‘আয় রে ছুটে আয় পূজার গন্ধ এসেছে, ঠ্যাং কুরাকুর ঠ্যাং কুরকুর বাদ্যি বেজেছে’—এবং বাঙালির জন্য অপেক্ষার শেষ ঘনিয়ে আসছে। শরতের পেঁজা মেঘ আর কাশফুলের দোলা জানান দেয় ‘মা আসছেন’। পূজা মানেই নানা রং, সাজ, ভোজ, এবং থিম। বর্তমানকালে পূজার আয়োজন হয় বিগ বাজেটের থিম কেন্দ্রিক, যেখানে সাবেকিয়ানার পরিবর্তে আড়ম্বর এবং নতুনত্বের প্রতিফলন দেখা যায়। তবে, আজকের প্রতিবেদনে আমরা তুলে ধরবো একটি ব্যতিক্রমী মাতৃপূজার আয়োজন।
বাংলাদেশের কৈলাসহর ৫৩ বিধানসভা এলাকায় মিশ্র সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। শহরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৯৫ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায় বসবাস করে। সেখানে অল্প সংখ্যক হিন্দু পরিবারও রয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে কিছু পরিবার প্রতিবছরের মতো এ বছরও মাতৃশক্তির আরাধনায় ব্রতী হয়েছেন।
কৈলাসহরের সীমান্তবর্তী রাঙাউটি এলাকার কৃষ্ণপুর গ্রামে আগে প্রায় ৪৫টি হিন্দু পরিবারের বসবাস ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে অনেকেই শহরে চলে গেছেন। এখন সেখানে প্রায় ২৭টি হিন্দু পরিবার পৈতৃক ভিটেমাটি ও সনাতন ধর্মের ঐতিহ্য ধরে রাখতে মা দুর্গার পূজা আয়োজন করছেন।
পূজার জন্য পরিবারগুলো নিজেদের মধ্য থেকে চাঁদা তোলে। যদিও বাজেট শহরের বড় বড় বাজেটের তুলনায় কম, তবুও আয়োজকদের মধ্যে বাঙালি সনাতন সংস্কৃতির প্রচার ও আয়োজনের প্রতি কোনও খামতি নেই। আশ্চর্যজনকভাবে, প্রতিবছর স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক সামান্য সাহায্য করেন।
পূজা আয়োজনের পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে সনাতন নিয়ম মেনে চলে। গ্রামবাসীদের মধ্যে এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি জানান, তাঁদের কাছে অর্থের অভাব থাকলেও ভাবাবেগের অভাব নেই। পঞ্চমীর বোধন থেকে দশমীর বিসর্জন—সবকিছুই নিয়ম মেনে পালন করা হয়। প্যান্ডেলে আলোর ব্যবস্থা, ভোগ তৈরির কাজ সবই তাঁরা নিজেদের করেন। মা দুর্গার মূর্তি স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা তৈরি হয়।
এই পূজা একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরতি অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এখানে ঝাঁ চকচকে মণ্ডপসজ্জা, আলো, ডিজে সাউন্ড নেই, তবুও তাঁদের কাছে মা উমার আসা একটি বিশেষ উপলক্ষ।
বর্তমান যুগে গণতান্ত্রিক সমাজে যখন পত্রিকা, টেলিভিশন ও মুঠোফোনে হিংসা, দ্বেষ, নগ্নতা, ও নির্মমতার নানা উদাহরণ দেখা যায়, তখন একেবারে অনাড়ম্বরভাবে মায়ের পূজা, যা সব ধর্মের মানুষের মিলিত প্রয়াসে অনুষ্ঠিত হয়, সেটি সত্যিই একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪
‘আয় রে ছুটে আয় পূজার গন্ধ এসেছে, ঠ্যাং কুরাকুর ঠ্যাং কুরকুর বাদ্যি বেজেছে’—এবং বাঙালির জন্য অপেক্ষার শেষ ঘনিয়ে আসছে। শরতের পেঁজা মেঘ আর কাশফুলের দোলা জানান দেয় ‘মা আসছেন’। পূজা মানেই নানা রং, সাজ, ভোজ, এবং থিম। বর্তমানকালে পূজার আয়োজন হয় বিগ বাজেটের থিম কেন্দ্রিক, যেখানে সাবেকিয়ানার পরিবর্তে আড়ম্বর এবং নতুনত্বের প্রতিফলন দেখা যায়। তবে, আজকের প্রতিবেদনে আমরা তুলে ধরবো একটি ব্যতিক্রমী মাতৃপূজার আয়োজন।
বাংলাদেশের কৈলাসহর ৫৩ বিধানসভা এলাকায় মিশ্র সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। শহরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৯৫ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায় বসবাস করে। সেখানে অল্প সংখ্যক হিন্দু পরিবারও রয়েছে। এসব পরিবারের মধ্যে কিছু পরিবার প্রতিবছরের মতো এ বছরও মাতৃশক্তির আরাধনায় ব্রতী হয়েছেন।
কৈলাসহরের সীমান্তবর্তী রাঙাউটি এলাকার কৃষ্ণপুর গ্রামে আগে প্রায় ৪৫টি হিন্দু পরিবারের বসবাস ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে অনেকেই শহরে চলে গেছেন। এখন সেখানে প্রায় ২৭টি হিন্দু পরিবার পৈতৃক ভিটেমাটি ও সনাতন ধর্মের ঐতিহ্য ধরে রাখতে মা দুর্গার পূজা আয়োজন করছেন।
পূজার জন্য পরিবারগুলো নিজেদের মধ্য থেকে চাঁদা তোলে। যদিও বাজেট শহরের বড় বড় বাজেটের তুলনায় কম, তবুও আয়োজকদের মধ্যে বাঙালি সনাতন সংস্কৃতির প্রচার ও আয়োজনের প্রতি কোনও খামতি নেই। আশ্চর্যজনকভাবে, প্রতিবছর স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক সামান্য সাহায্য করেন।
পূজা আয়োজনের পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে সনাতন নিয়ম মেনে চলে। গ্রামবাসীদের মধ্যে এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি জানান, তাঁদের কাছে অর্থের অভাব থাকলেও ভাবাবেগের অভাব নেই। পঞ্চমীর বোধন থেকে দশমীর বিসর্জন—সবকিছুই নিয়ম মেনে পালন করা হয়। প্যান্ডেলে আলোর ব্যবস্থা, ভোগ তৈরির কাজ সবই তাঁরা নিজেদের করেন। মা দুর্গার মূর্তি স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা তৈরি হয়।
এই পূজা একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরতি অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এখানে ঝাঁ চকচকে মণ্ডপসজ্জা, আলো, ডিজে সাউন্ড নেই, তবুও তাঁদের কাছে মা উমার আসা একটি বিশেষ উপলক্ষ।
বর্তমান যুগে গণতান্ত্রিক সমাজে যখন পত্রিকা, টেলিভিশন ও মুঠোফোনে হিংসা, দ্বেষ, নগ্নতা, ও নির্মমতার নানা উদাহরণ দেখা যায়, তখন একেবারে অনাড়ম্বরভাবে মায়ের পূজা, যা সব ধর্মের মানুষের মিলিত প্রয়াসে অনুষ্ঠিত হয়, সেটি সত্যিই একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ।