হার্টের রোগীদের রিং লাগানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। অসাধু ব্যবসায়ীরা রোগীদের দুর্বলতার সুযোগে অসাধু ডাক্তারদের যোগসাজশে বেশি দামের রিং হার্টে লাগানোর কথা বলে নিম্নমানের রিং লাগিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছেন। আবার ইউরোপ ও আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশের হার্টের ভালো রিং বলে নিম্নমানের রিং বসানোর নানা অভিযোগও রয়েছে।
এসব কারণে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ রিংয়ের মূল্য নিয়ে নানা অনিয়ম ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেছেন। ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ২৩ ধরনের হার্টের রিংয়ের মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করেছেন। এর ফলে রোগীরা আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে ওষুধ বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশে ইউরোপীয় এবং অন্যান্য দেশের হার্টের রিং এর উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকাল প্রতিনিধি ও ইন্টারভেনশন কাডেওরেজিস্টদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, পোল্যন্ডের তৈরি এলাক্স প্লাস ২০২১ সালে ছিল ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। তা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মূল্য নির্ধারণ ছিল ৮০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা কমিয়ে খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।
পোল্যান্ডের তৈরি এলেক্স ৬২ হাজার ৩৯৫ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পোল্যান্ডের তৈরি এবারিস ৬১ হাজার ৯২১ টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জার্মানির তৈরি করোফ্লাক্স ইসরা ৫৯ হাজার ১১৯ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে কমিয়ে ৫৩ হাজার টাকা মূল্য নিধারণ করা হয়েছে। জার্মানির তৈরি কোরোফ্ল্যাক্স ইসলা ৭৩ হাজার ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুউজারল্যান্ডের তৈরি অরসিরো ৭৬ হাজারের জায়গায় ৬৩ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের তৈরি অরসিরো মিশন ৮১ হাজার টাকার স্থলে ৬৮ হাজার টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের তৈরি ফ্রো-কিনেটিক ইনার্জি ২০১৭ সালে ১৮ হাজার ৭৪৮ টাকা থেকে এখন ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জিনোস ডেস ৮২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমেরিকারি তৈরি এপিনিটি এমএস মিনি কোম্পানির রিং ৯১ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্পেনের তৈরি ইনভাসকুলার রিং ৮৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভারতের তৈরি মেটাফোর রিং আগে ছিল ৪৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তা কমিয়ে সার্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের তৈরি ইভারমাইন-৫০ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আমেরিকার তৈরি ডাইরেক্ট স্ট্রেন ৩৩ হাজার ৫৯২ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এভাবে ২৩ ধরনের হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে কার্ডিয়াক রোগীরা এখন দেশেই সুলভ মূল্যে হার্টের রিং লাগাতে পারবে।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হার্টের রিং লাগানো নিয়ে এখনও নানা অনিয়ম হচ্ছে। ভালো রিং লাগানোর কথা বলে অপারেশন টেবিলে নি¤œমানের রিং লাগানো হয়। এমন অভিযোগ অহরহ শুনা যায়। রোগীর স্বজনরা তো রিং কোনটা ভালো আর কোনটা লাগাচ্ছে। তা নির্ধারণ করতে পারছে না। কারণ সবই চলে অপারেশন টেবিলে। তবে বেশি মূল্য নিয়ে কম দামের রিং লাগানো হাচ্ছে।
অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ী ও কিছু অসাধু ডাক্তারের যোগসাজশেও হার্টের রিং বসানো নিয়ে অনিয়ম বা গাফিলতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। এরপরও ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে হার্টের রিং লাগানো ও মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে।
এই সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন সাবেক এডিজি ও কার্ডিওলজিস্ট সংবাদকে জানান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু এটা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা দরকার।
অপারেশন করবেন যে ডাক্তার তিনি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন। ওই প্রতিনিধি আর ডাক্তার মিলে কোনো রিং সংগ্রহ করছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে রিং কেনা হয়। এরপর অপারেশন করে রিং লাগানোসহ পদে পদে রোগীর ভোগান্তি বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকাও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
দেশে যে জনসংখ্যা আছে তার শতকরা ২ পয়েন্ট ৪ ভাগ হার্টের কোনো কোনো সমস্যায় ভুগছেন। অনেক সময় রিং লাগানোর পর আবার সমস্যা হয়। পরে দেখা যায় রিংয়ে ত্রুটি রয়েছে। এসব বিষয় তদরকি করলে ঔষুধ প্রশাসনের মূল্য কমানো কাজে লাগবে। তবে ওষুধের বাজার মনিটরিং না করলে তা কার্যকর কাগজে-কলমে থেকে যাবে। রিং বাজারে রোগীর স্বজন কিনতে কমই যায়। সবই ডাক্তার আর কোম্পানির প্রতিনিধি করেন। সেই ক্ষেত্রে শস্যের মধ্যে ভূত থাকে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ থেকে শুরু করে তা বাজারজাত ও মনিটরিং করে থাকেন। কেউ অনিয়ম করছে অভিযোগ পাইলে ড্রাগ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মঙ্গলবার, ০২ এপ্রিল ২০২৪
