ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় বাতাসে বইছে লাল চিনির মিষ্টি গন্ধ। লাল চিনি তৈরিতে ধুম পড়েছে উপজেলার পলাশতলী, রঘুনাথপুর, আছিম, রাধাকানাইসহ আখের চাষকৃত এলাকায়।
এবারের মৌসুমে উপজেলায় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য হাতে তৈরি লাল চিনি বিক্রি এক’শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে মনে করছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
অগ্রাহায়ণ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত লাল চিনি উৎপাদিত মৌসুম। এই চিনি উৎপাদনে প্রাচীন প্রক্রিয়া করণ কৌশল ও তৈজস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হাতে তৈরি লাল চিনি সম্পূর্ণভাবে কেমিক্যাল মুক্ত এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। হাতে তৈরি এই চিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা ব্যতীত দেশের আর কোথায়ও উৎপাদিত হয় না। চিনি উৎপাদনে দেশি জাতীয় আখ ব্যবহার হয়ে থাকে। উৎপাদনের জন্য অধিক কার্যকরী ও লাল মাটিতে রোপিত আখ থেকে অধিক লাল চিনি উৎপাদন হয়।
ফুলবাড়ীয়ার হাতে তৈরি লাল চিনি এক প্রকার সুমিষ্ট পদার্থ, যা আখের রস থেকে প্রস্তুত করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার হাতে তৈরি এই চিনি কালক্রমে সাদা চিনির বাজার আধিপত্য থাকায় তা এখন ময়মনসিংহ অঞ্চল পর্যন্ত সীমিত থাকলেও এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় প্যাকেট জাত লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ।
ধারণা করা হচ্ছে সভ্যতার যাঁতাকলে পিষ্ট প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক ঐতিহাসিক চিনি এখনো তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে পেরেছে। কালের বিবর্তনে তা লাল চিনি নাম ধারণ করেছে। জনশ্রুতি অনুসারে ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে সভ্যতার সাক্ষী হয়ে ফুলবাড়ীয়ার কৈয়ারচালা, বিদ্যানন্দ, বাকতা, পলাশতলী, আছিম ও রঘুনাথপুর এলাকায় লাল চিনি এখনো কৃষকের ঘরে ঘরে বেঁচে আছে।
পলাশতলী গ্রামের আখ চাষি আবদুল মালেক বলেন, এ বছর ১০ কাঠা জমিতে আখ চাষ করেছি। চিনির বাজার ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরো বেশি আখ আবাদ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, চলতি বছর ফুলবাড়ীয়ায় আখের আবাদ হয়েছে ৯শ ৫০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৬৫০ হেক্টর। পলাশতলী, কৈয়ারচালা, বাকতা, রঘুনাথপুর, রাঙ্গামাটিয়া, এনায়েতপুর, রামনগর, ভবানীপুর, কুশমাইল এলাকায় আখের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে ৬৫০ হেক্টর আবাদি জমিতে বায়ান্ন মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরের উৎপাদিত আখ থেকে ৩২ হাজার লিটার আখের রস পাওয়া যায়। যেখান থেকে প্রতি হেক্টরে আট মেট্রিক টন লাল চিনি হয়। এবার মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কাঠার আখ চাষীরা ৫ থেকে সাড়ে ৫ মণ চিনি পাবে। বর্তমানে বাজারদর প্রতি মন চিনির মূল্য সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি হেক্টরে ৮ মেট্রিক টন শুকনো লাল চিনির বাজারদর হিসেবে ফুলবাড়ীয়ায় এ বছর ১০৪ কোটি টাকার চিনি বিক্রি করতে পারবে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ বলেন, ফুলবাড়ীয়ার এই লাল চিনি উচ্চ মান সম্প^ন্ন এবং একান্তই স্থানীয় বিশেষ পণ্য। হাতে লাল চিনি তৈরি অনেক কষ্ট দায়ক। এই চিনির একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে, সুস্বাধু ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে কৃষকরা হাতে লাল চিনি তৈরী করে। সারাদেশ ব্যাপী লাল চিনির চাহিদা রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি ফুলবাড়ীয়ার লাল চিনি বিভিন্ন সুপার সপ প্যাকেট জাত হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। এই চিনি আন্তর্জাতিক বাজারজাত করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া এটি জিআই পণ্য হিসেবে অন্তরভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় বাতাসে বইছে লাল চিনির মিষ্টি গন্ধ। লাল চিনি তৈরিতে ধুম পড়েছে উপজেলার পলাশতলী, রঘুনাথপুর, আছিম, রাধাকানাইসহ আখের চাষকৃত এলাকায়।
এবারের মৌসুমে উপজেলায় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য হাতে তৈরি লাল চিনি বিক্রি এক’শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে মনে করছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
অগ্রাহায়ণ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত লাল চিনি উৎপাদিত মৌসুম। এই চিনি উৎপাদনে প্রাচীন প্রক্রিয়া করণ কৌশল ও তৈজস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হাতে তৈরি লাল চিনি সম্পূর্ণভাবে কেমিক্যাল মুক্ত এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। হাতে তৈরি এই চিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা ব্যতীত দেশের আর কোথায়ও উৎপাদিত হয় না। চিনি উৎপাদনে দেশি জাতীয় আখ ব্যবহার হয়ে থাকে। উৎপাদনের জন্য অধিক কার্যকরী ও লাল মাটিতে রোপিত আখ থেকে অধিক লাল চিনি উৎপাদন হয়।
ফুলবাড়ীয়ার হাতে তৈরি লাল চিনি এক প্রকার সুমিষ্ট পদার্থ, যা আখের রস থেকে প্রস্তুত করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার হাতে তৈরি এই চিনি কালক্রমে সাদা চিনির বাজার আধিপত্য থাকায় তা এখন ময়মনসিংহ অঞ্চল পর্যন্ত সীমিত থাকলেও এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় প্যাকেট জাত লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ।
ধারণা করা হচ্ছে সভ্যতার যাঁতাকলে পিষ্ট প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক ঐতিহাসিক চিনি এখনো তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে পেরেছে। কালের বিবর্তনে তা লাল চিনি নাম ধারণ করেছে। জনশ্রুতি অনুসারে ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে সভ্যতার সাক্ষী হয়ে ফুলবাড়ীয়ার কৈয়ারচালা, বিদ্যানন্দ, বাকতা, পলাশতলী, আছিম ও রঘুনাথপুর এলাকায় লাল চিনি এখনো কৃষকের ঘরে ঘরে বেঁচে আছে।
পলাশতলী গ্রামের আখ চাষি আবদুল মালেক বলেন, এ বছর ১০ কাঠা জমিতে আখ চাষ করেছি। চিনির বাজার ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরো বেশি আখ আবাদ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, চলতি বছর ফুলবাড়ীয়ায় আখের আবাদ হয়েছে ৯শ ৫০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৬৫০ হেক্টর। পলাশতলী, কৈয়ারচালা, বাকতা, রঘুনাথপুর, রাঙ্গামাটিয়া, এনায়েতপুর, রামনগর, ভবানীপুর, কুশমাইল এলাকায় আখের আবাদ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে ৬৫০ হেক্টর আবাদি জমিতে বায়ান্ন মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হয়েছে। প্রতি হেক্টরের উৎপাদিত আখ থেকে ৩২ হাজার লিটার আখের রস পাওয়া যায়। যেখান থেকে প্রতি হেক্টরে আট মেট্রিক টন লাল চিনি হয়। এবার মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কাঠার আখ চাষীরা ৫ থেকে সাড়ে ৫ মণ চিনি পাবে। বর্তমানে বাজারদর প্রতি মন চিনির মূল্য সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি হেক্টরে ৮ মেট্রিক টন শুকনো লাল চিনির বাজারদর হিসেবে ফুলবাড়ীয়ায় এ বছর ১০৪ কোটি টাকার চিনি বিক্রি করতে পারবে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ বলেন, ফুলবাড়ীয়ার এই লাল চিনি উচ্চ মান সম্প^ন্ন এবং একান্তই স্থানীয় বিশেষ পণ্য। হাতে লাল চিনি তৈরি অনেক কষ্ট দায়ক। এই চিনির একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে, সুস্বাধু ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে কৃষকরা হাতে লাল চিনি তৈরী করে। সারাদেশ ব্যাপী লাল চিনির চাহিদা রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি ফুলবাড়ীয়ার লাল চিনি বিভিন্ন সুপার সপ প্যাকেট জাত হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। এই চিনি আন্তর্জাতিক বাজারজাত করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া এটি জিআই পণ্য হিসেবে অন্তরভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।