শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) প্রধান কার্যালয়ের ৩৮টি গাড়ির মধ্যে অন্তত ২০টিই বেহাত রয়েছে। অথচ ইইডির জেলা পর্যায়ে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীদের মধ্যে অন্তত তিনজনের কোনো গাড়ি বরাদ্দ নেই। আরও ২৫ জন পরিত্যক্ত গাড়ি মেরামত করে কোনোভাবে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
ইইডির প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বর্তমানে ইইডির বরগুনা, ঝালকাঠি ও ফিরোজপুরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের জন্য কোনো গাড়ি বরাদ্দ নেই। অথচ প্রধান কার্র্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ ইইডির গাড়ি ব্যবহার করছেন।
প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ইইডির পরিচালকের পদ থেকে বদলি হয়ে পুনরায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদায়ন পান এক কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি অতিরিক্ত সচিব। ইইডি ছাড়ার পর থেকেই ওই কর্মকর্তা প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের পাজেরো স্পোর্ট ব্র্যান্ডের (ঢাকা মেট্রো-১৮০৪৮৬) গাড়িটি ব্যবহার করছেন।
ইইডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, তারা গাড়িটি ফেরত দেয়ার জন্য ওই কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছেন। কিন্ত তিনি ‘ধমক’ দিয়েছেন। কারণ ওই কর্মকর্তার স্বামী সচিব ছিলেন এবং এক আত্মীয় প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন।
জানতে চাইলে ইইডি ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা সংবাদকে বলেন, তিনি একটি ‘পরিত্যক্ত’ গাড়ি মেরামত করে ব্যবহার করছেন। এটিও প্রায় বিকল হয়ে যায়।
আরো দুটি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, তাদের গাড়ি ‘লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা’। ‘ভালো’ রাস্তায় চলে; খানাখন্দের রাস্তায় চলে না। গাড়ি না থাকায় ‘নির্মাণ কার্যক্রম ঠিকমত’ পরিদর্শন করা যায় না বলেও প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে শিক্ষা, অর্থ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন কর্মকর্তার ‘দখলে’ থাকা অন্তত ৬টি গাড়ি ফেরত পাওয়া গেছে বলে ইইডির যান্ত্রিক শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও অন্তত চারজন কর্মকর্তা ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ ইইডির গাড়ি ব্যবহার করছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গত ৭ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায় এবং একজন অফিসার কয়টা করে জিপ গাড়ি ব্যবহার করেন এসব খুঁজে বের করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, একনেক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, জেলা-উপজেলাসহ সারাদেশে সরকারি গাড়ি আছে তার একটি তালিকা করা হবে। কোন গাড়ি কোথায় আছে, কতদিন কার্যকর থাকে সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
ইইডিতেও গাড়ি বিলাস
সরকারি কর্মকর্তাদের একাধিক গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম নেই। কিন্তু ইইডির প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) রায়হান বাদশা বিলাসবহুল ‘পাজেরো স্পোর্ট ব্র্যান্ডের’ দু’টি গাড়ি ব্যবহার করছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর একটি তিনি নিজে ব্যবহার করছেন; অপরটি (ঢাকা মেট্রো- ১৮০৪৮৮) তার পরিবারের লোকজন ব্যবহার করছেন। দু’টি গাড়ির চালক ও জ্বালানির যোগান ইইডি থেকে দেয়া হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইইডির উপ-পরিচালক (প্রশাসন) লুৎফর রহমান ‘সুজুকি’ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-১৮২৭৫৬) হাঁকাচ্ছেন করছেন। তারও গাড়ি ব্যবহারের ‘প্রাধিকার’ নেই। কিন্তু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম দিকে ইইডিতে পদায়ন পেয়েই একটি প্রকল্পের গাড়ি ভাগিয়ে নেন লুৎফর রহমান। ইইডির সব গাড়ির জ¦ালানির যোগানও দেন এই কর্মকর্তা। তাকে গাড়িটি ফেরত দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একাধিকবার বললেও তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
‘প্রাধিকারবিহীন’ গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে লুৎফর রহমান কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ইইডির পরিচালক (প্রশাসন) (ঢাকা মেট্রো-১৫২০৬০), একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার (ঢাকা মেট্রো-১১৪৬৯৯), যান্ত্রিক শাখার এক কর্মকর্তা (১৩০২৪৬) ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের গাড়ি হাঁকাচ্ছেন বলে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ধরেননি। দু’দিন তার দপ্তরে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
মাউশি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা থেকে জানা গেছে, ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের (৩৩২ স্কুল) উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের শুরুতেই ২০১৮ সালে প্রকল্পের অর্র্থায়নে কেনা হয়েছিল মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট কিউএক্স এবং নিশান এক্স-ট্রেইল জিপ গাড়ি ব্র্যান্ডের চারটি গাড়ি। এই প্রকল্পের পরিচালক এবং উপ-পরিচালক গাড়ি ব্যবহারের প্রাধিকারভুক্ত।
প্রকল্পটির ডিপিপিতেই (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা প্রকল্প দলিল) কৌশলে দুটি গাড়ি ইইডি’র জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। ইইডি’র জন্য বরাদ্দকৃত দুটি গাড়ি এবং প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত দুটি গাড়ির জ¦ালানি খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে।
সাড়ে চার বছর মেয়াদের এই প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইলে (ডিপিপি) চালকের বেতনভাতা ছাড়াই ইইডি’র জন্য কেনা দুটি গাড়ির (ইঞ্জিন নম্বর-এমআর২০৪২৫৯৩৯সি এবং ৪ডি৫৬ইউএটি০৮৯৬) মোট জ¦ালানি ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। অথচ প্রকল্প অফিস ও মাউশি’র জন্য কেনা দু’টি গাড়ির জ¦ালানি ব্যয় ও মেরামত খরচ ধরা হয়েছে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই দু’টির গাড়ির একটি ব্যবহার করছেন ইইডির উপ-পরিচালক।
সাধারণত উপসচিব থেকে ওপরের স্তরের কর্মকর্তারা সরকার থেকে গাড়ি সুবিধা পেয়ে থাকেন। কোনো কর্মকর্তা কর্মস্থল বা মন্ত্রণালয় থেকে গাড়ি সুবিধা না পেলে সেক্ষেত্রে তিনি সরকার থেকে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা নিয়ে গাড়ি কিনতে পারেন। এতে প্রতিমাসে গাড়ির জ¦ালানি ব্যয় ও চালকের বেতনবাবদ প্রতিমাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা সরকার দিয়ে থাকে।
ইইডির এক কর্মকর্তা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সুদমুক্ত সুবিধায় ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেও তারা ‘প্রকল্পের’ গাড়ি ব্যবহার করছেন।
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) প্রধান কার্যালয়ের ৩৮টি গাড়ির মধ্যে অন্তত ২০টিই বেহাত রয়েছে। অথচ ইইডির জেলা পর্যায়ে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীদের মধ্যে অন্তত তিনজনের কোনো গাড়ি বরাদ্দ নেই। আরও ২৫ জন পরিত্যক্ত গাড়ি মেরামত করে কোনোভাবে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
ইইডির প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বর্তমানে ইইডির বরগুনা, ঝালকাঠি ও ফিরোজপুরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের জন্য কোনো গাড়ি বরাদ্দ নেই। অথচ প্রধান কার্র্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ ইইডির গাড়ি ব্যবহার করছেন।
প্রায় সাড়ে চার বছর আগে ইইডির পরিচালকের পদ থেকে বদলি হয়ে পুনরায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদায়ন পান এক কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি অতিরিক্ত সচিব। ইইডি ছাড়ার পর থেকেই ওই কর্মকর্তা প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের পাজেরো স্পোর্ট ব্র্যান্ডের (ঢাকা মেট্রো-১৮০৪৮৬) গাড়িটি ব্যবহার করছেন।
ইইডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে জানিয়েছেন, তারা গাড়িটি ফেরত দেয়ার জন্য ওই কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার অনুরোধ করেছেন। কিন্ত তিনি ‘ধমক’ দিয়েছেন। কারণ ওই কর্মকর্তার স্বামী সচিব ছিলেন এবং এক আত্মীয় প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন।
জানতে চাইলে ইইডি ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা সংবাদকে বলেন, তিনি একটি ‘পরিত্যক্ত’ গাড়ি মেরামত করে ব্যবহার করছেন। এটিও প্রায় বিকল হয়ে যায়।
আরো দুটি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, তাদের গাড়ি ‘লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা’। ‘ভালো’ রাস্তায় চলে; খানাখন্দের রাস্তায় চলে না। গাড়ি না থাকায় ‘নির্মাণ কার্যক্রম ঠিকমত’ পরিদর্শন করা যায় না বলেও প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে শিক্ষা, অর্থ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন কর্মকর্তার ‘দখলে’ থাকা অন্তত ৬টি গাড়ি ফেরত পাওয়া গেছে বলে ইইডির যান্ত্রিক শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও অন্তত চারজন কর্মকর্তা ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ ইইডির গাড়ি ব্যবহার করছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ গত ৭ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায় এবং একজন অফিসার কয়টা করে জিপ গাড়ি ব্যবহার করেন এসব খুঁজে বের করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, একনেক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, জেলা-উপজেলাসহ সারাদেশে সরকারি গাড়ি আছে তার একটি তালিকা করা হবে। কোন গাড়ি কোথায় আছে, কতদিন কার্যকর থাকে সব তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
ইইডিতেও গাড়ি বিলাস
সরকারি কর্মকর্তাদের একাধিক গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম নেই। কিন্তু ইইডির প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) রায়হান বাদশা বিলাসবহুল ‘পাজেরো স্পোর্ট ব্র্যান্ডের’ দু’টি গাড়ি ব্যবহার করছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর একটি তিনি নিজে ব্যবহার করছেন; অপরটি (ঢাকা মেট্রো- ১৮০৪৮৮) তার পরিবারের লোকজন ব্যবহার করছেন। দু’টি গাড়ির চালক ও জ্বালানির যোগান ইইডি থেকে দেয়া হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইইডির উপ-পরিচালক (প্রশাসন) লুৎফর রহমান ‘সুজুকি’ ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-১৮২৭৫৬) হাঁকাচ্ছেন করছেন। তারও গাড়ি ব্যবহারের ‘প্রাধিকার’ নেই। কিন্তু সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম দিকে ইইডিতে পদায়ন পেয়েই একটি প্রকল্পের গাড়ি ভাগিয়ে নেন লুৎফর রহমান। ইইডির সব গাড়ির জ¦ালানির যোগানও দেন এই কর্মকর্তা। তাকে গাড়িটি ফেরত দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একাধিকবার বললেও তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
‘প্রাধিকারবিহীন’ গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে লুৎফর রহমান কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ইইডির পরিচালক (প্রশাসন) (ঢাকা মেট্রো-১৫২০৬০), একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার (ঢাকা মেট্রো-১১৪৬৯৯), যান্ত্রিক শাখার এক কর্মকর্তা (১৩০২৪৬) ‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের গাড়ি হাঁকাচ্ছেন বলে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।
‘প্রাধিকারবিহীনভাবে’ গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে ইইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ধরেননি। দু’দিন তার দপ্তরে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
মাউশি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা থেকে জানা গেছে, ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের (৩৩২ স্কুল) উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়নের শুরুতেই ২০১৮ সালে প্রকল্পের অর্র্থায়নে কেনা হয়েছিল মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট কিউএক্স এবং নিশান এক্স-ট্রেইল জিপ গাড়ি ব্র্যান্ডের চারটি গাড়ি। এই প্রকল্পের পরিচালক এবং উপ-পরিচালক গাড়ি ব্যবহারের প্রাধিকারভুক্ত।
প্রকল্পটির ডিপিপিতেই (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা বা প্রকল্প দলিল) কৌশলে দুটি গাড়ি ইইডি’র জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। ইইডি’র জন্য বরাদ্দকৃত দুটি গাড়ি এবং প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত দুটি গাড়ির জ¦ালানি খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে।
সাড়ে চার বছর মেয়াদের এই প্রকল্পের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইলে (ডিপিপি) চালকের বেতনভাতা ছাড়াই ইইডি’র জন্য কেনা দুটি গাড়ির (ইঞ্জিন নম্বর-এমআর২০৪২৫৯৩৯সি এবং ৪ডি৫৬ইউএটি০৮৯৬) মোট জ¦ালানি ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। অথচ প্রকল্প অফিস ও মাউশি’র জন্য কেনা দু’টি গাড়ির জ¦ালানি ব্যয় ও মেরামত খরচ ধরা হয়েছে ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই দু’টির গাড়ির একটি ব্যবহার করছেন ইইডির উপ-পরিচালক।
সাধারণত উপসচিব থেকে ওপরের স্তরের কর্মকর্তারা সরকার থেকে গাড়ি সুবিধা পেয়ে থাকেন। কোনো কর্মকর্তা কর্মস্থল বা মন্ত্রণালয় থেকে গাড়ি সুবিধা না পেলে সেক্ষেত্রে তিনি সরকার থেকে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা নিয়ে গাড়ি কিনতে পারেন। এতে প্রতিমাসে গাড়ির জ¦ালানি ব্যয় ও চালকের বেতনবাবদ প্রতিমাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা সরকার দিয়ে থাকে।
ইইডির এক কর্মকর্তা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সুদমুক্ত সুবিধায় ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেও তারা ‘প্রকল্পের’ গাড়ি ব্যবহার করছেন।