alt

জাতীয়

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ, এক মাস পর হাসপাতালে বাশার

মোস্তাফিজুর রহমান : বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাবিবুল বাশার-সংবাদ

একটি গুলি হাঁটুর নীচে লাগে। গুলিটি হাড়ের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। অথচ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হতে পারেনি।

পরে বাধ্য হয়েই বাসায় রেখে চিকিৎসা চালানো হয়। কিন্তু তাতে উন্নতি হচ্ছিল না। ঠিকঠাক চিকিৎসা না পাওয়ায় এক পর্যায়ে দেখা দেয় ইনফেকশনও। এতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। আতঙ্ক দেখা দেয় পা হারানোর।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক মাস পর হাসপাতালের বিছানায় ঠাঁই হয় বলে অভিযোগ হাবিবুল বাশার (১৭) ও তার স্বজনদের।

বাশারের বাড়ি সিলেট সদরে। তার পিতা মানিক মিয়া একজন রিকশাচালক। মা লিপি বেগম। তিন ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার বড় সে। স্থানীয় ভোলানন্দ নৈশ উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন দশম শ্রেণীতে পড়ে। পাশাপাশি একটি প্রেস প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখছিল।

তবে বাশারের ভাষ্য, সে গুলিবিদ্ধ হয় নারায়ণগঞ্জ চিটাগাং রোড হীরাঝিল এলাকায়। এখানে তার ফুফুর বাসায় বেড়াতে এসেছিল।

গত ২০ জুলাই (শনিবার) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তার বাম পায়ের হাঁটুর নীচে গুলি লাগে। তখন সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশ ও আন্দোলনকরীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল।

বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৪৮ নম্বর ক্যাবিনের ২ নম্বর বেডে আহত বাশারের চিকিৎসা চলছে। সেখানে তার সঙ্গে কথা হয় গত সোমবার সন্ধ্যায়।

বাশার সংবাদকে বলেন, গুলি লাগার পর তাকে প্রথমে খানপুর হাসপাতালে (নারায়ণগঞ্জ) নেয়া হয়। কিন্তু সেই হাসপাতাল শুধু ব্যান্ডিস করে ছেড়ে দেয়। পরে আলিফ মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে গেলেও ‘সিরিয়াস অবস্থা’ বলে ভর্তি নেয়নি।

‘খানপুর হাসপাতালে ভর্তি নেয়নি। এরপর আলিফ ছাড়াও কয়েকটা হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আমার অবস্থা সিরিয়াস বলে ভর্তি করেনি। পরে ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। কিন্তু এখানেও শুধু ড্রেসিং করে বাসায় নিয়ে যেতে বলে।’

এরপর নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের ফুফুর বাসায় চিকিৎসা চলে। তবে সপ্তাহে একবার করে ঢাকা মেডিকেলে আসা হতো। পাশাপাশি অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এভাবে এক মাসেও পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছিল না বলে জানান বাশার।

‘বাসায় চিকিৎসা চলার মধ্যে আমার ইনফেকশান হয়েছিল। পরে গত ২২ আগস্ট আমার ভর্তি নেয় ঢাকা মেডিকেল। এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। এখন হাড়ের অপারেশন হবে।’

হাসপাতালে বাশারের দেখবাল করছেন তার দাদী। তিনি বলেন, ‘এই পুলারে লইয়া কি যে বিপদে আছি। হের চিকিৎসার লাইগা বাপে কিস্তি উঠাইছে। কিস্তির চাপ। দেনা করে চলতে হচ্ছে।’

বাশার ও তার স্বজনের ভাষ্য, হাসপাতালে ভর্তি নেয়ার পর চিকিৎসা বিনামূল্যে করতে পারছেন। কিন্তু এর বাইরেও অনেক খরচ হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তির আগের একমাস সরকারের কোনো সুবিধা পায়নি। এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে।

‘বাসায় যতদিন চিকিৎসা চলছে ততদিন কোনো সুবিধা পাই নাই। হাসপাতালে যাইয়া নিজের খরচে ড্রিসিং করতে হতো। ওষুধ কিনতে হতো। আমাদের অনেক টাকা গেছে। বাপে কিস্তি পর্যন্ত তুলেছে। আমার ছোট ভাই একটা সেভেন ও একটা ফাইভে পড়ে। ছোট বোনও আছে। আমার (চিকিৎসা) খরচ ও পরিবার খরচ চালাতে মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করতে হচ্ছে। আবার কিস্তিরও চাপ আছে, ’ বলেন বাশার।

ছবি

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নেই, সবার সহযোগিতায় নির্মূল সম্ভব হয়েছে: জাহাঙ্গীর আলম

ছবি

নির্বাচনের ‘সময় আছে পাঁচ-ছয় মাসের মত’, সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বাংলাদেশে এখন কোনো জঙ্গি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

আশুরার তাজিয়া মিছিলে কারবালার শোক স্মরণে শিয়া সম্প্রদায়ের ঢল

ছবি

টানা বৃষ্টিতে বাড়তে পারে পারে নদ-নদীর পানি

পুলিশ সংস্কার বাস্তবায়নে দুটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন

শার্শায় গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ

তিন জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৩২ জনকে ‘পুশইন’ ভারতের

নিখোঁজ খিলক্ষেতের ব্যাংক কর্মকর্তার অবস্থান শনাক্তের দাবি পুলিশের

ছবি

গ্যাব পদ্ধতিতে আম চাষে সফল চাষি হিলির নিরঞ্জন

তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস, ভূমিধসের সতর্কবার্তা

মোবাইল চুরির ঘটনায় মাসহ দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা: র‌্যাব

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে তরুণদের, বিশেষ ঝুঁকিতে ছেলেরা

রবিবার পবিত্র আশুরা

ছবি

সঞ্চয়পত্রে সুদহার বাড়ালে কেউ ব্যাংকে টাকা রাখবে না: উপদেষ্টা

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন প্রতিপক্ষ ছিল ভারতের, দাবি উপ-সেনাপ্রধানের

ছবি

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় নিহত ২৪

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আসেনি: নজরুল ইসলাম খান

ছবি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা মারা গেছেন

গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ‘ন্যূনতম হস্তক্ষেপ’ করেনি অন্তর্বর্তী সরকার: প্রেস সচিব

জঙ্গি সম্পৃক্ততায় মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো তিনজন কারাগারে

সন্ত্রাসবাদ তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তার আশ্বাস বাংলাদেশের

সৌরবিদ্যুতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ‘আশানুরূপ নয়’

শুল্ক নিয়ে আলোচনায় ‘প্রত্যাশার চেয়েও বেশি’ প্রাপ্তির সম্ভাবনা

ছবি

‘মব’ তৈরি করে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট, থানায় অভিযোগ হাবিবার

ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে: প্রেস সচিব

ছবি

‘ব্যাংকগুলোর টাকা ফেরত দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ’ — সালেহউদ্দিন আহমেদ

ছবি

সন্ত্রাসবাদ তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তার আশ্বাস বাংলাদেশের

ছবি

জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো ৩ জন কারাগারে

ছবি

তিন বিভাগে অতি ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা, পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা

ছবি

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা আর নেই

ছবি

বিএনপি পুরনো খসড়া দেখে মন্তব্য করেছে: তৈয়্যব

ছবি

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে আটক তিনজন দেশে ফিরেছে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ: আসিফ নজরুল

সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার আন্দোলন

সম্পত্তির জন্য মাকে মারধর করলেন স্কুল শিক্ষক ছেলে

রাজধানীতে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন

tab

জাতীয়

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ, এক মাস পর হাসপাতালে বাশার

মোস্তাফিজুর রহমান

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাবিবুল বাশার-সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

একটি গুলি হাঁটুর নীচে লাগে। গুলিটি হাড়ের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। অথচ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হতে পারেনি।

পরে বাধ্য হয়েই বাসায় রেখে চিকিৎসা চালানো হয়। কিন্তু তাতে উন্নতি হচ্ছিল না। ঠিকঠাক চিকিৎসা না পাওয়ায় এক পর্যায়ে দেখা দেয় ইনফেকশনও। এতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। আতঙ্ক দেখা দেয় পা হারানোর।

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক মাস পর হাসপাতালের বিছানায় ঠাঁই হয় বলে অভিযোগ হাবিবুল বাশার (১৭) ও তার স্বজনদের।

বাশারের বাড়ি সিলেট সদরে। তার পিতা মানিক মিয়া একজন রিকশাচালক। মা লিপি বেগম। তিন ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার বড় সে। স্থানীয় ভোলানন্দ নৈশ উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন দশম শ্রেণীতে পড়ে। পাশাপাশি একটি প্রেস প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখছিল।

তবে বাশারের ভাষ্য, সে গুলিবিদ্ধ হয় নারায়ণগঞ্জ চিটাগাং রোড হীরাঝিল এলাকায়। এখানে তার ফুফুর বাসায় বেড়াতে এসেছিল।

গত ২০ জুলাই (শনিবার) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তার বাম পায়ের হাঁটুর নীচে গুলি লাগে। তখন সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে পুলিশ ও আন্দোলনকরীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল।

বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৪৮ নম্বর ক্যাবিনের ২ নম্বর বেডে আহত বাশারের চিকিৎসা চলছে। সেখানে তার সঙ্গে কথা হয় গত সোমবার সন্ধ্যায়।

বাশার সংবাদকে বলেন, গুলি লাগার পর তাকে প্রথমে খানপুর হাসপাতালে (নারায়ণগঞ্জ) নেয়া হয়। কিন্তু সেই হাসপাতাল শুধু ব্যান্ডিস করে ছেড়ে দেয়। পরে আলিফ মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতালে গেলেও ‘সিরিয়াস অবস্থা’ বলে ভর্তি নেয়নি।

‘খানপুর হাসপাতালে ভর্তি নেয়নি। এরপর আলিফ ছাড়াও কয়েকটা হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আমার অবস্থা সিরিয়াস বলে ভর্তি করেনি। পরে ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। কিন্তু এখানেও শুধু ড্রেসিং করে বাসায় নিয়ে যেতে বলে।’

এরপর নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের ফুফুর বাসায় চিকিৎসা চলে। তবে সপ্তাহে একবার করে ঢাকা মেডিকেলে আসা হতো। পাশাপাশি অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এভাবে এক মাসেও পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছিল না বলে জানান বাশার।

‘বাসায় চিকিৎসা চলার মধ্যে আমার ইনফেকশান হয়েছিল। পরে গত ২২ আগস্ট আমার ভর্তি নেয় ঢাকা মেডিকেল। এখন পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। এখন হাড়ের অপারেশন হবে।’

হাসপাতালে বাশারের দেখবাল করছেন তার দাদী। তিনি বলেন, ‘এই পুলারে লইয়া কি যে বিপদে আছি। হের চিকিৎসার লাইগা বাপে কিস্তি উঠাইছে। কিস্তির চাপ। দেনা করে চলতে হচ্ছে।’

বাশার ও তার স্বজনের ভাষ্য, হাসপাতালে ভর্তি নেয়ার পর চিকিৎসা বিনামূল্যে করতে পারছেন। কিন্তু এর বাইরেও অনেক খরচ হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তির আগের একমাস সরকারের কোনো সুবিধা পায়নি। এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে।

‘বাসায় যতদিন চিকিৎসা চলছে ততদিন কোনো সুবিধা পাই নাই। হাসপাতালে যাইয়া নিজের খরচে ড্রিসিং করতে হতো। ওষুধ কিনতে হতো। আমাদের অনেক টাকা গেছে। বাপে কিস্তি পর্যন্ত তুলেছে। আমার ছোট ভাই একটা সেভেন ও একটা ফাইভে পড়ে। ছোট বোনও আছে। আমার (চিকিৎসা) খরচ ও পরিবার খরচ চালাতে মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করতে হচ্ছে। আবার কিস্তিরও চাপ আছে, ’ বলেন বাশার।

back to top