বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে এখনও ছাড়া পাননি। তাদের ছাড়ার বিষয়ে এখনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত পায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ৬ সমন্বয়কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেলে তাদের যে কোনো সময় ছেড়ে দেয়া হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ঢাকা রিপোর্টার্র ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে তারা মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করবেন।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে এই ৬ জনকে কার্যত আটকে রাখা হয়েছে। এভাবে কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা বেআইনি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবারও বলছে, তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা পুলিশকে বলেননি, পুলিশের কাছে কোনো নিরাপত্তাও চাননি। আইনি ভিত্তি ছাড়াই আসলে এমন একটা হেফাজতের কাহিনি তৈরি করা হলো, যেটা সম্ভবত বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে গত শুক্রবার বিকেলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে আনা হয়। তারা হলেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের। তাদের মধ্যে নাহিদ ও আসিফ ছিলেন সেখানে চিকিৎসাধীন। বাকের তাদের সঙ্গে ছিলেন। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে আসে ডিবি। এরপর রোববার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তুলে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তারা মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আছেন। ডিবির দাবি, তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটকে রাখতে পারে এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এভাবে কাউকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার কোনো বিধান দেশের কোনো আইনে নেই। যেভাবে ৬ জনকে আটক করে রাখা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বলেন, ‘এই ৬ শিক্ষার্থীর কেউ স্বেচ্ছায় সেখানে যায়নি, এটা বোঝা যায়। এদের তিনজন ছিলেন হাসপাতালে। কাউকে জনরোষ থেকে রক্ষা করতে হলে কারাগারে রাখা হবে। ডিবি কার্যালয়ে রাখবে কেন? এটা কোনো থানা বা হোটেল নয়।’
আইনবিদেরা জানান, কাউকে গ্রেপ্তার বা আটকের বিষয়ে রক্ষাকবচ দেয়া আছে সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদে। এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত কোনো ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্রই গ্রেপ্তারের কারণ না জানিয়ে প্রহরায় আটক রাখা যাবে না। ওই ব্যক্তিকে তার মনোনীত আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ ও তার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করা হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া তাকে ২৪ ঘণ্টার বেশি প্রহরায় আটক রাখা যাবে না।
ডিবি প্রধানের এই কর্মকা- নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। উচ্চ আদালতও বিষয়টিকে ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ৬ জন সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানির একপর্যায়ে সোমবার আদালত বলেছেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’
বৃহস্পতিবার, ০১ আগস্ট ২০২৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে এখনও ছাড়া পাননি। তাদের ছাড়ার বিষয়ে এখনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত পায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ৬ সমন্বয়কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেলে তাদের যে কোনো সময় ছেড়ে দেয়া হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ডিবি হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ঢাকা রিপোর্টার্র ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে তারা মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি পালন করবেন।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে এই ৬ জনকে কার্যত আটকে রাখা হয়েছে। এভাবে কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা বেআইনি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের পরিবারও বলছে, তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা পুলিশকে বলেননি, পুলিশের কাছে কোনো নিরাপত্তাও চাননি। আইনি ভিত্তি ছাড়াই আসলে এমন একটা হেফাজতের কাহিনি তৈরি করা হলো, যেটা সম্ভবত বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে গত শুক্রবার বিকেলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে আনা হয়। তারা হলেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের। তাদের মধ্যে নাহিদ ও আসিফ ছিলেন সেখানে চিকিৎসাধীন। বাকের তাদের সঙ্গে ছিলেন। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে আসে ডিবি। এরপর রোববার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তুলে আনা হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তারা মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আছেন। ডিবির দাবি, তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটকে রাখতে পারে এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এভাবে কাউকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার কোনো বিধান দেশের কোনো আইনে নেই। যেভাবে ৬ জনকে আটক করে রাখা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বলেন, ‘এই ৬ শিক্ষার্থীর কেউ স্বেচ্ছায় সেখানে যায়নি, এটা বোঝা যায়। এদের তিনজন ছিলেন হাসপাতালে। কাউকে জনরোষ থেকে রক্ষা করতে হলে কারাগারে রাখা হবে। ডিবি কার্যালয়ে রাখবে কেন? এটা কোনো থানা বা হোটেল নয়।’
আইনবিদেরা জানান, কাউকে গ্রেপ্তার বা আটকের বিষয়ে রক্ষাকবচ দেয়া আছে সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদে। এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত কোনো ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্রই গ্রেপ্তারের কারণ না জানিয়ে প্রহরায় আটক রাখা যাবে না। ওই ব্যক্তিকে তার মনোনীত আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ ও তার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করা হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া তাকে ২৪ ঘণ্টার বেশি প্রহরায় আটক রাখা যাবে না।
ডিবি প্রধানের এই কর্মকা- নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। উচ্চ আদালতও বিষয়টিকে ‘জাতির সঙ্গে মশকরা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ৬ জন সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানির একপর্যায়ে সোমবার আদালত বলেছেন, ‘এগুলো করতে আপনাকে কে বলেছে? কেন করলেন এগুলো? জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না। যাকে নেন ধরে, একটি খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’