অটোগ্যাস প্রতি লিটার ৬২.৫৪ টাকা
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের দাম (এলপি গ্যাস) দাম টানা তিন মাসে তিন দফা বেড়েছে। রান্নায় বহুল ব্যবহৃত ১২ কেজি সিলিন্ডারের জন্য অক্টোবর মাসে ভোক্তাকে দিতে হবে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা। সেপ্টেম্বরে এই দাম ছিল ১ হাজার ২৮৪ টাকা। সেই তুলনায় বেড়েছে ৭৯ টাকা।
আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরেও সমপরিমাণ এলপিজি সিলিন্ডারে ১৪৪ টাকা বেড়েছিল। আর জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে দাম বেড়েছিল ১৪১ টাকা।
তবে গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে ১২ কেজি এলপিজির সিলিন্ডারের দাম কমেছিল ৭৫ টাকা। জুনে দাম ছিল ১ হাজার ৭৪ টাকা। জুলাইয়ে দাম ঘোষণা করা হয় ৯৯৯ টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সোমবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিজস্ব কার্যালয়ে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে। বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, নতুন দর সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই কার্যকর হবে।
জুলাই মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তার খরচ হত ৯৯৯ টাকা। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সমপরিমাণ সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তার খচর বেড়েছে ৩৬৪ টাকা। জুলাইয়ের দামের তুলনায় তিন মাসে খরচ বেড়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ।
তবে বাজারে বিইআরসি নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, আগেও পাওয়া যায়নি, এমন অভিযোগ অধিকাংশ ভোক্তার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সম্প্রতি ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এই কথা স্বীকার করেন।
এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রিতে পরিবেশকদের অনেক এজেন্ট থাকে। তাদের আরও সাব-এজেন্ট থাকে। তিন-চার হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে যায়। এতে ঘোষিত দামের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।’
এক দশক আগে সরকার আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার পর এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়তে থাকে। বাসাবাড়ি, রেস্তোরা, হোটেলগুলো গ্যাস সংযোগ না পেয়ে এলপিজি ব্যবহার শুরু করে। সরকারি খাত থেকে মাত্র ২ শতাংশ এলপিজি সরবরাহ আসায় শুরু থেকেই এই বাজার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুণœœ করে চলছিল এলপিজির বেসরকারি খাত।
ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
২০০৯ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল প্রায় ৬৬ হাজার টনের মতো। বর্তমানে যা ১৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমান চাহিদার ৯৯ শতাংশ সরবরাহ হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে।
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি জানায়, অক্টোবর মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) প্রতি মেট্রিক টনের দাম যথাক্রমে ৬০৯. ৭৫ মার্কিন ডলারে উঠেছে।
গত সেপ্টেম্বরে এটা ছিল ৫৫৬.৫০ মার্কিন ডলার।
বিইআরসির নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি প্রায় ১১৩ টাকা ৬১ পয়সা, যা গত মাসে ছিল ১০৭ টাকা ১ পয়সা।
বাজারে সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন আকারের সিলিন্ডার পাওয়া যায়। অক্টোবর জুড়ে কেজিপ্রতি নতুন দর অনুযায়ি এসব এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।
তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির দাম বাড়ানো হয়নি।
গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাস) দাম লিটারপ্রতি ৫৮ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬২ টাকা ৫৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আগস্ট মাসে ছিল ৫২ টাকা ১৭ পয়সা এবং জুলাইয়ে ছিল ৪৬ টাকা ৪৯ পয়সা।
বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবহারের (রেক্টিকুলেটেড) এলপিজির দামও বেড়েছে। রেটিকুলেটেড এলপিজি গ্যাসীয় অবস্থায় মাসে প্রতি লিটারের দাম শূন্য দশমিক ২২৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ২০৪০ পয়সা করা হয়েছে।
দেশে চলমান গ্যাস সংকটের কারণে গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার করা হচ্ছে।
অটোগ্যাস প্রতি লিটার ৬২.৫৪ টাকা
সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের দাম (এলপি গ্যাস) দাম টানা তিন মাসে তিন দফা বেড়েছে। রান্নায় বহুল ব্যবহৃত ১২ কেজি সিলিন্ডারের জন্য অক্টোবর মাসে ভোক্তাকে দিতে হবে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা। সেপ্টেম্বরে এই দাম ছিল ১ হাজার ২৮৪ টাকা। সেই তুলনায় বেড়েছে ৭৯ টাকা।
আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরেও সমপরিমাণ এলপিজি সিলিন্ডারে ১৪৪ টাকা বেড়েছিল। আর জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে দাম বেড়েছিল ১৪১ টাকা।
তবে গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে ১২ কেজি এলপিজির সিলিন্ডারের দাম কমেছিল ৭৫ টাকা। জুনে দাম ছিল ১ হাজার ৭৪ টাকা। জুলাইয়ে দাম ঘোষণা করা হয় ৯৯৯ টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সোমবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিজস্ব কার্যালয়ে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে। বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, নতুন দর সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই কার্যকর হবে।
জুলাই মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তার খরচ হত ৯৯৯ টাকা। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সমপরিমাণ সিলিন্ডার কিনতে ভোক্তার খচর বেড়েছে ৩৬৪ টাকা। জুলাইয়ের দামের তুলনায় তিন মাসে খরচ বেড়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ।
তবে বাজারে বিইআরসি নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, আগেও পাওয়া যায়নি, এমন অভিযোগ অধিকাংশ ভোক্তার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সম্প্রতি ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এই কথা স্বীকার করেন।
এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রিতে পরিবেশকদের অনেক এজেন্ট থাকে। তাদের আরও সাব-এজেন্ট থাকে। তিন-চার হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে যায়। এতে ঘোষিত দামের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।’
এক দশক আগে সরকার আবাসিক খাতে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার পর এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়তে থাকে। বাসাবাড়ি, রেস্তোরা, হোটেলগুলো গ্যাস সংযোগ না পেয়ে এলপিজি ব্যবহার শুরু করে। সরকারি খাত থেকে মাত্র ২ শতাংশ এলপিজি সরবরাহ আসায় শুরু থেকেই এই বাজার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে ভোক্তা স্বার্থ ক্ষুণœœ করে চলছিল এলপিজির বেসরকারি খাত।
ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে একবার দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
২০০৯ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল প্রায় ৬৬ হাজার টনের মতো। বর্তমানে যা ১৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমান চাহিদার ৯৯ শতাংশ সরবরাহ হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে।
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি জানায়, অক্টোবর মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) প্রতি মেট্রিক টনের দাম যথাক্রমে ৬০৯. ৭৫ মার্কিন ডলারে উঠেছে।
গত সেপ্টেম্বরে এটা ছিল ৫৫৬.৫০ মার্কিন ডলার।
বিইআরসির নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাটসহ) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি প্রায় ১১৩ টাকা ৬১ পয়সা, যা গত মাসে ছিল ১০৭ টাকা ১ পয়সা।
বাজারে সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন আকারের সিলিন্ডার পাওয়া যায়। অক্টোবর জুড়ে কেজিপ্রতি নতুন দর অনুযায়ি এসব এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হবে।
তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির দাম বাড়ানো হয়নি।
গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাস) দাম লিটারপ্রতি ৫৮ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬২ টাকা ৫৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আগস্ট মাসে ছিল ৫২ টাকা ১৭ পয়সা এবং জুলাইয়ে ছিল ৪৬ টাকা ৪৯ পয়সা।
বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবহারের (রেক্টিকুলেটেড) এলপিজির দামও বেড়েছে। রেটিকুলেটেড এলপিজি গ্যাসীয় অবস্থায় মাসে প্রতি লিটারের দাম শূন্য দশমিক ২২৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ২০৪০ পয়সা করা হয়েছে।
দেশে চলমান গ্যাস সংকটের কারণে গৃহস্থালি রান্নার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ, পরিবহন, ছোট-বড় শিল্পকারখানায়ও এলপিজি ব্যবহার করা হচ্ছে।