বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে বাংলাদেশের অংশে মাছ ধরার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ৫টি ফিশিং ট্রলার ও ৭২ জন মাঝি-মাল্লাকে ২৪ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে মায়ানমার নৌবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ৪টার দিকে ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী।
পাঁচটি ট্রলারের মধ্যে শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমানের ২টি, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহর একটি, তার ভাই আতা উল্লাহর একটি ও উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেমের একটি।
৯ অক্টোবর বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ ধরার নৌকায় বাংলাদেশি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করে মায়ানমার নৌ বাহিনী। একই সময় জেলেসহ ৬টি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যায়। ট্রলার মালিকেরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মায়ানমারের নৌ-বাহিনী এই গুলি চালিয়েছে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু এবং আরও দুই জেলে আহত হন। ঘটনার একদিন পর বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় মো. ওসমান গনি, আহত অন্য দুই জেলেসহ ১১ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে পৌঁছায়।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো. ওসমান গনি শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধীন ট্রলারের জেলে হিসেবে কাজ করতো।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত জেলেসহ সাইফুলের মালিকাধীন ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে আসে। এরপর বিকেল ৪টার দিকে অন্য ৫টি ট্রলার জেলেরাসহ সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে।
তিনি বলেন, ট্রলারের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বর্তমানে এসব জেলেদের কাছ থেকে কোস্টগার্ড ও নৌ বাহিনী তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর পরে সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলারগুলো শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে নিয়ে আসা হবে।
ট্রলার মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মায়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে তার ট্রলারে গুলি বর্ষণ করে। এতে ট্রলারে থাকা তিনজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের একজনের মৃত্যু হয়।
শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফিরে আসা ট্রলার মাঝি নুর হামিদ বলেন, গত ৬ অক্টোবর ১২ জন মিলে ট্রলারে করে সাগরে মাছ ধরতে যান। বুধবার সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম মৌলভী শিল এলাকা বঙ্গোপসাগরে ১০ থেকে ১২টি ট্রলার কাছাকাছি থেকে মাছ ধরছিল। দুপুরের দিকে মায়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা একটি স্পিড বোটে করে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে গুলি করে। এতে এক জেলে নিহত হন। নিহত মো. ওসমান শাহপরীর দ্বীপের কোনার পাড়ার বাচু মিয়ার ছেলে। আহত হন আরও দুইজন। এ সময় ছয়টি ট্রলার আটক করে মায়ানমারের দিকে নিয়ে যায় নৌবাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
অন্য ফিরে আসা ট্রলারের মালিক মতিউর রহমান বলেন, প্রথমে নিহত জেলেসহ সাইফুলের মালিকানাধীন ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটি আসে দুপুর আড়াইটায়। বিকেল ৪টায় অন্য পাঁচটি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাটে এসেছে। সেখানে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী তথ্য সংগ্রহ করছে।
টেকনাফে দায়িত্বরত নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল কাসেম জানান, জেলের মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। একই সঙ্গে অন্য পাঁচটি ট্রলারও ছেড়ে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে বলে জানান কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মায়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরার নৌকায় মায়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে। এতে একজন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে ৫০ কিলোমিটার দূরে সাগরে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর মায়ানমারের নৌ বাহিনীরা ধরে নিয়ে যাওয়া মাঝি-মাল্লাদের ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান ইউএনও আদনান চৌধুরী।
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে বাংলাদেশের অংশে মাছ ধরার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ৫টি ফিশিং ট্রলার ও ৭২ জন মাঝি-মাল্লাকে ২৪ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে মায়ানমার নৌবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ৪টার দিকে ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী।
পাঁচটি ট্রলারের মধ্যে শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমানের ২টি, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহর একটি, তার ভাই আতা উল্লাহর একটি ও উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেমের একটি।
৯ অক্টোবর বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গোপসাগরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ ধরার নৌকায় বাংলাদেশি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করে মায়ানমার নৌ বাহিনী। একই সময় জেলেসহ ৬টি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যায়। ট্রলার মালিকেরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মায়ানমারের নৌ-বাহিনী এই গুলি চালিয়েছে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু এবং আরও দুই জেলে আহত হন। ঘটনার একদিন পর বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় মো. ওসমান গনি, আহত অন্য দুই জেলেসহ ১১ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে পৌঁছায়।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো. ওসমান গনি শাহপরীর দ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধীন ট্রলারের জেলে হিসেবে কাজ করতো।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত জেলেসহ সাইফুলের মালিকাধীন ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে আসে। এরপর বিকেল ৪টার দিকে অন্য ৫টি ট্রলার জেলেরাসহ সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে।
তিনি বলেন, ট্রলারের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বর্তমানে এসব জেলেদের কাছ থেকে কোস্টগার্ড ও নৌ বাহিনী তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর পরে সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলারগুলো শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে নিয়ে আসা হবে।
ট্রলার মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মায়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে তার ট্রলারে গুলি বর্ষণ করে। এতে ট্রলারে থাকা তিনজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের একজনের মৃত্যু হয়।
শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফিরে আসা ট্রলার মাঝি নুর হামিদ বলেন, গত ৬ অক্টোবর ১২ জন মিলে ট্রলারে করে সাগরে মাছ ধরতে যান। বুধবার সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম মৌলভী শিল এলাকা বঙ্গোপসাগরে ১০ থেকে ১২টি ট্রলার কাছাকাছি থেকে মাছ ধরছিল। দুপুরের দিকে মায়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা একটি স্পিড বোটে করে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে গুলি করে। এতে এক জেলে নিহত হন। নিহত মো. ওসমান শাহপরীর দ্বীপের কোনার পাড়ার বাচু মিয়ার ছেলে। আহত হন আরও দুইজন। এ সময় ছয়টি ট্রলার আটক করে মায়ানমারের দিকে নিয়ে যায় নৌবাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
অন্য ফিরে আসা ট্রলারের মালিক মতিউর রহমান বলেন, প্রথমে নিহত জেলেসহ সাইফুলের মালিকানাধীন ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটি আসে দুপুর আড়াইটায়। বিকেল ৪টায় অন্য পাঁচটি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাটে এসেছে। সেখানে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী তথ্য সংগ্রহ করছে।
টেকনাফে দায়িত্বরত নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল কাসেম জানান, জেলের মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। একই সঙ্গে অন্য পাঁচটি ট্রলারও ছেড়ে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে বলে জানান কোস্ট গার্ডের এক কর্মকর্তা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মায়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরার নৌকায় মায়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে। এতে একজন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে ৫০ কিলোমিটার দূরে সাগরে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর মায়ানমারের নৌ বাহিনীরা ধরে নিয়ে যাওয়া মাঝি-মাল্লাদের ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান ইউএনও আদনান চৌধুরী।