জোড়া মেরুদন্ড থেকে আলাদা করার ঘটনা যুগান্তকারি -স্বাস্ব্যমন্ত্রী : দুই শিশু ভাল আছে,কথা বলে----------- ডাঃ হোসেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা করা হলো মেরুদন্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। গত সোমববার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই জটিল অস্ত্রপচার করা হয়। সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের ডাঃ মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০০ জনের টিম এতে অংশ নেয়।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) চিকিৎসকরা বলছেন, শিশু দুটি এখন ভালো আছে। তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
দুই শিশুকে আলাদা করার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এর কেবিন ব্লকে তাদের দেখতে যান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রী নিজেও ওই চিকিৎসক দলের সদস্য। উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি শিশুদেরকে দেখলাম। আমার কাছে খুব ভালো লাগল। বাচ্চা দুটি পুরোপুরি আলাদা হয়েছে এবং তারা ভালো আছে। আমার মনে হচ্ছে এটা একটা যুগান্তকারী কাজ।”
চিকিৎসায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে ভুটানের একজন রোগীকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের অগ্রগতি বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা আস্তে আস্তে কমবে।”
শিশু দুটির চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এজন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। উপাচার্য বলেছেন, দুটি শিশুর চিকিৎসার যা খরচ, তিনি বহন করবেন। “বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অনেক রোগী আছে। আমি অনুরোধ করব আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আমার মনে হয় এ ধরনের রোগের চিকিৎসা করা যাবে। এখন সব কিছুই অ্যাভেইলেবল।”
প্রধানমন্ত্রী শিশুদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন জানিয়ে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য ডাঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নুহা ও নাভা ভালো আছে। এখন নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে।” নুহা-নাভার অস্ত্রোপচারের পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে জন্ম নেয় মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। ওই বছরের এপ্রিল মাসে বিএসএমএমইউ এর সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রপচার করা হয়। এরপর তাদের আলাদা করতে সোমবার ১৫ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের আগে থেকে বেশ দুঃশ্চিন্তায় থাকলেও এখন খুশি নুহা-নাভার মা নাসরিন আক্তার।
দুই শিশুর মা নাসরিন সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, “দীর্ঘ সময় ধরে ওটি হবে এজন্য অনেক চিন্তায় ছিলাম। স্যারেরা যখন বললেন, ১৩ ঘণ্টা অজ্ঞান থাকার পর আধা ঘণ্টাও লাগেনি তাদের জ্ঞান ফিরতে, তখন বেশ ভালো লেগেছে। তাদের এত তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরবে, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
“আল্লাহর কাছে লাখো লাখো শুকরিয়া। প্রধানমন্ত্রী এবং হাসপাতালের স্যারদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
নিউরো সার্জারী বিভাগের ডাঃ মোহাম্মদ হোসেন গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদকে জানান,দুই শিশু ভাল আছে। কথা বলে। হাত-পা নাড়ায়। তাদের মায়ের সঙ্গেও কথা বলছেন। তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠাল বাড়ির পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা। তার স্ত্রীর নাম নাসরিন। তাদের সংসারে মেরুদন্ডে জোড়া লাগানো কন্যা সন্তান নুহা ও নাভা ২০২২ সালের ২১ মার্চ জনমগ্রহণ করে। তাদের জন্মের কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারী অনুষদের ডিন নিউরো স্পাইন সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে অধীনে নূহা ও নাভাকে ভর্তি করা হয়। ২০২৩ সালে ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপে সফল অস্ত্র পচার করা হয়। এতদিন ভার্সিটির তারা চিকিৎসকদের তত্বাবধানে ছিলেন।
জোড়া মেরুদন্ড থেকে আলাদা করার ঘটনা যুগান্তকারি -স্বাস্ব্যমন্ত্রী : দুই শিশু ভাল আছে,কথা বলে----------- ডাঃ হোসেন
মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা করা হলো মেরুদন্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। গত সোমববার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই জটিল অস্ত্রপচার করা হয়। সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের ডাঃ মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০০ জনের টিম এতে অংশ নেয়।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) চিকিৎসকরা বলছেন, শিশু দুটি এখন ভালো আছে। তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
দুই শিশুকে আলাদা করার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এর কেবিন ব্লকে তাদের দেখতে যান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রী নিজেও ওই চিকিৎসক দলের সদস্য। উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি শিশুদেরকে দেখলাম। আমার কাছে খুব ভালো লাগল। বাচ্চা দুটি পুরোপুরি আলাদা হয়েছে এবং তারা ভালো আছে। আমার মনে হচ্ছে এটা একটা যুগান্তকারী কাজ।”
চিকিৎসায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে ভুটানের একজন রোগীকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের অগ্রগতি বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা আস্তে আস্তে কমবে।”
শিশু দুটির চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এজন্য প্রধানমন্ত্রী তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। উপাচার্য বলেছেন, দুটি শিশুর চিকিৎসার যা খরচ, তিনি বহন করবেন। “বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অনেক রোগী আছে। আমি অনুরোধ করব আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আমার মনে হয় এ ধরনের রোগের চিকিৎসা করা যাবে। এখন সব কিছুই অ্যাভেইলেবল।”
প্রধানমন্ত্রী শিশুদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন জানিয়ে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য ডাঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নুহা ও নাভা ভালো আছে। এখন নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে।” নুহা-নাভার অস্ত্রোপচারের পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে জন্ম নেয় মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। ওই বছরের এপ্রিল মাসে বিএসএমএমইউ এর সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রপচার করা হয়। এরপর তাদের আলাদা করতে সোমবার ১৫ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের আগে থেকে বেশ দুঃশ্চিন্তায় থাকলেও এখন খুশি নুহা-নাভার মা নাসরিন আক্তার।
দুই শিশুর মা নাসরিন সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, “দীর্ঘ সময় ধরে ওটি হবে এজন্য অনেক চিন্তায় ছিলাম। স্যারেরা যখন বললেন, ১৩ ঘণ্টা অজ্ঞান থাকার পর আধা ঘণ্টাও লাগেনি তাদের জ্ঞান ফিরতে, তখন বেশ ভালো লেগেছে। তাদের এত তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরবে, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
“আল্লাহর কাছে লাখো লাখো শুকরিয়া। প্রধানমন্ত্রী এবং হাসপাতালের স্যারদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
নিউরো সার্জারী বিভাগের ডাঃ মোহাম্মদ হোসেন গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদকে জানান,দুই শিশু ভাল আছে। কথা বলে। হাত-পা নাড়ায়। তাদের মায়ের সঙ্গেও কথা বলছেন। তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠাল বাড়ির পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা। তার স্ত্রীর নাম নাসরিন। তাদের সংসারে মেরুদন্ডে জোড়া লাগানো কন্যা সন্তান নুহা ও নাভা ২০২২ সালের ২১ মার্চ জনমগ্রহণ করে। তাদের জন্মের কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারী অনুষদের ডিন নিউরো স্পাইন সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে অধীনে নূহা ও নাভাকে ভর্তি করা হয়। ২০২৩ সালে ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপে সফল অস্ত্র পচার করা হয়। এতদিন ভার্সিটির তারা চিকিৎসকদের তত্বাবধানে ছিলেন।