alt

জাতীয়

দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি, কারও রক্ষা নেই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অভিযান চলমান থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই। দুর্নীতি যে করবে, সে যেই হোক, তাকে ধরা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়।

২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিক রাষ্ট্র পরিচালনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে পড়েনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ পিছিয়ে যাবে না। যে যতই চেষ্টা করুক, দেশকে ধ্বংস করতে পারবে না। এই স্বপ্নযাত্রার আকাক্সক্ষা পূরণ করবে এ দেশের মানুষ।’

দেশের জনগণ কর্মঠ, সৃজনশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু মাঝখানে দুষ্টু প্রকৃতির থাকে। ওগুলোকে ধর্তব্যে নিই না। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। সে যেই হোক, দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই। যারাই দুর্নীতি করবে আমরা ধরব।’

কালো টাকা সাদা
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কালো টাকা সাদা, এটা কালো টাকা সাদা না। এখন সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। ঢাকায় এক কাঠা জমি আছে সে কয়েক কোটি টাকার মালিক। এইভাবে অনেক সময় কিছু করতে যেয়ে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসে। সেটা তারা আয়করে দেখাতে পারে না, আয়কর দিতে পারে না। আয়কর দিয়ে যাতে মূল জনগোষ্ঠী ফিরে আসে... এ ধরনের কর্মকা- যাতে না করে সে জন্য মাঝে মাঝে এ ধরনের সুযোগ দেয়া হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এ সুযোগ (কালো টাকা সাদা করা) খালেদা জিয়া নিয়েছিলেন, ড. কামাল হোসেনসহ আরও অনেকেই নিয়েছিল। তারা কিন্তু ২০০৬, ০৭, ০৮ বা পরবর্তীতে সুযোগ নিয়ে টাকা সাদা করেছিল। জেনারেল এরশাদ সাহেবও মনে হয় করেছে। খোঁজ নিতে হবে। তিনি না করলেও কেউ না কেউ করেছে। আমাদের বিরোধীদলীয় নেতা করছেন কিনা সেটা দেখতে হবে।’

বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদেরের বক্তব্যের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘টেন্ডারের শুভঙ্করের ফাঁকির কথা উনি বলেছেন। টেন্ডার না দিয়ে কাজ দেয়া। উনি তো মন্ত্রী ছিলেন, টেন্ডার না দিয়ে কাজ করে, কাজের মাধ্যমে কিছু উপার্জন করার বিষয় মনে হয় উনি নিজেই রপ্ত করেছেন।’

বাজেট ‘উচ্চাভিলাষী’, এটা আমি মনে করি না
বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নেয়ার মতো সক্ষমতা সরকারের আছে। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই বড় বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মোটেই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে করি না। একটা লক্ষ্য আমরা স্থির করি। শতভাগ কখনও পূরণ হয় না। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাব। সেটা আমরা যেতে পেরেছি। কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির কাছে দেয়া ইশতেহার ভুলে যায় না।’ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, শীঘ্রই বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাজেটের ওপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। তারা বাজেটের ওপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল, সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সে ধারাবাহিকতা আমাদের আছে।’

রংপুরের মানুষ এখন চার বেলা খায়
হতদরিদ্র শব্দ অদূর ভবিষ্যতে আর থাকবে না উল্লেখ করে বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে আমরা ১৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আর হতদরিদ্র ২৫.৬ থেকে ৫.৬ শতাংশে নামিয়েছি। আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো হতদরিদ্র থাকবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন ‘অতিমারি-যুদ্ধ সবকিছু মোকাবিলা করেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। এরশাদ সাহেবের সময় উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা হতো, তা কিন্তু এখন আর নেই। সেসব এলাকায় মানুষের দুর্দশা আমাদের চোখে দেখা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। এমনকি রংপুরের মানুষ এখন চার বেলা খেতে পায়।’

আগামীতে বিদ্যুতে ভর্তুকি থাকবে না
আগামী দিনে বিদ্যুতে ভর্তুকি থাকছে না বলেও সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের সক্ষমতা যখন কম ছিল, তখন কম বিদ্যুৎ হলেও চলতো। এখন সক্ষমতা বেড়েছে মানুষের, তাই বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েছে। এ অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বিদ্যুতে, এটা সামনের দিনগুলোতে আর দেয়া হবে না।’

বড়লোকদের এলাকায় লোডশেডিং দেব
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে অনেক কথা। যে বিশেষ আইন করেছি সেটা নিয়েও সমালোচনা শুনছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই বিশেষ আইন যদি না করতাম। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ না করলে আজকে বিদ্যুৎটা আসত কোথা থেকে? আমরা ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ যাতে পরিবেশবান্ধব হয় আমরা সেদিকে দৃষ্টি দিয়েছি। নেপাল ও ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লোডশেডিং! আমি বলে দিয়েছি আমার গ্রামে লোডশেডিং যেন না দেয়। গুলশান, বনানী, বারিধারা, এসব বড়লোকদের এলাকায় ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং দিয়ে তাদের মনে করিয়ে দিতে হবে এখন এয়ার কন্ডিশন, গাড়ি, লিফট ইত্যাদি আরাম-আয়েশটা এটা যে আসমান থেকে পড়েনি। এটা আমাদের করা সেটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য অন্তত লোডশেডিং বিত্তশালীদের দিতে হবে। এই ব্যবস্থাটা আমরা করব।’

বাংলাদেশ হবে যোগাযোগের হাব
যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের ‘হাব’ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, সরকার সারাদেশব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছে বলেই অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছে। আমার লক্ষ্য কেবল বাংলাদেশ নয়, আমরা এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবো। প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে।

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে, যাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেট্রোরেল একটি নিরাপদ যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘রাজধানীর যানজট সহনশীল করার জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে ৬টি রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, একটি তো হয়েই গেছে। ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সার্ভে শুরু করেছি। আমি থাকতে থাকতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়ে যাব। যাতে দেশের মানুষ দ্রুততম সময় যানজটমুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারে।’

ভবিষ্যতে ফেনী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের ইচ্ছা আছে জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, মীরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত অনেক শিল্প ও অর্থনৈতিক কর্মকা- গড়ে উঠবে।

পেনশন স্কিম
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালে যারা চাকরিতে যোগ দেবেন তারাও যাতে সরকারি পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

দুর্নীতি ঠেকাতে মেয়াদ বাড়তে পারে বর্তমান আইজিপির

ছবি

নিজের নামে ইনস্টিটিউটের নামকরণে প্রধানমন্ত্রীর ‘না’

ছবি

বাংলাদেশ-সৌদি আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক : সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব

ছবি

পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণে গঠিত হবে সরকারি কোম্পানি

ছবি

ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির টোল না নেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

এই দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না : র‍্যাব ডিজি

ছবি

ফেয়ার এপ্রুভালটা সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্থরিটিই দিয়ে থাকে : আটাব মহাসচিব আসফিয়া জান্নাত সালেহ

ছবি

পছন্দমতো না হলে অনেক বিদেশি ঋণপ্রস্তাব আমরা ফিরিয়ে দেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

বিডিনগের অষ্টাদশ সম্মেলনের রেজিস্ট্রেশন চলছে

শরীফার গল্প বাদ দেওয়া ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’: ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

ছবি

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য না থাকায় গাজায় অমানবিক ঘটনা ঘটছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

জাতিসংঘ পুলিশে অবদান রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

সব হাসপাতালে রাসেল’স ভাইপারের অ্যান্টিভেনম আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান, এপিএ স্বাক্ষর ও মাসিক এডিপি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে আম ইলিশ মিষ্টি পাঠালেন

ছবি

আমাদের চাঁদেও যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

বছরে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ট্যাক্সি ও মোটরসাইকেল চালক নেবে দুবাই

ছবি

হজে গিয়ে ৫১ বাংলাদেশির মৃত্যু

ছবি

তারেককে ‘অচিরেই’ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী

পুলিশের ৬৯৫টি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

ছবি

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: শেখ হাসিনা

ছবি

বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই ভারতের সাথে সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

দায়িত্বহীনতার কারণে সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ হাতিয়ে নিয়েছে ভারত: সিপিডি

ছবি

শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘লাভজনক’ প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

‘পদ্মা সেতু থেকে ২ বছরে আয় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি’

ছবি

সাপে কাটা ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত সংরক্ষণ চেয়ে সরকারকে নোটিশ

ছবি

অষ্টম শ্রেণি চালুর জন্য প্রস্তুত ১৫৪ স্কুল

ছবি

দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার পথ নিয়ে আলোচনা করেছি : প্রধানমন্ত্রী

ছবি

দিল্লি সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আজ

ছবি

নিবন্ধিত সিমের প্রায় অর্ধেক নিস্ক্রিয়: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক

ছবি

সংসদ ভবনে স্থাপিত হলো ‘মুজিব ও স্বাধীনতা’, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

পলকের নির্দেশে টাকা ফেরৎ পাচ্ছে পারুল বেগম

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে চীনা মন্ত্রীর আশাবাদ

tab

জাতীয়

দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি, কারও রক্ষা নেই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অভিযান চলমান থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই। দুর্নীতি যে করবে, সে যেই হোক, তাকে ধরা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়।

২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিক রাষ্ট্র পরিচালনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে পড়েনি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ পিছিয়ে যাবে না। যে যতই চেষ্টা করুক, দেশকে ধ্বংস করতে পারবে না। এই স্বপ্নযাত্রার আকাক্সক্ষা পূরণ করবে এ দেশের মানুষ।’

দেশের জনগণ কর্মঠ, সৃজনশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু মাঝখানে দুষ্টু প্রকৃতির থাকে। ওগুলোকে ধর্তব্যে নিই না। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। সে যেই হোক, দুর্নীতি করলে কারও রক্ষা নেই। যারাই দুর্নীতি করবে আমরা ধরব।’

কালো টাকা সাদা
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কালো টাকা সাদা, এটা কালো টাকা সাদা না। এখন সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। ঢাকায় এক কাঠা জমি আছে সে কয়েক কোটি টাকার মালিক। এইভাবে অনেক সময় কিছু করতে যেয়ে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসে। সেটা তারা আয়করে দেখাতে পারে না, আয়কর দিতে পারে না। আয়কর দিয়ে যাতে মূল জনগোষ্ঠী ফিরে আসে... এ ধরনের কর্মকা- যাতে না করে সে জন্য মাঝে মাঝে এ ধরনের সুযোগ দেয়া হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এ সুযোগ (কালো টাকা সাদা করা) খালেদা জিয়া নিয়েছিলেন, ড. কামাল হোসেনসহ আরও অনেকেই নিয়েছিল। তারা কিন্তু ২০০৬, ০৭, ০৮ বা পরবর্তীতে সুযোগ নিয়ে টাকা সাদা করেছিল। জেনারেল এরশাদ সাহেবও মনে হয় করেছে। খোঁজ নিতে হবে। তিনি না করলেও কেউ না কেউ করেছে। আমাদের বিরোধীদলীয় নেতা করছেন কিনা সেটা দেখতে হবে।’

বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদেরের বক্তব্যের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘টেন্ডারের শুভঙ্করের ফাঁকির কথা উনি বলেছেন। টেন্ডার না দিয়ে কাজ দেয়া। উনি তো মন্ত্রী ছিলেন, টেন্ডার না দিয়ে কাজ করে, কাজের মাধ্যমে কিছু উপার্জন করার বিষয় মনে হয় উনি নিজেই রপ্ত করেছেন।’

