বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আইনে দায়ের হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলায় এখন কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। পরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ-২০২৪’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা (ভেটিং) শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবারও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে এই আইন ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেজন্য আইনটি বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।
গত ৩ অক্টোবর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই যাব। আল্টিমেট এটা বাতিল হবে। পরবর্তীকালে যখন নতুন আইন হবে, এটার বেসিক অ্যাপ্রোচ থাকবে সাইবার সুরক্ষা দেয়া, নাগরিককে সুরক্ষা দেয়া বিশেষ করে।’
কয়েকদিন আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে এই আইন বাতিল হচ্ছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৩ সালে বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিল করে তার পরিবর্তে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করা হয়। এ আইন নিয়েও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনাও হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এই সমালোচনা খুব একটা আমলে নেয়নি। এই প্রেক্ষিতে আইনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার।
বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনে’ দায়ের হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলাগুলো (মুক্তমত প্রকাশের কারণে মামলা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব মামলায় এখন কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি পাবেন বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬’; ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ এবং ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ এর অধীন গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট পাঁচ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান।
বর্তমানে ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মোট এক হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলার তদন্ত চলমান। আর ৮৭৯টি মামলা দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।
এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তমত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং ‘কম্পিউটার হ্যাকিং’ বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলাগুলোর মধ্যে আইসিটি আইনের অধীন ২৭৯টি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীন ৭৮৬টি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন ২৭৫টি মামলা চলমান রয়েছে বলে ওই সময় আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বর্তমান সরকার ‘স্পিচ অফেন্স’ সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এক হাজার ৩৪০টি ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। আর তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪
বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আইনে দায়ের হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলায় এখন কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। পরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ-২০২৪’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা (ভেটিং) শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবারও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে এই আইন ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেজন্য আইনটি বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল।
গত ৩ অক্টোবর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই যাব। আল্টিমেট এটা বাতিল হবে। পরবর্তীকালে যখন নতুন আইন হবে, এটার বেসিক অ্যাপ্রোচ থাকবে সাইবার সুরক্ষা দেয়া, নাগরিককে সুরক্ষা দেয়া বিশেষ করে।’
কয়েকদিন আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে এই আইন বাতিল হচ্ছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৩ সালে বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিল করে তার পরিবর্তে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ করা হয়। এ আইন নিয়েও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনাও হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এই সমালোচনা খুব একটা আমলে নেয়নি। এই প্রেক্ষিতে আইনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার।
বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনে’ দায়ের হওয়া ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলাগুলো (মুক্তমত প্রকাশের কারণে মামলা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব মামলায় এখন কেউ গ্রেপ্তার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি পাবেন বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬’; ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ এবং ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ এর অধীন গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট পাঁচ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান।
বর্তমানে ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মোট এক হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলার তদন্ত চলমান। আর ৮৭৯টি মামলা দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।
এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তমত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং ‘কম্পিউটার হ্যাকিং’ বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলাগুলোর মধ্যে আইসিটি আইনের অধীন ২৭৯টি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীন ৭৮৬টি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীন ২৭৫টি মামলা চলমান রয়েছে বলে ওই সময় আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বর্তমান সরকার ‘স্পিচ অফেন্স’ সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এক হাজার ৩৪০টি ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। আর তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে।