দেশে প্রথমবারের মতো তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে নতুন করে সংযোজন হয়েছে ঢাকার রাজারবাগের পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাজারবাগে কর্মরত বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি স্মরণে সেখানে এখন জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে।
পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালক, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, দেশে প্রথমবারের মতো, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষ তৃতীয় শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের আশি পৃষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধে রাজাবাগ শিরনামে লেখাটি ছাত্রছাত্রীদের পড়ার জন্য যুক্ত করেছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বইটি ছাপানোর আগে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করে। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তোলা হয়। তার ভিত্তিতে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পাঠ্য বইয়ে প্রকাশ কার হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগের বীর পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের কী ভূমিকা ছিল তা জানার সুযোগ পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ার জন্য প্রকাশিত নতুন পাঠ্য বইয়ের ওই গল্পের কিছু অংশ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো- ঢাকার রাজারবাগে আছে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রিতার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল সেখানে যাওয়ার। ছোট মামার কাছে সে এই জাদুঘরের কথা শুনেছিল। ১৯৭১ সালে রাজারবাগে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা বীরত্বেও পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতিকে স্বরণ করে সেখানে এখন জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে।
এক ছুটির দিনে মামা এসে বললেন, আজ তোমাদের পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাব। রিতা তার ছোটোভাই রবিন আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সেই দিন বিকেল বেলায় ওরা রাজারবাগে গেল।
পুলিশ জাদুঘর খুব পরিপাটি করে সাজানো। ভেতরে ঢুৃকতেই বাম পাশে চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি। এখানে তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখতে পেল। গ্যালারির পাশে আছে একটি বিক্রয় কেন্দ্র। সেখানে বিক্রির জন্য বই রাখা আছে। মামা দুই জনকে দুটি বই কিনে দিলেন। দোকানের পাশে পাঠাগার। সেখানে বসে বই পড়া যায়।
সিঁড়ি দিয়ে নামলেই মূল জাদুঘর। মামার সাথে ওরা দুইজন নিচে নেমে গেল। সেখানে আছে পুলিশের বিভিন্ন সময়ের হাতিয়ার। আছে পুলিশের ব্যবহ্নত পোশাক ও বিভিন্ন জিনিসপত্র। রবিন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আগের দিনের বন্দুক দেখল।
মামা ওদের বিশেষভাবে দুটি জিনিস দেখালেন। একটি হলো বেতারযন্ত্র। আরেকটি হলো পাগলা ঘন্টা। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী মিলিটারি রাজারবাগে আক্রমণ চালিয়েছিল। তখন এই বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে পুলিশরা সারাদেশের পুলিশকে বার্তা পাঠিয়েছিল। আর পাগলা ঘন্টা বাজিয়ে রাজারবাগের সব পুলিশকে সতর্ক করেছিল।
মামা বললেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে ছিল কামানসহ ভারী অস্ত্র। আর আমাদের পুলিশ সদস্যদের কাছে ছিল সাধারণ অস্ত্র। কিন্তু অসীম সাহস নিয়ে পুলিশ সদস্যরা দেশের জন্য লড়াইয়ে নামেন। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঢাকার বাইরের পুলিশরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই রাতে অনেক পুলিশ সদস্য শহিদ হন।
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের পাশাপাশি নানা পেশার মানুষ অংশ নেন। দেশের জন্য প্রাণ দিতে মানুষ একটুও ভয় করেননি। তাদের কথা ভেবে রিতা ও রবিনের গর্ব হয়। এই বীর যোদ্ধাদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
দেশে প্রথমবারের মতো তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে নতুন করে সংযোজন হয়েছে ঢাকার রাজারবাগের পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাজারবাগে কর্মরত বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি স্মরণে সেখানে এখন জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে।
পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পরিচালক, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদকে জানান, দেশে প্রথমবারের মতো, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষ তৃতীয় শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের আশি পৃষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধে রাজাবাগ শিরনামে লেখাটি ছাত্রছাত্রীদের পড়ার জন্য যুক্ত করেছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বইটি ছাপানোর আগে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করে। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তোলা হয়। তার ভিত্তিতে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে পাঠ্য বইয়ে প্রকাশ কার হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগের বীর পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের কী ভূমিকা ছিল তা জানার সুযোগ পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ার জন্য প্রকাশিত নতুন পাঠ্য বইয়ের ওই গল্পের কিছু অংশ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো- ঢাকার রাজারবাগে আছে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রিতার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল সেখানে যাওয়ার। ছোট মামার কাছে সে এই জাদুঘরের কথা শুনেছিল। ১৯৭১ সালে রাজারবাগে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা বীরত্বেও পরিচয় দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতিকে স্বরণ করে সেখানে এখন জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে।
এক ছুটির দিনে মামা এসে বললেন, আজ তোমাদের পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাব। রিতা তার ছোটোভাই রবিন আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সেই দিন বিকেল বেলায় ওরা রাজারবাগে গেল।
পুলিশ জাদুঘর খুব পরিপাটি করে সাজানো। ভেতরে ঢুৃকতেই বাম পাশে চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি। এখানে তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখতে পেল। গ্যালারির পাশে আছে একটি বিক্রয় কেন্দ্র। সেখানে বিক্রির জন্য বই রাখা আছে। মামা দুই জনকে দুটি বই কিনে দিলেন। দোকানের পাশে পাঠাগার। সেখানে বসে বই পড়া যায়।
সিঁড়ি দিয়ে নামলেই মূল জাদুঘর। মামার সাথে ওরা দুইজন নিচে নেমে গেল। সেখানে আছে পুলিশের বিভিন্ন সময়ের হাতিয়ার। আছে পুলিশের ব্যবহ্নত পোশাক ও বিভিন্ন জিনিসপত্র। রবিন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আগের দিনের বন্দুক দেখল।
মামা ওদের বিশেষভাবে দুটি জিনিস দেখালেন। একটি হলো বেতারযন্ত্র। আরেকটি হলো পাগলা ঘন্টা। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী মিলিটারি রাজারবাগে আক্রমণ চালিয়েছিল। তখন এই বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে পুলিশরা সারাদেশের পুলিশকে বার্তা পাঠিয়েছিল। আর পাগলা ঘন্টা বাজিয়ে রাজারবাগের সব পুলিশকে সতর্ক করেছিল।
মামা বললেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে ছিল কামানসহ ভারী অস্ত্র। আর আমাদের পুলিশ সদস্যদের কাছে ছিল সাধারণ অস্ত্র। কিন্তু অসীম সাহস নিয়ে পুলিশ সদস্যরা দেশের জন্য লড়াইয়ে নামেন। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঢাকার বাইরের পুলিশরাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেই রাতে অনেক পুলিশ সদস্য শহিদ হন।
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের পাশাপাশি নানা পেশার মানুষ অংশ নেন। দেশের জন্য প্রাণ দিতে মানুষ একটুও ভয় করেননি। তাদের কথা ভেবে রিতা ও রবিনের গর্ব হয়। এই বীর যোদ্ধাদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।