খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে চারজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-জেলা সদরে স্বর্নিভর জামতলার জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল ত্রিপুরা (৩০)।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, রাতে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ১৬ জনকে আনা হয়। তারা বেশিরভাগই সদর উপজেলা থেকে রাতে এসেছেন। এর মধ্যে তিনজন মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে।
পাশাপাশি রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রাঙ্গামাটি শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় আঞ্চলিক পরিষদে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শহরজুড়ে প্রায় ২০টির মতো মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বনরূপা মসজিদে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মসজিদের গ্লাস ভেঙে দেয়া হয়। পরে উত্তেজিত জনতা কাঁঠালতলী মৈত্রী বিহারে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে পাহাড়ি ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা আসে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। পরে খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধে চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে শহরে এখনো পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। রাঙ্গামাটি শহরে এখন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র যৌথ টহল টিম কাজ শুরু করেছে। ফলে শহরে গাড়ি চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান গণবিজ্ঞপ্তিতে বলেন, যেহেতু রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং জনগণের জান ও মাল ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে, সেহেতু রাঙ্গামাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা অদ্য ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ মোতাবেক ১৪৪ ধারা জারি করা করলাম। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে এটি পাহাড়ি না বাঙালি তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করি। পরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক ১৪৪ ধারা জারি করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, খাগড়াছড়ির ঘটনা নিয়ে সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার উদ্ভব ঘটেছে। তাই ১৪৪ ধারা মোতায়েন করা হয়েছে। এই আবেদন পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এছাড়া রাঙ্গামাটি শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা, খুন ও বিহার-ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
এছাড়া দলটি ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার আয়োজিত সমাবেশ থেকে ঘোষিত তিন পার্বত্য জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) ৭২ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিযেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নতুন কুমার চাকমা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি হামলাকে বর্বরোচিত ও ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে বলেন, শুক্রবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদরে বাস স্টেশনের বটতলা লারমা স্কোয়ারে মিছিলসহকারে এসে সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং দোকান-ঘরবাড়িসহ একটি বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে।
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে চারজন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-জেলা সদরে স্বর্নিভর জামতলার জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল ত্রিপুরা (৩০)।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, রাতে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ১৬ জনকে আনা হয়। তারা বেশিরভাগই সদর উপজেলা থেকে রাতে এসেছেন। এর মধ্যে তিনজন মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে।
পাশাপাশি রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রাঙ্গামাটি শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় আঞ্চলিক পরিষদে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শহরজুড়ে প্রায় ২০টির মতো মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় বনরূপা মসজিদে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মসজিদের গ্লাস ভেঙে দেয়া হয়। পরে উত্তেজিত জনতা কাঁঠালতলী মৈত্রী বিহারে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে পাহাড়ি ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা আসে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালায়। পরে খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধে চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে শহরে এখনো পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। রাঙ্গামাটি শহরে এখন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র যৌথ টহল টিম কাজ শুরু করেছে। ফলে শহরে গাড়ি চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান গণবিজ্ঞপ্তিতে বলেন, যেহেতু রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং জনগণের জান ও মাল ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে, সেহেতু রাঙ্গামাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা অদ্য ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পৌরসভা এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ মোতাবেক ১৪৪ ধারা জারি করা করলাম। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে এটি পাহাড়ি না বাঙালি তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করি। পরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক ১৪৪ ধারা জারি করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, খাগড়াছড়ির ঘটনা নিয়ে সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার উদ্ভব ঘটেছে। তাই ১৪৪ ধারা মোতায়েন করা হয়েছে। এই আবেদন পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এছাড়া রাঙ্গামাটি শহরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা, খুন ও বিহার-ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
এছাড়া দলটি ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার আয়োজিত সমাবেশ থেকে ঘোষিত তিন পার্বত্য জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) ৭২ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিযেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নতুন কুমার চাকমা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি হামলাকে বর্বরোচিত ও ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে বলেন, শুক্রবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদরে বাস স্টেশনের বটতলা লারমা স্কোয়ারে মিছিলসহকারে এসে সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং দোকান-ঘরবাড়িসহ একটি বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে।