alt

জাতীয়

বশিরউদ্দিন ও ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় ‘বৈষম্যবিরোধীদের’ বিক্ষোভ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারে নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের কয়েকজনকে নিয়ে তখন থেকেই নানা আলোচনা, বিতর্ক চলছে। ১০ নভেম্বর রোববার আরও তিনজনকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়ার পর নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে অপসারণের দাবিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

উপদেষ্টা নিয়োগের মধ্যে দিয়ে ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে বলে ওই সমাবেশে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

নতুন উপদেষ্টাদের শপথ ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের এক ‘বিস্ফোরক মন্তব্য’ বিতর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।

রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেন শিল্পগোষ্ঠী আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।

শপথ গ্রহণের পরপরই বঙ্গভবন এলাকায় মশাল মিছিল করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। সেখ বশির উদ্দিনকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদে ‘আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মানি না, মানব না’ ইত্যাদি বলে সেøাগান দেন তারা।

রোববার তিন উপদেষ্টার শপথের পর মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুকে একটি পোস্টে সারজিস আলম লিখেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টা জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই! তার ওপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছেন!’

সারজিস আলমের ওই পোস্টের পর কমেন্ট বক্সে নেটিজেনদের সমালোচনা শুরু হয়।

এদিকে সেখ বশিরকে উপদেষ্টা করায় রোববার রাতে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় প্রায় একই সময়ে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা সিলেটে বিক্ষোভ করেন।

**সরকারকে নিরাপত্তা দিতে শিক্ষার্থীরা বারবার রাস্তায় নামবে না**
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, উপদেষ্টা নিয়োগের মধ্যে দিয়ে ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরাপত্তা দিতে শিক্ষার্থীরা বারবার রাস্তায় নামবে না।’ নতুন (রোববার সন্ধ্যায়) যাদেরকে উপদেষ্টা বানানো হয়েছে, দেশের জন্য তাদের অবদান এবং গত ১৫ বছরে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

‘ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে’ সোমবার বিকেল ৩টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই স্থানে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। অন্যদিকে, ‘বিপ্লবের চেতনা নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দিয়ে শহীদের রক্তের অবমাননার প্রতিবাদে’ মানববন্ধন ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সমমনা দাবিতে পরপর দুইটি অনুষ্ঠানের ঘোষণা হওয়ার পর বিকেল চারটায় একসঙ্গে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা একদফা দাবি আদায়ে বলেছিলাম ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলা চাই। এই বাংলা থেকে ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের দোসরদেরও উচ্ছেদ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে আমরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো।’

শিক্ষার্থীরা বক্তব্য বলেন, ‘যাদের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ছিল না, তারা কিভাবে অন্তর্বর্তী সরকারে জায়গা পেয়েছে। এই লোকগুলো জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিতে গণভবনে ছিল।’ শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘চব্বিশ-এর আন্দোলনের সঙ্গে যারা ছিল না, তারা অন্তর্বর্তী সরকারে থাকতে পারবে না। এই সরকারে আওয়ামী লীগের কোনো দোসর থাকতে পারবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন শপথ নেয়া ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে দ্রুত অপসারণ করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

**সিলেটে বিক্ষোভ**
সিলেট থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি জানান, ‘ছাত্র-জনতার অংশীদারত্ববিহীন সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে’ সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট। কেন্দ্রের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সিলেট মহানগরীর চৌহাট্টা থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে জিন্দাবাজার পয়েন্ট ঘুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিবসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যে উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন তা জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দেয়া শহিদের রক্তের অবমাননা ও অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানি।’ বক্তারা আওয়ামী লীগের দোসরদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। আগামীতে উপদেষ্টা নিয়োগের আগে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আলোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।

