চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর দগ্ধ ১২ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসএন করপোরেশন নামে ওই শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের তেঁতুলতলা এলাকার সমুদ্র উপকূলে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। বিস্ফোরণে আহতরা হলেন জাহাঙ্গীর (৪৮), আহমাদুল্লাহ (৩৮), কাসেম (৩৯), সাগর (২০), আলামিন (২৩), কারিমুল (২১), হাবিব (৩৬), বরকত (২৩), আনোয়ার (৫০), রফিকুল (৩০), রফিক (৩০), সাইফুল (৩০) প্রমুখ।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সীতাকুণ্ড কুমিরা এলাকার এসএম করপোরেশন ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর তাতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এদিকে বিস্ফোরণের পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সীতাকুণ্ড ওসি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। চমেক হাসপাতালের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অনেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ। এদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মামুন বিকেলে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। তবে এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনের তীব্রতায় ভিতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় ১২ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারা ৩৬ নম্বর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছেন। হাসপাতালে নিয়ে আসা অনেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ। এদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এস এন করপোরেশনের ম্যানেজার (এডমিন) ওমর ফারুক বলেন, একটি জাহাজ কাটার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। আজ জাহাজটির ইঞ্জিন রুমে হঠাৎ একটি পাম্পের বিস্ফোরণ ঘটলে ১২ জন শ্রমিক আহত হন। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম মেনেই জাহাজ কাটার কাজ করি। কিন্তু এই ঘটনা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনায় শ্রমিক আহতের ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম।
ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ শফর আলী ও এ এম নাজিম উদ্দিন এবং জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির আহ্বায়ক মহির উদ্দিন মাহমুদ ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, গত ৩ জুলাই ফোর স্টার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় চারজন শ্রমিক মারাত্মক আহত হন।
তখন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শন রিপোর্টে মালিক পক্ষের সুস্পষ্ট ত্রুটি ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর ফলে আজ এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এস এন করপোরেশন একটি গ্রিন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে।
এ ধরনের ইয়ার্ডে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা প্রমাণ করে শিপ ব্রেকিং সেক্টরে এখনও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। ফোরামের নেতারা শিল্প ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর দগ্ধ ১২ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসএন করপোরেশন নামে ওই শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের তেঁতুলতলা এলাকার সমুদ্র উপকূলে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। বিস্ফোরণে আহতরা হলেন জাহাঙ্গীর (৪৮), আহমাদুল্লাহ (৩৮), কাসেম (৩৯), সাগর (২০), আলামিন (২৩), কারিমুল (২১), হাবিব (৩৬), বরকত (২৩), আনোয়ার (৫০), রফিকুল (৩০), রফিক (৩০), সাইফুল (৩০) প্রমুখ।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সীতাকুণ্ড কুমিরা এলাকার এসএম করপোরেশন ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর তাতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এদিকে বিস্ফোরণের পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সীতাকুণ্ড ওসি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। চমেক হাসপাতালের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অনেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ। এদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মামুন বিকেলে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। তবে এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুনের তীব্রতায় ভিতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ কাটার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় ১২ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারা ৩৬ নম্বর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি আছেন। হাসপাতালে নিয়ে আসা অনেকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ। এদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এস এন করপোরেশনের ম্যানেজার (এডমিন) ওমর ফারুক বলেন, একটি জাহাজ কাটার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। আজ জাহাজটির ইঞ্জিন রুমে হঠাৎ একটি পাম্পের বিস্ফোরণ ঘটলে ১২ জন শ্রমিক আহত হন। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম মেনেই জাহাজ কাটার কাজ করি। কিন্তু এই ঘটনা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনায় শ্রমিক আহতের ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম।
ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত, যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ শফর আলী ও এ এম নাজিম উদ্দিন এবং জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির আহ্বায়ক মহির উদ্দিন মাহমুদ ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, গত ৩ জুলাই ফোর স্টার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় চারজন শ্রমিক মারাত্মক আহত হন।
তখন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শন রিপোর্টে মালিক পক্ষের সুস্পষ্ট ত্রুটি ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও মালিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর ফলে আজ এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এস এন করপোরেশন একটি গ্রিন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে।
এ ধরনের ইয়ার্ডে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা প্রমাণ করে শিপ ব্রেকিং সেক্টরে এখনও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। ফোরামের নেতারা শিল্প ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।