সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ (কর্মসূচি) বাতিল করেছে সরকার। ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ের শুরু থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (৩ আগস্ট) পুরো স্কিমই বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি শনিবার দুপুরে গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন।
পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘পেনশন সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
এরপর শনিবার বিকেলেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘এ মর্মে জানানো যাচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রত্যয় স্কিমসহ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।’
অর্থ বিভাগ গত ১৩ মার্চ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত ও বিধিবদ্ধ সংস্থায় নতুন যোগ দেয়া চাকরিজীবীদের জন্য প্রত্যয় স্কিম চালু করে।
এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে যারা এসব সংস্থায় নতুন যোগ দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে প্রত্যয় প্রযোজ্য হবে। এরপর এই স্কিম থেকে নিজেদের বাদ দিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। জুলাইয়ের শুরু থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনসহ সব ধরনের কর্মবিরতি পালন হচ্ছে।
‘প্রত্যয় স্কিম’ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে গত ২৯ জুলাই বৈঠক করেন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাইরে রাখাসহ তিন দফা দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রত্যয় স্কিমে’ না থাকাসহ শিক্ষকদের আরও দুটি দাবি আছে। সেগুলো হলো স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো ও সুপার গ্রেড।
যদিও গত ১৩ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষকরা। ওই বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাস্তবায়ন এক বছর পেছানো হবে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি শিক্ষকরা। তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, তাদের তিনটি দাবির একটি পূরণ হলো। সুপার গ্রেডের দাবিও শীঘ্রই পূরণ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
তবে স্বতন্ত্র বেতনকাঠামোর দাবি পূরণ হতে একটু সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আশা করছেন এটিও পূরণ হবে।
অর্থ বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে মোট ৪০৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ ইত্যাদি সংস্থায় নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ওপর প্রত্যয় প্রযোজ্য করা হয়। এর মধ্যে ৯০টি সংস্থার কর্মী পেনশন পেয়ে আসছেন। বাকি ৩১৩টি সংস্থার কর্মী পেনশনের বাইরে আছেন।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের বিষয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, আপাতত প্রত্যয় স্কিম বাতিল করা হয়েছে। এর বাইরে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বলে আসছিলেন, শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ‘বৈষম্যমূলক’। কারণ বর্তমানে পেনশনের জন্য তাদের বেতন থেকে অর্থ কাটা হয় না; কিন্তু নতুন নিয়ম অর্থাৎ প্রত্যয় স্কিম চালু হলে তাদের বেতন থেকে ১০% টাকা কাটা হবে।
এখন যে আনুতোষিক পাওয়া যায় প্রত্যয় স্কিমে তা নেই দাবি করে শিক্ষকরা বলছেন, চাকরিজীবী এবং তার নমিনি এখন আজীবন পেনশন পান, প্রত্যয়ে যুক্ত হলে সেটাও কমবে। বর্তমান নিয়মে পেনশনাররা মাসে চিকিৎসা ভাতা, দুটো উৎসব ভাতা পান, একটি বৈশাখী ভাতা পান, প্রত্যয়ে সে ব্যবস্থা নেই। এখনকার মতো ইনক্রিমেন্টও নেই বলে শিক্ষকরা দাবি করে আসছিলেন।
রোববার, ০৪ আগস্ট ২০২৪
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ (কর্মসূচি) বাতিল করেছে সরকার। ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ের শুরু থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (৩ আগস্ট) পুরো স্কিমই বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি শনিবার দুপুরে গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন।
পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘পেনশন সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
এরপর শনিবার বিকেলেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘এ মর্মে জানানো যাচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রত্যয় স্কিমসহ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।’
অর্থ বিভাগ গত ১৩ মার্চ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত ও বিধিবদ্ধ সংস্থায় নতুন যোগ দেয়া চাকরিজীবীদের জন্য প্রত্যয় স্কিম চালু করে।
এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে যারা এসব সংস্থায় নতুন যোগ দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে প্রত্যয় প্রযোজ্য হবে। এরপর এই স্কিম থেকে নিজেদের বাদ দিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। জুলাইয়ের শুরু থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনসহ সব ধরনের কর্মবিরতি পালন হচ্ছে।
‘প্রত্যয় স্কিম’ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে গত ২৯ জুলাই বৈঠক করেন বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাইরে রাখাসহ তিন দফা দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘প্রত্যয় স্কিমে’ না থাকাসহ শিক্ষকদের আরও দুটি দাবি আছে। সেগুলো হলো স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো ও সুপার গ্রেড।
যদিও গত ১৩ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষকরা। ওই বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাস্তবায়ন এক বছর পেছানো হবে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি শিক্ষকরা। তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, তাদের তিনটি দাবির একটি পূরণ হলো। সুপার গ্রেডের দাবিও শীঘ্রই পূরণ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
তবে স্বতন্ত্র বেতনকাঠামোর দাবি পূরণ হতে একটু সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আশা করছেন এটিও পূরণ হবে।
অর্থ বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে মোট ৪০৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ ইত্যাদি সংস্থায় নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের ওপর প্রত্যয় প্রযোজ্য করা হয়। এর মধ্যে ৯০টি সংস্থার কর্মী পেনশন পেয়ে আসছেন। বাকি ৩১৩টি সংস্থার কর্মী পেনশনের বাইরে আছেন।
প্রত্যয় স্কিম বাতিলের বিষয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, আপাতত প্রত্যয় স্কিম বাতিল করা হয়েছে। এর বাইরে তিনি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বলে আসছিলেন, শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ‘বৈষম্যমূলক’। কারণ বর্তমানে পেনশনের জন্য তাদের বেতন থেকে অর্থ কাটা হয় না; কিন্তু নতুন নিয়ম অর্থাৎ প্রত্যয় স্কিম চালু হলে তাদের বেতন থেকে ১০% টাকা কাটা হবে।
এখন যে আনুতোষিক পাওয়া যায় প্রত্যয় স্কিমে তা নেই দাবি করে শিক্ষকরা বলছেন, চাকরিজীবী এবং তার নমিনি এখন আজীবন পেনশন পান, প্রত্যয়ে যুক্ত হলে সেটাও কমবে। বর্তমান নিয়মে পেনশনাররা মাসে চিকিৎসা ভাতা, দুটো উৎসব ভাতা পান, একটি বৈশাখী ভাতা পান, প্রত্যয়ে সে ব্যবস্থা নেই। এখনকার মতো ইনক্রিমেন্টও নেই বলে শিক্ষকরা দাবি করে আসছিলেন।