চড়া বাজারে আরও একদফা বাড়লো দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও দেশি রসুনের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে। সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে। আমদানি হলে দাম কমতে পারে। দেশি রসুনেরও মৌসুমও শেষে। বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের অভিযোগ, ‘সব সিন্ডিকেট’।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও বেশকিছু মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় ফের বেড়েছে দেশি মুড়িকাট পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে স্থান, আকার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা গত শুক্রবার মানভেদে বিক্রি হয়েছে কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। আর গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারে খুচরায় দেশি পেঁয়াজ-রসুন-আদা বিক্রি করে আবদুল আলিম। দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ছোট আকারটা কেজি ১২০ টাকা, মাঝারি ১৩০ টাকা, বড়টা ১৪০ টাকা। আর দেশি রসুন কেজি ৩০০ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা নাইমুল ইসলাম বললেন, আকারভেদে তিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কথা হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমি ২০-২২ দিন আগে যে পেঁয়াজ কিনেছি ৬৫ টাকা, এখন সেই পেঁয়াজ ১২০-৩০ টাকা। আগে কিনতাম ৫-৭ কেজি। এখন কিনলাম ১ কেজি। এরপরে হাফ কেজি, তারপরে...। যে, যে প্রফেশনে আছে, প্রফেশন ছেড়ে এসে সবাইকে পেঁয়াজের ব্যবসা করা দরকার। সব সিন্ডিকেট...।’
সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভও জাড়লেন তিনি, ‘শুনেন বলি, আমরা গ্রামের পোলা। তো, জমিতে হাল চাষ করতো না? যখন বড় বড় চাক উঠতো (ঢিল উঠতো)। চৈত্রী মাসে দুরমুজ দিয়া পিডায়া পিডায়া মাটির চাক (ঢিল) ভেঙে ভেঙে গুঁড়া করা হতো। সেই রকম, দুরমুজ দিয়া পিডায়া পিডায়া সব সিন্ডিকেট ভেঙে গুঁড়া করে দিতে হবে।’
সরকারি সংস্থা টিসিবির মূল্য তালিকায় দেখা যায়, দাম বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। ঠিক এক বছর আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। পণ্যটির ঠিক এক বছরে দাম বৃদ্ধির হার ২০০ শতাংশ। আর সোমবার দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকায়। ঠিক এক বছর আগে বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।
গতকাল রোববার দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শ্যামলী কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘আজ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি কেজি ১৩০ টাকায়। গত শুক্রবারে বিক্রি করেছি ১২০ টাকায়। আর গত বৃহস্পতিবার বিক্রি করেছি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।’
্ওইদিন ওই বাজারের দেশি পেঁয়াজের আরেক খুচরা বিক্রেতা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মুড়িকাটা পেঁয়াজের সিজন শেষের দিকে। নতুন পেঁয়াজ আসতে আরও কিছুদিন লাগবে। ইমপোর্ট না করলে দাম মনে হয় কমবো না।’ নিজ দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত।
এর আগে দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে দেশি পেঁয়াজের দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সরকারের বেঁধে দেয়া দেশি পেঁয়াজের দর কার্যকর হয়নি, উল্টো বেড়েছে।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামলী কাঁচাবাজারে এক নারী ক্রেতা ক্রদ্ধকণ্ঠে বলেন, ‘আপনারা তো কাজ করছেন না, কাজ করতে পারছেন না, আপনাদের সঙ্গে কথা বলা উচিতই না। বাজারে এসে, বাজার গরম দেখে আমাদের মাথা গরম হয়ে যায়।’
সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
চড়া বাজারে আরও একদফা বাড়লো দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও দেশি রসুনের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে। সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে। আমদানি হলে দাম কমতে পারে। দেশি রসুনেরও মৌসুমও শেষে। বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের অভিযোগ, ‘সব সিন্ডিকেট’।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও বেশকিছু মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় ফের বেড়েছে দেশি মুড়িকাট পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে স্থান, আকার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা গত শুক্রবার মানভেদে বিক্রি হয়েছে কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। আর গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। আর দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারে খুচরায় দেশি পেঁয়াজ-রসুন-আদা বিক্রি করে আবদুল আলিম। দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ছোট আকারটা কেজি ১২০ টাকা, মাঝারি ১৩০ টাকা, বড়টা ১৪০ টাকা। আর দেশি রসুন কেজি ৩০০ টাকা।’
দেশি পেঁয়াজের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা নাইমুল ইসলাম বললেন, আকারভেদে তিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কথা হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমি ২০-২২ দিন আগে যে পেঁয়াজ কিনেছি ৬৫ টাকা, এখন সেই পেঁয়াজ ১২০-৩০ টাকা। আগে কিনতাম ৫-৭ কেজি। এখন কিনলাম ১ কেজি। এরপরে হাফ কেজি, তারপরে...। যে, যে প্রফেশনে আছে, প্রফেশন ছেড়ে এসে সবাইকে পেঁয়াজের ব্যবসা করা দরকার। সব সিন্ডিকেট...।’
সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভও জাড়লেন তিনি, ‘শুনেন বলি, আমরা গ্রামের পোলা। তো, জমিতে হাল চাষ করতো না? যখন বড় বড় চাক উঠতো (ঢিল উঠতো)। চৈত্রী মাসে দুরমুজ দিয়া পিডায়া পিডায়া মাটির চাক (ঢিল) ভেঙে ভেঙে গুঁড়া করা হতো। সেই রকম, দুরমুজ দিয়া পিডায়া পিডায়া সব সিন্ডিকেট ভেঙে গুঁড়া করে দিতে হবে।’
সরকারি সংস্থা টিসিবির মূল্য তালিকায় দেখা যায়, দাম বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। ঠিক এক বছর আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। পণ্যটির ঠিক এক বছরে দাম বৃদ্ধির হার ২০০ শতাংশ। আর সোমবার দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকায়। ঠিক এক বছর আগে বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।
গতকাল রোববার দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শ্যামলী কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘আজ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি কেজি ১৩০ টাকায়। গত শুক্রবারে বিক্রি করেছি ১২০ টাকায়। আর গত বৃহস্পতিবার বিক্রি করেছি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।’
্ওইদিন ওই বাজারের দেশি পেঁয়াজের আরেক খুচরা বিক্রেতা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মুড়িকাটা পেঁয়াজের সিজন শেষের দিকে। নতুন পেঁয়াজ আসতে আরও কিছুদিন লাগবে। ইমপোর্ট না করলে দাম মনে হয় কমবো না।’ নিজ দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত।
এর আগে দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাতে দেশি পেঁয়াজের দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সরকারের বেঁধে দেয়া দেশি পেঁয়াজের দর কার্যকর হয়নি, উল্টো বেড়েছে।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামলী কাঁচাবাজারে এক নারী ক্রেতা ক্রদ্ধকণ্ঠে বলেন, ‘আপনারা তো কাজ করছেন না, কাজ করতে পারছেন না, আপনাদের সঙ্গে কথা বলা উচিতই না। বাজারে এসে, বাজার গরম দেখে আমাদের মাথা গরম হয়ে যায়।’