লক্ষ্মীপুর জেলার ব্যাপক এলাকায় এখনও বন্যার পানি রয়ে গেছে। খাল, নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় সরতে পারছে না বন্যার পানি। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে উপদ্রুত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে জ্বর, সর্দি-কাশি, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ।
কালো বর্ণ ধারণ করা পচা পানি গায়ে লাগলেই চুলকানি দেখা দিচ্ছে। জেলার অনেক মানুষই এই পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে পায়ে ক্ষত, হাতে খোসপাঁচড়া দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি ঘরে ঘরে জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। টেনেটুনে সংসার চলান পেয়ারা বেগম। স্বামী ভারসাম্যহীন রোগী। বন্যার পানির সঙ্গে থাকতে থাকতে পায়ে ঘা হয়েছে তার। ১১ দিন ধরে জ্বর। কাশি তো লেগেই আছে। হাঁটাচলা দূরের কথা, এখন ঠিকমতো দাড়াতেই পারছেন না চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এ নারী। বাধ্য হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার। হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পেয়ারা বেগমের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা টুমচর গ্রামে। তিনি জানান, দুই সপ্তাহ ধরে বাড়িতে কোমরপানি ছিল। এখনও পানি আছে, তবে অল্প। স্বামী, দুই সন্তান নিয়ে সংসার। বাড়ির চারপাশে থইথই করছে। পানিতে হাঁটাচলার কারণেই তিনি ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হন। শুধু পেয়ারা বেগম নন, লক্ষ্মীপুরের বন্যাকবলিত পাঁচটি উপজেলার হাজার হাজার পরিবার জ্বর, ডায়রিয়া, চর্মসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত।
গত কয়েকদিন জ্বর ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা গেছে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা ১০টি। অথচ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি ছিল ১০৫ জন। এর মধ্যে শিশু ৭৬ ও নারী ১৯ জন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। শয্যা না পেয়ে রোগীদের জন্য মেঝেতে বিছানা পাতা হয়েছে। হাসপাতালে তথ্যমতে, এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া, জ্বর ও পানিবাহিত রোগে সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই সময়ের মধ্যে বহির্বিভাগ ও ভর্তি মিলিয়ে প্রায় এক হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা অরূপ পাল জানিয়েছেন, বন্যার পর এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের ৮০ ভাগই শিশু। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া রোগীদের কেউ কেউ। অনেকে ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, বন্যার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। জেলার ৫৮টি মেডিকেল টিম সেবা দিচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন। পানিবন্দী থাকা অনেক মানুষ ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া নবজাতক, শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তাই যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে তাদের অবিলম্বে চিকিৎসা দিতে হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া বলেন, এখনও ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। আশ্রুয়কেন্দ্র রয়েছেন ১৩ হাজার ৩৪ জন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর, চরশাহী, বাঙ্গাখা, চন্দ্রগঞ্জ, পার্বতীনগরসহ ২০-২৫টি ইউনিয়নে পানি রয়েছে। এসব এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
লক্ষ্মীপুর জেলার ব্যাপক এলাকায় এখনও বন্যার পানি রয়ে গেছে। খাল, নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় সরতে পারছে না বন্যার পানি। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে উপদ্রুত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে জ্বর, সর্দি-কাশি, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ।
কালো বর্ণ ধারণ করা পচা পানি গায়ে লাগলেই চুলকানি দেখা দিচ্ছে। জেলার অনেক মানুষই এই পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে পায়ে ক্ষত, হাতে খোসপাঁচড়া দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি ঘরে ঘরে জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। টেনেটুনে সংসার চলান পেয়ারা বেগম। স্বামী ভারসাম্যহীন রোগী। বন্যার পানির সঙ্গে থাকতে থাকতে পায়ে ঘা হয়েছে তার। ১১ দিন ধরে জ্বর। কাশি তো লেগেই আছে। হাঁটাচলা দূরের কথা, এখন ঠিকমতো দাড়াতেই পারছেন না চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এ নারী। বাধ্য হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার। হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পেয়ারা বেগমের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা টুমচর গ্রামে। তিনি জানান, দুই সপ্তাহ ধরে বাড়িতে কোমরপানি ছিল। এখনও পানি আছে, তবে অল্প। স্বামী, দুই সন্তান নিয়ে সংসার। বাড়ির চারপাশে থইথই করছে। পানিতে হাঁটাচলার কারণেই তিনি ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হন। শুধু পেয়ারা বেগম নন, লক্ষ্মীপুরের বন্যাকবলিত পাঁচটি উপজেলার হাজার হাজার পরিবার জ্বর, ডায়রিয়া, চর্মসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত।
গত কয়েকদিন জ্বর ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভিড় দেখা গেছে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা ১০টি। অথচ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি ছিল ১০৫ জন। এর মধ্যে শিশু ৭৬ ও নারী ১৯ জন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। শয্যা না পেয়ে রোগীদের জন্য মেঝেতে বিছানা পাতা হয়েছে। হাসপাতালে তথ্যমতে, এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া, জ্বর ও পানিবাহিত রোগে সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই সময়ের মধ্যে বহির্বিভাগ ও ভর্তি মিলিয়ে প্রায় এক হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা অরূপ পাল জানিয়েছেন, বন্যার পর এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের ৮০ ভাগই শিশু। সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া রোগীদের কেউ কেউ। অনেকে ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, বন্যার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। জেলার ৫৮টি মেডিকেল টিম সেবা দিচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন। পানিবন্দী থাকা অনেক মানুষ ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া নবজাতক, শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তাই যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে তাদের অবিলম্বে চিকিৎসা দিতে হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া বলেন, এখনও ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। আশ্রুয়কেন্দ্র রয়েছেন ১৩ হাজার ৩৪ জন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর, চরশাহী, বাঙ্গাখা, চন্দ্রগঞ্জ, পার্বতীনগরসহ ২০-২৫টি ইউনিয়নে পানি রয়েছে। এসব এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।