# নদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর # সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম
ভারতের উজানে গজল ডোবা ব্যারেজসহ বিভিন্ন খালের মাধ্যমে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় রংপুর অঞ্চলে শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই নদী পানি শুন্য হয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে। পুরোনদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর। ফলে তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে ধান ক্ষেতে পানি দিয়ে সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ এ যাবতকালের সর্বনি¤œ ৬শ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে তিস্তা নদী পানি শুন্য হওয়ার কারনে জীব বৈচিত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে চাষাবাদ করা ভুট্টা , পেয়াজ , মিষ্টি কুমড়া সহ অন্যান্য ফসলের গাছ প্রচন্ড দাবদাহের কারনে গাছ গুলো শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় তিস্তা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় নদী সংলগ্ন চরাঞ্চলসহ আশে^পাশের্^ এলাকায় পানির স্তর দ্রæত নীচে নেমে যাচ্ছে।
তিস্তা নদী বেষ্টিত বসবাসকারী মানুষের অভিযোগ, তিস্তা নদীর উপর নির্ভরশীল রংপুর, নীলফামারী , লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় কোটি মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর বেশিরভাগ এলাকা। ফলে ভরা বর্ষা মৌসুমে পানি ধারন ক্ষমত্ াহারিয়ে ফেলায় দুকুল ছাপিয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ি ঘর ফসলের ক্ষেত। সেই সাথে নদী ভাঙ্গনে গৃহহারা হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার।
তিস্তা নদীর উজানে ভারত গজল ডোবা বাঁধ দিয়ে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করায় শুস্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পুরো পানি শুন্য হয়ে পড়ে। চলতি শুস্ক মৌসুমে বৈখাখ মাসের আগেই তিস্তা নদীর পুরো এলাকা জুড়ে পানি শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রমত্তা তিস্তা নদী মরা খালে পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে
তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানির প্রবাহ মাত্র ৬শ কিউসেকে নেমে এসেছে যা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
তিস্তা ব্যারজে কর্মরত একজন প্রকৌশলী জানান ভারত উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মান করে এমনিতেই শুস্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নেয়। এবার তারা ব্যারেজের পাশাপাশি খাল খনন করেও পানি নিয়ে নিচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদী পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। চারিদিকে শুধু ধুধু বালু চর ছাড়া পানি নেই। নৌকা চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ অংশে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সেচ দিয়ে ধান চাষ হতো। ভারতের উজানে পানির প্রবাহ আটকে রাখার কারনে তা কমতে কমতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। এবার আরও ভয়াবহ অবস্থা, নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের ৩৫টি উপজেলায় খাল খননের মাধ্যমে নদীর পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে যে জমিতে সেচ দেয়া হতো তাও এবার পানির অভাবে দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছে এতে দ্বিগুন ব্যায় করতে বাধ্য হচ্ছে।
সরেজমিন তিস্তা ব্যারেজ সহ তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তিস্তা নদী সংলগন জমি এমনিতেই বালু মিশ্রিত। নদীর পানি ছাড়া সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিনে ৩/৪ বার দিলেও পানি ধারন করতে পারছেনা। গঙ্গাচড়ার চরইছলী, মহিপুর, নোহালী এলাকার কৃষক মমতাজ. , রোস্তম আলী সহ অনেকেই জানালো একই কথা।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারন সম্পাদক সফিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন ভারত তাদের উজানে আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে ব্যারেজ নির্মান করে পানি প্রত্যাহার করছে। এখন আবার খাল খনন করে রংপুর অঞ্চলকে মরুভুমিতে পরিনত করার পায়তারা করছে। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে শুনছি ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষনা দিলেও বাস্তবায়ন করার লক্ষন দেখা যাচ্ছেনা। এটা পাতানো খেলা উল্লেখ করে বলেন পদ্মা সেতুর মতো নিজেদের অর্থায়নে নদী খনন, বাঁধ নির্মান এবং জলাধার নির্মান করে পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
একই দাবি করলেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পাড়ের মানুষের দাবি নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা নদী খনন করে বর্ষা কালে পানি ধরে রাখার জন্য খাল নির্মান নদী ভাঙ্গন রোধ করতে বাধঁ নির্মান যা বাস্তবায়ন কোন উদ্যেগ নেয়া হচ্ছেনা। তিনি বলেন ভারতের আগ্রাসন বন্ধ আর কোন দেশের উপর ভরসা না করে নিজস্ব অর্থায়নে নদী খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিবের সাথে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিস্তা নদী পুনঃ খনন করা সহ সার্বিক বিষয়ে পদক্ষেপ নেবার কথা জানালেন এ কর্মকর্তা।
# নদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর # সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম
রোববার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
ভারতের উজানে গজল ডোবা ব্যারেজসহ বিভিন্ন খালের মাধ্যমে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় রংপুর অঞ্চলে শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই নদী পানি শুন্য হয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে। পুরোনদী জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর। ফলে তিস্তা ব্যারেজকে কেন্দ্র করে ধান ক্ষেতে পানি দিয়ে সেচ কাজও বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ এ যাবতকালের সর্বনি¤œ ৬শ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে তিস্তা নদী পানি শুন্য হওয়ার কারনে জীব বৈচিত্রে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে চাষাবাদ করা ভুট্টা , পেয়াজ , মিষ্টি কুমড়া সহ অন্যান্য ফসলের গাছ প্রচন্ড দাবদাহের কারনে গাছ গুলো শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় তিস্তা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় নদী সংলগ্ন চরাঞ্চলসহ আশে^পাশের্^ এলাকায় পানির স্তর দ্রæত নীচে নেমে যাচ্ছে।
তিস্তা নদী বেষ্টিত বসবাসকারী মানুষের অভিযোগ, তিস্তা নদীর উপর নির্ভরশীল রংপুর, নীলফামারী , লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় কোটি মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর বেশিরভাগ এলাকা। ফলে ভরা বর্ষা মৌসুমে পানি ধারন ক্ষমত্ াহারিয়ে ফেলায় দুকুল ছাপিয়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ি ঘর ফসলের ক্ষেত। সেই সাথে নদী ভাঙ্গনে গৃহহারা হয়ে পড়ছে হাজার হাজার পরিবার।
তিস্তা নদীর উজানে ভারত গজল ডোবা বাঁধ দিয়ে এক তরফা ভাবে পানি প্রত্যাহার করায় শুস্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পুরো পানি শুন্য হয়ে পড়ে। চলতি শুস্ক মৌসুমে বৈখাখ মাসের আগেই তিস্তা নদীর পুরো এলাকা জুড়ে পানি শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রমত্তা তিস্তা নদী মরা খালে পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে
তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানির প্রবাহ মাত্র ৬শ কিউসেকে নেমে এসেছে যা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
তিস্তা ব্যারজে কর্মরত একজন প্রকৌশলী জানান ভারত উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মান করে এমনিতেই শুস্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নেয়। এবার তারা ব্যারেজের পাশাপাশি খাল খনন করেও পানি নিয়ে নিচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদী পানি শুন্য হয়ে পড়েছে। চারিদিকে শুধু ধুধু বালু চর ছাড়া পানি নেই। নৌকা চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ অংশে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সেচ দিয়ে ধান চাষ হতো। ভারতের উজানে পানির প্রবাহ আটকে রাখার কারনে তা কমতে কমতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। এবার আরও ভয়াবহ অবস্থা, নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের ৩৫টি উপজেলায় খাল খননের মাধ্যমে নদীর পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে যে জমিতে সেচ দেয়া হতো তাও এবার পানির অভাবে দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছে এতে দ্বিগুন ব্যায় করতে বাধ্য হচ্ছে।
সরেজমিন তিস্তা ব্যারেজ সহ তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তিস্তা নদী সংলগন জমি এমনিতেই বালু মিশ্রিত। নদীর পানি ছাড়া সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিনে ৩/৪ বার দিলেও পানি ধারন করতে পারছেনা। গঙ্গাচড়ার চরইছলী, মহিপুর, নোহালী এলাকার কৃষক মমতাজ. , রোস্তম আলী সহ অনেকেই জানালো একই কথা।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারন সম্পাদক সফিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন ভারত তাদের উজানে আর্ন্তজাতিক আইন লংঘন করে ব্যারেজ নির্মান করে পানি প্রত্যাহার করছে। এখন আবার খাল খনন করে রংপুর অঞ্চলকে মরুভুমিতে পরিনত করার পায়তারা করছে। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে শুনছি ভারতের সাথে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষনা দিলেও বাস্তবায়ন করার লক্ষন দেখা যাচ্ছেনা। এটা পাতানো খেলা উল্লেখ করে বলেন পদ্মা সেতুর মতো নিজেদের অর্থায়নে নদী খনন, বাঁধ নির্মান এবং জলাধার নির্মান করে পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
একই দাবি করলেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পাড়ের মানুষের দাবি নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা নদী খনন করে বর্ষা কালে পানি ধরে রাখার জন্য খাল নির্মান নদী ভাঙ্গন রোধ করতে বাধঁ নির্মান যা বাস্তবায়ন কোন উদ্যেগ নেয়া হচ্ছেনা। তিনি বলেন ভারতের আগ্রাসন বন্ধ আর কোন দেশের উপর ভরসা না করে নিজস্ব অর্থায়নে নদী খনন করে পানির প্রবাহ অব্যাহত রাখার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিবের সাথে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিস্তা নদী পুনঃ খনন করা সহ সার্বিক বিষয়ে পদক্ষেপ নেবার কথা জানালেন এ কর্মকর্তা।