বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কসহ মোট ১৭ জন পদত্যাগ করেছেন।
৩রা অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগকৃত সমন্বয়ক এবং সহ-সমন্বয়কগণ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পদত্যাগকৃত সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা হচ্ছেন-
১। আব্দুর রশিদ জিতু, ২। রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, ৩। হাসিব জামান, ৪। জাহিদুল ইসলাম ইমন, ৫। জাহিদুল ইসলাম, ৬। ফাহমিদা ফাইজা, ৭। রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, ৮। মিশু খাতুন, ৯। রাফিদ হাসান রাজন, ১০। হাসানুর রহমান সুমন, ১১। আব্দুল হাই স্বপন, ১২। নাসিম আল তারিক, ১৩। ঐন্দ্রিলা মজুমদার, ১৪। জিয়া উদ্দিন আয়ান, ১৫। তানজিম আহমেদ, ১৬। জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি এবং ১৭। সাইদুল ইসলাম।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, মূলত আমাদের পদত্যাগ করার কারণ ২টি।
প্রথমটি হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাবির কতিপয় সমন্বয়কের বিতর্কিত কার্যক্রম ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারী দলের মত আচরণ ও গণ অভ্যুত্থানের স্পিরিট বিরুদ্ধে কাজ করা।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং জুলাই বিপ্লবে আহত সকল সংগ্রামী ভাই-বোনদের সুস্থতা কামনা এবং শহীদদের মহিমান্বিত উৎসর্গকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে পদত্যাগকৃত সমন্বয়কগণ বলেন, গত ১৩ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাবি-এর সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই সংগঠনটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সাভার এলাকায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করে আসছে। গত ৫ আগষ্ট আমরা আমাদের কাঙ্খিত সফলতা অর্জন করি। এ পুরো সময়টিতে আমরা সকলে একই লক্ষ্যে কাজ করেছি।
পরবর্তীতে, এক দফার উপর ভিত্তি করে কোটা সংস্কার আন্দোলন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়। গত ৫ আগষ্টের গণ অভ্যুত্থানের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, যেই ৯ দফার উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছিল, সেই ৯ দফার অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার, এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরণের দাবিগুলোতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির পুনরুত্থানকে ইঙ্গিত করে তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমানে একটি সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে। তদুপরি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীদের একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে ব্যর্থ হয়েছে। একই সাথে, এই ব্যানার এখনো বজায় থাকা আন্দোলনে সব পেশার, সর্বস্তরের, এবং সর্বদলের মানুষের অংশগ্রহনের ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে।
তাই আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উক্ত বিষয়গুলোতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করে দিতে হবে।
শামীম হত্যাকাণ্ডে একাধিক সমন্বয়কের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির কতিপয় সমন্বয়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে অক্ষমতা, সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাই ও পরবর্তীতে পুলিশী হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে সমন্বয়ক কমিটির একাধিক সমন্বয়কের নাম উঠে আসলেও সে ব্যাপারে কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসতে না পারায় আমরা সমন্বয়ক পর্ষদের ১৭ জন পদত্যাগ করছি।
পরিশেষে তারা বলেন, আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ৫ আগষ্টের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সর্বস্তরের, সব পেশার, ও সর্বমতের। কোন একজন বা দুইজন, কিংবা কোন একটি মত এই আন্দোলনের একক কৃতিত্বধারী নয়। একই সাথে সহস্রাধিক শহীদ ও আহতদের রক্ত ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিসর্জনের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ শুধু একটি গোষ্ঠীর নয় বরং সকলের। গণ মানুষের মেহনত, ঘাম, ও রক্তের ফসল এই দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে সমুন্নত করতে এবং এর স্পিরিটকে লালন করতে যার যার জায়গা থেকে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাবো।
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কসহ মোট ১৭ জন পদত্যাগ করেছেন।