**জাবিতে বিক্ষোভ**
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে রোববার রাতে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ, ‘সাঈদ নূর আসাদ ভাই, দোসরের জায়গা নাই’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন। অনতিবিলম্বে ফারুকীকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ না করলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা ও মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠিত করা মানুষকে উপদেষ্টা পরিষদে আসীন করা শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। অতি দ্রুত তাকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ করতে হবে, না হলে ছাত্র সমাজ কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘যেই মুজিব এবং মুজিববাদকে পুঁজি করে ফ্যাসিস্ট শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণহত্যা চালানো হয়েছে সেই ফ্যাসিস্ট আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল কাউকে অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র জনতার সরকারে অন্তর্ভুক্তি সরাসরি শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি। আমরা ছাত্র জনতা শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি মেনে নিব না। আমাদের আবার রাস্তায় নামার সময় চলে এসেছে।’

**যশোরে বিক্ষোভ**
আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, সেখ বশিরকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদে রোববার রাতে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শহরের দড়াটানা থেকে মিছিল করে ভৈরব চত্বরে সমাবেশ করে তারা। এ সময় বক্তারা দাবি করেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সেখ বশির ছাত্র-জনতার বিপক্ষে ছিলেন। তাই তাকে উপদেষ্টা করে, আন্দোলনে নিহতদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে।’ বক্তারা আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল করতে সব রকম সমর্থন দেবে ছাত্র-জনতা। তবে তাদের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হলে করা প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’

**গণঅধিকার পরিষদের মশাল মিছিল**
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় শপথ চলাকালে বঙ্গভবন এলাকায় জড়ো হন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। পরে তারা সেখানে সেখ বশির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল করেন।

মশাল মিছিলে অংশ নেয়া গণঅধিকার পরিষদের এক কর্মী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি (সংসদ সদস্য) আফিল উদ্দিনের ভাইকে উপদেষ্টা পরিষদে কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না। কীসের ভিত্তিতে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকারে বশির উদ্দিনের ঠাঁই হলো?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।

শ্রমিক অধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মাহমুদুল হক শিপন বলেন, ‘দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আওয়ামী লীগ পন্থি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান দিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। আকিজ গ্রুপ ওই পরিবারেরই সদস্য। এখন যদি ওই পরিবারের থেকে উপদেষ্টা করা হয়, তাহলে তো অন্তর্বর্তী সরকারও আওয়ামী লীগের মতো হয়ে যাবে। তাই কোনো শিল্পগোষ্ঠী থেকে যেন কোনো উপদেষ্টা দেয়া না হয়, এজন্য আন্দোলন করছি।’

গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অবিলম্বে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সেখ বশিরকে অপসারণের দাবি জানান।

**ফারুকীকে নিয়ে হেফাজত**
মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘হেফাজতে ইসলাম’। সোমবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘হেফাজত আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)কে তেঁতুল হুজুর বলে ব্যঙ্গ করে সে (ফারুকী) চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। যা ক্ষমার অযোগ্য।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ একাধিক উপদেষ্টা পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন এবং সমর্থন জুগিয়েছেন। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠ সাবেক তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফারুকী।’

**ফেইসবুকে নেটিজেনরা**
এদিকে ফেইসবুকে সারজিস আলমের ওই পোস্টের পর কমেন্ট বক্সে নেটিজেনদের সমালোচনা শুরু হয়। কমেন্টে ইমরান মাহফুজ লিখেন, ‘আন্দোলনে নারী সমন্বয়ক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী নেই উপদেষ্টা হওয়ার মতো? মাদ্রাসা ও কলেজের সমম্বয়করা ফোকাসে নেই কেন? অন্যায্য আচরণ করলে গণঅভ্যুত্থানে গণ অনুভূতি ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাবে।’

সারওয়ার হোসেন লিখেন, ‘উনারা কি জনগণের ভাষা বুঝেন না? নতুন বাংলাদেশের জন্য সাধ্যমতো পরিশ্রম করতেছি, অন্যদিকে প্রফেসর ইউনূস সরকার খুঁজে খুঁজে এলজি... (আওয়ামী লীগ) সমর্থকদের উপদেষ্টা বানায়। আমাদের চাওয়া বেশি কিছু নয়। ক্ষমতা আপনারা রান করেন, কিন্তু এই দেশের জনগণকে শাসন করতে তাদের চাপিয়ে দিবেন না।’

