alt

জাতীয়

ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভূমিমন্ত্রী

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই আজ একাত্তরের চেয়েও কঠিন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা যেখানে চলে গেছে তার বিরুদ্ধে লড়াই একাত্তরের চেয়েও কঠিন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অনুষ্ঠানে আজ বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া) মিলনায়তনে ঐক্য পরিষদের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক শক্তিকে আজ ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ খোলা নেই।

তিনি বলেন, সরকারী দল নির্বাচনী ইশতেহারে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনে যে সব বাধা রয়েছে তা অবসানের অঙ্গীকার করেছে। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

অর্পিত সম্পত্তি আইনের বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে ‘প্রশাসনের নিম্নপর্যায়ে আন্তরিকতার অভাব’কে দায়ী করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেবোত্তর সম্পত্তি আইন সংক্রান্ত বিল প্রণীত হয়েছে। বর্তমানে তা আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আশা করা যায়, এ বিলটিকেও দ্রুত আইনে পরিণত করার জন্যে পার্লামেন্টে পেশ করা হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্যে জাতীয় পর্যায়ে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।

আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মেজবাহ কামাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারে ও দলে বঙ্গবন্ধু কন্যার অবস্থান ও তাঁর দলের অবস্থান এক নয়। স্বাধীনতার ইতিহাস যথার্থ অর্থে তুলে ধরার দায়িত্ব সরকারী দলকেই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে তাদের অনীহায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ক্রমশঃ পেছনের দিকে হটছে। দল ক্ষমতায় থাকলে বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিকর্মীদের কন্ঠস্বর রুদ্ধ থাকে। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের খপ্পর থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে তাঁদেরও দল ও সরকারকে পথ দেখাতে হবে।

ড. মেজবাহ কামাল শংকা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় টিকে থাকবে না কি আরেকটি পাকিস্তান তৈরি হবে- এ নিয়ে গোটা জাতি আজ দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে।

চৈতন্যের শক্তিকে জাগ্রত করার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপের পাশাপাশি তিনি সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

ঐক্য পরিষদের জন্মের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা না গেলে আজকে সংখ্যালঘুরা তাদের সমস্যা দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরতে পারত না এবং এরা হয় দেশ থেকে এতদিনে হারিয়ে যেতো নতুবা আরো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতো।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক সাম্প্রদায়িকতা, প্রশাসনিক সাম্প্রদায়িকতায় দেশ আজ ছেয়ে গেছে। তিনি সংখ্যালঘুদের তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লক্ষে অধিকতর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ দেশের শতকরা ১০ ভাগ জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে রাজনীতির মাঠে নামার সময় এসেছে।

নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, সংবিধান ও রাজনীতির সাথে ধর্মকে যুক্ত করায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ পরিপুষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে, প্রশাসনে, সরকারে সাম্প্রদায়িকতা বিরাজ করছে। র্শিশুকাল থেকে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ সরকারের আমলে পাঠ্যসূচীতে পরিবর্তন হয়েছে যাতে মৌলবাদীরা খুশি হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি বলবৎ করা গেলে দেশটা অন্ততঃ এক জায়গায় ফিরে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সাংসদ ও প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ক্ষয়িষ্ণু সম্প্রদায় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আবেদন-নিবেদন করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এর জন্য শক্তিশালী অবস্থান নিতে ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ থেকে সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগ করে না। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কেন করছে তা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজকে বিবেচনায় নিতে হবে জাতীয় স্বার্থে। তিনি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, পার্বত্য শাস্তিচুক্তির বাস্তবায়নের জন্যে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

পংকজ নাথ এম.পি বলেন, ১০ শতাংশ সংখ্যালঘুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ থাকবে না। তিনি ইশতেহারে প্রদত্ত সংখ্যলঘু অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে জোরদার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

আদিবাসী নেতা, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক এতে আলোচনায় অংশ নেন।

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত বলেন, মানবিক বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে রয়েছে তা মোকাবেলা করে শান্তি, সমৃদ্ধি, সম্প্রীতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।

বইমেলায় উত্তেজনা: সব্যসাচী প্রকাশনার স্টল ঘিরে বিক্ষোভ

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার ‘আশ্বাস’ প্রধান উপদেষ্টার , জানালেন ফখরুল

হত্যা চেষ্টা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে জিআইজি মোল্ল্যা নজরুল

ছবি

সূচনা ফাউন্ডেশনের আয়কর সুবিধা বাতিল: এনবিআরের সিদ্ধান্ত

ডিসেম্বরের মধ্যেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু: পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি

মেহেদীর সঙ্গে ‘অভ্র’র জন্য একুশে পদক পাচ্ছেন আরও ৩ জন

রায়ের পর মুক্তি পেতে সময় লাগলো ৮ বছর

ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্যের জেরে দুদকের পরিচালক প্রত্যাহার

ছবি

জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭৭ মৃত্যু, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অর্ধেক নিহত

ছবি

বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ

ছবি

সময়সীমা শেষের পথে, এখনো চুক্তিহীন অর্ধেক হজ এজেন্সি

ছবি

আহত ও শহীদ পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু

ছবি

এনআইডি তথ্য ফাঁস: পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

ছবি

জাতীয় নাগরিক কমিটির ৭৫ সদস্যের প্রবাসী কমিটি ঘোষণা

ছবি

মাস্কটে তৌহিদ-জয়শঙ্কর বৈঠকে সম্পর্কে অস্বস্তি না বাড়ানোর বার্তা নয়াদিল্লিকে দেবে ঢাকা

ছবি

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: সাখাওয়াত হোসেন

ছবি

‘ডেভিল হান্টের’ মধ্যে ধরা ১৩০৮ জন

‘অপারেশন ডেভিল হান্টের’ কারণ ব্যাখ্যা করলেন স্বরাষ্ট্র সচিব

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে দুদকের অভিযান, মেলেনি সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফসহ ২৫ জনের লকার

সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নির্বাচনের অন্তরায় হলে বাধা দেবে বিএনপি

ছবি

ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৩শ’র বেশি

ছবি

আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে চালু হলো ‘কমান্ড সেন্টার’

ছবি

তিস্তা নদী নিয়ে গনশুনানী শেষে রিজওয়ানা হাসান : ডিসেম্বর মাসের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু হবে

ছবি

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি: বাচ্চু ও পরিবারের বিরুদ্ধে চার মামলা

ছবি

সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর ৫৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার ব্যাংক খাতের সংস্কার

একুশে পদক পাচ্ছেন অভ্র ফন্টের নির্মাতারা

ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে বাংলাদেশিরা: মস্কোর দূতাবাসে যোগাযোগের পরামর্শ

ছবি

ভারতের প্রতিক্রিয়া ‘অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত’: বাংলাদেশ

ছবি

‘অপারেশন ডেভিল হান্টের’ কারন ব্যাখ্যা করলেন স্বরাষ্ট্র সচিব

ছবি

‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরে অনার্স কোর্স, এক বছর ডিপ্লোমা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ’

ছবি

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ৫ প্রতিনিধি

ছবি

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে অচলাবস্থা, এজলাসে ওঠেননি বিচারক

ছবি

নির্বাচন কমিশনের বদনামের মূল কারণ রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ: সিইসি

ছবি

‘ডেভিল’ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন চলবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

tab

জাতীয়

ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভূমিমন্ত্রী

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই আজ একাত্তরের চেয়েও কঠিন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা যেখানে চলে গেছে তার বিরুদ্ধে লড়াই একাত্তরের চেয়েও কঠিন।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অনুষ্ঠানে আজ বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া) মিলনায়তনে ঐক্য পরিষদের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক শক্তিকে আজ ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ খোলা নেই।

তিনি বলেন, সরকারী দল নির্বাচনী ইশতেহারে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনে যে সব বাধা রয়েছে তা অবসানের অঙ্গীকার করেছে। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

অর্পিত সম্পত্তি আইনের বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে ‘প্রশাসনের নিম্নপর্যায়ে আন্তরিকতার অভাব’কে দায়ী করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেবোত্তর সম্পত্তি আইন সংক্রান্ত বিল প্রণীত হয়েছে। বর্তমানে তা আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আশা করা যায়, এ বিলটিকেও দ্রুত আইনে পরিণত করার জন্যে পার্লামেন্টে পেশ করা হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্যে জাতীয় পর্যায়ে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।

আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মেজবাহ কামাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারে ও দলে বঙ্গবন্ধু কন্যার অবস্থান ও তাঁর দলের অবস্থান এক নয়। স্বাধীনতার ইতিহাস যথার্থ অর্থে তুলে ধরার দায়িত্ব সরকারী দলকেই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে তাদের অনীহায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ক্রমশঃ পেছনের দিকে হটছে। দল ক্ষমতায় থাকলে বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিকর্মীদের কন্ঠস্বর রুদ্ধ থাকে। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের খপ্পর থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে তাঁদেরও দল ও সরকারকে পথ দেখাতে হবে।

ড. মেজবাহ কামাল শংকা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় টিকে থাকবে না কি আরেকটি পাকিস্তান তৈরি হবে- এ নিয়ে গোটা জাতি আজ দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে।

চৈতন্যের শক্তিকে জাগ্রত করার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপের পাশাপাশি তিনি সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

ঐক্য পরিষদের জন্মের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা না গেলে আজকে সংখ্যালঘুরা তাদের সমস্যা দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরতে পারত না এবং এরা হয় দেশ থেকে এতদিনে হারিয়ে যেতো নতুবা আরো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতো।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক সাম্প্রদায়িকতা, প্রশাসনিক সাম্প্রদায়িকতায় দেশ আজ ছেয়ে গেছে। তিনি সংখ্যালঘুদের তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লক্ষে অধিকতর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর জোর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ দেশের শতকরা ১০ ভাগ জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে রাজনীতির মাঠে নামার সময় এসেছে।

নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, সংবিধান ও রাজনীতির সাথে ধর্মকে যুক্ত করায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ পরিপুষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে, প্রশাসনে, সরকারে সাম্প্রদায়িকতা বিরাজ করছে। র্শিশুকাল থেকে ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ সরকারের আমলে পাঠ্যসূচীতে পরিবর্তন হয়েছে যাতে মৌলবাদীরা খুশি হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি বলবৎ করা গেলে দেশটা অন্ততঃ এক জায়গায় ফিরে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সাংসদ ও প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ক্ষয়িষ্ণু সম্প্রদায় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আবেদন-নিবেদন করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এর জন্য শক্তিশালী অবস্থান নিতে ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ থেকে সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগ করে না। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কেন করছে তা রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজকে বিবেচনায় নিতে হবে জাতীয় স্বার্থে। তিনি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, পার্বত্য শাস্তিচুক্তির বাস্তবায়নের জন্যে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

পংকজ নাথ এম.পি বলেন, ১০ শতাংশ সংখ্যালঘুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ থাকবে না। তিনি ইশতেহারে প্রদত্ত সংখ্যলঘু অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে জোরদার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

আদিবাসী নেতা, ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক এতে আলোচনায় অংশ নেন।

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত বলেন, মানবিক বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে রয়েছে তা মোকাবেলা করে শান্তি, সমৃদ্ধি, সম্প্রীতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।

back to top