হার্টের রোগীদের রিং লাগানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। অসাধু ব্যবসায়ীরা রোগীদের দুর্বলতার সুযোগে অসাধু ডাক্তারদের যোগসাজশে বেশি দামের রিং হার্টে লাগানোর কথা বলে নিম্নমানের রিং লাগিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছেন। আবার ইউরোপ ও আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশের হার্টের ভালো রিং বলে নিম্নমানের রিং বসানোর নানা অভিযোগও রয়েছে।
এসব কারণে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ রিংয়ের মূল্য নিয়ে নানা অনিয়ম ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেছেন। ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ২৩ ধরনের হার্টের রিংয়ের মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করেছেন। এর ফলে রোগীরা আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে ওষুধ বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশে ইউরোপীয় এবং অন্যান্য দেশের হার্টের রিং এর উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকাল প্রতিনিধি ও ইন্টারভেনশন কাডেওরেজিস্টদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, পোল্যন্ডের তৈরি এলাক্স প্লাস ২০২১ সালে ছিল ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। তা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মূল্য নির্ধারণ ছিল ৮০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা কমিয়ে খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।
পোল্যান্ডের তৈরি এলেক্স ৬২ হাজার ৩৯৫ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পোল্যান্ডের তৈরি এবারিস ৬১ হাজার ৯২১ টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জার্মানির তৈরি করোফ্লাক্স ইসরা ৫৯ হাজার ১১৯ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে কমিয়ে ৫৩ হাজার টাকা মূল্য নিধারণ করা হয়েছে। জার্মানির তৈরি কোরোফ্ল্যাক্স ইসলা ৭৩ হাজার ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৫৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুউজারল্যান্ডের তৈরি অরসিরো ৭৬ হাজারের জায়গায় ৬৩ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের তৈরি অরসিরো মিশন ৮১ হাজার টাকার স্থলে ৬৮ হাজার টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের তৈরি ফ্রো-কিনেটিক ইনার্জি ২০১৭ সালে ১৮ হাজার ৭৪৮ টাকা থেকে এখন ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জিনোস ডেস ৮২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমেরিকারি তৈরি এপিনিটি এমএস মিনি কোম্পানির রিং ৯১ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্পেনের তৈরি ইনভাসকুলার রিং ৮৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভারতের তৈরি মেটাফোর রিং আগে ছিল ৪৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তা কমিয়ে সার্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের তৈরি ইভারমাইন-৫০ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আমেরিকার তৈরি ডাইরেক্ট স্ট্রেন ৩৩ হাজার ৫৯২ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এভাবে ২৩ ধরনের হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে কার্ডিয়াক রোগীরা এখন দেশেই সুলভ মূল্যে হার্টের রিং লাগাতে পারবে।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হার্টের রিং লাগানো নিয়ে এখনও নানা অনিয়ম হচ্ছে। ভালো রিং লাগানোর কথা বলে অপারেশন টেবিলে নি¤œমানের রিং লাগানো হয়। এমন অভিযোগ অহরহ শুনা যায়। রোগীর স্বজনরা তো রিং কোনটা ভালো আর কোনটা লাগাচ্ছে। তা নির্ধারণ করতে পারছে না। কারণ সবই চলে অপারেশন টেবিলে। তবে বেশি মূল্য নিয়ে কম দামের রিং লাগানো হাচ্ছে।
অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ী ও কিছু অসাধু ডাক্তারের যোগসাজশেও হার্টের রিং বসানো নিয়ে অনিয়ম বা গাফিলতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। এরপরও ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে হার্টের রিং লাগানো ও মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে।
এই সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন সাবেক এডিজি ও কার্ডিওলজিস্ট সংবাদকে জানান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু এটা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা দরকার।
অপারেশন করবেন যে ডাক্তার তিনি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন। ওই প্রতিনিধি আর ডাক্তার মিলে কোনো রিং সংগ্রহ করছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে রিং কেনা হয়। এরপর অপারেশন করে রিং লাগানোসহ পদে পদে রোগীর ভোগান্তি বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকাও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
দেশে যে জনসংখ্যা আছে তার শতকরা ২ পয়েন্ট ৪ ভাগ হার্টের কোনো কোনো সমস্যায় ভুগছেন। অনেক সময় রিং লাগানোর পর আবার সমস্যা হয়। পরে দেখা যায় রিংয়ে ত্রুটি রয়েছে। এসব বিষয় তদরকি করলে ঔষুধ প্রশাসনের মূল্য কমানো কাজে লাগবে। তবে ওষুধের বাজার মনিটরিং না করলে তা কার্যকর কাগজে-কলমে থেকে যাবে। রিং বাজারে রোগীর স্বজন কিনতে কমই যায়। সবই ডাক্তার আর কোম্পানির প্রতিনিধি করেন। সেই ক্ষেত্রে শস্যের মধ্যে ভূত থাকে।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ থেকে শুরু করে তা বাজারজাত ও মনিটরিং করে থাকেন। কেউ অনিয়ম করছে অভিযোগ পাইলে ড্রাগ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়।