ছবি

ধর্মীয় সম্প্রীতির আহ্বান: অপপ্রচারে কান না দেওয়ার পরামর্শ

ছবি

কর অব্যাহতি কমানোর পরিকল্পনা: এনবিআর চেয়ারম্যান

ছবি

মানবিক ও ভয়মুক্ত সমাজ গঠনে জোর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

আইজিপি: আয়নাঘর ও গুম-খুনের সংস্কৃতি এখন আর নেই

ছবি

সংখ্যালঘু নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহের জন্য সরকারের কাছে দাবী সনাতনী জোটের

ঢাকায় ফিরছেন কলকাতা ও ত্রিপুরার দুই কূটনীতিক

ছবি

শেখ হাসিনাকে ফেরানো সময় আসেনি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি

রেলওয়ের দখলকৃত জমি ছাড়ার নির্দেশ, সময়সীমা ১০ ডিসেম্বর

ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ

ছবি

সংখ্যালঘু নির্যাতন রোধে খোলামেলা সংলাপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

ওয়েলিংটনে হাই কমিশন খুলছে বাংলাদেশ

ছবি

ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বৈঠক সোমবার

ছবি

জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন কাজী নজরুল

ছবি

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

৯ ডিসেম্বর ইইউর ২৮ দূতের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব হলেন সাংবাদিক ফয়েজ

ছবি

সীমান্তে এখন উত্তেজনা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেন আইজিপি

ছবি

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন

ছবি

কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে গেজেট জারির উদ্যোগ

১৭ কারাগার ঝুঁকিপূর্ণ, পালানো সাতশ’ আসামি এখনও অধরা: কারা মহাপরিদর্শক

ছবি

‘অর্থ পাচার’: যেভাবে ‘শুকিয়ে ফেলা হয়’ একটি দেশের অর্থনীতি

ছবি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ছবি

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার যুক্তরাজ্যে :ক্ষোভ জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

দেশের প্রশ্নে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে: আসিফ নজরুল

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ

ছবি

আগামী সপ্তাহে ভারতের সাথে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক

ছবি

এপিপিজির প্রতিবেদনে ‘মিথ্যা’ তথ্য, হাই কমিশনারকে জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান: মিথ্যা প্রচার ঠেকাতে এক জোট হওয়ার তাগিদ

ছবি

বাংলাদেশে আর কোনদিন ভারতের আধিপত্য চলবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ

ছবি

বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে আইসিবি, বিনিয়োগ হবে ‘এ’ শ্রেণির শেয়ারে

ছবি

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজনীতি প্রবেশ করবে না : অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

৩ বছর পর জানা গেল মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা লাশটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর

ছবি

বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে, অতীতের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক

tab

জাতীয়

বশিরউদ্দিন ও ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় ‘বৈষম্যবিরোধীদের’ বিক্ষোভ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারে নিয়োগ পাওয়া উপদেষ্টাদের কয়েকজনকে নিয়ে তখন থেকেই নানা আলোচনা, বিতর্ক চলছে। ১০ নভেম্বর রোববার আরও তিনজনকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়ার পর নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে অপসারণের দাবিতে সোমবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

উপদেষ্টা নিয়োগের মধ্যে দিয়ে ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে বলে ওই সমাবেশে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

নতুন উপদেষ্টাদের শপথ ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের এক ‘বিস্ফোরক মন্তব্য’ বিতর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।

রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেন শিল্পগোষ্ঠী আকিজ-বশির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।

শপথ গ্রহণের পরপরই বঙ্গভবন এলাকায় মশাল মিছিল করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। সেখ বশির উদ্দিনকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদে ‘আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মানি না, মানব না’ ইত্যাদি বলে সেøাগান দেন তারা।

রোববার তিন উপদেষ্টার শপথের পর মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুকে একটি পোস্টে সারজিস আলম লিখেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টা জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই! তার ওপর খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছেন!’

