# কোনো নীতিমালা নেই
# কাপড়ের খেলনা, বাঁশ বা বেতের তৈরি খেলনা ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের
দেশে আমদানি করা শিশুদের বিভিন্ন খেলনায় বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনকি সিরামিক পণ্য, নারীদের ব্যবহার করা গয়নাগাটিতেও ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে। এসব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে শিশুদের জন্য নিরাপদ খেলনা আমদানির আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয়ভাবে নীতিমালা প্রণয়ন ও সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বানও জানানো হয়েছে।
প্রায় ১৬০টি শিশু খেলনার নমুনার প্রতিটিতেই পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ রোধে নিরাপত্তা মানদ- আরও কঠোর করা হয়। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো ও ব্যান টক্সিকস, ফিলিপাইন যৌথভাবে এ গবেষণাটি করেছে।
শিশু খেলনার মধ্যে গাড়ি, পুতুল, পানির পাত্রসহ বিভিন্ন প্রকারের খেলনা।
শিশুদের ব্যবহৃত সাধারণ পানির কাপে ১ হাজার ৩৮০ পিপিএম সীসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক ও ১ হাজার ৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে ৫৮০ পিপিএম সীসা, ১ হাজার ২৮০ পিপিএম ব্যারিয়াম, ৮৮ পিপিএম পারদ। একটি স্কুলের ব্যাগই শিশুর জন্য বিপজ্জনক। পুতুল সেটে ১৬০ পিপিএম সীসা ও ১ হাজার ৫০০ পিপিএম ক্রোমিয়াম—শিশুর প্রিয় পুতুলই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ। শিশুদের পানি খাওয়ার মগে পাওয়া গেছে ২২০ পিপিএম সীসা, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম এবং ১ হাজার ৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম—প্রতিদিন পানি পানের সময় শিশুরা এই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। বসুন্ধরা শপিং মলের একটি দোকানের পুতুল সেটে প্রায় ৫০০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে যে, বড় দোকানগুলোও এই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থমুক্ত নয়। শিশুদের শেখার জন্য তৈরি বর্ণমালা সেটের একটি অক্ষরে ৬৬০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে।
এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, চায়নায় শিশু খেলনা নিয়ে নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে শিশু খেলনায় কোনো প্রকার নীতিমালা নেই। শিশুদের জন্য অবশ্যই খেলনা থাকতে হবে কিন্তু সেটা হতে হবে ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত। আমরা চাই রিসাইকেল প্লাস্টিক দিয়ে যেন খেলনা তৈরি নিষিদ্ধ হোক।
এসডো-এর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা শিশুদের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, এতো অল্প বয়সে ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে। যা অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এসডোর চেয়ারপার্সন ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, শিশুদের পণ্যে এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই অদৃশ্য হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।
বাংলাদেশে স্থানীয় বাজারে পাওয়া শিশুদের খেলনা ফিলিপাইনের মতো এশিয়ার অন্যান্য দেশেও খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে, যা এই সমস্যার আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিপাইনে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ব্যান টক্সিকস-এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জশাফ সামির লোরেঞ্জো বলেন, আমাদের শিশুরা প্রতিদিন বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসছে যা তাদের বিকাশ এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। সংস্থাটির টক্সিক ক্যাম্পেইনার থোনি ডিজন বলেন, নিরাপদ পরিবেশে শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষাই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যথাযথ পণ্যের মানদ- নিশ্চিত করা, এবং এসব নীতি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত যাতে আমাদের শিশুরা নিরাপদ ভবিষ্যৎ উপভোগ করতে পারে।
যেহেতু খেলনার প্রয়োজন রয়েছে তাই শিশুদের জন্য কাপড়ের খেলনা, বাঁশ বা বেতের তৈরি খেলনা ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এসব পরিবেশ বান্ধব খেলনা তৈরি করে থাকেন। তাদের যদি বিকশিত করা যায় তাহলে শিশু খেলনার চাহিদা মেটানো সম্ভব। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শিশু খেলনা কেনার তাগিদও দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪
# কোনো নীতিমালা নেই
# কাপড়ের খেলনা, বাঁশ বা বেতের তৈরি খেলনা ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের
দেশে আমদানি করা শিশুদের বিভিন্ন খেলনায় বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনকি সিরামিক পণ্য, নারীদের ব্যবহার করা গয়নাগাটিতেও ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে। এসব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে শিশুদের জন্য নিরাপদ খেলনা আমদানির আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয়ভাবে নীতিমালা প্রণয়ন ও সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বানও জানানো হয়েছে।
প্রায় ১৬০টি শিশু খেলনার নমুনার প্রতিটিতেই পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ রোধে নিরাপত্তা মানদ- আরও কঠোর করা হয়। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো ও ব্যান টক্সিকস, ফিলিপাইন যৌথভাবে এ গবেষণাটি করেছে।
শিশু খেলনার মধ্যে গাড়ি, পুতুল, পানির পাত্রসহ বিভিন্ন প্রকারের খেলনা।
শিশুদের ব্যবহৃত সাধারণ পানির কাপে ১ হাজার ৩৮০ পিপিএম সীসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক ও ১ হাজার ৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে ৫৮০ পিপিএম সীসা, ১ হাজার ২৮০ পিপিএম ব্যারিয়াম, ৮৮ পিপিএম পারদ। একটি স্কুলের ব্যাগই শিশুর জন্য বিপজ্জনক। পুতুল সেটে ১৬০ পিপিএম সীসা ও ১ হাজার ৫০০ পিপিএম ক্রোমিয়াম—শিশুর প্রিয় পুতুলই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ। শিশুদের পানি খাওয়ার মগে পাওয়া গেছে ২২০ পিপিএম সীসা, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম এবং ১ হাজার ৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম—প্রতিদিন পানি পানের সময় শিশুরা এই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। বসুন্ধরা শপিং মলের একটি দোকানের পুতুল সেটে প্রায় ৫০০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে যে, বড় দোকানগুলোও এই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থমুক্ত নয়। শিশুদের শেখার জন্য তৈরি বর্ণমালা সেটের একটি অক্ষরে ৬৬০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে।
এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, চায়নায় শিশু খেলনা নিয়ে নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে শিশু খেলনায় কোনো প্রকার নীতিমালা নেই। শিশুদের জন্য অবশ্যই খেলনা থাকতে হবে কিন্তু সেটা হতে হবে ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত। আমরা চাই রিসাইকেল প্লাস্টিক দিয়ে যেন খেলনা তৈরি নিষিদ্ধ হোক।
এসডো-এর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা শিশুদের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, এতো অল্প বয়সে ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে। যা অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এসডোর চেয়ারপার্সন ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, শিশুদের পণ্যে এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই অদৃশ্য হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।
বাংলাদেশে স্থানীয় বাজারে পাওয়া শিশুদের খেলনা ফিলিপাইনের মতো এশিয়ার অন্যান্য দেশেও খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে, যা এই সমস্যার আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সমাধানের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিপাইনে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ব্যান টক্সিকস-এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জশাফ সামির লোরেঞ্জো বলেন, আমাদের শিশুরা প্রতিদিন বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসছে যা তাদের বিকাশ এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। সংস্থাটির টক্সিক ক্যাম্পেইনার থোনি ডিজন বলেন, নিরাপদ পরিবেশে শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষাই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যথাযথ পণ্যের মানদ- নিশ্চিত করা, এবং এসব নীতি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত যাতে আমাদের শিশুরা নিরাপদ ভবিষ্যৎ উপভোগ করতে পারে।
যেহেতু খেলনার প্রয়োজন রয়েছে তাই শিশুদের জন্য কাপড়ের খেলনা, বাঁশ বা বেতের তৈরি খেলনা ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এসব পরিবেশ বান্ধব খেলনা তৈরি করে থাকেন। তাদের যদি বিকশিত করা যায় তাহলে শিশু খেলনার চাহিদা মেটানো সম্ভব। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শিশু খেলনা কেনার তাগিদও দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।