alt

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবিন সংকট

বাকী বিল্লাহ : মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোগীদের চিকিৎসায় কেবিন পাওয়া যেন সোনার হরিণ। একটি কেবিনের জন্য রাজনৈতিক তদবির থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী ও এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরের পরিচয়েও তদবির করা হয়। এরপরও কেবিন পাওয়া কষ্টকর। স্বজনদের পক্ষ থেকে রোগীকে বাঁচাতে ও উন্নত চিকিৎসা দিতে এই ভাবে ধারে ধারে গিয়ে তদবির করেও কাজ হচ্ছে না। এরপরও রহস্য জনক কারণে চাহিদা থাকা শর্তেও কেবিন বাড়ানো হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন সারাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য নতুন ও পুরাতন মিলে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি রোগী চিকিৎসার জন্য যায়। এর মধ্যে নতুন ৬ থেকে ৭ হাজার । আবার কখনো ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। পুরনো রোগীও থাকে দিনে ৬ থেকে ৭ হাজার। ফলে ভার্সিটির ৫০টির বেশি বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য সিট পাওয়াও কঠিন। বহিঃবিভাগ থেকে বলা হয়। সিট নেই। দুঃখিত। কবে সিট খালি হবে তাও অনিশ্চিত। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা কাহিল।

সূত্র জানায়, গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা বহু রোগী সিটের জন্য তদবির করে। তারা শাহবাগ এলাকায় অস্থায়ী রোগী নিবাসে একটি রুম ভাড়া করে ভর্তির তদবির করতে থাকেন। এই ভাবে একজন রোগীকে ভর্তি করতে যেমন সময় লাগে। কষ্ট হয়। রোগী ভর্তি করার পর অনেকেই কেবিনের জন্য আবেদন করেন। আবেদন করলেই সহজে কেবিন পাওয়া যায় না। চলে তদবির। একটি কেবিনের জন্য যার যত ক্লু আছে। সব পথে চেষ্টা করতে থাকেন। তাতে সময় লাগে। এক সপ্তাহে সিরিয়াল পাওয়া কষ্টকর। অনেক সময় দিনে কেবিনও খালিও হয় না। আবার খালি হলে ভিআইপিসহ প্রভাবশালীদের তদবির বেশি থাকে। তাতে গ্রামের দরিদ্ররা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তাদের কেবিন পাওয়া যেন সোনার হরিণ। শত চেষ্টা করেও তারা কেবিন পায় না। অভিযোগ রয়েছে, এই সুযোগে অসাধু দালাল চক্র কৌশলে গ্রাম থেকে আসা রোগীকে ফুঁসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে দ্রুত ভর্তি ও উন্নত চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায়।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কেবিন আছে মোট ১৭৫টি। তার মধ্যে ভিআইপি কেবিন ১০টি। ভিআইডি ডিলাক্্র (সংরক্ষিত) ১০টি। আর সাধারণ কেবিন থাকে ১৫৫টি। এক রুমের কেবিনে ২ জন রোগী শেয়ার করে দুই বেড়ে থাকে। তাদের একটি বাথরুম। তখন দুই রোগীর স্বজনদের মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নারী ডিজিএমের মেয়ের সঙ্গে ডবল কেবিনে ওয়াস রুম ব্যবহার নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। পরে ওই ডিজিএম কেবিন ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখন অবসরে গেছেন। সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর সময় সিঙ্গেল কেবিনকে ডবল করা হয়েছে। তা এখনো একই ভাবে চলছে।

ভার্সিটি সূত্র জানায়, নরমালি প্রতিদিন কেবিন বরাদ্দের জন্য আবেদন পড়ে গড়ে ১৯৬ থেকে ২০০টি। তার মধ্যে দিনে কেবিন খালি হয় ৪ থেকে ৭টি। কখনো ৮টি। আবার কখনো দিনে কোনো কেবিনই খালি হয় না। কেবিনের জন্য রোগীর স্বজনসহ শতকরা ৯৯ ভাগই তদবির করেন। কাকে রেখে কাকে বরাদ্দ দেয়া হবে তা দিয়ে চলে যুদ্ধ।

