alt

জাতীয়

কোটা আন্দোলন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ হাজারো মানুষের ঢল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৪ আগস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হয় শিক্ষার্থীসহ হাজারো আন্দোলনকারী। এই কর্মসূচি ঘিরে গতকাল বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়করা। সকালে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে দুপুরের পর শহীদ মিনারের দিকে যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত হন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এক পর্যায়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।

শহীদ মিনারের চতুর্দিকে লোকে-লোকারণ্য হওয়ায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ছাত্রদের সঙ্গে চলে এসেছেন তাদের অভিভাবক, বন্ধু, স্বজন ও পরিবারের সদস্যরাও। জমায়েত একদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়িয়ে পুরান ঢাকার চাঁনখারপুল পর্যন্ত। পূর্বদিকে দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে ও উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার পার করেছে জমায়েত।

সমাবেশে স্লোগান চলে, ‘দফা এক, দাবি এক-শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘৯ দফা বাদ দে, এক দফার ডাক দে’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ইত্যাদি। এর আগে শহীদ মিনারমুখী মিছিলে ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।

শুক্রবার সারাদেশে ‘গণপদযাত্রা’ থেকে শনিবার বিক্ষোভ ও রোববার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। সকালে ঢাকার সায়েন্সল্যাবরেটরি, মিরপুর, শান্তিনগর, আফতাবনগর, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, রামপুরা, শনিরআখড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। কোথাও কোথাও এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা।

শাহবাগ মোড় অবরোধ আন্দোলনকারীদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন হাজারো মানুষ। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ গতকাল সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। আরেকটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। গতকাল বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। এরপর সেখানে আরও ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর সাড়ে ছয়টার দিকে থেকে আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনার বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ শহীদ মিনার থেকে টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। আরেকটি অংশ শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকেন। মিছিলটি শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ সেখানে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়েন। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ শাহবাগ থানার সামনে মানবঢাল তৈরি করে পুলিশের ওপর যেকোনো ধরনের আক্রমণ ঠেকান। পরে শাহবাগ মোড়ের সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারী। রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও তারা শাহবাগে বিক্ষোভ করছিলেন।

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের ঘোষিত এক দফা কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রচণ্ড ক্ষোভ থেকেই সরকার পতনের এই এক দফা দেয়া হয়েছে বলে তার ধারণা। শিক্ষার্থী ও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়েছে। এটি তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। এজন্যই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে। যারা মানুষের বাকস্বাধীনতা নষ্ট করে, নির্বিচারে গুলি ও অত্যাচার করে, এ রকম সরকারের শেষ পরিণতি দ্রোহের মাধ্যমে হয়। সরকারকে তাদের আত্মবিবেক জাগ্রত করতে হবে। স্বৈরাচারে অনাস্থা, জনগণে আস্থা- এটাই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে প্রমাণিত হলো।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রাজপথে শিল্পীরা

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নামে শিল্পী, গীতিকার, সুরকার এবং এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বিকেল ৩টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে শিল্পীদের সংহতি সমাবেশে যোগ দেন নানা শ্রেণী-পেশার হাজার মানুষ। পরে রবীন্দ্র সরোবর থেকে শিল্পীদের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে রওয়ানা হন। মিছিল থেকে শেখ হাসিনার পতনের এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান দেয়া হয়। রাস্তার মোড়ে পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে মিছিল থেকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।

রাস্তায় নামলেন রিকশাচালকরাও
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও মুক্তিযোদ্ধাদের পর এবার রাস্তায় নেমেছেন রিকশাচালকরাও। সারি সারি রিকশা রেখে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তারাও সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের রাস্তায় রিকশাচালকরা অবস্থান নিয়ে এমন প্রতিবাদ জানান। এ সময় কপালে লাল কাপড় আর হাতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে স্লোগান দেন তারা। এক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গ্যাছে। তাই সারাদিন রিকশা চালায়া রুজি না করে মাঠে নেমেছি। আমাগো ছেলেগরে এভাবে মেরে তারা কীভাবে গদিতে থাকে?’

শনিরআখড়া-কাজলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া-কাজলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। তারা চাঁনখারপুল থেকে শনিরআখড়ার দিকে কোনো যানবাহন যেতে দিচ্ছে না। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এই কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর ১টার পর থেকে শনিআখড়া-কাজলা এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বলছে, ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানো হয়েছে তারা যেন সড়ক অবরোধ ছেড়ে দেন। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। কোনো যানবাহন চলতে দিচ্ছে না তারা। তাদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

দুপুর ১২টা থেকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ বিক্ষোভে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামতে দেখা যায় জনতার ঢল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এ আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন পথচারী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ। এ আন্দোলন ঘিরে পুরো সায়েন্সল্যাব এলাকার সড়ক আন্দোলনকারীদের অবস্থানে বন্ধ হয়ে যায়।

প্রগতি সরণি এলাকায় অবরোধে শিক্ষার্থীরা
দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হুট করে তারা প্রধান সড়কে নেমে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রগতি সরণির যানচলাচল। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খ- খ- মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অন্তত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছেন এই বিক্ষোভ সমাবেশে।

হাজারো শিক্ষার্থীর ঢল আফতাবনগরে
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর আফতাবনগরে অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে রামপুরা ব্রিজ থেকে আফতাবনগর যাওয়ার রাস্তায় যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেয় অভিভাবকেরাও। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের সামনে আসতে শুরু করেন।

বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছিলেন। দুপুর ১২টার পর হাজারো শিক্ষার্থীর ঢল নামে। একেকটি মিছিলে হাজার হাজার শিক্ষার্থী আসতে থাকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সময়ে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা এখন হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দখলে। এছাড়া আরও দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন অভিভাবকেরাও। অভিভাবকেরাও দলে দলে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আফতাবনগরে মেইন গেইটের কাছে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিত লক্ষ্য করা গেলেও দুপুর ১টার পর সেখানে পুলিশ সদস্যদের আর দেখা যায়নি।

মিরপুর ১০ নম্বরে আন্দোলনকারীদের অবস্থান
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় শনিবার বেলা ২টা থেকে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে পল্লবী, আগারগাঁও, মিরপুর ১ নম্বর ও ১৪ নম্বরগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুপুরে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে আসেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগেরই গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো আছে। আন্দোলনকারীরা সেখানে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের অনেকের মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা ছিল। কারও কারও হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে আসার আগে সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল। তবে দলে দলে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকলে পুলিশ সেখান থেকে সরে মিরপুর ২ নম্বরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। গোলচত্বর এলাকায় বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ আছে।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল গতকাল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে শহীদ মিনারসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। এতে করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে নেয় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরমে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে।

জানা গেছে, শহীদ মিনার, যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর, সাইন্সল্যাব, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা, নতুন বাজার, কুড়িল বিশ্বরোড, মিরপুর-১০ ও উত্তরায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর প্রগতি সরণি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা গেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সদস্যরা এখানে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের বেশ কয়েকটি টিম এখানে কাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।

সীমান্ত হত্যা ভালো সম্পর্কের অন্তরায় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দুদকের দপ্তরে এফবিআই প্রতিনিধিদল, সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা

ছবি

বাঁশখালী ইকোপার্ক যেন এক ভুতুড়ে রাজ্য

ছবি

রংপুরে আবু সাইদ হত্যার প্রধান দুই আসামি গ্রেপ্তার

আড়িয়াল বিল আমাদের জাতীয় সম্পদ এখানে ড্রেজার আসতে পারবে না- রিজওয়ানা হাসান

ছবি

মায়ের সঙ্গে বাবার মরদেহ নিতে মর্গে নবজাতক

দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ নিয়ে ভিসি নিজেই এখন লাপাত্তা

ছবি

বিএসএফের গুলিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশির মৃত্যু, কড়া প্রতিক্রিয়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

ছবি

রাষ্ট্রপতির ‘সেকেন্ড হোম’ বিতর্কে মন্তব্য করতে অনীহা পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ছবি

প্রতি বছর ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের সম্ভাবনা

সীমান্তে হত্যা দুই দেশের ভালো সম্পর্কের পথে ‘অন্তরায়’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

এমএএন ছিদ্দিকের চুক্তি বাতিল, মেট্রোরেলের নতুন এমডি আব্দুর রউফ

ছবি

শিল্পকলা একাডেমির নতুন মহাপরিচালক জামিল আহমেদ

ছবি

অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ, থাকবে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ: পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ

ছবি

ছাত্র আন্দোলনে ৬৩১ জন নিহত, আহত ১৯ হাজারের বেশি: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

ছবি

কেবল কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

যাত্রীর লাগেজ থেকে ৬৮০০ ইউরো চুরি, বিমানের ৬ জন চিহ্নিত

ছবি

২৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ, অবিলম্বে কার্যকর

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর নিহত

ছবি

সাগর উত্তাল, চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

ছবি

স্বপ্ন পূরণের আগে দমে যেও না : ইউনূস

ছবি

রাজনৈতিক প্লাটফর্ম ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির’ আত্মপ্রকাশ

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ত্বকীহত্যার সাড়ে ১১বছর উপলক্ষ্যে আলোক প্রজ্বালন

ছবি

উইন্ডশিল্ডে ফাটল, ওমান থেকে দুবাইয়ে ফেরত গেল বাংলাদেশের বিমান

ছবি

স্বপ্নপূরণের আগে দমে যেয়ো না : প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

অসুস্থতার কারণে রিমান্ড শেষের আগেই কারাগারে শাজাহান খান

ছবি

জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন নিয়ে আযমীর বক্তব্য ব্যক্তিগত : জামায়াত সেক্রেটারি

ছবি

ক্ষমতাচ্যুতরা চুপচাপ বসে থাকবে না : ড. ইউনূস

ছবি

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে: প্রধান কৌঁসুলি

ছবি

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে

ছবি

পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মো. জসীম উদ্দিন

ছবি

শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে : তাজুল ইসলাম

ছবি

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ-বিগ্রহের সম্ভাবনা দেখছেন না পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

আবারও টেকনাফে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা

tab

জাতীয়

কোটা আন্দোলন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ হাজারো মানুষের ঢল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৪ আগস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হয় শিক্ষার্থীসহ হাজারো আন্দোলনকারী। এই কর্মসূচি ঘিরে গতকাল বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়করা। সকালে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে দুপুরের পর শহীদ মিনারের দিকে যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত হন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এক পর্যায়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।

শহীদ মিনারের চতুর্দিকে লোকে-লোকারণ্য হওয়ায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ছাত্রদের সঙ্গে চলে এসেছেন তাদের অভিভাবক, বন্ধু, স্বজন ও পরিবারের সদস্যরাও। জমায়েত একদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়িয়ে পুরান ঢাকার চাঁনখারপুল পর্যন্ত। পূর্বদিকে দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে ও উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার পার করেছে জমায়েত।

সমাবেশে স্লোগান চলে, ‘দফা এক, দাবি এক-শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘৯ দফা বাদ দে, এক দফার ডাক দে’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ইত্যাদি। এর আগে শহীদ মিনারমুখী মিছিলে ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়।

শুক্রবার সারাদেশে ‘গণপদযাত্রা’ থেকে শনিবার বিক্ষোভ ও রোববার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। সকালে ঢাকার সায়েন্সল্যাবরেটরি, মিরপুর, শান্তিনগর, আফতাবনগর, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, রামপুরা, শনিরআখড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীরা জড়ো হন। কোথাও কোথাও এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা।

শাহবাগ মোড় অবরোধ আন্দোলনকারীদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন হাজারো মানুষ। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ গতকাল সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। আরেকটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। গতকাল বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। এরপর সেখানে আরও ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর সাড়ে ছয়টার দিকে থেকে আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনার বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ শহীদ মিনার থেকে টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। আরেকটি অংশ শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকেন। মিছিলটি শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ সেখানে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়েন। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ শাহবাগ থানার সামনে মানবঢাল তৈরি করে পুলিশের ওপর যেকোনো ধরনের আক্রমণ ঠেকান। পরে শাহবাগ মোড়ের সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারী। রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও তারা শাহবাগে বিক্ষোভ করছিলেন।

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানও বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের ঘোষিত এক দফা কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রচণ্ড ক্ষোভ থেকেই সরকার পতনের এই এক দফা দেয়া হয়েছে বলে তার ধারণা। শিক্ষার্থী ও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়েছে। এটি তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। এজন্যই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে। যারা মানুষের বাকস্বাধীনতা নষ্ট করে, নির্বিচারে গুলি ও অত্যাচার করে, এ রকম সরকারের শেষ পরিণতি দ্রোহের মাধ্যমে হয়। সরকারকে তাদের আত্মবিবেক জাগ্রত করতে হবে। স্বৈরাচারে অনাস্থা, জনগণে আস্থা- এটাই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে প্রমাণিত হলো।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রাজপথে শিল্পীরা

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নামে শিল্পী, গীতিকার, সুরকার এবং এ পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। গতকাল বিকেল ৩টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে শিল্পীদের সংহতি সমাবেশে যোগ দেন নানা শ্রেণী-পেশার হাজার মানুষ। পরে রবীন্দ্র সরোবর থেকে শিল্পীদের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে রওয়ানা হন। মিছিল থেকে শেখ হাসিনার পতনের এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান দেয়া হয়। রাস্তার মোড়ে পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে মিছিল থেকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।

রাস্তায় নামলেন রিকশাচালকরাও
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও মুক্তিযোদ্ধাদের পর এবার রাস্তায় নেমেছেন রিকশাচালকরাও। সারি সারি রিকশা রেখে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তারাও সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের রাস্তায় রিকশাচালকরা অবস্থান নিয়ে এমন প্রতিবাদ জানান। এ সময় কপালে লাল কাপড় আর হাতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে স্লোগান দেন তারা। এক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গ্যাছে। তাই সারাদিন রিকশা চালায়া রুজি না করে মাঠে নেমেছি। আমাগো ছেলেগরে এভাবে মেরে তারা কীভাবে গদিতে থাকে?’

শনিরআখড়া-কাজলা এলাকায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া-কাজলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। তারা চাঁনখারপুল থেকে শনিরআখড়ার দিকে কোনো যানবাহন যেতে দিচ্ছে না। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এই কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর ১টার পর থেকে শনিআখড়া-কাজলা এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বলছে, ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বোঝানো হয়েছে তারা যেন সড়ক অবরোধ ছেড়ে দেন। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। কোনো যানবাহন চলতে দিচ্ছে না তারা। তাদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবরোধে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

দুপুর ১২টা থেকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ বিক্ষোভে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নামতে দেখা যায় জনতার ঢল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এ আন্দোলনে সংহতি জানাচ্ছেন পথচারী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ। এ আন্দোলন ঘিরে পুরো সায়েন্সল্যাব এলাকার সড়ক আন্দোলনকারীদের অবস্থানে বন্ধ হয়ে যায়।

প্রগতি সরণি এলাকায় অবরোধে শিক্ষার্থীরা
দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হুট করে তারা প্রধান সড়কে নেমে আসেন। তাদের উপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রগতি সরণির যানচলাচল। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খ- খ- মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অন্তত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছেন এই বিক্ষোভ সমাবেশে।

হাজারো শিক্ষার্থীর ঢল আফতাবনগরে
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর আফতাবনগরে অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে রামপুরা ব্রিজ থেকে আফতাবনগর যাওয়ার রাস্তায় যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেয় অভিভাবকেরাও। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের সামনে আসতে শুরু করেন।

বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছিলেন। দুপুর ১২টার পর হাজারো শিক্ষার্থীর ঢল নামে। একেকটি মিছিলে হাজার হাজার শিক্ষার্থী আসতে থাকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে। দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সময়ে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা এখন হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দখলে। এছাড়া আরও দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন অভিভাবকেরাও। অভিভাবকেরাও দলে দলে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আফতাবনগরে মেইন গেইটের কাছে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিত লক্ষ্য করা গেলেও দুপুর ১টার পর সেখানে পুলিশ সদস্যদের আর দেখা যায়নি।

মিরপুর ১০ নম্বরে আন্দোলনকারীদের অবস্থান
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় শনিবার বেলা ২টা থেকে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে পল্লবী, আগারগাঁও, মিরপুর ১ নম্বর ও ১৪ নম্বরগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুপুরে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে আসেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগেরই গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো আছে। আন্দোলনকারীরা সেখানে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের অনেকের মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা ছিল। কারও কারও হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে আসার আগে সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল। তবে দলে দলে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকলে পুলিশ সেখান থেকে সরে মিরপুর ২ নম্বরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। গোলচত্বর এলাকায় বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ আছে।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল গতকাল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা এসে শহীদ মিনারসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। এতে করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে নেয় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরমে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে।

জানা গেছে, শহীদ মিনার, যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর, সাইন্সল্যাব, রামপুরা, মেরুল বাড্ডা, নতুন বাজার, কুড়িল বিশ্বরোড, মিরপুর-১০ ও উত্তরায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর প্রগতি সরণি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা গেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সদস্যরা এখানে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের বেশ কয়েকটি টিম এখানে কাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।

back to top