বাজেট ‘উচ্চাভিলাষী’, এটা আমি মনে করি না
বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নেয়ার মতো সক্ষমতা সরকারের আছে। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই বড় বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মোটেই বাজেটকে উচ্চাভিলাষী মনে করি না। একটা লক্ষ্য আমরা স্থির করি। শতভাগ কখনও পূরণ হয় না। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাব। সেটা আমরা যেতে পেরেছি। কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির কাছে দেয়া ইশতেহার ভুলে যায় না।’ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, শীঘ্রই বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাজেটের ওপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন। তারা বাজেটের ওপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল, সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সে ধারাবাহিকতা আমাদের আছে।’

রংপুরের মানুষ এখন চার বেলা খায়
হতদরিদ্র শব্দ অদূর ভবিষ্যতে আর থাকবে না উল্লেখ করে বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে আমরা ১৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আর হতদরিদ্র ২৫.৬ থেকে ৫.৬ শতাংশে নামিয়েছি। আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোনো হতদরিদ্র থাকবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন ‘অতিমারি-যুদ্ধ সবকিছু মোকাবিলা করেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। এরশাদ সাহেবের সময় উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা হতো, তা কিন্তু এখন আর নেই। সেসব এলাকায় মানুষের দুর্দশা আমাদের চোখে দেখা। এখন আর সেই অবস্থা নেই। এমনকি রংপুরের মানুষ এখন চার বেলা খেতে পায়।’

আগামীতে বিদ্যুতে ভর্তুকি থাকবে না
আগামী দিনে বিদ্যুতে ভর্তুকি থাকছে না বলেও সংসদে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের সক্ষমতা যখন কম ছিল, তখন কম বিদ্যুৎ হলেও চলতো। এখন সক্ষমতা বেড়েছে মানুষের, তাই বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েছে। এ অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বিদ্যুতে, এটা সামনের দিনগুলোতে আর দেয়া হবে না।’

বড়লোকদের এলাকায় লোডশেডিং দেব
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে অনেক কথা। যে বিশেষ আইন করেছি সেটা নিয়েও সমালোচনা শুনছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই বিশেষ আইন যদি না করতাম। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ না করলে আজকে বিদ্যুৎটা আসত কোথা থেকে? আমরা ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ যাতে পরিবেশবান্ধব হয় আমরা সেদিকে দৃষ্টি দিয়েছি। নেপাল ও ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লোডশেডিং! আমি বলে দিয়েছি আমার গ্রামে লোডশেডিং যেন না দেয়। গুলশান, বনানী, বারিধারা, এসব বড়লোকদের এলাকায় ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং দিয়ে তাদের মনে করিয়ে দিতে হবে এখন এয়ার কন্ডিশন, গাড়ি, লিফট ইত্যাদি আরাম-আয়েশটা এটা যে আসমান থেকে পড়েনি। এটা আমাদের করা সেটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য অন্তত লোডশেডিং বিত্তশালীদের দিতে হবে। এই ব্যবস্থাটা আমরা করব।’

বাংলাদেশ হবে যোগাযোগের হাব
যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নের ‘হাব’ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে সরকারপ্রধান আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, সরকার সারাদেশব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছে বলেই অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছে। আমার লক্ষ্য কেবল বাংলাদেশ নয়, আমরা এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবো। প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে রেল ও সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে।

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে, যাতে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেট্রোরেল একটি নিরাপদ যান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘রাজধানীর যানজট সহনশীল করার জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট তৈরি করেছি, এর মাধ্যমে ৬টি রুটে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে, একটি তো হয়েই গেছে। ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের জন্য সার্ভে শুরু করেছি। আমি থাকতে থাকতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়ে যাব। যাতে দেশের মানুষ দ্রুততম সময় যানজটমুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারে।’

ভবিষ্যতে ফেনী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের ইচ্ছা আছে জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, মীরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত অনেক শিল্প ও অর্থনৈতিক কর্মকা- গড়ে উঠবে।

পেনশন স্কিম
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালে যারা চাকরিতে যোগ দেবেন তারাও যাতে সরকারি পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

back to top