এমনকি কেবিন বরাদ্দের জন্য কর্মকর্তাদের সামনে নানাভাবে গালাগালও করা হয়। যদি কেবিনটি বরাদ্দ পাওয়া যায়। এরপরও যে সব রোগী হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউতে ভর্তি থাকে। তাদের নরমাল বেড দিতে গেলে তারা কেবিন চায়। তাদেরকে দেখতে হয়। ফলে সবাইকে কেবিন দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

তদবির করেন : ভার্সিটির বহিঃবিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রতিদিন কেবিনের জন্য নানাভাবে তদবির করা হয়। এর মধ্যে ১. রাজনৈতিক তদবির ২. মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের নাম বলে তদবির ৩. চিকিৎসক নেতাদের তদবির, ৪. রাজনৈতিক সংগঠনের পদ মর্যাদার পরিচয় দিয়ে নেতাদের তদবির, ৫. প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কথা বলে তদবির, ৬. বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদবির, ৭. ভার্সিটির ডাক্তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তদবির, ৮. সব ভিআইপি ভর্তি তদবির, ৯. সাংবাদিকদের পরিচয়ে তদবির, ১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও তাদের পোষ্যদের ভর্তি তদবির, ১১. পুলিশ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তার তদবির, ১২. এমপিদের তদবিরসহ নানা সেক্টর থেকে কেবিনে রোগী ভর্তির জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তদবির করে বলে ভার্সিটির একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। ফলে কেবিন তদবির চাপে কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ।

সূত্র জানায়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০টির বেশি বিভাগে রোগী ভর্তি করা হয়। প্রতি বছর নতুন নতুন প্রশাসন আসলে নতুন করে বিভাগ চালু করে। সেখানে রোগী ভর্তি করতে হয়। বর্তমানে ভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগে ১ হাজার ৯শ’র কিছু বেশি সিটে (বেড) রোগী ভর্তি করা হয়।

জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কেবিনের সংকট উত্তরণে আরও কমপক্ষ্যে ১শ’ থেকে ২শ’ কেবিন নতুন করে চালু করলে রোগীর চাপ কিছুটা হলেও কমবে। তাই অনেকেই মন্তব্য করতে গিলে বলেছেন, রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি ভাবে আরও কেবিন চালু করলে কমবে তদবির। বাড়বে রাজস্ব। আর উন্নত হবে ভার্সিটির চিকিৎসা সেবা।

ভার্সিটির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. এবিএম আবদুল হান্নান সংবাদকে মুঠোফোনে বলেন, ভার্সিটির কেবিনের সংখ্যা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে কাজ চলছে। এখন ভার্সিটিতে রোগী বাড়ছে।

ছবি

বৃষ্টিপাত কমার আভাস, সরানো হলো সতর্ক সংকেত

ছবি

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার

প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম গেলো ত্রিপুরা

৯৮৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ উত্তীর্ণ, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনে খসড়া অনুমোদন

৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য ভিত্তিহীন: পিএসসি

নির্মাণাধীন ভবনে সাবেক সচিব, বিচারক ও কর্মকর্তার ফ্ল্যাট, অনুসন্ধানে দুদক

দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল

এস আলম ও পরিবারের সিঙ্গাপুরে ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

অর্থ আত্মসাৎ স্বাস্থ্যের সাবেক পরিচালকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় সড়কে প্রাণ গেল অন্তঃসত্ত্বার

ছবি

প্রতিবন্ধকতাকে উড়িয়ে এসএসসিতে অদম্য লিতুন জিরার চমক

ডেঙ্গু: চলতি বছরে আক্রান্ত প্রায় ১৪ হাজার, মোট মৃত্যু ৫৪ জনের

ছবি

বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, একটি খুনি বাহিনী: নাহিদ

ছবি

মোবাইল তুলতে গিয়ে ৪ চা শ্রমিকের মৃত্যু, বাগানে শোকের ছায়া

শাপলা-দোয়েল বাদ, যুক্ত হচ্ছে বেগুন, লাউ, লিচু

আইসিসিতে বিচার দাবি অ্যামনেস্টির

ছবি

নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণে পানিবন্দী ৬৩,৮৬০ পরিবার, আশ্রয়কেন্দ্রে ২৬৮ পরিবার, জনদুর্ভোগ চরমে

গণমাধ্যম সংস্কারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ১২ নতুন সিদ্ধান্ত

আরপিও, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন সংশোধনসহ এক গুচ্ছ সুপারিশ নিয়ে ইসির বৈঠক

পাসের হারে শীর্ষে রাজশাহী, পিছিয়ে বরিশাল বোর্ড

মার্কিন শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা আজ শেষ হচ্ছে, প্রথম দিনের আলোচনায় ‘বেশিরভাগ ইস্যুতে ঐকমত্য’

ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় সন্তুষ্ট বিএনপি

ছবি

১৫ বছর পর এসএসসি ও সমমানের ফলে ছন্দপতন, ১৯ লাখ পরীক্ষার্থীর ছয় লাখই ফেল

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার বিচার শুরু, দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হলেন সাবেক আইজিপি মামুন

ছবি

চীন ও কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

১৮ জুলাই গ্রাহকদের ১ জিবি ফ্রি ডেটা দিতে নির্দেশনা জারি করেছে বিটিআরসি

ছবি

শহীদ ও আহতদের জন্য আলাদা দুটি ফ্ল্যাট প্রকল্প একনেকে যাচ্ছে

ছবি

জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী ঐচ্ছিক প্রোটোকলসহ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন

ছবি

মাধ্যমিকে পাসের হার ৬৮.৪৫ শতাংশ

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রগতি, কিন্তু এখন মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি: আলী রীয়াজ

ছবি

শাপলা-দোয়েল বাদ, নতুন তালিকায় ১১৫ প্রতীক

ছবি

বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের এবার বাদ দেওয়ার চিন্তা

ছবি

জুলাই আহতদের জন্য ঢাকায় দেড় হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার

ছবি

শেখ হাসিনার কল রেকর্ড ‘ট্রেলারমাত্র’, উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা: তাজুল ইসলাম

tab

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবিন সংকট

বাকী বিল্লাহ

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোগীদের চিকিৎসায় কেবিন পাওয়া যেন সোনার হরিণ। একটি কেবিনের জন্য রাজনৈতিক তদবির থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী ও এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরের পরিচয়েও তদবির করা হয়। এরপরও কেবিন পাওয়া কষ্টকর। স্বজনদের পক্ষ থেকে রোগীকে বাঁচাতে ও উন্নত চিকিৎসা দিতে এই ভাবে ধারে ধারে গিয়ে তদবির করেও কাজ হচ্ছে না। এরপরও রহস্য জনক কারণে চাহিদা থাকা শর্তেও কেবিন বাড়ানো হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন সারাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য নতুন ও পুরাতন মিলে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি রোগী চিকিৎসার জন্য যায়। এর মধ্যে নতুন ৬ থেকে ৭ হাজার । আবার কখনো ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। পুরনো রোগীও থাকে দিনে ৬ থেকে ৭ হাজার। ফলে ভার্সিটির ৫০টির বেশি বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য সিট পাওয়াও কঠিন। বহিঃবিভাগ থেকে বলা হয়। সিট নেই। দুঃখিত। কবে সিট খালি হবে তাও অনিশ্চিত। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা কাহিল।

সূত্র জানায়, গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা বহু রোগী সিটের জন্য তদবির করে। তারা শাহবাগ এলাকায় অস্থায়ী রোগী নিবাসে একটি রুম ভাড়া করে ভর্তির তদবির করতে থাকেন। এই ভাবে একজন রোগীকে ভর্তি করতে যেমন সময় লাগে। কষ্ট হয়। রোগী ভর্তি করার পর অনেকেই কেবিনের জন্য আবেদন করেন। আবেদন করলেই সহজে কেবিন পাওয়া যায় না। চলে তদবির। একটি কেবিনের জন্য যার যত ক্লু আছে। সব পথে চেষ্টা করতে থাকেন। তাতে সময় লাগে। এক সপ্তাহে সিরিয়াল পাওয়া কষ্টকর। অনেক সময় দিনে কেবিনও খালিও হয় না। আবার খালি হলে ভিআইপিসহ প্রভাবশালীদের তদবির বেশি থাকে। তাতে গ্রামের দরিদ্ররা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তাদের কেবিন পাওয়া যেন সোনার হরিণ। শত চেষ্টা করেও তারা কেবিন পায় না। অভিযোগ রয়েছে, এই সুযোগে অসাধু দালাল চক্র কৌশলে গ্রাম থেকে আসা রোগীকে ফুঁসলিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে দ্রুত ভর্তি ও উন্নত চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায়।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কেবিন আছে মোট ১৭৫টি। তার মধ্যে ভিআইপি কেবিন ১০টি। ভিআইডি ডিলাক্্র (সংরক্ষিত) ১০টি। আর সাধারণ কেবিন থাকে ১৫৫টি। এক রুমের কেবিনে ২ জন রোগী শেয়ার করে দুই বেড়ে থাকে। তাদের একটি বাথরুম। তখন দুই রোগীর স্বজনদের মধ্যে মাঝে মধ্যে কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নারী ডিজিএমের মেয়ের সঙ্গে ডবল কেবিনে ওয়াস রুম ব্যবহার নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। পরে ওই ডিজিএম কেবিন ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখন অবসরে গেছেন। সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর সময় সিঙ্গেল কেবিনকে ডবল করা হয়েছে। তা এখনো একই ভাবে চলছে।

