আগামীকাল আবারও অবরোধ করা হবে—এমন ঘোষণা দিয়ে রাজধানীর শাহবাগ ছেড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
আগামীকাল সারাদেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আাসিফ মাহমুদ বলেন, “আমাদের দাবি স্পষ্ট, সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে ঘোষণা আসতে হবে যে একটি কমিশন গঠন করে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করা হবে। যতদিন না আমাদের এ দাবি মেনে নেওয়া না হচ্ছে, ততদিন শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।
“আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে, প্রতিটি রাজপথে, প্রতিটি রেল লাইনে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
তিনি বলেন, “আজকে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। আমাদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিকে অনেকে জনদুর্ভোগ বলে উল্লেখ করতে চান।
“আমরা বলতে চাই, এটি একটি অভিনব জনমত প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি। আমাদের ভলান্টিয়াররা যখন বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করতে যায়, তখন রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালাসহ সাধারণ মানুষ বলে আমাদের সন্তানদের জন্য এ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
গত ৫ জুন সেই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এরপর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণরা।
১ জুলাই থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে তারা কোটা বাতিলসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন।এর অংশ হিসেবে রবি ও সোমবার ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের অবরোধের কারণে শহরজুড়ে ব্যাপক যানজটে নাকাল হতে হয় নাগরিকদের।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে এই আন্দোলন সমন্বয়ের জন্য ৬৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তারা চার দফা দাবিকে এক দফায় নামিয়ে আনেন।
এখন তাদের দাবি হল- সকল গ্রেডে সকল প্রকার ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ‘ন্যূনতম পর্যায়ে’ এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে৷
এই দাবিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা আসে ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
এদিকে বুধবার সকালে আন্দোলনের মধ্যেই আপিল বিভাগ কোটা নিয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করে।
কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, কোটা নিয়ে এখন কোনো কথা বলা যাবে না। হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে আপিল বিভাগ আবার বিষয়টি শুনবে।
আপিল বিভাগের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম সন্ধ্যার ব্রিফিংয়ে বলেন, “আজকে যে রায় দিয়েছে, এটা অপূর্ণাঙ্গ সমাধান। এর পরিপূর্ণ সমাধান কেবল নির্বাহী বিভাগ তথা বাংলাদেশ সরকারই দিতে পারে। কারণ এখনো আমরা হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাইনি। পূর্ণাঙ্গ রায় দিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালও থাকতে পারে কিংবা বাতিলও হতে পারে। তাই আমরা ওই একটি রায়ের উপর নির্ভর করতে পারি না। এটা আমাদের দাবি সঙ্গেও যায় না।
“একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের রিটের ভিত্তিতে মহামান্য হাই কোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে। কোটা সংস্কার না হলে আবার যদি কোনো প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোক সংক্ষুব্ধ হয়ে হাই কোর্টে এসে রিট করে এবং আবার সেই ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হয়, তাহলে আমরা কোন অবস্থার দিকে যাচ্ছি?”
কোটা ব্যবস্থার একটি স্থায়ী সমাধান চেয়ে তিনি বলেন, “সংবিধানে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে একটি সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা এটি বিশ্বাস করি বলেই কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছি। ২০১৮ সালের পরিপত্রে কোনো কোটাই রাখা হয়নি। আমরা চাই, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর লোকদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা হোক।”
বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
আগামীকাল আবারও অবরোধ করা হবে—এমন ঘোষণা দিয়ে রাজধানীর শাহবাগ ছেড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
আগামীকাল সারাদেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আাসিফ মাহমুদ বলেন, “আমাদের দাবি স্পষ্ট, সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে ঘোষণা আসতে হবে যে একটি কমিশন গঠন করে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করা হবে। যতদিন না আমাদের এ দাবি মেনে নেওয়া না হচ্ছে, ততদিন শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবে।
“আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে, প্রতিটি রাজপথে, প্রতিটি রেল লাইনে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
তিনি বলেন, “আজকে সারাদেশে শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। আমাদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিকে অনেকে জনদুর্ভোগ বলে উল্লেখ করতে চান।
“আমরা বলতে চাই, এটি একটি অভিনব জনমত প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি। আমাদের ভলান্টিয়াররা যখন বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করতে যায়, তখন রিকশাওয়ালা, ভ্যানওয়ালাসহ সাধারণ মানুষ বলে আমাদের সন্তানদের জন্য এ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
গত ৫ জুন সেই আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এরপর থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণরা।
১ জুলাই থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে তারা কোটা বাতিলসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন।এর অংশ হিসেবে রবি ও সোমবার ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের অবরোধের কারণে শহরজুড়ে ব্যাপক যানজটে নাকাল হতে হয় নাগরিকদের।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে এই আন্দোলন সমন্বয়ের জন্য ৬৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তারা চার দফা দাবিকে এক দফায় নামিয়ে আনেন।
এখন তাদের দাবি হল- সকল গ্রেডে সকল প্রকার ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ‘ন্যূনতম পর্যায়ে’ এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে৷
এই দাবিতে বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা আসে ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
এদিকে বুধবার সকালে আন্দোলনের মধ্যেই আপিল বিভাগ কোটা নিয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করে।
কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, কোটা নিয়ে এখন কোনো কথা বলা যাবে না। হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে আপিল বিভাগ আবার বিষয়টি শুনবে।
আপিল বিভাগের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম সন্ধ্যার ব্রিফিংয়ে বলেন, “আজকে যে রায় দিয়েছে, এটা অপূর্ণাঙ্গ সমাধান। এর পরিপূর্ণ সমাধান কেবল নির্বাহী বিভাগ তথা বাংলাদেশ সরকারই দিতে পারে। কারণ এখনো আমরা হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাইনি। পূর্ণাঙ্গ রায় দিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালও থাকতে পারে কিংবা বাতিলও হতে পারে। তাই আমরা ওই একটি রায়ের উপর নির্ভর করতে পারি না। এটা আমাদের দাবি সঙ্গেও যায় না।
“একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের রিটের ভিত্তিতে মহামান্য হাই কোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে। কোটা সংস্কার না হলে আবার যদি কোনো প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোক সংক্ষুব্ধ হয়ে হাই কোর্টে এসে রিট করে এবং আবার সেই ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হয়, তাহলে আমরা কোন অবস্থার দিকে যাচ্ছি?”
কোটা ব্যবস্থার একটি স্থায়ী সমাধান চেয়ে তিনি বলেন, “সংবিধানে অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে একটি সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা এটি বিশ্বাস করি বলেই কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছি। ২০১৮ সালের পরিপত্রে কোনো কোটাই রাখা হয়নি। আমরা চাই, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর লোকদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা হোক।”