ বছরে ৮২টি বেসরকারি এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) একাদশ সংসদের ২৪তম অধিবেশনে সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেলে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বলেন, ৮২টি আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৭০টিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ২০০৯ সাল থেকে এই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৭৬ হাজার ২৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মাধ্যমে আইপিপি, রেন্টাল, বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে তা নিজস্ব বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করে। পিডিবি নিজেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা যখন কম থাকে তখন ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রাখে পিডিবি।
যেহেতু বিদ্যুৎ বিক্রি করেই কেন্দ্রগুলো লাভ করে তাই উৎপাদন বন্ধ রাখলেও তাদের একটি চার্জ (টাকা) পিডিবিকে দিতে হয়, যা চুক্তির সময় নির্ধারণ করা থাকে। বসিয়ে রেখে দেয়া এই চার্জই হলো ক্যাপাসিটি চার্জ। পিডিবি দাবি, প্রতিষ্ঠানটি হিসেব করে যখন দেখে ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া অধিক সাশ্রয়ী তখনই ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়।
সংসেদ দেয়া প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ৪৫৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
বিসিপিএল বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে গঠিত একটি যৌথ কোম্পানি যাতে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। পটুয়াখালিতে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করেছে বিসিপিসিএল। উৎপাদন বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি চার্জও সবচেয়ে বেশি পেয়েছে। দেশে প্রতিদিন মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ সরবরাহ করছে এই পায়রা।
বেসরাকরি খাতের ৭০টি আইপিপিগুলোর মধ্যে কতগুলো ৩০-৫০ মেগাওয়াট আবার কিছু ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। এগুলোর মোট সক্ষমতা প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট। রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কতগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। যে ১৫-১৬টি চলছে সেগুলোর মোট সক্ষমতা প্রায় এক হাজার মেগাওয়াটের মতো।
সংসদে প্রতিমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতের আইপিপিগুলোর (ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) মধ্যে- মেঘনা পাওয়ার (৫ হাজার ৪৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকা), রুরাল পাওয়ার (৪ হাজার ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা), সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার (৩ হাজার ৬৪৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা), সেমক্রপ এনডব্লিউপিসি (২ হাজার ৮২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা), এপিআর এনার্জি (দুই হাজার ৭৮৮ কোটি ৪ লাখ টাকা), সিম্মিট বিবিয়ানা পাওয়ার (২ হাজার ৬৮৩ কোটি ৩ লাখ টাকা), হরিপুর পাওয়ার (দুই হাজার ৫৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা), ইউনাইটেড আশুগঞ্জ এনার্জি লি.কে দুই হাজার ৩৭৬ কোটি ৬৪ লাখ ও বাংলা ট্র্যাক পাওয়ার ইউনিট-১ লি.কে এক হাজর ৮৫৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, গত চৌদ্দ বছরে ৩২টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট) ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৪১১ কোটি ২২ লাখ টাকা পেয়েছে। এছাড়া অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (১৪৫ মে. ও) দুই হাজার ৩৪১ কোটি ২৮ লাখ, কেপিসিএল (ইউনিট-২) এক হাজার ৯২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, সামিট নারায়ণগঞ্জ পাওয়ার এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৮৫ মেগাওয়াট) এক হাজার ৫৫৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা, ডাচ বাংলা পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এক হাজার ৫৩০ কোটি ৯ লাখ টাকা, অ্যাক্রন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস এক হাজার ৪৮৪ কোটি ৩০ লাখ, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৯৫ মেগাওয়াট) এক হাজার ৪৩৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, দেশ এনার্জি সিদ্ধিরগঞ্জ এক হাজার ৩৯১ কোটি ২১ লাখ, ম্যাক্স পাওয়ার এক হাজার ৩০৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা কেরানীগঞ্জ ১ হাজার ২৯১ কোটি ৬১ লাখ টাকা পেয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৮১৩৪ মেগাওয়াট
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ হাজার ১৩৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ হাজার ১৯৫ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য উৎপাদিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি (অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার) কূপ খননের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতভাবে আবাসিক শ্রেণীর গ্রাহক পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৪ হাজার গ্যাস প্রি-পেইড মিটার এবং শিল্প ও সিএনজি শ্রেণীর গ্রাহক পর্যায়ে ৩ হাজার ২৩৯টি ইভিসি মিটার স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব আবাসিক গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
৬টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার ১৪ বছরে
ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল হতে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২১টি অনুসন্ধান কূপ খননের মাধ্যমে ৬টি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এতে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ৬টি গ্যাস ক্ষেত্র হচ্ছে সুন্দলপুর, শ্রীকাইল, রূপগঞ্জ, ভোলা নর্থ, জকিগঞ্জ ও ইলিশা।
বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিট লোকসান দুই হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ডেকসোর নিট লোকসান ২২৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, একই অর্থবছরের ৯ মাসে ডিপিডিসির কর পরবর্তী লোকসান ৪৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রতিবেশী ভারত হতে ছয়টি চুক্তির মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার গত চৌদ্দ বছরে ৮২টি বেসরকারি এবং ৩২টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) একাদশ সংসদের ২৪তম অধিবেশনে সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেলে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বলেন, ৮২টি আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৭০টিকে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ২০০৯ সাল থেকে এই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৭৬ হাজার ২৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মাধ্যমে আইপিপি, রেন্টাল, বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে তা নিজস্ব বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করে। পিডিবি নিজেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা যখন কম থাকে তখন ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রাখে পিডিবি।
যেহেতু বিদ্যুৎ বিক্রি করেই কেন্দ্রগুলো লাভ করে তাই উৎপাদন বন্ধ রাখলেও তাদের একটি চার্জ (টাকা) পিডিবিকে দিতে হয়, যা চুক্তির সময় নির্ধারণ করা থাকে। বসিয়ে রেখে দেয়া এই চার্জই হলো ক্যাপাসিটি চার্জ। পিডিবি দাবি, প্রতিষ্ঠানটি হিসেব করে যখন দেখে ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া অধিক সাশ্রয়ী তখনই ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়।
সংসেদ দেয়া প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৭ হাজার ৪৫৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।
বিসিপিএল বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে গঠিত একটি যৌথ কোম্পানি যাতে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। পটুয়াখালিতে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করেছে বিসিপিসিএল। উৎপাদন বিবেচনায় দেশের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি চার্জও সবচেয়ে বেশি পেয়েছে। দেশে প্রতিদিন মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ সরবরাহ করছে এই পায়রা।
বেসরাকরি খাতের ৭০টি আইপিপিগুলোর মধ্যে কতগুলো ৩০-৫০ মেগাওয়াট আবার কিছু ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। এগুলোর মোট সক্ষমতা প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট। রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কতগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। যে ১৫-১৬টি চলছে সেগুলোর মোট সক্ষমতা প্রায় এক হাজার মেগাওয়াটের মতো।
সংসদে প্রতিমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতের আইপিপিগুলোর (ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) মধ্যে- মেঘনা পাওয়ার (৫ হাজার ৪৭৫ কোটি ১২ লাখ টাকা), রুরাল পাওয়ার (৪ হাজার ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা), সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার (৩ হাজার ৬৪৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা), সেমক্রপ এনডব্লিউপিসি (২ হাজার ৮২৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা), এপিআর এনার্জি (দুই হাজার ৭৮৮ কোটি ৪ লাখ টাকা), সিম্মিট বিবিয়ানা পাওয়ার (২ হাজার ৬৮৩ কোটি ৩ লাখ টাকা), হরিপুর পাওয়ার (দুই হাজার ৫৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা), ইউনাইটেড আশুগঞ্জ এনার্জি লি.কে দুই হাজার ৩৭৬ কোটি ৬৪ লাখ ও বাংলা ট্র্যাক পাওয়ার ইউনিট-১ লি.কে এক হাজর ৮৫৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, গত চৌদ্দ বছরে ৩২টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট) ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৪১১ কোটি ২২ লাখ টাকা পেয়েছে। এছাড়া অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (১৪৫ মে. ও) দুই হাজার ৩৪১ কোটি ২৮ লাখ, কেপিসিএল (ইউনিট-২) এক হাজার ৯২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, সামিট নারায়ণগঞ্জ পাওয়ার এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৮৫ মেগাওয়াট) এক হাজার ৫৫৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা, ডাচ বাংলা পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এক হাজার ৫৩০ কোটি ৯ লাখ টাকা, অ্যাক্রন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস এক হাজার ৪৮৪ কোটি ৩০ লাখ, অ্যাগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্টস (৯৫ মেগাওয়াট) এক হাজার ৪৩৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, দেশ এনার্জি সিদ্ধিরগঞ্জ এক হাজার ৩৯১ কোটি ২১ লাখ, ম্যাক্স পাওয়ার এক হাজার ৩০৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা কেরানীগঞ্জ ১ হাজার ২৯১ কোটি ৬১ লাখ টাকা পেয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৮১৩৪ মেগাওয়াট
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ হাজার ১৩৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ হাজার ১৯৫ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য উৎপাদিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি (অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার) কূপ খননের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতভাবে আবাসিক শ্রেণীর গ্রাহক পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৪ হাজার গ্যাস প্রি-পেইড মিটার এবং শিল্প ও সিএনজি শ্রেণীর গ্রাহক পর্যায়ে ৩ হাজার ২৩৯টি ইভিসি মিটার স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব আবাসিক গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
৬টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার ১৪ বছরে
ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল হতে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২১টি অনুসন্ধান কূপ খননের মাধ্যমে ৬টি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এতে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ৬টি গ্যাস ক্ষেত্র হচ্ছে সুন্দলপুর, শ্রীকাইল, রূপগঞ্জ, ভোলা নর্থ, জকিগঞ্জ ও ইলিশা।
বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিট লোকসান দুই হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ডেকসোর নিট লোকসান ২২৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, একই অর্থবছরের ৯ মাসে ডিপিডিসির কর পরবর্তী লোকসান ৪৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রতিবেশী ভারত হতে ছয়টি চুক্তির মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে।