প্রবল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পঞ্চম মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার ৬ মাস ২৬ দিনের মাথায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগে ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সূত্র জানায়, ভারত থেকে লন্ডনে (ব্রিটেন) যাওয়ার কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা টানা সাড়ে ১৫ বছর; মোট সাড়ে একুশ বছর বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। চার মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পূর্ণ করে পঞ্চমবারের মতো একই দায়িত্ব নিয়েছিলেন গত ১১ জানুয়ারি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা (সরকারের পদত্যাগ) দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের তৃতীয় দিনের মাথায় (সোমবার) ক্ষমতা হারান তিনি।
তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের দাবি, রোববার থেকেই পদত্যাগ করার কথা ভাবছিলেন তার মা। জয়ের বরাত দিয়ে বিবিস ওয়ার্ল্ড জানায়, শেখ হাসিনা আর রাজনীতি করবেন না বলেও জানিয়েছেন তার ছেলে। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় শেখ হাসিনার অবৈতনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন সজীব ওয়াজেদ।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শুরু হয় ৩৬ দিন আগে। পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
এই প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে সংঘাতে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন হাজারো মানুষ; যাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অনেকের হাত-পা কেটে ফেলতে হয়। শেখ হাসিনা ও তার পুরো মন্ত্রিসভার পদত্যাগের দাবিতে একদফা ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। ডাক দেন ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের। প্রতিরোধে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার। রোববার কারফিউ ভেঙে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। লাখো জনতার উত্তেজিত স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজধানী।
দুপুরে গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঢুকে পড়েন উৎসুক জনতা।
বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সেনা সদরে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করেন তিনি।
১৯৮১ সালে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার টানা ৪৩ বছরের বেশি আওয়ামী লীগ চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা। গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছরে পদার্পণ করেন তিনি। শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত হলেও বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বিদেশে চলে যান তিনি। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না শেখ হাসিনা। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ার ছয় বছর পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি।
১৯৮৬ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিয়ে জোটের প্রধান হিসেবে বিরোধী দলীয় নেতা হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল।
১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা পুনরায় বিরোধী দলীয় নেতা হন।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ বেশিরভাগ বিরোধীদলের বর্জনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তবে আওয়ামী লীগসহ সরকারবিরোধী অন্য দলগুলোর তীব্র আন্দোলনের মুখে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের বিল পাস করে ৩০ মার্চ ক্ষমতা ছেড়ে দেয় বিএনপি।
ওই বছর ১২ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সমর্থন নিতে হয় জাতীয় পার্টির। শেখ হাসিনা প্রথম রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন, দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রীর। বিএনপি ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে।
২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকরের অধীনে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বিএনপির বিজয়ে বিরোধী দলীয় নেতার আসন পান শেখ হাসিনা। তবে নির্বাচনে সুক্ষ কারচুপির অভিযোগ তোলে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে পরবর্তি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে পছন্দের লোক বাসতে বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়ালে আওয়ামী লীগসহ সরকারবিরোধী দলগুলোর আন্দোলন। এক পর্যায়ে ক্ষমতা চলে যায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যারা ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। ওই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। বিএনপি পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোটের আগেই ১৫৩ আসনে বিজয়ী হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তবে সরকার হটিয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায় বিএনপি। এদিকে, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিশ্ব সম্প্রদায়। চাপে পড়ে মধ্যবর্তী একটি নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েও পরে মেয়াদপূর্ণ করে আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ফলাফলে পর আগের রাতে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তোলে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনেও অনিয়মের অভিযোগ তোলে দেশি-বিদেশি অনেক গণমাধ্যম।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয় গত ৭ জানুয়ারি। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী অনেকগুলো দল ওই নির্বাচন বর্জন করে। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় ১১ জানুয়ারি। পরে ওই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ জনে। সোমবার ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগ কার্যকর হয়।
সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০২৪
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পঞ্চম মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার ৬ মাস ২৬ দিনের মাথায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগে ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সূত্র জানায়, ভারত থেকে লন্ডনে (ব্রিটেন) যাওয়ার কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা টানা সাড়ে ১৫ বছর; মোট সাড়ে একুশ বছর বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। চার মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পূর্ণ করে পঞ্চমবারের মতো একই দায়িত্ব নিয়েছিলেন গত ১১ জানুয়ারি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা (সরকারের পদত্যাগ) দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের তৃতীয় দিনের মাথায় (সোমবার) ক্ষমতা হারান তিনি।
তবে শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের দাবি, রোববার থেকেই পদত্যাগ করার কথা ভাবছিলেন তার মা। জয়ের বরাত দিয়ে বিবিস ওয়ার্ল্ড জানায়, শেখ হাসিনা আর রাজনীতি করবেন না বলেও জানিয়েছেন তার ছেলে। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় শেখ হাসিনার অবৈতনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন সজীব ওয়াজেদ।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শুরু হয় ৩৬ দিন আগে। পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
এই প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে সংঘাতে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন হাজারো মানুষ; যাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অনেকের হাত-পা কেটে ফেলতে হয়। শেখ হাসিনা ও তার পুরো মন্ত্রিসভার পদত্যাগের দাবিতে একদফা ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। ডাক দেন ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের। প্রতিরোধে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে সরকার। রোববার কারফিউ ভেঙে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। লাখো জনতার উত্তেজিত স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজধানী।
দুপুরে গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঢুকে পড়েন উৎসুক জনতা।
বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সেনা সদরে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তখন শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করেন তিনি।
১৯৮১ সালে সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার টানা ৪৩ বছরের বেশি আওয়ামী লীগ চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা। গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছরে পদার্পণ করেন তিনি। শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত হলেও বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বিদেশে চলে যান তিনি। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না শেখ হাসিনা। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ার ছয় বছর পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি।
১৯৮৬ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিয়ে জোটের প্রধান হিসেবে বিরোধী দলীয় নেতা হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল।
১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা পুনরায় বিরোধী দলীয় নেতা হন।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ বেশিরভাগ বিরোধীদলের বর্জনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তবে আওয়ামী লীগসহ সরকারবিরোধী অন্য দলগুলোর তীব্র আন্দোলনের মুখে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের বিল পাস করে ৩০ মার্চ ক্ষমতা ছেড়ে দেয় বিএনপি।
ওই বছর ১২ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সমর্থন নিতে হয় জাতীয় পার্টির। শেখ হাসিনা প্রথম রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন, দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রীর। বিএনপি ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলে।
২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকরের অধীনে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বিএনপির বিজয়ে বিরোধী দলীয় নেতার আসন পান শেখ হাসিনা। তবে নির্বাচনে সুক্ষ কারচুপির অভিযোগ তোলে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে পরবর্তি তত্ত্বাবধায়ক সরকারে পছন্দের লোক বাসতে বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়ালে আওয়ামী লীগসহ সরকারবিরোধী দলগুলোর আন্দোলন। এক পর্যায়ে ক্ষমতা চলে যায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যারা ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। ওই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। বিএনপি পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোটের আগেই ১৫৩ আসনে বিজয়ী হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তবে সরকার হটিয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায় বিএনপি। এদিকে, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিশ্ব সম্প্রদায়। চাপে পড়ে মধ্যবর্তী একটি নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েও পরে মেয়াদপূর্ণ করে আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ফলাফলে পর আগের রাতে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তোলে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচনেও অনিয়মের অভিযোগ তোলে দেশি-বিদেশি অনেক গণমাধ্যম।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয় গত ৭ জানুয়ারি। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী অনেকগুলো দল ওই নির্বাচন বর্জন করে। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় ১১ জানুয়ারি। পরে ওই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ জনে। সোমবার ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগ কার্যকর হয়।