ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিলেও দুই দেশের সম্পর্কের সমস্যা হবে না।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। দায়িত্ব পাওয়ার পর বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন এম তৌহিদ হোসেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংয়ে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬৪ জনের মতো কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের তৌহিদ হোসেন জানান, ‘কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে কূটনীদিকদের কেউ আক্রান্ত হয়নি। রাষ্ট্রদূতদের বাসভবনে সিকিউরিটি নেই। এটা আমি তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি যে, এক থেকে দুই দিনের মধ্যে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে, যেহেতু পুলিশ এরই মধ্যে রাস্তায় নামা শুরু করেছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো প্রেক্ষাপটে এসেছে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের বলার জন্য ডাকা হয়েছিল। আমরা আমাদের উদ্দেশ্য বলেছি। একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা যারা এনেছে তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। এ সরকার এ উদ্দেশে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিক যুক্ত হতে চাই। সবক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ সবার সঙ্গে। রোহিঙ্গা ইস্যু, বিনিয়োগের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলেছি তারা যেন হতাশ না হয়। এত বড় একটা পরিবর্তন হয়েছে, কিছু তো সময় লাগতে পারে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুবকরা এত বড় একটা কাজ করল। আগামী যেন যুবকদের মধ্যে যেন একটা নেতৃত্ব আসে। আমি বলেছি, দুই জন ছাত্র কাউন্সিলে আছে। তাদের অনেকে মানবাধিকার নিয়ে সিরিয়াস।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি এ সরকারের মেয়াদ নিয়ে কূটনীতিকরা কোনো প্রশ্ন করেছেন কিনা-জানতে চাইলে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনি। কাজেই এটা এখন আমরা বাদ দেই। নির্বাচনের বিষয়ে একটি শব্দও হয়নি। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি বিষয়টা। এ সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সময়ের ব্যাপারে বলছি না। ছাত্ররা কি আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য জীবন দিয়েছে? তাদের কিছু চাওয়া আছে। কিছু রিফর্মের প্রয়োজন পড়বে। আমরা যেটুকু সময়ের প্রয়োজন পড়বে ঠিক সেই সময়টুকু, বেশি থাকব না, কমও থাকব না।’
বিদায়ী সরকারের পরিকল্পনায় থাকা বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন এনগেজমেন্ট আটকে যাওয়ার প্রশ্নে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘ঠিক এ মহূর্তে আমরা কিন্তু কোনো কিছু থেকে সরে যাব এমন না। যারা সঙ্গে যে চুক্তি আছে বা কমিটমেন্ট আছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বা দ্বিপক্ষীয় ব্যাপারে যে কমিটমেন্ট বাংলাদেশ করেছে অবশ্যই আমাদের রক্ষা করতে হবে। যেখানে আমাদের মনে হয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে সেখানে আমাদের স্বার্থ দেখা হবে।’
# শেখ হাসিনা আশ্রয় নিলেও সমস্যা হবে না
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে থাকলেও দুই দেশের মধ্যে কোনো টানাপড়েন হবে কিনা, প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) ভারতে থাকলেও ওই দেশের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কেননা, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেক বড় বিষয়। দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বার্থের। বন্ধুত্বেরও। বন্ধুত্বের মধ্যেও স্বার্থ থাকে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো দেশের হাতে আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার নলেজে যেটা আছে সেটা আমি বলতে পারি। আমার নিজের ব্যাপারে তো নিশ্চয়তা দিতে পারি, কিন্তু অন্যদের ব্যাপারে নিশ্চয়তা.. না। কিন্তু আমি যা দেখেছি, আমি মোটামুটি নিশ্চিত কেউ কোনো দেশের হয়ে বিড করছে না।’
কুটনীতিকরা যা বললেন
ব্রিফিং শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং হয়েছে। আমি বলতে চাই, চীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমাদের সম্পর্ক এদেশের জনগণের সঙ্গে। এখন যে সম্পর্ক আছে, তাকে আমরা ভিন্ন উচ্চতায় নিতে যেতে চাই।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন বলেন, ‘পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন হবে বলে আমরা আশা করি। ব্রিফিং শুনে মনে হয়েছে, সরকার তরুণদের কথা শুনতে চায়।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। রাশিয়া ও বাংলাদেশের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে বলে আমরা আশা করি।’
প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি আমি গভীর শোক জানাই। তবে এখন অতীত ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতের দিকে আমাদের তাকাতে হবে। সব ধরনের বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০২৪
ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিলেও দুই দেশের সম্পর্কের সমস্যা হবে না।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। দায়িত্ব পাওয়ার পর বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন এম তৌহিদ হোসেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংয়ে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬৪ জনের মতো কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের তৌহিদ হোসেন জানান, ‘কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে কূটনীদিকদের কেউ আক্রান্ত হয়নি। রাষ্ট্রদূতদের বাসভবনে সিকিউরিটি নেই। এটা আমি তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি যে, এক থেকে দুই দিনের মধ্যে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে, যেহেতু পুলিশ এরই মধ্যে রাস্তায় নামা শুরু করেছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো প্রেক্ষাপটে এসেছে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের বলার জন্য ডাকা হয়েছিল। আমরা আমাদের উদ্দেশ্য বলেছি। একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা যারা এনেছে তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। এ সরকার এ উদ্দেশে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিক যুক্ত হতে চাই। সবক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ সবার সঙ্গে। রোহিঙ্গা ইস্যু, বিনিয়োগের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলেছি তারা যেন হতাশ না হয়। এত বড় একটা পরিবর্তন হয়েছে, কিছু তো সময় লাগতে পারে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুবকরা এত বড় একটা কাজ করল। আগামী যেন যুবকদের মধ্যে যেন একটা নেতৃত্ব আসে। আমি বলেছি, দুই জন ছাত্র কাউন্সিলে আছে। তাদের অনেকে মানবাধিকার নিয়ে সিরিয়াস।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি এ সরকারের মেয়াদ নিয়ে কূটনীতিকরা কোনো প্রশ্ন করেছেন কিনা-জানতে চাইলে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনি। কাজেই এটা এখন আমরা বাদ দেই। নির্বাচনের বিষয়ে একটি শব্দও হয়নি। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি বিষয়টা। এ সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সময়ের ব্যাপারে বলছি না। ছাত্ররা কি আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য জীবন দিয়েছে? তাদের কিছু চাওয়া আছে। কিছু রিফর্মের প্রয়োজন পড়বে। আমরা যেটুকু সময়ের প্রয়োজন পড়বে ঠিক সেই সময়টুকু, বেশি থাকব না, কমও থাকব না।’
বিদায়ী সরকারের পরিকল্পনায় থাকা বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন এনগেজমেন্ট আটকে যাওয়ার প্রশ্নে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘ঠিক এ মহূর্তে আমরা কিন্তু কোনো কিছু থেকে সরে যাব এমন না। যারা সঙ্গে যে চুক্তি আছে বা কমিটমেন্ট আছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বা দ্বিপক্ষীয় ব্যাপারে যে কমিটমেন্ট বাংলাদেশ করেছে অবশ্যই আমাদের রক্ষা করতে হবে। যেখানে আমাদের মনে হয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে সেখানে আমাদের স্বার্থ দেখা হবে।’
# শেখ হাসিনা আশ্রয় নিলেও সমস্যা হবে না
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে থাকলেও দুই দেশের মধ্যে কোনো টানাপড়েন হবে কিনা, প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) ভারতে থাকলেও ওই দেশের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কেননা, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেক বড় বিষয়। দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বার্থের। বন্ধুত্বেরও। বন্ধুত্বের মধ্যেও স্বার্থ থাকে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো দেশের হাতে আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার নলেজে যেটা আছে সেটা আমি বলতে পারি। আমার নিজের ব্যাপারে তো নিশ্চয়তা দিতে পারি, কিন্তু অন্যদের ব্যাপারে নিশ্চয়তা.. না। কিন্তু আমি যা দেখেছি, আমি মোটামুটি নিশ্চিত কেউ কোনো দেশের হয়ে বিড করছে না।’
কুটনীতিকরা যা বললেন
ব্রিফিং শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং হয়েছে। আমি বলতে চাই, চীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমাদের সম্পর্ক এদেশের জনগণের সঙ্গে। এখন যে সম্পর্ক আছে, তাকে আমরা ভিন্ন উচ্চতায় নিতে যেতে চাই।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন বলেন, ‘পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন হবে বলে আমরা আশা করি। ব্রিফিং শুনে মনে হয়েছে, সরকার তরুণদের কথা শুনতে চায়।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। রাশিয়া ও বাংলাদেশের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে বলে আমরা আশা করি।’
প্যালেস্টাইনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি আমি গভীর শোক জানাই। তবে এখন অতীত ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতের দিকে আমাদের তাকাতে হবে। সব ধরনের বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’