৩রা অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগকৃত সমন্বয়ক এবং সহ-সমন্বয়কগণ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পদত্যাগকৃত সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা হচ্ছেন-
১। আব্দুর রশিদ জিতু, ২। রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহ, ৩। হাসিব জামান, ৪। জাহিদুল ইসলাম ইমন, ৫। জাহিদুল ইসলাম, ৬। ফাহমিদা ফাইজা, ৭। রোকাইয়া জান্নাত ঝলক, ৮। মিশু খাতুন, ৯। রাফিদ হাসান রাজন, ১০। হাসানুর রহমান সুমন, ১১। আব্দুল হাই স্বপন, ১২। নাসিম আল তারিক, ১৩। ঐন্দ্রিলা মজুমদার, ১৪। জিয়া উদ্দিন আয়ান, ১৫। তানজিম আহমেদ, ১৬। জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি এবং ১৭। সাইদুল ইসলাম।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, মূলত আমাদের পদত্যাগ করার কারণ ২টি।
প্রথমটি হচ্ছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাবির কতিপয় সমন্বয়কের বিতর্কিত কার্যক্রম ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকারী দলের মত আচরণ ও গণ অভ্যুত্থানের স্পিরিট বিরুদ্ধে কাজ করা।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং জুলাই বিপ্লবে আহত সকল সংগ্রামী ভাই-বোনদের সুস্থতা কামনা এবং শহীদদের মহিমান্বিত উৎসর্গকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে পদত্যাগকৃত সমন্বয়কগণ বলেন, গত ১৩ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাবি-এর সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই সংগঠনটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সাভার এলাকায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করে আসছে। গত ৫ আগষ্ট আমরা আমাদের কাঙ্খিত সফলতা অর্জন করি। এ পুরো সময়টিতে আমরা সকলে একই লক্ষ্যে কাজ করেছি।
পরবর্তীতে, এক দফার উপর ভিত্তি করে কোটা সংস্কার আন্দোলন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়। গত ৫ আগষ্টের গণ অভ্যুত্থানের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, যেই ৯ দফার উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছিল, সেই ৯ দফার অন্তর্ভুক্ত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, জুলাই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার, এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরণের দাবিগুলোতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির পুনরুত্থানকে ইঙ্গিত করে তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বর্তমানে একটি সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের মতো ভূমিকা পালন করছে। তদুপরি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের আন্দোলনকারীদের একই ব্যানারে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে ব্যর্থ হয়েছে। একই সাথে, এই ব্যানার এখনো বজায় থাকা আন্দোলনে সব পেশার, সর্বস্তরের, এবং সর্বদলের মানুষের অংশগ্রহনের ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে।
তাই আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উক্ত বিষয়গুলোতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে যত দ্রুত সম্ভব বিলুপ্ত করে দিতে হবে।
শামীম হত্যাকাণ্ডে একাধিক সমন্বয়কের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবির কতিপয় সমন্বয়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে অক্ষমতা, সহযোদ্ধাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সন্ত্রাসী শামীম মোল্লার গণধোলাই ও পরবর্তীতে পুলিশী হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে সমন্বয়ক কমিটির একাধিক সমন্বয়কের নাম উঠে আসলেও সে ব্যাপারে কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আসতে না পারায় আমরা সমন্বয়ক পর্ষদের ১৭ জন পদত্যাগ করছি।
পরিশেষে তারা বলেন, আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি ৫ আগষ্টের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সর্বস্তরের, সব পেশার, ও সর্বমতের। কোন একজন বা দুইজন, কিংবা কোন একটি মত এই আন্দোলনের একক কৃতিত্বধারী নয়। একই সাথে সহস্রাধিক শহীদ ও আহতদের রক্ত ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিসর্জনের মাধ্যমে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ শুধু একটি গোষ্ঠীর নয় বরং সকলের। গণ মানুষের মেহনত, ঘাম, ও রক্তের ফসল এই দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে সমুন্নত করতে এবং এর স্পিরিটকে লালন করতে যার যার জায়গা থেকে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাবো।