ডিসি নিয়োগে আন্দোলন
জেলা প্রশাসক (ডিসি) হওয়ার জন্য সচিবালয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়া ১৭ জন উপসচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। তিনি জানান, আটজনকে গুরুদ-, চারজনেকে লঘুদ- আর পাঁচজনকে তিরস্কার করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ তবে সচিব শাস্তি পাওয়া ১৭ কর্মকর্তার নাম এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাননি।
ডিসি পদপ্রত্যাশী একদল উপসচিব গত ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
এ বিষয়ে মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের মন্ত্রণালয়ে কাজের একটা স্থবিরতা আসছিল। সেটার জন্য এক সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, উনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে।’
এই রিপোর্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংক্ষেপে যদি বলি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সাক্ষী প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৭ জনকে তিনি ইন্টারোগেট করেছেন। তিনটা পর্যায়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন কী কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।’
কমিটির সুপারিশ জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আটজনের বিষয়ে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রসিডিউর অনুযায়ী গুরুদ- দেয়া যেতে পারে। চারজনেকে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে এবং আমাদের কিছু বিধি বিধান অনুযাযী লঘুদ- দেয়া যেতে পারে। আর পাঁচজনের ব্যপারে বলা হয়েছে তিরস্কার বা সাবধান করা যেতে পারে। এটা হচ্ছে আমাদের ফাইন্ডিংস।’
মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আপনারা জানেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এই সমস্ত বিষয়গুলো যখন ফেইস করে, কতগুলো বিষয় আছে, অনেকগুলো স্টেজ আছে, এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা পর্যায়ে দেখা যায়, অনেকের ইনভলবমেন্ট ছিল অথবা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, এ বিষয়গুলো আমরা দেখি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল আনে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এর মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন বিগত সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ বেশ একদল উপসচিব। ওই সময় প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন। পরদিনই আটজনকে প্রত্যাহার এবং চার জনের কর্মস্থল বদলে দেয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ‘কঠোর হস্তে’ দমন করা হবে জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘জাতি এবং মানুষ জানতে চায়, আমি ডিসি হতে পারি নাই, মন্ত্রণালয়ে এরকম একটা আন্দোলন এটা কেউ কিন্তু ভালোভাবে নেয়নি। আমাদের সিনিয়র কলিগরা নেয়নি, আমাদের কলিগরা নেয়নি, আমাদের জুনিয়র কলিগরা নেয়নি। সত্যি কথা বলতে গেলে জনগণ ভালোভাবে নেয়নি।’
কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় জানিয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘অনেকে আমাদের বলেছে, এই বিষয় যদি কঠোর হস্তে দমন না করেন, আইনানুগ ব্যবস্থা না নেন, আমাদের প্রশাসন ভেঙে পড়বে। আমাদের শৃঙ্খলা থাকবে না। প্রশাসনের একটা বড় বিষয় হলো শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার। আমিও আইনের ঊর্ধ্বে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তদন্ত কমিটি কয়জনকে ডেকেছিল জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘আমাদের একজন যুগ্ম সচিব ছিলেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে সিলেটে বদলি করা হয়েছে, উনি কিছু ওভার রিয়েক্ট করেছিলেন, উনাকে বদলি করা হয়েছে। আমরাতো অ্যাক্ট করব, রিয়েক্ট করব, কিন্তু ওভার রিয়েক্ট করতে পারি না। এই জন্য নিয়মের বাইরে কেউ যদি কিছু করে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
ডিসি নিয়োগে আন্দোলন
সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জেলা প্রশাসক (ডিসি) হওয়ার জন্য সচিবালয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়া ১৭ জন উপসচিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। তিনি জানান, আটজনকে গুরুদ-, চারজনেকে লঘুদ- আর পাঁচজনকে তিরস্কার করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ তবে সচিব শাস্তি পাওয়া ১৭ কর্মকর্তার নাম এই মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাননি।
ডিসি পদপ্রত্যাশী একদল উপসচিব গত ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
এ বিষয়ে মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের মন্ত্রণালয়ে কাজের একটা স্থবিরতা আসছিল। সেটার জন্য এক সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, উনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে।’
এই রিপোর্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংক্ষেপে যদি বলি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সাক্ষী প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৭ জনকে তিনি ইন্টারোগেট করেছেন। তিনটা পর্যায়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন কী কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।’
কমিটির সুপারিশ জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আটজনের বিষয়ে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রসিডিউর অনুযায়ী গুরুদ- দেয়া যেতে পারে। চারজনেকে বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে এবং আমাদের কিছু বিধি বিধান অনুযাযী লঘুদ- দেয়া যেতে পারে। আর পাঁচজনের ব্যপারে বলা হয়েছে তিরস্কার বা সাবধান করা যেতে পারে। এটা হচ্ছে আমাদের ফাইন্ডিংস।’
মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আপনারা জানেন একজন সরকারি কর্মকর্তা এই সমস্ত বিষয়গুলো যখন ফেইস করে, কতগুলো বিষয় আছে, অনেকগুলো স্টেজ আছে, এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা পর্যায়ে দেখা যায়, অনেকের ইনভলবমেন্ট ছিল অথবা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, এ বিষয়গুলো আমরা দেখি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল আনে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এর মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন বিগত সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ বেশ একদল উপসচিব। ওই সময় প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন। পরদিনই আটজনকে প্রত্যাহার এবং চার জনের কর্মস্থল বদলে দেয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ‘কঠোর হস্তে’ দমন করা হবে জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘জাতি এবং মানুষ জানতে চায়, আমি ডিসি হতে পারি নাই, মন্ত্রণালয়ে এরকম একটা আন্দোলন এটা কেউ কিন্তু ভালোভাবে নেয়নি। আমাদের সিনিয়র কলিগরা নেয়নি, আমাদের কলিগরা নেয়নি, আমাদের জুনিয়র কলিগরা নেয়নি। সত্যি কথা বলতে গেলে জনগণ ভালোভাবে নেয়নি।’
কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় জানিয়ে মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘অনেকে আমাদের বলেছে, এই বিষয় যদি কঠোর হস্তে দমন না করেন, আইনানুগ ব্যবস্থা না নেন, আমাদের প্রশাসন ভেঙে পড়বে। আমাদের শৃঙ্খলা থাকবে না। প্রশাসনের একটা বড় বিষয় হলো শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার। আমিও আইনের ঊর্ধ্বে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তদন্ত কমিটি কয়জনকে ডেকেছিল জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘আমাদের একজন যুগ্ম সচিব ছিলেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে সিলেটে বদলি করা হয়েছে, উনি কিছু ওভার রিয়েক্ট করেছিলেন, উনাকে বদলি করা হয়েছে। আমরাতো অ্যাক্ট করব, রিয়েক্ট করব, কিন্তু ওভার রিয়েক্ট করতে পারি না। এই জন্য নিয়মের বাইরে কেউ যদি কিছু করে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’