alt

জাতীয়

দাবদাহে ‘কপাল পোড়ার’ শঙ্কায় কৃষক, শুকিয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত, মরছে সবজির গাছ

ধান ক্ষেতে সবসময় পানি ধরে রাখার পরামর্শ

শাফিউল আল ইমরান : শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। পথ-ঘাট-মাঠ সবকিছুই উত্তপ্ত। এর বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে ফসলের মাঠেও।

কৃষকরা বলছেন, তীব্র রোদের প্রভাবে মাঠের ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, মরছে সবজির গাছ। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। এতেকরে একদিকে ফলন ‘কমে যাবার’ আশঙ্কা অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।

অতিরিক্ত তাপে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের বেশিরভাগ ক্ষেতে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন জমিতে পানি দিতে হিমসীম খেয়ে যাচ্ছে কৃষক। তাদের মনে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে এমন রোদ আর গরমে যেন ধান নষ্ট হয়ে না যায়।

রংপুররে পীরগঞ্জের আলমপুরের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধানের ভিওত পানি ধরে থোয়া যাচ্ছেনা। কিছু কিছু জমির ধান লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। এখনতো পানির লেয়ারও অনেক নিচে। এলাকার টিউবলেও ঠিকমতো পানি ওঠে না, মেশিনেও কম পানি ওঠে, যাদের অবদা(ডিপটিউবয়েল) আছে তারা পানি দিবার পারচে(দিতে পারছে)। এতো রোদের কারণে এবার ধানত চিটা হওয়ার ভয়ে আছি। আর সবজির ভিউয়ের(ক্ষেত) সবজি রোদে-পুড়ে মরে যাচ্ছে।’

তাপে পোড়ার ‘শঙ্কা’, সেচে বাড়তি খরচ ও ফলন কমার আশঙ্কা :

চলতি মৌসুমে সারাদেশে তীব্র তাপাদহের কারণে ধান ছাড়া বাকি সফলী জমি খেত ফেটে চৌচির। রোদে পুড়ছে রোপণ করা বোরো ধান। দিতে হচ্ছে বাড়তি সেচ। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই তাপদাহে ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে অন্য বারের তুলনায় দ্বিগুন বেশি সেচ দিতে হচ্ছে, যার ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে।

রংপুরের পীরগঞ্জের শরীফ নেওয়াজ গভীর নলকূপ দিয়ে নিজের জমিতে পানি দেওয়ার পাশাপাশি অন্যর জমিতেও পানি বিক্রি করনে। তিনি সংবাদকে বলেন,‘আমার মোটর ২৪ ঘন্টা চলে। গতবছর এই সময়ে দুইদিন পর পর একটা জমিতে পানি দিতে হতো। এবার দিতে হচ্ছে একদিন পর পর। এতে আমার খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’

ওই উপজেলার চতরা এলাকার কৃষক প্রদীপ চন্দ্র সংবাদকে বলেন, ‘৭ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। এ বছর ধান পাতান (চিটা) হওয়ার আশঙ্কা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সার, বীজ, তেল ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই প্রতিমণ ধান উৎপাদন খরচ বাড়ছে এখন বাড়তি সেচও দেওয়ার কারণে খরচ আরো বেড়ে গেল।’

ময়মনসিংহের কৃষি উদ্যোক্তা ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স সংবাদকে বলেন, ‘তাপপ্রবাহের কারণে চাইলেও সেই পানির প্রবাহ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ধানের ফুল পলিনেশন করতে পারছে না, অনেক ফুল ঝরে যাচ্ছে। একারণে ধান চাষে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক।’

তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আম, লটকন, মাল্টা, অ্যাভাকাডার মতো গাছের গুটি ঝরে যাওয়ার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ আমার যে ফলের বাগান আছে সে বাগান থেকে বৃষ্টির অভাবে গাছ পুষ্টি না পাওার কারণে ফল ফুল ঝরে পড়ছে, যখন বৃষ্টি হবে তখন গাছ পরিপুষ্ট হতে আরো ১৫ দিন সময় নিবে কিন্ত মাঝে যে সময় গেল সেটা তো ফিরে পাওয়া সম্ভবনা। এছাড়া, ক্ষেতে যে কৃষি শ্রমিকরা কাজ করে তারাও তো তাড়াতাড়ি হাপিয়ে ওঠে এতো আমার শ্রমের অপচয় হচ্ছে।’

সার্বিকভাবে বলা চলে, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই চলে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ কম পানি উঠছে পাম্পগুলোতে। আবার দীর্ঘক্ষণ চালানোর কারণে বিল ঠিকই বাড়ছে, কিন্তু ওই পরিমাণ পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুকিয়ে যাচ্ছে, গাছ শোষণ করতে পারছে না। সব মিলিয়ে কৃষকদের একটা বাজে অবস্থা।’

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন:

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর সংবাদকে বলেন, ‘এবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এখন ধানের জন্য ক্রিটিক্যাল টেম্পেরেচার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর উপরে যদি তাপমাত্রা উঠে এবং এসময় যদি ফুল ফোটে সেগুলো শুকিয়ে যেতে পারে।’

‘তবে, তিনি ধানের দুইটা বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন। যেমন; হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সেখানে এখন যেমন রোদ আছে সেই রোদটা খুবই দরকার। আবার কোন কোন অঞ্চল আছে যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস অতিক্রম করে যাচ্ছে। সেখানে আমরা যে আশঙ্কায় আছি- ফুল ফোটা পর্যায়ে যদি টেম্পারেচার বেশি থাকে তবে ধানের চিটা হয়ে যেতে পারে। এমন একটা আশঙ্কার মধ্যে আছি।’

বিশেষ করে যেসব এলাকার তাপমাত্রা খুব বেশি সেসব এলাকার ধান নিয়ে ‘শঙ্কার’ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সব কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি টেম্পারেচার বেশী থাকলেও যেন তারা সবসময় পানি ধরে রাখে। পানি ধরে রাখলে চিটা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।’

যেসব এলাকায় ধান পেকে গেছে সেসব এলাকায় আমরা ধান তাড়াতাড়ি কেটে ফেলার পরমর্শও তার।

কৃষিতে বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় লিফলেট ও অ্যাপসের মাধ্যমে চাষিদের পরামর্শ দেওয়ার কথা জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক(ডিজি) বাদল চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যেসব এলাকায় ধান দেরিতে আসে সেসব এলাকায় আমরা বলেছি, ধানের গোড়ায় যেন পানি থাকে, সেই পানিটা যেন ধান গাছের শিকড় সহজে টানতে পারে।

এখনো কোন বিরুপ প্রভাব পড়েনি এবার ব্লাষ্টও কম। খবর এখন পর্যন্ত ভালো আছে।’

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে: রাষ্ট্রদূত

ছবি

সাবেক এমপি ও ক্রিকেট অধিনায়ক দুর্জয় গ্রেপ্তার

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জামিন নামঞ্জুর

‘দুর্নীতি করতে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর প্রক্রিয়া জটিল করা হয়’

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১, আক্রান্ত ৪১৬ জন

ভুয়া তথ্য ঠেকাতে জাতিসংঘের উদ্যোগ চান প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

দালাই লামা জানালেন, পুরনো নিয়ম মেনে উত্তরসূরি ঠিক করবে ট্রাস্ট

ছবি

কন্যা-বাবা সহপাঠী, একই সঙ্গে দিচ্ছেন এইচএসসি

ছবি

পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মহাসড়ক অবরোধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

এলপি গ্যাস: ১২ কেজি সিলিন্ডারে দাম কমলো ৩৯ টাকা

‘ভবিষ্যতে এনআইডি সেবা নিয়ে কোনো হয়রানির অভিযোগ থাকবে না’

৫ আগস্ট ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে’ সাধারণ ছুটি

ছবি

গত পাঁচ সপ্তাহে খাবারের জন্য অপেক্ষারত ৬০০-র বেশি প্যালেস্টাইনিকে হত্যা

এবার এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে অবসরে পাঠালো সরকার

৫ লাখ রিয়াল ছিনতাই: অর্ধেক উদ্ধার করে পুলিশ বলছে ঘটনা ‘পরিকল্পিত’

এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনে বড় ধরনের ঝামেলায় পড়েছিল সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

সংসদ নির্বাচনে ইসিকে ৪.৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে জাপান

সীমানা নির্ধারণ ও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে ‘ঐকমত্য হয়েছে’: আলী রীয়াজ

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে নৌবাহিনী, এরপর বিবেচনায় ডিপি ওয়ার্ল্ড

ছবি

আদালত অবমাননা: শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

জুলাইয়ের তিনটি দিনকে বিশেষ দিবস ঘোষণা করল অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

আদালত অবমাননায় পলাতক শেখ হাসিনার ৬ মাস কারাদণ্ড

ছবি

জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সমঝোতায় পৌঁছার আশা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের: আলী রীয়াজ

ছবি

আমরা জোর করে আসিনি, উড়ে এসেও বসিনি: সিইসি

ছবি

সংসদে প্রতিনিধিত্ব চায় জুলাই শহীদ পরিবার

ছবি

জুলাই শহীদদের তালিকায় যুক্ত হলো আরও ১০ জন

আগামী ছয় মাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে নিউমুরিং টার্মিনাল: অর্থ উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠতা যোগদানের তারিখ থেকে, রুল হাইকোর্টের

মগবাজারে হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু

ডেঙ্গু: আরও ৩৮৬ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ১

আদালতে সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ জবানবন্দি

ছবি

বারোমাসিয়া নদীর ভাঙা সাঁকোয় বারোমাসই দুঃখ

ছবি

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিচার শুরু আগামী ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ

ছবি

মুরাদনগরে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির ১৫ সদস্যের দল

ছবি

ইস্টার্ন রিফাইনারিতে গত অর্থবছরে তেল শোধন ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন

ছবি

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

tab

জাতীয়

দাবদাহে ‘কপাল পোড়ার’ শঙ্কায় কৃষক, শুকিয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত, মরছে সবজির গাছ

ধান ক্ষেতে সবসময় পানি ধরে রাখার পরামর্শ

শাফিউল আল ইমরান

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। পথ-ঘাট-মাঠ সবকিছুই উত্তপ্ত। এর বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে ফসলের মাঠেও।

কৃষকরা বলছেন, তীব্র রোদের প্রভাবে মাঠের ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, মরছে সবজির গাছ। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানিও মিলছে না গভীর নলকূপে। এতেকরে একদিকে ফলন ‘কমে যাবার’ আশঙ্কা অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।

অতিরিক্ত তাপে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের বেশিরভাগ ক্ষেতে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন জমিতে পানি দিতে হিমসীম খেয়ে যাচ্ছে কৃষক। তাদের মনে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে এমন রোদ আর গরমে যেন ধান নষ্ট হয়ে না যায়।

রংপুররে পীরগঞ্জের আলমপুরের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধানের ভিওত পানি ধরে থোয়া যাচ্ছেনা। কিছু কিছু জমির ধান লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। এখনতো পানির লেয়ারও অনেক নিচে। এলাকার টিউবলেও ঠিকমতো পানি ওঠে না, মেশিনেও কম পানি ওঠে, যাদের অবদা(ডিপটিউবয়েল) আছে তারা পানি দিবার পারচে(দিতে পারছে)। এতো রোদের কারণে এবার ধানত চিটা হওয়ার ভয়ে আছি। আর সবজির ভিউয়ের(ক্ষেত) সবজি রোদে-পুড়ে মরে যাচ্ছে।’

তাপে পোড়ার ‘শঙ্কা’, সেচে বাড়তি খরচ ও ফলন কমার আশঙ্কা :

চলতি মৌসুমে সারাদেশে তীব্র তাপাদহের কারণে ধান ছাড়া বাকি সফলী জমি খেত ফেটে চৌচির। রোদে পুড়ছে রোপণ করা বোরো ধান। দিতে হচ্ছে বাড়তি সেচ। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে ধানের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই তাপদাহে ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে অন্য বারের তুলনায় দ্বিগুন বেশি সেচ দিতে হচ্ছে, যার ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে।

রংপুরের পীরগঞ্জের শরীফ নেওয়াজ গভীর নলকূপ দিয়ে নিজের জমিতে পানি দেওয়ার পাশাপাশি অন্যর জমিতেও পানি বিক্রি করনে। তিনি সংবাদকে বলেন,‘আমার মোটর ২৪ ঘন্টা চলে। গতবছর এই সময়ে দুইদিন পর পর একটা জমিতে পানি দিতে হতো। এবার দিতে হচ্ছে একদিন পর পর। এতে আমার খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’

ওই উপজেলার চতরা এলাকার কৃষক প্রদীপ চন্দ্র সংবাদকে বলেন, ‘৭ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। এ বছর ধান পাতান (চিটা) হওয়ার আশঙ্কা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সার, বীজ, তেল ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় এমনিতেই প্রতিমণ ধান উৎপাদন খরচ বাড়ছে এখন বাড়তি সেচও দেওয়ার কারণে খরচ আরো বেড়ে গেল।’

ময়মনসিংহের কৃষি উদ্যোক্তা ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স সংবাদকে বলেন, ‘তাপপ্রবাহের কারণে চাইলেও সেই পানির প্রবাহ ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে ধানের ফুল পলিনেশন করতে পারছে না, অনেক ফুল ঝরে যাচ্ছে। একারণে ধান চাষে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক।’

তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে আম, লটকন, মাল্টা, অ্যাভাকাডার মতো গাছের গুটি ঝরে যাওয়ার কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ আমার যে ফলের বাগান আছে সে বাগান থেকে বৃষ্টির অভাবে গাছ পুষ্টি না পাওার কারণে ফল ফুল ঝরে পড়ছে, যখন বৃষ্টি হবে তখন গাছ পরিপুষ্ট হতে আরো ১৫ দিন সময় নিবে কিন্ত মাঝে যে সময় গেল সেটা তো ফিরে পাওয়া সম্ভবনা। এছাড়া, ক্ষেতে যে কৃষি শ্রমিকরা কাজ করে তারাও তো তাড়াতাড়ি হাপিয়ে ওঠে এতো আমার শ্রমের অপচয় হচ্ছে।’

সার্বিকভাবে বলা চলে, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই চলে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ কম পানি উঠছে পাম্পগুলোতে। আবার দীর্ঘক্ষণ চালানোর কারণে বিল ঠিকই বাড়ছে, কিন্তু ওই পরিমাণ পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুকিয়ে যাচ্ছে, গাছ শোষণ করতে পারছে না। সব মিলিয়ে কৃষকদের একটা বাজে অবস্থা।’

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন:

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর সংবাদকে বলেন, ‘এবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এখন ধানের জন্য ক্রিটিক্যাল টেম্পেরেচার ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর উপরে যদি তাপমাত্রা উঠে এবং এসময় যদি ফুল ফোটে সেগুলো শুকিয়ে যেতে পারে।’

‘তবে, তিনি ধানের দুইটা বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন। যেমন; হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সেখানে এখন যেমন রোদ আছে সেই রোদটা খুবই দরকার। আবার কোন কোন অঞ্চল আছে যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস অতিক্রম করে যাচ্ছে। সেখানে আমরা যে আশঙ্কায় আছি- ফুল ফোটা পর্যায়ে যদি টেম্পারেচার বেশি থাকে তবে ধানের চিটা হয়ে যেতে পারে। এমন একটা আশঙ্কার মধ্যে আছি।’

বিশেষ করে যেসব এলাকার তাপমাত্রা খুব বেশি সেসব এলাকার ধান নিয়ে ‘শঙ্কার’ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সব কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি টেম্পারেচার বেশী থাকলেও যেন তারা সবসময় পানি ধরে রাখে। পানি ধরে রাখলে চিটা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।’

যেসব এলাকায় ধান পেকে গেছে সেসব এলাকায় আমরা ধান তাড়াতাড়ি কেটে ফেলার পরমর্শও তার।

কৃষিতে বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় লিফলেট ও অ্যাপসের মাধ্যমে চাষিদের পরামর্শ দেওয়ার কথা জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক(ডিজি) বাদল চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যেসব এলাকায় ধান দেরিতে আসে সেসব এলাকায় আমরা বলেছি, ধানের গোড়ায় যেন পানি থাকে, সেই পানিটা যেন ধান গাছের শিকড় সহজে টানতে পারে।

এখনো কোন বিরুপ প্রভাব পড়েনি এবার ব্লাষ্টও কম। খবর এখন পর্যন্ত ভালো আছে।’

back to top