ভার্সিটি সূত্র জানায়, নরমালি প্রতিদিন কেবিন বরাদ্দের জন্য আবেদন পড়ে গড়ে ১৯৬ থেকে ২০০টি। তার মধ্যে দিনে কেবিন খালি হয় ৪ থেকে ৭টি। কখনো ৮টি। আবার কখনো দিনে কোনো কেবিনই খালি হয় না। কেবিনের জন্য রোগীর স্বজনসহ শতকরা ৯৯ ভাগই তদবির করেন। কাকে রেখে কাকে বরাদ্দ দেয়া হবে তা দিয়ে চলে যুদ্ধ।

এমনকি কেবিন বরাদ্দের জন্য কর্মকর্তাদের সামনে নানাভাবে গালাগালও করা হয়। যদি কেবিনটি বরাদ্দ পাওয়া যায়। এরপরও যে সব রোগী হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউতে ভর্তি থাকে। তাদের নরমাল বেড দিতে গেলে তারা কেবিন চায়। তাদেরকে দেখতে হয়। ফলে সবাইকে কেবিন দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

তদবির করেন : ভার্সিটির বহিঃবিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রতিদিন কেবিনের জন্য নানাভাবে তদবির করা হয়। এর মধ্যে ১. রাজনৈতিক তদবির ২. মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের নাম বলে তদবির ৩. চিকিৎসক নেতাদের তদবির, ৪. রাজনৈতিক সংগঠনের পদ মর্যাদার পরিচয় দিয়ে নেতাদের তদবির, ৫. প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কথা বলে তদবির, ৬. বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদবির, ৭. ভার্সিটির ডাক্তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তদবির, ৮. সব ভিআইপি ভর্তি তদবির, ৯. সাংবাদিকদের পরিচয়ে তদবির, ১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও তাদের পোষ্যদের ভর্তি তদবির, ১১. পুলিশ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তার তদবির, ১২. এমপিদের তদবিরসহ নানা সেক্টর থেকে কেবিনে রোগী ভর্তির জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তদবির করে বলে ভার্সিটির একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। ফলে কেবিন তদবির চাপে কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ।

সূত্র জানায়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০টির বেশি বিভাগে রোগী ভর্তি করা হয়। প্রতি বছর নতুন নতুন প্রশাসন আসলে নতুন করে বিভাগ চালু করে। সেখানে রোগী ভর্তি করতে হয়। বর্তমানে ভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগে ১ হাজার ৯শ’র কিছু বেশি সিটে (বেড) রোগী ভর্তি করা হয়।

জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কেবিনের সংকট উত্তরণে আরও কমপক্ষ্যে ১শ’ থেকে ২শ’ কেবিন নতুন করে চালু করলে রোগীর চাপ কিছুটা হলেও কমবে। তাই অনেকেই মন্তব্য করতে গিলে বলেছেন, রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি ভাবে আরও কেবিন চালু করলে কমবে তদবির। বাড়বে রাজস্ব। আর উন্নত হবে ভার্সিটির চিকিৎসা সেবা।

ভার্সিটির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. এবিএম আবদুল হান্নান সংবাদকে মুঠোফোনে বলেন, ভার্সিটির কেবিনের সংখ্যা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে কাজ চলছে। এখন ভার্সিটিতে রোগী বাড়ছে।

back to top