শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে `দ্রোহ-দাহ-স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য।
আজ শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত হয় নবগঠিত সংগঠনটির প্রথম সাংস্কৃতিক সমাবেশ।
সাংস্কৃতিক সমাবেশ উদ্বোধন করেন ‘২৪ গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং প্রবীণ কৃষকনেতা, যশোর ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ও প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী রণজিৎ বাওয়ালী।
উদ্বোধনী বক্তবো শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্ররা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার একমাত্র সন্তান নিহত হয়েছে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা তার স্বপ্নকে স্বার্থক করে তুলবেন সেটাই আমার প্রত্যাশা।’
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু। এতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত সহিংসতা ও প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নতজানু নীতির কারণে দেশে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী অপশক্তির আস্ফালন জনমনে ভীতি ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয় ঘোষণাপত্রে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সময় জুলাই-আগস্টে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ শুরু হয়েছে, যা ইতিবাচক। তবে, বিচারকাজে যেন কোন অবহেলা না হয় এবং সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় সে দাবি জানান বক্তারা।
তারা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অনেক কিছুই প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এলেও এখন পর্যন্ত মুক্তভাবে সংস্কৃতি চর্চা করা যাচ্ছে না। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হলেও জেলা- উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রই এখনও বন্ধ পড়ে আছে। সেগুলো অবিলম্বে মেরামত করে খুলে দেয়া এবং সংস্কৃতি চর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রণীত সব ধরনের নিপীড়নমূলক আইন বাতিল এবং এসব আইনে গ্রেপ্তার সবাইকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয় সমাবেশে। এছাড়া, সব ধর্মীয় ও জাতিসত্ত্বার অধিকার নিশ্চিত করা এবং মাজার-মন্দির ও নারীর উপর আক্রমণ বন্ধ করার দাবিও জানান গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য-এর দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রা কর্মসূচির বক্তারা।
এছাড়া, আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খন্দকার শাহ্ আলম ও সুস্মিতা সুপ্তি।
আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে দেশবরেণ্য বেশ কয়েকটি সংগ্রামী সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীরা লাঠি খেলা, মূকাভিনয়, নৃত্য, আবৃত্তি, সংগীত ইত্যাদি পরিবেশন করে। এসব সংগঠন ও শিল্পীদের মধ্যে রয়েছে উদীচী, বিবর্তন, চারণ, প্রগতি লেখক সংঘ, গণসংস্কৃতি কেন্দ্র, সংহতি সংস্কৃতি পরিষদ, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, হাসান ফকরী, সমাজ চিন্তা ফোরাম, মাদল, সমগীত, গঞ্জে ফেরেশতা, ডিমোক্রেজি ক্লাউনস, সংজোয়ার, টিম এজ অমিক্স, ভাটিয়াল শহুরে, দ্যা কমরেডস। নৃত্য পরিবেশন করে কথক নৃত্য সম্প্রদায়। মাইম শো করে ঢাকা ড্রামা এবং লাঠি খেলায় ছিল চারণ।
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
শোষণ-বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে `দ্রোহ-দাহ-স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য।
আজ শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত হয় নবগঠিত সংগঠনটির প্রথম সাংস্কৃতিক সমাবেশ।
সাংস্কৃতিক সমাবেশ উদ্বোধন করেন ‘২৪ গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং প্রবীণ কৃষকনেতা, যশোর ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ও প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী রণজিৎ বাওয়ালী।
উদ্বোধনী বক্তবো শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্ররা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আমার একমাত্র সন্তান নিহত হয়েছে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা তার স্বপ্নকে স্বার্থক করে তুলবেন সেটাই আমার প্রত্যাশা।’
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু। এতে মব ভায়োলেন্সের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত সহিংসতা ও প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নতজানু নীতির কারণে দেশে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী অপশক্তির আস্ফালন জনমনে ভীতি ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দ্রুত শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয় ঘোষণাপত্রে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সময় জুলাই-আগস্টে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ শুরু হয়েছে, যা ইতিবাচক। তবে, বিচারকাজে যেন কোন অবহেলা না হয় এবং সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় সে দাবি জানান বক্তারা।
তারা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অনেক কিছুই প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এলেও এখন পর্যন্ত মুক্তভাবে সংস্কৃতি চর্চা করা যাচ্ছে না। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হলেও জেলা- উপজেলা পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রই এখনও বন্ধ পড়ে আছে। সেগুলো অবিলম্বে মেরামত করে খুলে দেয়া এবং সংস্কৃতি চর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রণীত সব ধরনের নিপীড়নমূলক আইন বাতিল এবং এসব আইনে গ্রেপ্তার সবাইকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয় সমাবেশে। এছাড়া, সব ধর্মীয় ও জাতিসত্ত্বার অধিকার নিশ্চিত করা এবং মাজার-মন্দির ও নারীর উপর আক্রমণ বন্ধ করার দাবিও জানান গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য-এর দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রা কর্মসূচির বক্তারা।
এছাড়া, আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খন্দকার শাহ্ আলম ও সুস্মিতা সুপ্তি।
আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। এ পর্বে দেশবরেণ্য বেশ কয়েকটি সংগ্রামী সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীরা লাঠি খেলা, মূকাভিনয়, নৃত্য, আবৃত্তি, সংগীত ইত্যাদি পরিবেশন করে। এসব সংগঠন ও শিল্পীদের মধ্যে রয়েছে উদীচী, বিবর্তন, চারণ, প্রগতি লেখক সংঘ, গণসংস্কৃতি কেন্দ্র, সংহতি সংস্কৃতি পরিষদ, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র, হাসান ফকরী, সমাজ চিন্তা ফোরাম, মাদল, সমগীত, গঞ্জে ফেরেশতা, ডিমোক্রেজি ক্লাউনস, সংজোয়ার, টিম এজ অমিক্স, ভাটিয়াল শহুরে, দ্যা কমরেডস। নৃত্য পরিবেশন করে কথক নৃত্য সম্প্রদায়। মাইম শো করে ঢাকা ড্রামা এবং লাঠি খেলায় ছিল চারণ।