ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)-এর পক্ষ থেকে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে সুদের হার ৮.৫% বৃদ্ধি করে কঠোর মুদ্রানীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হার যথাক্রমে ১০% এবং ৭% নির্ধারণ করা হয়েছে; যাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা যায়। এছাড়াও, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনশীলতা ২০% এবং শিল্প উৎপাদন ১৫% বাড়ানোর জন্য উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষা করবে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট করহার নগদ লেনদেনের শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ২৭.৫ শতাংশ হতে ২,৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কর হার হ্রাসের প্রস্তাব বেসরকারী বিনোয়োগ উৎসাহিত করবে আশা করা যায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে করের আওতা ২৫% বৃদ্ধি, ইলেকট্রনিক ফিস্কাল ডিভাইস প্রবর্তন এবং কর সংগ্রহকে সহজতর করতে এবং খরচ কমাতে ই-পেমেন্ট সিস্টেম প্রচার করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। করদাতাদের সংখ্যা ২ মিলিয়ন থেকে ২.৫ মিলিয়ন বাড়ানোর আশা করা হচ্ছে, যা একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করবে এবং কর ব্যবস্থার পূর্বানুমানযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। সরাসরি কর বৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিক ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স (ই-টিডিএস) সিস্টেম প্রয়োগের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট কর প্রতিপালন এবং কর ফাঁকি হ্রাস করার লক্ষ্য রাখে।
তবে, প্রস্তাবিত বাজেটে কর, ভ্যাট এবং কাস্টমস প্রশাসনের অটোমেশনের জন্য কোনও বরাদ্দ বা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এই ধরনের সংস্কারের অভাবে ভ্যাট ক্রেডিট সম্পর্কিত জটিলতা এবং ব্যবসার উপর সম্ভাব্য আর্থিক চাপ অব্যাহত থাকবে। ভ্যাট প্রক্রিয়াগুলো সরল করতে এবং ব্যবসায়সমূহের উপর প্রশাসনিক বোঝা কমাতে ধারাবাহিক সংস্কার প্রয়োজন।
বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় উচ্চতর বরাদ্দ সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিকে আরও সুদৃঢ় করবে। স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৮% এবং শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ১২% বরাদ্দ করা হয়েছে। যার ফলে দেশে একটি দক্ষ ও স্বাস্থ্যবান জনগোষ্ঠী তৈরি হবে; যাহা একটি দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে ১০% এবং শিক্ষা খাতে ১৫% বরাদ্দ করা হলে বর্তমান সময়ের চাহিদাসমূহ মেটাতে এবং মানসম্পন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
তাছাড়া, কর প্রশাসনের দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর ডিজিটালাইজেশনের জন্য সম্পদ বরাদ্দ অপরিহার্য। এই উদ্দেশ্যে ৫০০ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত তথ্য বিশ্লেষণ, ইলেকট্রনিক কর ফাইলিং সিস্টেম এবং করদাতাদের জন্য উন্নত ডিজিটাল ইন্টারফেস বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ডিজিটাল রূপান্তর বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমান ৮% থেকে ১০% বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।
উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সর্বাধিক কর হার ২৫% থেকে ৩০% বৃদ্ধি একটি আরও প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা তৈরি করে, যা ন্যায্য কর নিশ্চিত করে। তবে, এটি ডিসপোজেবল আয় হ্রাস করবে, যার ফলে ব্যয় এবং সঞ্চয়ে প্রভাব পড়বে। মুদ্রাস্ফীতির জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা সামঞ্জস্য না করলে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদের উপর আর্থিক চাপ বাড়তে পারে।
এফআইসিসিআই কাস্টমস অ্যাক্ট ২০২৩ প্রবর্তনকে স্বাগত জানায়, কিন্তু ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে এই আইন সঠিকভাবে কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)-এর পক্ষ থেকে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে সুদের হার ৮.৫% বৃদ্ধি করে কঠোর মুদ্রানীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হার যথাক্রমে ১০% এবং ৭% নির্ধারণ করা হয়েছে; যাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা যায়। এছাড়াও, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনশীলতা ২০% এবং শিল্প উৎপাদন ১৫% বাড়ানোর জন্য উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষা করবে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট করহার নগদ লেনদেনের শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ২৭.৫ শতাংশ হতে ২,৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কর হার হ্রাসের প্রস্তাব বেসরকারী বিনোয়োগ উৎসাহিত করবে আশা করা যায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে করের আওতা ২৫% বৃদ্ধি, ইলেকট্রনিক ফিস্কাল ডিভাইস প্রবর্তন এবং কর সংগ্রহকে সহজতর করতে এবং খরচ কমাতে ই-পেমেন্ট সিস্টেম প্রচার করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। করদাতাদের সংখ্যা ২ মিলিয়ন থেকে ২.৫ মিলিয়ন বাড়ানোর আশা করা হচ্ছে, যা একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করবে এবং কর ব্যবস্থার পূর্বানুমানযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। সরাসরি কর বৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিক ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স (ই-টিডিএস) সিস্টেম প্রয়োগের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট কর প্রতিপালন এবং কর ফাঁকি হ্রাস করার লক্ষ্য রাখে।
তবে, প্রস্তাবিত বাজেটে কর, ভ্যাট এবং কাস্টমস প্রশাসনের অটোমেশনের জন্য কোনও বরাদ্দ বা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি। এই ধরনের সংস্কারের অভাবে ভ্যাট ক্রেডিট সম্পর্কিত জটিলতা এবং ব্যবসার উপর সম্ভাব্য আর্থিক চাপ অব্যাহত থাকবে। ভ্যাট প্রক্রিয়াগুলো সরল করতে এবং ব্যবসায়সমূহের উপর প্রশাসনিক বোঝা কমাতে ধারাবাহিক সংস্কার প্রয়োজন।
বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় উচ্চতর বরাদ্দ সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিকে আরও সুদৃঢ় করবে। স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৮% এবং শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ১২% বরাদ্দ করা হয়েছে। যার ফলে দেশে একটি দক্ষ ও স্বাস্থ্যবান জনগোষ্ঠী তৈরি হবে; যাহা একটি দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে ১০% এবং শিক্ষা খাতে ১৫% বরাদ্দ করা হলে বর্তমান সময়ের চাহিদাসমূহ মেটাতে এবং মানসম্পন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
তাছাড়া, কর প্রশাসনের দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর ডিজিটালাইজেশনের জন্য সম্পদ বরাদ্দ অপরিহার্য। এই উদ্দেশ্যে ৫০০ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত তথ্য বিশ্লেষণ, ইলেকট্রনিক কর ফাইলিং সিস্টেম এবং করদাতাদের জন্য উন্নত ডিজিটাল ইন্টারফেস বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ডিজিটাল রূপান্তর বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমান ৮% থেকে ১০% বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।
উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সর্বাধিক কর হার ২৫% থেকে ৩০% বৃদ্ধি একটি আরও প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা তৈরি করে, যা ন্যায্য কর নিশ্চিত করে। তবে, এটি ডিসপোজেবল আয় হ্রাস করবে, যার ফলে ব্যয় এবং সঞ্চয়ে প্রভাব পড়বে। মুদ্রাস্ফীতির জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা সামঞ্জস্য না করলে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদের উপর আর্থিক চাপ বাড়তে পারে।
এফআইসিসিআই কাস্টমস অ্যাক্ট ২০২৩ প্রবর্তনকে স্বাগত জানায়, কিন্তু ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে এই আইন সঠিকভাবে কার্যকর করা সম্ভব হবে না।