alt

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় রিমাল

এখনো বিদ্যুৎহীন ৬০ লাখের বেশী গ্রাহক

# এদের ৯০ ভাগ বুধবার সকালের মধ্যেই বিদ্যুৎ পাবেন, আশ্বাস বিদ্যুৎ বিভাগের #অবশিষ্টদের বিদ্যুৎ পেতে সময় লাগবে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

https://sangbad.net.bd/images/2024/May/28May24/news/Tusar-Sangbad-28.05.2024%20%281%29.jpg

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৬০ লাখের বেশী গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন আছেন। দ্রুত এসব সংযোগ চালু করতে কাজ করছে আরইবি, ওজোপাডিকোসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

ওই ঝড়ের তাণ্ডবে দেশের তিন কোটির বেশী গ্রাহক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রাহককে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত ১০টার মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০ টার মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহককে পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/May/28May24/news/Tusar-Sangbad-28.05.2024%20%282%29.jpg

সংবাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর এবং বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ি, উপকূলীয় জেলাগুলোতে সোমবার (২৭ মে) ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায়, কোথাও তার (বিতরণ লাইন) ছিঁড়ে যাওয়ায় আবার কোথায় সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন তিন কোটিরও বেশী গ্রাহক। ঝড় চলাকালে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। ঝড়ের গতি কমে আসর পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ লাইন মেরামতে এরমধ্যে অনেক এলাকায় কাজ শুরু হয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত পৌনে ৮টার দিকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আরইবির তিন কোটি তিন লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ২ কোটি ৪২ লাখ গ্রাহকের পুনঃসংযোগ প্রদান করা হয়।’ মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতের মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং বুধবার সকালের মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহকের পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আরইবির সংযোগ বিচ্ছিন্ন তিন কোটি তিন লাখের বেশি গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭২ লাখ সংযোগ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সে হিসেবে, ১ কোটি ৩১ লাখ গ্রাহকের সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন।

বুধবার (২৯ মে) পর্যন্ত অন্তত ৮০ শতাংশ গ্রাহককে সংযোগের আওতায় আনা গেলেও অবশিষ্ট গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেরামতের কাজ করতে হবে বলে তাদের বিদ্যুৎ পেতে সময় বেশী লাগবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

দেশের অধিকাংশ গ্রামে ৮০টি সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার সব সংযোগ ফিরিয়ে আনতে আরইবির ঠিকাদার, নিজস্ব জনবলসহ ৩০ হাজারের বেশি কর্মী মাঠে কাজ করছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে আরইবির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৬টি জেলার ২০টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।

সরকারি এই বিতরণ কোম্পানির ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৪ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ১৪ লাখ ৩ হাজার ৫২৬ জন গ্রাহক এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ। ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ জন গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। এই ঘূর্ণিঝড়ে ওজোপাডিকোর ৫ কোটি ৭ লাখ ৮১ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সোমবার (২৭ মে) বিকেলে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয় তাতে ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠে। ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাথমিক যে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়, তাতে দেখা যায় ৩০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভৌগলিক এলাকায় ২৩৯২টি পোল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ট্রান্সফরমার বিকল হয় ১৯৮২টি। ইন্সুলেটর ভেঙে যায় ২১৮৪৮টি। ৬২৪৫৪টি স্থানে বিতরণ লাইন (তার) ছিড়ে যায়। মিটার বিকল হয় ৪৬৩১৮টি।

স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে দুদিন পরেও গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানো যায়নি। প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছে। গত দুইদিন বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ মোবাইল ফোন চার্জ করতে পারছেন না, ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও মোবাইল, ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগেরহাট কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সুশান্ত রায় মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে তারের উপর গাছপালা উপড়ে এবং সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে পল্লী বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেড় হাজারের বেশি গাছপালা উপড়ে ৭০২টি পয়েন্টে তার ছিঁড়ে পড়েছে। ১৩০টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে গেছে, ৩৫টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে, ৩৯৪টি মিটার ভেঙে গেছে।’

সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা জানান, অনেক এলাকায় সড়কের বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে আছে, তার ছিঁড়ে ঝুলে সড়কের উপর পড়ে রয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে পল্লী বিদ্যুতের লাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন। তাতে পুরো জেলার বিদ্যুৎ পৌঁছতে বেশ কয়েকদিন লাগবে বলে মনে করছেন গ্রাহকরা।

একই অবস্থা উপকূলীয় শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলাতে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন শ্রমিক নিয়ে তারের উপরে পড়ে থাকা গাছপালা কেটে সরাচ্ছেন।

জেলার নয় উপজেলাসহ খুলনার কিছু অংশ নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এই বিভাগের অধীনে চার লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।

তারা কবে বিদ্যুৎ পাবেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সুশান্ত রায় বলেন, ‘শত শত শ্রমিক জেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। যেসব এলাকাতে কম ক্ষতি হয়েছে সেসব এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় বিদ্যুৎ চালু করা হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেক এলাকায় মোবাইল ফোন চার্জ দিতে জেনারেটর ভাড়া দেয় এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভিড় করছেন স্থানীয়রা। প্রতিটি মোবাইল পূর্ণ চার্জ দিতে জেনারেটর মালিক ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

খোঁজ-খবর নিচ্ছি, সত্য বেরিয়ে আসবে : কাদের

ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে নাশকতায় ক্ষতি প্রায় ৩৪ কোটি টাকা

মেট্রোরেল বন্ধে ভোগান্তিতে ৬ লাখ মানুষ

ছবি

অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী

কোটা আন্দোলন: সিলেটে ৩৮ শিক্ষার্থীকে বিস্ফোরক মামলায় শোন অ্যারেস্ট

বিএনপি জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল -মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী

বেরোবির উপাচার্যের বাসভবনে আক্রমন-আগুন, যেভাবে উদ্ধার হলেন অবরুদ্ধ ২০ জন

ছবি

আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল

ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল রেল কর্তৃপক্ষ

ছবি

হামলা, ধ্বংসযজ্ঞের বিচারের ভার জনগণকে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

‘আমার সব শেষ’, ‘বাড়িতেও নিরাপদ না মানুষ?’

গুগলের ক্যাশ সার্ভার চালুর নির্দেশনা বিটিআরসি’র

ভিন্নমত ও দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অপরাধ নয়, সাংবিধানিক অধিকার: টিআইবি

৩-৪ দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চাঁদপুর থেকে সীমিত পরিসরে লঞ্চ চলাচল শুরু

ছবি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধই থাকছে প্রাথমিক বিদ্যালয়

ছবি

মহাখালী থেকে ছাড়ছে দূরপাল্লার বাস

ছবি

কয়েকদিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পাঁচ দিন পর খুললো অফিস

কোটা সংস্কার ও তাদের দাবি নিয়ে যা বললো সমন্বয়করা

ছবি

সব গ্রেডে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন

সীমিত পরিসরে সারাদেশে চালু হয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট

সাভারে পুলিশ-ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

আলোচনার পথ খোলা আছে, আন্দোলনকারীদের ঘোষণা

লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ১৪৪ বাংলাদেশী

ছবি

শিক্ষার্থীরা যখন চায় তখনই আলোচনাঃ আইনমন্ত্রী

ছবি

বেরোবি শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কমিটি

ছবি

এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় : চীনা রাষ্ট্রদূত

ছবি

বাড়তি ভাড়া রিকশা-সিএনজিতে, ভরসা মেট্রোরেল-বিআরটিসি

ছবি

ঢাকাসহ সারা দেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পুলিশে হামলায় রণক্ষেত্র, হতাহত দুই শতাধিক

ছবি

কোটা আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, ঢাবি হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা, থমথমে পরিবেশ

ছবি

বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, আদালতের রায়ের জন্য ধৈর্য্যের আহ্বান

ছবি

জবি : ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে ২ ঘন্টার আল্টিমেটাম

ছবি

সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা

ছবি

ঢাবির ১৮ হল থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগ, দখলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

tab

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় রিমাল

এখনো বিদ্যুৎহীন ৬০ লাখের বেশী গ্রাহক

# এদের ৯০ ভাগ বুধবার সকালের মধ্যেই বিদ্যুৎ পাবেন, আশ্বাস বিদ্যুৎ বিভাগের #অবশিষ্টদের বিদ্যুৎ পেতে সময় লাগবে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

https://sangbad.net.bd/images/2024/May/28May24/news/Tusar-Sangbad-28.05.2024%20%281%29.jpg

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৬০ লাখের বেশী গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন আছেন। দ্রুত এসব সংযোগ চালু করতে কাজ করছে আরইবি, ওজোপাডিকোসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।

ওই ঝড়ের তাণ্ডবে দেশের তিন কোটির বেশী গ্রাহক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রাহককে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত ১০টার মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০ টার মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহককে পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

https://sangbad.net.bd/images/2024/May/28May24/news/Tusar-Sangbad-28.05.2024%20%282%29.jpg

সংবাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর এবং বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ি, উপকূলীয় জেলাগুলোতে সোমবার (২৭ মে) ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায়, কোথাও তার (বিতরণ লাইন) ছিঁড়ে যাওয়ায় আবার কোথায় সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন তিন কোটিরও বেশী গ্রাহক। ঝড় চলাকালে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। ঝড়ের গতি কমে আসর পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ লাইন মেরামতে এরমধ্যে অনেক এলাকায় কাজ শুরু হয়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত পৌনে ৮টার দিকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা আরইবির তিন কোটি তিন লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ২ কোটি ৪২ লাখ গ্রাহকের পুনঃসংযোগ প্রদান করা হয়।’ মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতের মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং বুধবার সকালের মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহকের পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আরইবির সংযোগ বিচ্ছিন্ন তিন কোটি তিন লাখের বেশি গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৭২ লাখ সংযোগ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সে হিসেবে, ১ কোটি ৩১ লাখ গ্রাহকের সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন।

বুধবার (২৯ মে) পর্যন্ত অন্তত ৮০ শতাংশ গ্রাহককে সংযোগের আওতায় আনা গেলেও অবশিষ্ট গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেরামতের কাজ করতে হবে বলে তাদের বিদ্যুৎ পেতে সময় বেশী লাগবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

দেশের অধিকাংশ গ্রামে ৮০টি সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার সব সংযোগ ফিরিয়ে আনতে আরইবির ঠিকাদার, নিজস্ব জনবলসহ ৩০ হাজারের বেশি কর্মী মাঠে কাজ করছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে আরইবির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৬টি জেলার ২০টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।

সরকারি এই বিতরণ কোম্পানির ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৫৪ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ১৪ লাখ ৩ হাজার ৫২৬ জন গ্রাহক এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ। ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ জন গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। এই ঘূর্ণিঝড়ে ওজোপাডিকোর ৫ কোটি ৭ লাখ ৮১ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সোমবার (২৭ মে) বিকেলে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয় তাতে ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠে। ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাথমিক যে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়, তাতে দেখা যায় ৩০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভৌগলিক এলাকায় ২৩৯২টি পোল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ট্রান্সফরমার বিকল হয় ১৯৮২টি। ইন্সুলেটর ভেঙে যায় ২১৮৪৮টি। ৬২৪৫৪টি স্থানে বিতরণ লাইন (তার) ছিড়ে যায়। মিটার বিকল হয় ৪৬৩১৮টি।

স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে দুদিন পরেও গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানো যায়নি। প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছে। গত দুইদিন বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ মোবাইল ফোন চার্জ করতে পারছেন না, ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও মোবাইল, ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাগেরহাট কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সুশান্ত রায় মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে তারের উপর গাছপালা উপড়ে এবং সঞ্চালন লাইন ছিঁড়ে পল্লী বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেড় হাজারের বেশি গাছপালা উপড়ে ৭০২টি পয়েন্টে তার ছিঁড়ে পড়েছে। ১৩০টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে গেছে, ৩৫টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে, ৩৯৪টি মিটার ভেঙে গেছে।’

সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা জানান, অনেক এলাকায় সড়কের বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে আছে, তার ছিঁড়ে ঝুলে সড়কের উপর পড়ে রয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে পল্লী বিদ্যুতের লাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন। তাতে পুরো জেলার বিদ্যুৎ পৌঁছতে বেশ কয়েকদিন লাগবে বলে মনে করছেন গ্রাহকরা।

একই অবস্থা উপকূলীয় শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল উপজেলাতে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন শ্রমিক নিয়ে তারের উপরে পড়ে থাকা গাছপালা কেটে সরাচ্ছেন।

জেলার নয় উপজেলাসহ খুলনার কিছু অংশ নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এই বিভাগের অধীনে চার লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।

তারা কবে বিদ্যুৎ পাবেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সুশান্ত রায় বলেন, ‘শত শত শ্রমিক জেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। যেসব এলাকাতে কম ক্ষতি হয়েছে সেসব এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা করছি। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় বিদ্যুৎ চালু করা হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেক এলাকায় মোবাইল ফোন চার্জ দিতে জেনারেটর ভাড়া দেয় এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভিড় করছেন স্থানীয়রা। প্রতিটি মোবাইল পূর্ণ চার্জ দিতে জেনারেটর মালিক ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

back to top