সম্প্রতি গণআন্দোলনে গুলিতে এক মুদি দোকানদার নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২ সাবেক মন্ত্রী ও ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা শাতিল নামে এক ব্যক্তি এ মামলা করেন।
এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। রাতেই থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেছে বলে ওসি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, ১. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২. সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ৩. সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪. নম্বর ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, ৫. সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, ৬. ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ৭. সাবেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগের নেতা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছে।
হত্যাকা-ের ঘটনাস্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা ৪০ ফুট চৌরাস্তার পাকা রাস্তা।
আদালত সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহত হয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলির নির্দেশ দেন। এতে ওইদিন আন্দোলন গড়ায় সহিংসতায় এবং অনেকেই নিহত হন। আদালতের কাছে অভিযোগে এসব কথা উল্লেখ করেন বাদী।
হত্যা মামলায় কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ,
মামলার ১ নম্বর আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলন চলাকালে তিনি শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ২নং আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩নং আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ৪নং আসামি সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, ৬নং আসামি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ৭নং আসামি যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে।
এছাড়া মামলার ৫নং আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন। অন্য অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর নির্দেশে হত্যাকা- ঘটান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিরীহ ছাত্র-জনতাকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে হত্যা করেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এসব হত্যার বিচার হওয়া আবশ্যক। আবু সায়েদ হত্যার তদন্ত হলে অজ্ঞাতপরিচয় আরও তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের নাম উঠে আসবে।
পদত্যাগের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা
গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলার আবেদন করা হয়। আন্দোলন চলাকালে তিনি তা শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ২নং আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে যা বলা হয়েছে
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওইসব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এতে অসংখ্য ছাত্র-জনতা নিহত ও আহত হন।
গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বছিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানি আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।’
ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেসময় পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদায় নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এজন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ মামলা করছি।’
বাদী আরও উল্লেখ করেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীন পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালান। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকা- ঘটিয়েছেন। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
মামলার বাদী এস এম আমীর হামজা বলেন, ‘ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেসময় পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশের গুলিতে আবু সায়েদের মৃত্যুতে কোনো মামলা হয়নি এতদিন। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাবো।’ এস এম আমীর হামজা অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলা করার পর আমাকে ফ্রান্স থেকে এক ব্যক্তি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে মামলার বাদীর আইনজীবী মামুন মিয়া সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আবু সায়েদকে হত্যার ঘটনায় এই মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি মোহাম্মদপুর থানাকে এজহার হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, মামলায় অন্যান্য অজ্ঞাত নামা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছে। এছাড়া সরকারের কোন কোন মন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। এসব হামলায় সারাদেশে হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতাকে অভিযুক্ত আসামিদের য্গোসাজশে গুলি করা হয়েছে। তখন অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ও আহত হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যার তদন্ত হলে অজ্ঞাতনামা আরও সাবেক সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের নামও উঠে আসবে।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় যোগাযোগ করলে ওসি জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার, ১৪ আগস্ট ২০২৪
সম্প্রতি গণআন্দোলনে গুলিতে এক মুদি দোকানদার নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২ সাবেক মন্ত্রী ও ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা শাতিল নামে এক ব্যক্তি এ মামলা করেন।
এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। রাতেই থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেছে বলে ওসি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, ১. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২. সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ৩. সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ৪. নম্বর ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, ৫. সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, ৬. ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ৭. সাবেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগের নেতা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছে।
হত্যাকা-ের ঘটনাস্থল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা ৪০ ফুট চৌরাস্তার পাকা রাস্তা।
আদালত সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার মুদি দোকানি আবু সায়েদ নিহত হয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে আন্দোলন দমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলির নির্দেশ দেন। এতে ওইদিন আন্দোলন গড়ায় সহিংসতায় এবং অনেকেই নিহত হন। আদালতের কাছে অভিযোগে এসব কথা উল্লেখ করেন বাদী।
হত্যা মামলায় কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ,
মামলার ১ নম্বর আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলন চলাকালে তিনি শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ২নং আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩নং আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ৪নং আসামি সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, ৬নং আসামি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং ৭নং আসামি যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তাদের অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে।
এছাড়া মামলার ৫নং আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেন। অন্য অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর নির্দেশে হত্যাকা- ঘটান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিরীহ ছাত্র-জনতাকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে হত্যা করেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এসব হত্যার বিচার হওয়া আবশ্যক। আবু সায়েদ হত্যার তদন্ত হলে অজ্ঞাতপরিচয় আরও তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের নাম উঠে আসবে।
পদত্যাগের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা
গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম মামলার আবেদন করা হয়। আন্দোলন চলাকালে তিনি তা শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ২নং আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে আন্দোলন দমনের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী আদাবর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী এস এম আমীর হামজা শাতিল। তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে একজন নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে যা বলা হয়েছে
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওইসব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এতে অসংখ্য ছাত্র-জনতা নিহত ও আহত হন।
গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বছিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানি আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।’
ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেসময় পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদায় নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এজন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ মামলা করছি।’
বাদী আরও উল্লেখ করেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীন পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালান। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকা- ঘটিয়েছেন। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
মামলার বাদী এস এম আমীর হামজা বলেন, ‘ভিকটিম আবু সায়েদ একজন নিরীহ মানুষ। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সেসময় পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশের গুলিতে আবু সায়েদের মৃত্যুতে কোনো মামলা হয়নি এতদিন। আবু সায়েদের পরিবার অত্যন্ত গরিব। তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না। এ কারণে সচেতন নাগরিক হিসেবে আবু সায়েদ হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি ন্যায়বিচার পাবো।’ এস এম আমীর হামজা অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলা করার পর আমাকে ফ্রান্স থেকে এক ব্যক্তি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে মামলার বাদীর আইনজীবী মামুন মিয়া সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আবু সায়েদকে হত্যার ঘটনায় এই মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি মোহাম্মদপুর থানাকে এজহার হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, মামলায় অন্যান্য অজ্ঞাত নামা পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছে। এছাড়া সরকারের কোন কোন মন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে। এসব হামলায় সারাদেশে হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতাকে অভিযুক্ত আসামিদের য্গোসাজশে গুলি করা হয়েছে। তখন অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ও আহত হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যার তদন্ত হলে অজ্ঞাতনামা আরও সাবেক সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যদের নামও উঠে আসবে।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় যোগাযোগ করলে ওসি জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।