নিত্যপণ্যের বাজারে বেড়েছে ডিম-মুরগি, ইলিশ-কাঁচামরিচসহ প্রায়সব সবজির দাম। চাল-ডাল-তেল-চিনি, আলু-পেঁয়াজ-রসুনসহ বাকি প্রায়সব পণ্য আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা ক্রেতা প্রশ্ন তুলছেন, ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙবে কে? খুচরা ব্যবসায়ীও প্রশ্ন রেখে বলছেন, পণ্যের ‘আগুন’ দাম। লেখালেখি করে লাভটা কী? কোনো লাভ হইছে? বরং দাম আরও বাড়ছে’।
গত দুইদিন রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও স্থান ঘুরে এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া যায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। ডজনে ১০ টাকা বেড়ে বাজার ও স্থান ভেদে লাল রংয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এক পিস ১৫ টাকা।
দাম বৃদ্ধিতে পিছিয়ে নেই ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়
মুরগি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৮০ টাকায়। একই মুরগি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৬০ টাকায়।
ফার্মের মুরগির ডিমের দাম নিয়ে কথা হয় পাবনা জেলার প্রান্তিক খামারি বদরুল আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘মুরগির খাদ্যসহ ডিম উৎপাদনে যেসব উপাদান ব্যবহারিত হয় সেগুলোর দাম যে হারে বাড়ছে সে হিসেবে ডিমের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়া উচিত ছিল । আমরা লোকাল পার্টির কাছে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছি ১২ টাকা ৪০ পয়সায় ।’
পণ্যের দাম কমানোর প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম যদি কমাতে হলে সরকারকে উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে উপাদানগুলির দাম কমানো উচিত। উপকরণ গুলোর দাম কমালে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
তিনি জানান, ‘লেয়ার মুরগির খাবারের দাম ডবল হইছে। ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা খাবারের দাম এখন ৩৩০০ টাকা । একই খাদ্য এক বছর আগে ছিল ১৮০০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির একই ওজনের এক বস্তা কিনতে হচ্ছে ৩৮০০ টাকায়। এক বছর আগে ছিল ২১০০ টাকা।’
‘পাশাপাশি লেয়ার মুরগির বাচ্চার দামও বাড়ছে। এখন কিনতে পড়ছে প্রতি পিস ৭৮ টাকা যা এক বছর আগে ছিল ৪০ টাকা। বয়লার মুরগির বাচ্চা প্রতি পিস কিনতে পড়ছে অষ্টআশি টাকা যা এক বছর আগে ছিল ৪৫ টাকা। এছাড়া পোল্ট্রিতে ব্যবহৃত ওষুধের দাম বাড়ছে, ভুট্টার দাম বাড়ছে, লেবার খরচ বাড়ছে বিদ্যুৎ বিল বাড়ছে খাঁচার দাম বাড়ছে।’
রাজধানীর শান্তিবাগ মোড় থেকে একটু দূরে টুইন টাওয়ারের পাশে ফুটপাতে ফার্মের মুরগির লাল রংয়ের এক ডালি/খাচা ডিম নিয়ে বসেছেন খুচরা বিক্রেতা মো. সিদ্দিক মিয়া। ডিমের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘ডজন ১৮০ টাকা।’
কবে থেকে এই দাম? জবাবে তিনি বলেন, ‘দুই-তিন দিন ধরেই ১৮০ টাকা ডজন। এক সপ্তাহ আগে ১৬৫ টাকা বেচছি, ১৭০ টাকাও বেচছি। একমাস আগে ১৫০-১৫৫ বেচছি।’
আজকের বাজারে শ-ও (১০০ ডিম) ১৩৩০ টাকা কিননা আনছি। তারপরও ভ্যান ভাড়া পড়ে যায় । আরও দুই তিন দিন ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা নাই।’
‘দাম বাইরা যাওয়ায় বেচা কম হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টি। যে নিত এক ডজন সে এখন চারটা-ছয়টা নেয়,’ বলে জানান তিনি।
এ সময় ওই ডিম বিক্রেতার কাছে কয়েকজন দাম জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু তাদের কাউকে ডিম কিনতে দেখা গেল না।
পণ্যের দামের বিষয় কথা হয় সদাই কিনতে বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাঈদ এর সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বেগুন গত সপ্তাহেও নেইনি এ সপ্তাহ নেই নি। বেগুনের ২০০ টাকা হইছে, এ জীবনে দেখছেন কী? আমি তো বেগুনে হাতও দেইনি। দেখেছেন কী? আলুর দাম ৬০ টাকা ৭০ টাকা কেজি?’
‘বাজারে এসে খুঁজি, কোনো সবজিটার দাম কম, সেটাই কিনি। তাছাড়া উপায় নেই, এভাবেই চলতে হবে।’
দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো কিছু দাম কমার সম্ভাবনা নেই। সবকিছুতেই সিন্ডিকেট, এ সিন্ডিকেট কে ভাঙবে?’
দরদামের বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর শ্যামলী কাছে বাজারে সবজি বিক্রেতা খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। মালের দামে আগুন, উল্টোপাল্টা। কাঁচা মরিচ কেজি ৩৭০ টাকা দিয়া কিনা আনছি , কয় টাকা বেচতাম। এই যে সাংবাদিকরা এতো মিডিয়া লেখালেখি করছে , লেখালেখি করে লাভটা কী?, আমারে বুঝান। কোনো লাভ হইছে? বরং দাম আরও বাড়ছে। মানলাম বর্ষার সময় না হয় মরিচের দাম বাড়ছে কিন্তু আলু-পেঁয়াজ তো স্টকে থাকে।’
সবজির দামের বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুর রহিমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সবজির দাম কেজিতে ডবল ডবল বাড়ছে। গত পরশুদিন মরিচ কিনছি পারলে ৮০০ টাকা আর আজকে আনছি ১৩৫০ টাকায়।’
‘মাল নাই তো আজকের দিনটা গেলে দাম আরও বাড়তে পারে,’ বলে জানান রহিম।
ভরা মৌসুমেও আরও এক দফা বেড়েছে ইলিশের দাম। কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বাজারে ৬০০ গ্রাম ওজনেরে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৩৫০ থেকে ১৪০০ টাকায়, গত সপ্তাহে একই ওজনের মাছ বিক্রি হয়েছিল ১২০০ টাকায়। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা, একই ওজনে মাছ বিক্রি হয়েছিল ১৫০০ টাকায় ।
রাজধানীর শান্তিবাগ কাঁচা বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা পারভেজ সংবাদকে বলেন, ‘এই মাছটা (খাঁচা থেকে একটি ইলিশ তুলে ধরে) ৭শ’ গ্রাম ওজন, কেজি একদম ১৪০০ টাকা। ১ কেজি থেকে ১১০০ গ্রাম ওজনেরটা কেজি ১৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আর দেড় কেজি ওজনের যেটা, ওইটার কেজি ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা। তবে বেচা বিক্রি কম।
ইলিশের দাম কমা বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘সামনে পূজা, চাহিদা বেশি; দাম আরও বাড়বো। সাত দিন পরেই তো মাছ ধরা বন্ধ হবে।’
কাঁচামরিচের দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
বাজারে সবজির দাম আরও বেড়েছে। এ সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। আর অধিকাংশ সবজি ১০০ টাকা ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ও মানভেদে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গোলাপি রঙ্গের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। করলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা , যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকায় । বরবটি ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকায়।
এছাড়া কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় আর গাজর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় । সিম বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩০০ টাকায়।
বাজারের সব থেকে সস্তা সবজির একটি মিষ্টি কদু। তারও দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় ।
আলু ও পেঁয়াজ উচ্চ মূল্যে স্থির। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।
চাল-ডাল-তেলসহ প্রায় সব পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪
নিত্যপণ্যের বাজারে বেড়েছে ডিম-মুরগি, ইলিশ-কাঁচামরিচসহ প্রায়সব সবজির দাম। চাল-ডাল-তেল-চিনি, আলু-পেঁয়াজ-রসুনসহ বাকি প্রায়সব পণ্য আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা ক্রেতা প্রশ্ন তুলছেন, ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙবে কে? খুচরা ব্যবসায়ীও প্রশ্ন রেখে বলছেন, পণ্যের ‘আগুন’ দাম। লেখালেখি করে লাভটা কী? কোনো লাভ হইছে? বরং দাম আরও বাড়ছে’।
গত দুইদিন রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও স্থান ঘুরে এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া যায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। ডজনে ১০ টাকা বেড়ে বাজার ও স্থান ভেদে লাল রংয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। এক পিস ১৫ টাকা।
দাম বৃদ্ধিতে পিছিয়ে নেই ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়
মুরগি। আর সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৮০ টাকায়। একই মুরগি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৬০ টাকায়।
ফার্মের মুরগির ডিমের দাম নিয়ে কথা হয় পাবনা জেলার প্রান্তিক খামারি বদরুল আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘মুরগির খাদ্যসহ ডিম উৎপাদনে যেসব উপাদান ব্যবহারিত হয় সেগুলোর দাম যে হারে বাড়ছে সে হিসেবে ডিমের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়া উচিত ছিল । আমরা লোকাল পার্টির কাছে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করছি ১২ টাকা ৪০ পয়সায় ।’
পণ্যের দাম কমানোর প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম যদি কমাতে হলে সরকারকে উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে উপাদানগুলির দাম কমানো উচিত। উপকরণ গুলোর দাম কমালে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
তিনি জানান, ‘লেয়ার মুরগির খাবারের দাম ডবল হইছে। ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা খাবারের দাম এখন ৩৩০০ টাকা । একই খাদ্য এক বছর আগে ছিল ১৮০০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির একই ওজনের এক বস্তা কিনতে হচ্ছে ৩৮০০ টাকায়। এক বছর আগে ছিল ২১০০ টাকা।’
‘পাশাপাশি লেয়ার মুরগির বাচ্চার দামও বাড়ছে। এখন কিনতে পড়ছে প্রতি পিস ৭৮ টাকা যা এক বছর আগে ছিল ৪০ টাকা। বয়লার মুরগির বাচ্চা প্রতি পিস কিনতে পড়ছে অষ্টআশি টাকা যা এক বছর আগে ছিল ৪৫ টাকা। এছাড়া পোল্ট্রিতে ব্যবহৃত ওষুধের দাম বাড়ছে, ভুট্টার দাম বাড়ছে, লেবার খরচ বাড়ছে বিদ্যুৎ বিল বাড়ছে খাঁচার দাম বাড়ছে।’
রাজধানীর শান্তিবাগ মোড় থেকে একটু দূরে টুইন টাওয়ারের পাশে ফুটপাতে ফার্মের মুরগির লাল রংয়ের এক ডালি/খাচা ডিম নিয়ে বসেছেন খুচরা বিক্রেতা মো. সিদ্দিক মিয়া। ডিমের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘ডজন ১৮০ টাকা।’
কবে থেকে এই দাম? জবাবে তিনি বলেন, ‘দুই-তিন দিন ধরেই ১৮০ টাকা ডজন। এক সপ্তাহ আগে ১৬৫ টাকা বেচছি, ১৭০ টাকাও বেচছি। একমাস আগে ১৫০-১৫৫ বেচছি।’
আজকের বাজারে শ-ও (১০০ ডিম) ১৩৩০ টাকা কিননা আনছি। তারপরও ভ্যান ভাড়া পড়ে যায় । আরও দুই তিন দিন ডিমের দাম কমার সম্ভাবনা নাই।’
‘দাম বাইরা যাওয়ায় বেচা কম হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টি। যে নিত এক ডজন সে এখন চারটা-ছয়টা নেয়,’ বলে জানান তিনি।
এ সময় ওই ডিম বিক্রেতার কাছে কয়েকজন দাম জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু তাদের কাউকে ডিম কিনতে দেখা গেল না।
পণ্যের দামের বিষয় কথা হয় সদাই কিনতে বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাঈদ এর সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বেগুন গত সপ্তাহেও নেইনি এ সপ্তাহ নেই নি। বেগুনের ২০০ টাকা হইছে, এ জীবনে দেখছেন কী? আমি তো বেগুনে হাতও দেইনি। দেখেছেন কী? আলুর দাম ৬০ টাকা ৭০ টাকা কেজি?’
