মানসম্মত গণপরিবহনের অভাবে মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ায় এর সংখ্যা, ব্যবহার ও যানজট বেড়েছে। এদিকে একের পর এক নির্মিত উড়ালসড়কের কোনোটিই যানজট কমাতে পারেনি। সদ্য আংশিক চালু হওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও যানজট কমাতে পারেনি বরং কিছু জায়গায় বেড়েছে।
ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কে জায়গা দখল করে বেশি, যাত্রী পরিবহন করে খুবই কম। নগর এলাকায় টেকসই পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কার্যকর গণপরিবহনব্যবস্থা ও পথচারী ও সাইকেলবান্ধব শহর গড়ে তোলার এখনই সময়।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা ও ঢাকার যাতায়াতব্যবস্থায় গৃহীত পদক্ষেপসমূহ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, বুয়েট, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে এই সেমিনার আয়োজিত হয়।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মোহাম্মদ খান। আরও বক্তব্য দেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, বাপার যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সুমন, আইপিডির পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিয়া আফরোজ।
ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, মানসম্মত গণপরিবহনের অভাবে মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ায় এর সংখ্যা, ব্যবহার ও যানজট বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নগর এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করার পর্যায়ক্রমিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং পথচারীবান্ধব নগর গড়ার জন্য ফুটপাত নির্মাণ ও হাঁটার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
হুমায়ুন কবীর সুমন বলেন, বাংলাদেশে ২০০৬ সাল থেকে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপন করা হলেও নীতিনির্ধারণী মহল থেকে কোনও উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।
হেলাল আহমেদ বলেন, নীতিনির্ধারকদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং প্রকল্প গাড়িকেন্দ্রিক হওয়ায় হাঁটা, সাইকেল ও গণপরিবহনের উন্নতির প্রতি তাদের উদাসীনতা রয়েছে। এলাকার অভ্যন্তরে পথচারীদের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্যক্তিগত যানবাহনের গতি সীমিত করা এবং বেসরকারি ও সরকারি বিভিন্ন ধরনের সংস্থা তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য যেসব প্রণোদনা প্রদান করে, তা সীমাবদ্ধ করা প্রয়োজন।
গাউস পিয়ারী বলেন, প্রতিবছরের মতো ২০২৩ সালেও বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে র্যালি, সাইকেল র্যালি, খিলগাঁও ও মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে গাড়িমুক্ত সড়ক কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও হেঁটে যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে চাই।
সাদিয়া আফরোজ বলেন, হাঁটা, সাইকেলবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় বুয়েট সহযোগিতা করবে। সেই সঙ্গে শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াত পরিবেশ নিশ্চিতে নগর এলাকায় পরিকল্পনামাফিক কার ফ্রি স্কুল জোন গড়ে তোলা প্রয়োজন।
মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন গড়ে ওঠায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান, চিকিৎসার জন্য মানুষ এ শহরে আসে। ঢাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সমগ্র দেশে উন্নয়ন নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। স্কুল ডিস্ট্রিক্ট কনসেপ্টের মাধ্যমে এলাকার স্কুলেই যেন শিশুরা হেঁটে যেতে পারে, সেদিকে জোরারোপ করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রতিটি এলাকায় সমমানের স্কুল নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবু নাসের খান বলেন, উন্নয়ন হতে হবে সাধারণ মানুষের জন্য। ফলে পরিকল্পনাগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গাড়িমুক্ত রাস্তা তৈরি করা, শহরের বিভিন্ন রুটের জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের সেবা ও পরিধি বৃদ্ধি, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারের মতো ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগ কমিয়ে গণপরিবহন তথা বাস, রেল ও নৌপথে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গবেষণা, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মানসম্মত গণপরিবহনের অভাবে মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ায় এর সংখ্যা, ব্যবহার ও যানজট বেড়েছে। এদিকে একের পর এক নির্মিত উড়ালসড়কের কোনোটিই যানজট কমাতে পারেনি। সদ্য আংশিক চালু হওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও যানজট কমাতে পারেনি বরং কিছু জায়গায় বেড়েছে।
ব্যক্তিগত গাড়ি সড়কে জায়গা দখল করে বেশি, যাত্রী পরিবহন করে খুবই কম। নগর এলাকায় টেকসই পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কার্যকর গণপরিবহনব্যবস্থা ও পথচারী ও সাইকেলবান্ধব শহর গড়ে তোলার এখনই সময়।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা ও ঢাকার যাতায়াতব্যবস্থায় গৃহীত পদক্ষেপসমূহ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, বুয়েট, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে এই সেমিনার আয়োজিত হয়।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মোহাম্মদ খান। আরও বক্তব্য দেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, বাপার যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সুমন, আইপিডির পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিয়া আফরোজ।
ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, মানসম্মত গণপরিবহনের অভাবে মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়ায় এর সংখ্যা, ব্যবহার ও যানজট বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই পরিবহন ও যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নগর এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করার পর্যায়ক্রমিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং পথচারীবান্ধব নগর গড়ার জন্য ফুটপাত নির্মাণ ও হাঁটার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে রাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
হুমায়ুন কবীর সুমন বলেন, বাংলাদেশে ২০০৬ সাল থেকে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপন করা হলেও নীতিনির্ধারণী মহল থেকে কোনও উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।
হেলাল আহমেদ বলেন, নীতিনির্ধারকদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং প্রকল্প গাড়িকেন্দ্রিক হওয়ায় হাঁটা, সাইকেল ও গণপরিবহনের উন্নতির প্রতি তাদের উদাসীনতা রয়েছে। এলাকার অভ্যন্তরে পথচারীদের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্যক্তিগত যানবাহনের গতি সীমিত করা এবং বেসরকারি ও সরকারি বিভিন্ন ধরনের সংস্থা তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য যেসব প্রণোদনা প্রদান করে, তা সীমাবদ্ধ করা প্রয়োজন।
গাউস পিয়ারী বলেন, প্রতিবছরের মতো ২০২৩ সালেও বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে র্যালি, সাইকেল র্যালি, খিলগাঁও ও মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে গাড়িমুক্ত সড়ক কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও হেঁটে যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে চাই।
সাদিয়া আফরোজ বলেন, হাঁটা, সাইকেলবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় বুয়েট সহযোগিতা করবে। সেই সঙ্গে শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াত পরিবেশ নিশ্চিতে নগর এলাকায় পরিকল্পনামাফিক কার ফ্রি স্কুল জোন গড়ে তোলা প্রয়োজন।
মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন গড়ে ওঠায় শিক্ষা, কর্মসংস্থান, চিকিৎসার জন্য মানুষ এ শহরে আসে। ঢাকায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সমগ্র দেশে উন্নয়ন নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণ আবশ্যক। স্কুল ডিস্ট্রিক্ট কনসেপ্টের মাধ্যমে এলাকার স্কুলেই যেন শিশুরা হেঁটে যেতে পারে, সেদিকে জোরারোপ করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রতিটি এলাকায় সমমানের স্কুল নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবু নাসের খান বলেন, উন্নয়ন হতে হবে সাধারণ মানুষের জন্য। ফলে পরিকল্পনাগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গাড়িমুক্ত রাস্তা তৈরি করা, শহরের বিভিন্ন রুটের জন্য বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের সেবা ও পরিধি বৃদ্ধি, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারের মতো ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগ কমিয়ে গণপরিবহন তথা বাস, রেল ও নৌপথে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় গবেষণা, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।