বাংলাদেশের চলমান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি উল্লেখ করেছেন, বিশেষ করে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এই অপপ্রচারকে উস্কে দিচ্ছে, যা বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রবাদের উত্থান ঘটানোর উদ্দেশ্যে করা হতে পারে।
আজ রোববার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘দ্য ক্রস বর্ডার স্প্রেড অব মিসইনফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)। সেমিনারে তিনি ভারতের ইকোনমিক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনগুলোকে এই অপপ্রচারের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি ভারতের পত্রিকা ইকোনমিক টাইমস কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমাদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাহফুজ আলমকে হিজবুত তাহরীর সদস্য হিসেবে অভিহিত করেছে। একইভাবে আনন্দবাজার পত্রিকায়ও এ ধরনের তথ্য ছাপা হয়েছে। এসব অপপ্রচার আমাদের অভ্যুত্থানের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।”
ইসলামী উগ্রবাদ নিয়ে মিথ্যা প্রচার
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে চলমান অভ্যুত্থানকে ইসলামী উগ্রবাদের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আদৌ সত্য নয়। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থানকে ইসলামি উগ্রবাদ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। অথচ বাস্তবে এই আন্দোলন সাম্প্রদায়িকতা বা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের ফলাফল। তবে, বাংলাদেশে যদি ইসলামী উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটে, তা ভারতীয় উগ্রবাদীদের জন্য সহায়ক হতে পারে। তাই এ ধরনের অপপ্রচার তাদের জন্য সুবিধাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মাহফুজ আলম দাঁড়িয়েছেন এবং আন্দোলনকে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত করেছেন, তখন থেকেই এই অপপ্রচারের মাত্রা বেড়ে গেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের অভ্যুত্থানের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা চলছে।”
মাহফুজ আলমের বক্তব্য
মাহফুজ আলমকে নিয়ে অপপ্রচার বিষয়ে তিনি নিজেই আগে থেকেই সাফাই দিয়েছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর তার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপনের প্রচারণা চলছে। আমাকে হিজবুত তাহরীর বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করার যে অপপ্রচার চলছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ইসলামী ছাত্রশিবির বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না এবং তাদের আদর্শের সঙ্গেও কখনো একমত হইনি। আমার রাজনৈতিক দর্শন সম্পূর্ণ ভিন্ন, যা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পক্ষে।”
গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া গড়ার আহ্বান
নাহিদ ইসলাম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এমন অপপ্রচার বন্ধ করা জরুরি। তিনি বলেন, “আমরা যদি একটি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া গড়তে চাই, তাহলে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা, মিসইনফরমেশন এবং ভুল বয়ানের বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। ভারতের গণতান্ত্রিকপ্রেমী মানুষেরাও এ ধরনের অপপ্রচার নিন্দা করবেন বলে আমি আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, এবং আমরা কোনোভাবেই এসব অপপ্রচারের কাছে নতি স্বীকার করতে পারি না। এসব প্রচার আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
সেমিনারে অন্যান্য বক্তব্য
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান ও ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গীতাঞ্জলী সিং। সেমিনারে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মিসইনফরমেশনের আন্তঃসীমান্ত বিস্তার নিয়ে ইউল্যাবের অধ্যাপক সুমন রহমান ও গবেষণা সহকারী রাহুল রায় একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারের অংশগ্রহণকারীরা আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মিসইনফরমেশনের বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন।
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪
বাংলাদেশের চলমান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি উল্লেখ করেছেন, বিশেষ করে ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন এই অপপ্রচারকে উস্কে দিচ্ছে, যা বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রবাদের উত্থান ঘটানোর উদ্দেশ্যে করা হতে পারে।
আজ রোববার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘দ্য ক্রস বর্ডার স্প্রেড অব মিসইনফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)। সেমিনারে তিনি ভারতের ইকোনমিক টাইমস ও আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনগুলোকে এই অপপ্রচারের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি ভারতের পত্রিকা ইকোনমিক টাইমস কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমাদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাহফুজ আলমকে হিজবুত তাহরীর সদস্য হিসেবে অভিহিত করেছে। একইভাবে আনন্দবাজার পত্রিকায়ও এ ধরনের তথ্য ছাপা হয়েছে। এসব অপপ্রচার আমাদের অভ্যুত্থানের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।”
ইসলামী উগ্রবাদ নিয়ে মিথ্যা প্রচার
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে চলমান অভ্যুত্থানকে ইসলামী উগ্রবাদের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যা আদৌ সত্য নয়। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থানকে ইসলামি উগ্রবাদ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। অথচ বাস্তবে এই আন্দোলন সাম্প্রদায়িকতা বা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের ফলাফল। তবে, বাংলাদেশে যদি ইসলামী উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটে, তা ভারতীয় উগ্রবাদীদের জন্য সহায়ক হতে পারে। তাই এ ধরনের অপপ্রচার তাদের জন্য সুবিধাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মাহফুজ আলম দাঁড়িয়েছেন এবং আন্দোলনকে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত করেছেন, তখন থেকেই এই অপপ্রচারের মাত্রা বেড়ে গেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের অভ্যুত্থানের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা চলছে।”
মাহফুজ আলমের বক্তব্য
মাহফুজ আলমকে নিয়ে অপপ্রচার বিষয়ে তিনি নিজেই আগে থেকেই সাফাই দিয়েছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর তার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কলঙ্ক লেপনের প্রচারণা চলছে। আমাকে হিজবুত তাহরীর বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করার যে অপপ্রচার চলছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ইসলামী ছাত্রশিবির বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না এবং তাদের আদর্শের সঙ্গেও কখনো একমত হইনি। আমার রাজনৈতিক দর্শন সম্পূর্ণ ভিন্ন, যা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পক্ষে।”
গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া গড়ার আহ্বান
নাহিদ ইসলাম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য এমন অপপ্রচার বন্ধ করা জরুরি। তিনি বলেন, “আমরা যদি একটি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া গড়তে চাই, তাহলে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা, মিসইনফরমেশন এবং ভুল বয়ানের বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। ভারতের গণতান্ত্রিকপ্রেমী মানুষেরাও এ ধরনের অপপ্রচার নিন্দা করবেন বলে আমি আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, এবং আমরা কোনোভাবেই এসব অপপ্রচারের কাছে নতি স্বীকার করতে পারি না। এসব প্রচার আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
সেমিনারে অন্যান্য বক্তব্য
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান ও ইউএন উইমেনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গীতাঞ্জলী সিং। সেমিনারে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মিসইনফরমেশনের আন্তঃসীমান্ত বিস্তার নিয়ে ইউল্যাবের অধ্যাপক সুমন রহমান ও গবেষণা সহকারী রাহুল রায় একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারের অংশগ্রহণকারীরা আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মিসইনফরমেশনের বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন।