গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ ২৮ জন। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৩ জন। এভাবে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৫৫ জন। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ১৪ জন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩৯ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩ জন। গত মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩১১ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৫ জন। গত এপ্রিল মাসে তীব্র দাবদাহের মধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫০৪ জন। তার মধ্যে মারা গেছেন ২ জন।
চলতি মে মাসের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৪১৯ জন। তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৯ জন। এভাবে ভর্তি ও আক্রান্তের সংখ্যা এখন বাড়ছে।
বৃষ্টি ও বর্তমান তাপমাত্রায় ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশার উপদ্রব আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে কীটতত্ত¡ বিশেষজ্ঞরা। তাই এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে গতকাল মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পরবর্তী করণীয় নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজও বৈঠক হতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
কীটতত্ত¡ বিশেষজ্ঞরা সংবাদকে জানান, বর্তমান তাপমাত্রা, আবহাওয়া ও বৃষ্টিতে ডেঙ্গু প্রজননের উপযোগী। এতে ডেঙ্গু ভাইরাস আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃত্যু আগের চেয়ে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তাদের মতে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যত দ্রুত সম্ভব প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যার যার বাড়ি ও আঙিনা তার তার পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এই লক্ষ্যে এখনই কাজ করতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে গতকাল দিনভর বিশেষজ্ঞদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আবার বৈঠক হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বৈঠকে করণীয় নিয়ে আলোচনা শেষে গাইডলাইন তৈরি করতে পারেন।
মহাখালী রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা ঠিকমত করা হচ্ছে না। যার কারণে নতুন করে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আবনতির দিকে যাচ্ছে। তাই এখন জনগণকে আরও সচেতন করে নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা (যেখানে পানি জমে থাকে) পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বৃষ্টি ও আদ্রতার কারণে ডেঙ্গুর জীবনচক্র পরিবর্তন হচ্ছে।
একটু বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে জমে থাকা পানিতে, রাস্তায় জমে থাকা পানিতে, ফুলের টবে পানিতে এডিস মশার প্রজনন ও বংশ বিস্তার ঘটছে। তাই মানব সৃষ্ট জঞ্জাল ও নির্মাণাধীন কনস্ট্রাকশনে যাতে পানি জমে না থাকে তার জন্য এখনই কাজ শুরু করতে হবে। আসছে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট ভাবে সমন্বয় করে কাজ করছে। অনেক দেশে আলাদা বিভাগ রয়েছে। তারা বছর জুড়ে এডিস মশা দমনে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে এডিস মশা ও কিউলেক্স মশা দমনে বছর জুড়ে আলাদা বিভাগ গঠন করে উন্নত মানের ওষুধ প্রয়োগ করলে মশার উপদ্রব কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মশার উপদ্রব কমলে হাসপাতালে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষকে যেতে হবে না। হাসপাতাল প্রস্তুতের দরকার নেই।
দরকার হলে রাজধানীতে থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। আর ডেঙ্গু রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা ও গাইডলাইন এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প চালু করে পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যমে চিকিৎসা করলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে শহরের পরিবেশ ও প্রতিবেশ কিংবা জীববৈচিত্র পরিবর্তন হয়েছে। ড্রেন পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন কমে গেছে। যেখানে সেখানে ময়লা ও বর্জ জমে দূষিত হচ্ছে, মশা জন্মাচ্ছে। এডিস মশা ছাড়াও কিউলেক্স মশার কামড়ে নগরবাসী অতিষ্ঠ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমিক) ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সংবাদকে জানান, সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বৃষ্টির পরপরই স্কুল, কলেজের আঙ্গিনায় জমে থাকা পানি পরিস্কার করতে হবে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। আর বয়স্করা আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরিমর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে।
সোমবার, ২০ মে ২০২৪
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ ২৮ জন। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৩ জন। এভাবে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৫৫ জন। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ১৪ জন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩৯ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩ জন। গত মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩১১ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৫ জন। গত এপ্রিল মাসে তীব্র দাবদাহের মধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫০৪ জন। তার মধ্যে মারা গেছেন ২ জন।
চলতি মে মাসের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৪১৯ জন। তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৯ জন। এভাবে ভর্তি ও আক্রান্তের সংখ্যা এখন বাড়ছে।
বৃষ্টি ও বর্তমান তাপমাত্রায় ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশার উপদ্রব আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে কীটতত্ত¡ বিশেষজ্ঞরা। তাই এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে গতকাল মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পরবর্তী করণীয় নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজও বৈঠক হতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
কীটতত্ত¡ বিশেষজ্ঞরা সংবাদকে জানান, বর্তমান তাপমাত্রা, আবহাওয়া ও বৃষ্টিতে ডেঙ্গু প্রজননের উপযোগী। এতে ডেঙ্গু ভাইরাস আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃত্যু আগের চেয়ে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তাদের মতে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যত দ্রুত সম্ভব প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যার যার বাড়ি ও আঙিনা তার তার পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এই লক্ষ্যে এখনই কাজ করতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে গতকাল দিনভর বিশেষজ্ঞদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আবার বৈঠক হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বৈঠকে করণীয় নিয়ে আলোচনা শেষে গাইডলাইন তৈরি করতে পারেন।
মহাখালী রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা ঠিকমত করা হচ্ছে না। যার কারণে নতুন করে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আবনতির দিকে যাচ্ছে। তাই এখন জনগণকে আরও সচেতন করে নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা (যেখানে পানি জমে থাকে) পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বৃষ্টি ও আদ্রতার কারণে ডেঙ্গুর জীবনচক্র পরিবর্তন হচ্ছে।
একটু বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে জমে থাকা পানিতে, রাস্তায় জমে থাকা পানিতে, ফুলের টবে পানিতে এডিস মশার প্রজনন ও বংশ বিস্তার ঘটছে। তাই মানব সৃষ্ট জঞ্জাল ও নির্মাণাধীন কনস্ট্রাকশনে যাতে পানি জমে না থাকে তার জন্য এখনই কাজ শুরু করতে হবে। আসছে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট ভাবে সমন্বয় করে কাজ করছে। অনেক দেশে আলাদা বিভাগ রয়েছে। তারা বছর জুড়ে এডিস মশা দমনে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে এডিস মশা ও কিউলেক্স মশা দমনে বছর জুড়ে আলাদা বিভাগ গঠন করে উন্নত মানের ওষুধ প্রয়োগ করলে মশার উপদ্রব কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মশার উপদ্রব কমলে হাসপাতালে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষকে যেতে হবে না। হাসপাতাল প্রস্তুতের দরকার নেই।
দরকার হলে রাজধানীতে থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। আর ডেঙ্গু রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা ও গাইডলাইন এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প চালু করে পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যমে চিকিৎসা করলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে শহরের পরিবেশ ও প্রতিবেশ কিংবা জীববৈচিত্র পরিবর্তন হয়েছে। ড্রেন পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন কমে গেছে। যেখানে সেখানে ময়লা ও বর্জ জমে দূষিত হচ্ছে, মশা জন্মাচ্ছে। এডিস মশা ছাড়াও কিউলেক্স মশার কামড়ে নগরবাসী অতিষ্ঠ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমিক) ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সংবাদকে জানান, সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বৃষ্টির পরপরই স্কুল, কলেজের আঙ্গিনায় জমে থাকা পানি পরিস্কার করতে হবে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। আর বয়স্করা আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরিমর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে।