অর্থবরাদ্ধ সংকটের কারণে সারাদেশে পুলিশের ৬৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এরমধ্যে পুলিশের অফিস ভবন, থানা ভবন ও তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, ফাঁড়ি নির্মাণ ও আবাসিক কোয়াটার্সসহ অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজ রয়েছে। এই সব কাজ সমাপ্ত করতে ৮৬৫ কোটির বেশি টাকার দরকার।
চলমান অর্থবছরে এই সব খাতের জন্য ইতোমধ্যে ১৩২ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ছাড় করনো সম্ভব হয়েছে।
অথচ সারাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পুলিশের কাছে পাওনা আছে ২১৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্র গুলো জানায়, পুলিশের উন্নয়ন মূলক কাজের বিভিন্ন প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পড়ে আছে। কারণে অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। আর কিছু প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানোর কথা কিছু পাঠানো হচ্ছে না।
সূত্রগুলো জানায়, সারাদেশে ৬৬৪টি থানা, ২৮৬টি সার্কেল অফিস, ২১৫টি তদন্ত কেন্দ্র, ৫৫৯টি ফাঁড়ি ও ১৬৭টি পুলিশ ক্যাম্প আছে। এরমধ্যে প্রতন্ত অঞ্চলের বহু ফাঁড়ি ও তদন্ত কেন্দ্র বহু বছরের পুরনো। যার মধ্যে অনেক ভবন জরাজীর্ণ। ওই সব ভবন ও তদন্ত কেন্দ্রে পুলিশ ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
আবার বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশে বিভাগ ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে জনবল, বাড়ছে বিশেষায়িত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটও।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে সারাদেশে পুলিশের জনবলে সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি। জনবল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অফিসারের সংখ্যা বাড়ছে। সেই অনুপাতে কাঠামোগত তেমন উন্নয়ন হয়নি।
বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমন, মামলা তদন্ত, মানবপাচার প্রতিরোধ, নদী পথের নিরাপত্তাসহ সর্বস্তরের আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে নতুন নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সেই অনুপাতে উন্নয়ন ও সংস্কার ঝিমিয়ে পড়েছে।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কম সময়ে, কম জনবল ও অস্ত্র দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন ও জঙ্গিদের আস্তানা গুড়ে দেয়া হয়েছে। জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। বহু জঙ্গির ইতোমধ্যে সাজাও হয়েছে। এত কম সময়ে জঙ্গিবাদ দমনের রেকর্ড বিশ্বের অনেক দেশে নেই। সেখানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফল হয়েছে।
পাশাপাশি বর্তমানে অপরাধের ধরন পাল্টে গেছে। অপরাধীরা আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। তারা সাইবার অপরাধ করছে। এই সব সাইবার অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে আরও আধুনিকায়ন করার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করছেন। কিন্ত নানা কারণে পুলিশের অফিস, ব্যারাক, ফাঁড়ি, আবাসিক কোয়াটারসহ অন্যান্য স্থাপনার জন্য বর্তমান সরকারের আমলে নেয়া প্রকল্প গুলোর চলমান কাজ করতে গিয়ে পুলিশ অর্থ সংকটে পড়েছে।
মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, শুধু পুলিশের জরাজীর্ণ ভবনই সংস্কার নয়। পুলিশের যানবাহনের চরম অভাব রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের কারণে সড়ক ও মহাসড়কে অপরাধ দমন কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক পুরনো যানবাহন মেরামত করে পুলিশের টহল দিতে হয়।
মহাসড়কে অপরাধীরা ব্যবহার করছেন অত্যাধুনিক যানবাহন। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করছে অপরাধীরা। আর পুলিশ ব্যবহার করছে কম গতির নড়বড়ে গাড়ি। যা নিয়ে অপরাধীদের পিছু ধাওয়া করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের পর্যাপ্ত যানবাহন সংকট রয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে এক দিকে জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার করা যাচ্ছে না। অন্য দিকে যানবাহনের অভাবে পুলিশের টহলও জোরদার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে শেষ করা বিভিন্ন কাজের বকেয়া টাকার জন্য ঠিকাদার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতিনিয়ম পুলিশ হেডকোয়াটার্সসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে যোগাযোগ করছেন। বরাদ্ধের অভাবে তাদের টাকাও পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র আরও জানায়, পুলিশের বিভিন্ন ব্যাটলিয়ন ও ট্রেনিং সেন্টার গুলোতে অর্থ সংকটের কারণে অনেক নতুন নতুন ট্রেনিং করা কষ্টকর। সেখানে আধুনিক অস্ত্র প্রশিক্ষণ, কমান্ডো প্রশিক্ষণ, জঙ্গিবাদ দমনে প্রশিক্ষণের দরকার।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, থানা ভবন নির্মাণ, ব্যারাক নির্মাণের প্রস্তাবসহ উন্নয়ন মূলক অনেক প্রস্তাব স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে একনেকে পাঠানোর কথা। কিন্তু নানা কারণে তা পাঠানো হচ্ছে না। য়ার ফলে সরকারের উন্নয়নের অনেক কাজ মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর অর্থ সংকট কাটিয়ে উঠতে অর্থ বরাদ্ধ বাড়ানো দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
অর্থবরাদ্ধ সংকটের কারণে সারাদেশে পুলিশের ৬৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এরমধ্যে পুলিশের অফিস ভবন, থানা ভবন ও তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, ফাঁড়ি নির্মাণ ও আবাসিক কোয়াটার্সসহ অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজ রয়েছে। এই সব কাজ সমাপ্ত করতে ৮৬৫ কোটির বেশি টাকার দরকার।
চলমান অর্থবছরে এই সব খাতের জন্য ইতোমধ্যে ১৩২ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা ছাড় করনো সম্ভব হয়েছে।
অথচ সারাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পুলিশের কাছে পাওনা আছে ২১৯ দশমিক ৮০ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্র গুলো জানায়, পুলিশের উন্নয়ন মূলক কাজের বিভিন্ন প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পড়ে আছে। কারণে অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। আর কিছু প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য একনেকে পাঠানোর কথা কিছু পাঠানো হচ্ছে না।
সূত্রগুলো জানায়, সারাদেশে ৬৬৪টি থানা, ২৮৬টি সার্কেল অফিস, ২১৫টি তদন্ত কেন্দ্র, ৫৫৯টি ফাঁড়ি ও ১৬৭টি পুলিশ ক্যাম্প আছে। এরমধ্যে প্রতন্ত অঞ্চলের বহু ফাঁড়ি ও তদন্ত কেন্দ্র বহু বছরের পুরনো। যার মধ্যে অনেক ভবন জরাজীর্ণ। ওই সব ভবন ও তদন্ত কেন্দ্রে পুলিশ ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
আবার বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশে বিভাগ ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে জনবল, বাড়ছে বিশেষায়িত পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটও।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে সারাদেশে পুলিশের জনবলে সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি। জনবল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অফিসারের সংখ্যা বাড়ছে। সেই অনুপাতে কাঠামোগত তেমন উন্নয়ন হয়নি।
বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দমন, মামলা তদন্ত, মানবপাচার প্রতিরোধ, নদী পথের নিরাপত্তাসহ সর্বস্তরের আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে নতুন নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সেই অনুপাতে উন্নয়ন ও সংস্কার ঝিমিয়ে পড়েছে।
কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, কম সময়ে, কম জনবল ও অস্ত্র দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন ও জঙ্গিদের আস্তানা গুড়ে দেয়া হয়েছে। জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। বহু জঙ্গির ইতোমধ্যে সাজাও হয়েছে। এত কম সময়ে জঙ্গিবাদ দমনের রেকর্ড বিশ্বের অনেক দেশে নেই। সেখানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফল হয়েছে।
পাশাপাশি বর্তমানে অপরাধের ধরন পাল্টে গেছে। অপরাধীরা আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। তারা সাইবার অপরাধ করছে। এই সব সাইবার অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে আরও আধুনিকায়ন করার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করছেন। কিন্ত নানা কারণে পুলিশের অফিস, ব্যারাক, ফাঁড়ি, আবাসিক কোয়াটারসহ অন্যান্য স্থাপনার জন্য বর্তমান সরকারের আমলে নেয়া প্রকল্প গুলোর চলমান কাজ করতে গিয়ে পুলিশ অর্থ সংকটে পড়েছে।
মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, শুধু পুলিশের জরাজীর্ণ ভবনই সংস্কার নয়। পুলিশের যানবাহনের চরম অভাব রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের কারণে সড়ক ও মহাসড়কে অপরাধ দমন কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক পুরনো যানবাহন মেরামত করে পুলিশের টহল দিতে হয়।
মহাসড়কে অপরাধীরা ব্যবহার করছেন অত্যাধুনিক যানবাহন। প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করছে অপরাধীরা। আর পুলিশ ব্যবহার করছে কম গতির নড়বড়ে গাড়ি। যা নিয়ে অপরাধীদের পিছু ধাওয়া করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশের পর্যাপ্ত যানবাহন সংকট রয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে এক দিকে জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার করা যাচ্ছে না। অন্য দিকে যানবাহনের অভাবে পুলিশের টহলও জোরদার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে শেষ করা বিভিন্ন কাজের বকেয়া টাকার জন্য ঠিকাদার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতিনিয়ম পুলিশ হেডকোয়াটার্সসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে যোগাযোগ করছেন। বরাদ্ধের অভাবে তাদের টাকাও পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র আরও জানায়, পুলিশের বিভিন্ন ব্যাটলিয়ন ও ট্রেনিং সেন্টার গুলোতে অর্থ সংকটের কারণে অনেক নতুন নতুন ট্রেনিং করা কষ্টকর। সেখানে আধুনিক অস্ত্র প্রশিক্ষণ, কমান্ডো প্রশিক্ষণ, জঙ্গিবাদ দমনে প্রশিক্ষণের দরকার।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, থানা ভবন নির্মাণ, ব্যারাক নির্মাণের প্রস্তাবসহ উন্নয়ন মূলক অনেক প্রস্তাব স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে একনেকে পাঠানোর কথা। কিন্তু নানা কারণে তা পাঠানো হচ্ছে না। য়ার ফলে সরকারের উন্নয়নের অনেক কাজ মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর অর্থ সংকট কাটিয়ে উঠতে অর্থ বরাদ্ধ বাড়ানো দরকার বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।