‘বাজারে এসে খুঁজি, কোনো সবজিটার দাম কম, সেটাই কিনি। তাছাড়া উপায় নেই, এভাবেই চলতে হবে।’
দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো কিছু দাম কমার সম্ভাবনা নেই। সবকিছুতেই সিন্ডিকেট, এ সিন্ডিকেট কে ভাঙবে?’
দরদামের বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর শ্যামলী কাছে বাজারে সবজি বিক্রেতা খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। মালের দামে আগুন, উল্টোপাল্টা। কাঁচা মরিচ কেজি ৩৭০ টাকা দিয়া কিনা আনছি , কয় টাকা বেচতাম। এই যে সাংবাদিকরা এতো মিডিয়া লেখালেখি করছে , লেখালেখি করে লাভটা কী?, আমারে বুঝান। কোনো লাভ হইছে? বরং দাম আরও বাড়ছে। মানলাম বর্ষার সময় না হয় মরিচের দাম বাড়ছে কিন্তু আলু-পেঁয়াজ তো স্টকে থাকে।’
সবজির দামের বিষয়ে কথা হয় রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুর রহিমের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সবজির দাম কেজিতে ডবল ডবল বাড়ছে। গত পরশুদিন মরিচ কিনছি পারলে ৮০০ টাকা আর আজকে আনছি ১৩৫০ টাকায়।’
‘মাল নাই তো আজকের দিনটা গেলে দাম আরও বাড়তে পারে,’ বলে জানান রহিম।
ভরা মৌসুমেও আরও এক দফা বেড়েছে ইলিশের দাম। কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বাজারে ৬০০ গ্রাম ওজনেরে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৩৫০ থেকে ১৪০০ টাকায়, গত সপ্তাহে একই ওজনের মাছ বিক্রি হয়েছিল ১২০০ টাকায়। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা, একই ওজনে মাছ বিক্রি হয়েছিল ১৫০০ টাকায় ।
রাজধানীর শান্তিবাগ কাঁচা বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা পারভেজ সংবাদকে বলেন, ‘এই মাছটা (খাঁচা থেকে একটি ইলিশ তুলে ধরে) ৭শ’ গ্রাম ওজন, কেজি একদম ১৪০০ টাকা। ১ কেজি থেকে ১১০০ গ্রাম ওজনেরটা কেজি ১৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আর দেড় কেজি ওজনের যেটা, ওইটার কেজি ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা। তবে বেচা বিক্রি কম।
ইলিশের দাম কমা বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘সামনে পূজা, চাহিদা বেশি; দাম আরও বাড়বো। সাত দিন পরেই তো মাছ ধরা বন্ধ হবে।’
কাঁচামরিচের দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
বাজারে সবজির দাম আরও বেড়েছে। এ সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। আর অধিকাংশ সবজি ১০০ টাকা ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ও মানভেদে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গোলাপি রঙ্গের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। করলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা , যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকায় । বরবটি ১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকায়।
এছাড়া কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় আর গাজর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় । সিম বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩০০ টাকায়।
বাজারের সব থেকে সস্তা সবজির একটি মিষ্টি কদু। তারও দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় ।
আলু ও পেঁয়াজ উচ্চ মূল্যে স্থির। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।
চাল-ডাল-তেলসহ প্রায় সব পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।