alt

জাতীয়

তারেককে ‘অচিরেই’ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

আইনি জটিলতা থাকলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজার মুখোমুঝি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, অর্থ পাচারসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা আছে। তবে সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়াতেই নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একই সঙ্গে চলমান রয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হব।’

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মাওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বাংলাদেশে তিনি মারা গেছেন এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে। এ ছাড়া পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছেন, সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’

খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে তিনি সংসদকে জানান। তিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্যক্তিগত সহযোগিতাও কামনা করেছেন বলে জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।

জিয়া খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে সই করতেন

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির চেয়ারে নিজেকে আজীবন আসীন করে রাখার বাসনা নিয়ে আইয়ুব খানের অনুকরণে সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেন। তিনি যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, তেমনি অবৈধভাবে বিএনপি সৃষ্টি করেন। খুনি জিয়া তো রক্তাক্ত হাতেই খাবার খেতে বসতেন এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঢাকা নগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবু জিয়ার আমলে গুম হয়ে যায়, জিয়ার পেটোয়া বাহিনীর হাতে নিহত হন চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দ, যুবলীগের মুনিরসহ আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী।

জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনে এবং স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজ ও আলীমকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করত না। জিয়ার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসন আমলে ২১টি ক্যু/পাল্টা ক্যু হয়। লে. কর্নেল তাহেরকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে জিয়া অত্যন্ত হিংস্র ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।

অ্যান্টনি মাসকারেনাহাসের ‘বাংলাদেশ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাসকারেনাহাস তার বইয়ে লিখেছেন, ‘সরকারি হিসাবমতে জিয়া ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১ হাজার ১৪৩ জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন।’

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যার পর জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। ইতিহাসের এই ঘৃণ্যতম হত্যাকা-ে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। খুনি ফারুক-রশিদরা আগে থেকেই জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন, যেটা জিয়া জানতেন।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের পাশাপাশি বিরোধী দলে গিয়ে তাদের জ্বালাও-পোড়াওয়ের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।

রাশিয়া-চীন-ভারতসহ উন্নত দেশ থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে

সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক ও ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে; যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর জন্য যেসব উন্নত সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে- কাসা ইউটিলিটি বিমান, ডলফিন ইউরোকপ্টার, ডায়মন্ড প্রশিক্ষণ বিমান, এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, ভিটি-ফাইভ লাইট ট্যাংক, আর্মার্ড রিকভারি ভেহিক্যাল, সেলফ প্রপেল্ড (এসপি) কামান, অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, মাইন-রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রোটেক্টেড ভেহিক্যাল, আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল, সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার, রাডার কন্ট্রোল এয়ার ডিফেন্স গান সিস্টেম, নাইট ভিশন মনোকুলার, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, আধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামাদি উল্লেখযোগ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষার বিষয়ে সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, ক্যাসল ক্লাস জাহাজ, ফ্রিগেড, করভেট, সমুদ্র জরিপ জাহাজ, লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ার ক্রাফট এবং মেরিটাইম হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক নৌযুদ্ধ সরঞ্জাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে। একই সঙ্গে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ডাইভিং বোট, ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি, রিমোট কন্ট্রোল গান, আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম ইত্যাদিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেটওয়ার্ক হাব স্টেশন, টেকটিকেল ফায়ারিং রেঞ্জ, লং রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স ও সার্ভিলেন্স রাডার, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আইএফএফ সেন্টার গঠনের প্রক্রিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন যুগোপযোগী কার্যক্রম অব্যাহত আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য এমআই জি-২৯, ইয়াক-১৩০ এবং এফ-৭ বিজি-১ যুদ্ধ বিমান, সি-১৩০ জে এবং কে-৮ বিমান, এমআই১৭১ হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করা হয়েছে। এ সকল আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আজ একটি আধুনিক ও চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

ছবি

বিডিনগের অষ্টাদশ সম্মেলনের রেজিস্ট্রেশন চলছে

শরীফার গল্প বাদ দেওয়া ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’: ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

ছবি

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য না থাকায় গাজায় অমানবিক ঘটনা ঘটছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

জাতিসংঘ পুলিশে অবদান রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

সব হাসপাতালে রাসেল’স ভাইপারের অ্যান্টিভেনম আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান, এপিএ স্বাক্ষর ও মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে আম ইলিশ মিষ্টি পাঠালেন

ছবি

আমাদের চাঁদেও যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বছরে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ট্যাক্সি ও মোটরসাইকেল চালক নেবে দুবাই

ছবি

হজে গিয়ে ৫১ বাংলাদেশির মৃত্যু

পুলিশের ৬৯৫টি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

ছবি

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: শেখ হাসিনা

ছবি

বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই ভারতের সাথে সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

দায়িত্বহীনতার কারণে সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ হাতিয়ে নিয়েছে ভারত: সিপিডি

ছবি

শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘লাভজনক’ প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

‘পদ্মা সেতু থেকে ২ বছরে আয় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি’

ছবি

সাপে কাটা ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত সংরক্ষণ চেয়ে সরকারকে নোটিশ

ছবি

অষ্টম শ্রেণি চালুর জন্য প্রস্তুত ১৫৪ স্কুল

ছবি

দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার পথ নিয়ে আলোচনা করেছি : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

দিল্লি সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আজ

ছবি

নিবন্ধিত সিমের প্রায় অর্ধেক নিস্ক্রিয়: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

সংসদ ভবনে স্থাপিত হলো ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

পলকের নির্দেশে টাকা ফেরৎ পাচ্ছে পারুল বেগম

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে চীনা মন্ত্রীর আশাবাদ

ছবি

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা নিয়ে আলোচনা

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কাল

ছবি

অসংক্রামক ব্যাধি থেকে পরিত্রাণে সচেতনতা প্রয়োজন : স্পিকার

ছবি

স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা অসৎ উপায়ে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টা প্রতিহত করবে: ভূমিমন্ত্রী

ছবি

ঢাকায় চীনা মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও

ছবি

বাংলাদেশের যত অর্জন তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই : শেখ হাসিনা

কে হচ্ছেন পুলিশের নতুন আইজি?

ছবি

পুলিশে রদবদল, ১৪ জেলায় নতুন এসপি

ছবি

দুর্নীতির মাধ্যমে এভাবে সম্পদ অর্জন করা কখনো সমীচীন নয়

tab

জাতীয়

তারেককে ‘অচিরেই’ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

আইনি জটিলতা থাকলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজার মুখোমুঝি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, অর্থ পাচারসহ দুর্নীতির একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা আছে। তবে সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়াতেই নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও তার প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একই সঙ্গে চলমান রয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হব।’

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মাওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী বাংলাদেশে তিনি মারা গেছেন এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে। এ ছাড়া পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছেন, সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’

খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে তিনি সংসদকে জানান। তিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্যক্তিগত সহযোগিতাও কামনা করেছেন বলে জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।

জিয়া খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে সই করতেন

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির চেয়ারে নিজেকে আজীবন আসীন করে রাখার বাসনা নিয়ে আইয়ুব খানের অনুকরণে সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেন। তিনি যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, তেমনি অবৈধভাবে বিএনপি সৃষ্টি করেন। খুনি জিয়া তো রক্তাক্ত হাতেই খাবার খেতে বসতেন এবং খেতে খেতেই ফাঁসির আদেশে স্বাক্ষর করতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ঢাকা নগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবু জিয়ার আমলে গুম হয়ে যায়, জিয়ার পেটোয়া বাহিনীর হাতে নিহত হন চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দ, যুবলীগের মুনিরসহ আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী।

জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনে এবং স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজ ও আলীমকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করত না। জিয়ার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসন আমলে ২১টি ক্যু/পাল্টা ক্যু হয়। লে. কর্নেল তাহেরকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল। সার্বিক প্রেক্ষাপটে জিয়া অত্যন্ত হিংস্র ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন।

অ্যান্টনি মাসকারেনাহাসের ‘বাংলাদেশ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাসকারেনাহাস তার বইয়ে লিখেছেন, ‘সরকারি হিসাবমতে জিয়া ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১ হাজার ১৪৩ জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন।’

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যার পর জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। ইতিহাসের এই ঘৃণ্যতম হত্যাকা-ে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। খুনি ফারুক-রশিদরা আগে থেকেই জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন, যেটা জিয়া জানতেন।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের পাশাপাশি বিরোধী দলে গিয়ে তাদের জ্বালাও-পোড়াওয়ের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি) মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।

রাশিয়া-চীন-ভারতসহ উন্নত দেশ থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে

সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক ও ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে; যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর জন্য যেসব উন্নত সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে- কাসা ইউটিলিটি বিমান, ডলফিন ইউরোকপ্টার, ডায়মন্ড প্রশিক্ষণ বিমান, এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, ভিটি-ফাইভ লাইট ট্যাংক, আর্মার্ড রিকভারি ভেহিক্যাল, সেলফ প্রপেল্ড (এসপি) কামান, অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড উইপন, শর্ট রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, মাইন-রেজিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুশ প্রোটেক্টেড ভেহিক্যাল, আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল, সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার, রাডার কন্ট্রোল এয়ার ডিফেন্স গান সিস্টেম, নাইট ভিশন মনোকুলার, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, আধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামাদি উল্লেখযোগ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সমুদ্র নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষার বিষয়ে সরকারের প্রথম মেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, ক্যাসল ক্লাস জাহাজ, ফ্রিগেড, করভেট, সমুদ্র জরিপ জাহাজ, লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ার ক্রাফট এবং মেরিটাইম হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক নৌযুদ্ধ সরঞ্জাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে। একই সঙ্গে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ডাইভিং বোট, ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি, রিমোট কন্ট্রোল গান, আনম্যানড এয়ারক্রাফট সিস্টেম ইত্যাদিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেটওয়ার্ক হাব স্টেশন, টেকটিকেল ফায়ারিং রেঞ্জ, লং রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স ও সার্ভিলেন্স রাডার, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আইএফএফ সেন্টার গঠনের প্রক্রিয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন যুগোপযোগী কার্যক্রম অব্যাহত আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য এমআই জি-২৯, ইয়াক-১৩০ এবং এফ-৭ বিজি-১ যুদ্ধ বিমান, সি-১৩০ জে এবং কে-৮ বিমান, এমআই১৭১ হেলিকপ্টারসহ অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করা হয়েছে। এ সকল আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আজ একটি আধুনিক ও চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

back to top