সারজিস আলমের ওই পোস্টের পর কমেন্ট বক্সে নেটিজেনদের সমালোচনা শুরু হয়।

এদিকে সেখ বশিরকে উপদেষ্টা করায় রোববার রাতে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় প্রায় একই সময়ে বিক্ষোভ করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা সিলেটে বিক্ষোভ করেন।

**সরকারকে নিরাপত্তা দিতে শিক্ষার্থীরা বারবার রাস্তায় নামবে না**
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, উপদেষ্টা নিয়োগের মধ্যে দিয়ে ছাত্রদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরাপত্তা দিতে শিক্ষার্থীরা বারবার রাস্তায় নামবে না।’ নতুন (রোববার সন্ধ্যায়) যাদেরকে উপদেষ্টা বানানো হয়েছে, দেশের জন্য তাদের অবদান এবং গত ১৫ বছরে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

‘ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে’ সোমবার বিকেল ৩টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই স্থানে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। অন্যদিকে, ‘বিপ্লবের চেতনা নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দিয়ে শহীদের রক্তের অবমাননার প্রতিবাদে’ মানববন্ধন ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সমমনা দাবিতে পরপর দুইটি অনুষ্ঠানের ঘোষণা হওয়ার পর বিকেল চারটায় একসঙ্গে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা একদফা দাবি আদায়ে বলেছিলাম ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলা চাই। এই বাংলা থেকে ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের দোসরদেরও উচ্ছেদ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে আমরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো।’

শিক্ষার্থীরা বক্তব্য বলেন, ‘যাদের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ছিল না, তারা কিভাবে অন্তর্বর্তী সরকারে জায়গা পেয়েছে। এই লোকগুলো জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিতে গণভবনে ছিল।’ শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘চব্বিশ-এর আন্দোলনের সঙ্গে যারা ছিল না, তারা অন্তর্বর্তী সরকারে থাকতে পারবে না। এই সরকারে আওয়ামী লীগের কোনো দোসর থাকতে পারবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন শপথ নেয়া ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে দ্রুত অপসারণ করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

**সিলেটে বিক্ষোভ**
সিলেট থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি জানান, ‘ছাত্র-জনতার অংশীদারত্ববিহীন সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে’ সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট। কেন্দ্রের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সিলেট মহানগরীর চৌহাট্টা থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে জিন্দাবাজার পয়েন্ট ঘুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিবসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যে উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন তা জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দেয়া শহিদের রক্তের অবমাননা ও অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানি।’ বক্তারা আওয়ামী লীগের দোসরদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। আগামীতে উপদেষ্টা নিয়োগের আগে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আলোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।

**জাবিতে বিক্ষোভ**
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে রোববার রাতে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ, ‘সাঈদ নূর আসাদ ভাই, দোসরের জায়গা নাই’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন। অনতিবিলম্বে ফারুকীকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ না করলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা ও মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠিত করা মানুষকে উপদেষ্টা পরিষদে আসীন করা শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। অতি দ্রুত তাকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ করতে হবে, না হলে ছাত্র সমাজ কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘যেই মুজিব এবং মুজিববাদকে পুঁজি করে ফ্যাসিস্ট শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণহত্যা চালানো হয়েছে সেই ফ্যাসিস্ট আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল কাউকে অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র জনতার সরকারে অন্তর্ভুক্তি সরাসরি শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি। আমরা ছাত্র জনতা শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি মেনে নিব না। আমাদের আবার রাস্তায় নামার সময় চলে এসেছে।’

**যশোরে বিক্ষোভ**
আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, সেখ বশিরকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদে রোববার রাতে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

শহরের দড়াটানা থেকে মিছিল করে ভৈরব চত্বরে সমাবেশ করে তারা। এ সময় বক্তারা দাবি করেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সেখ বশির ছাত্র-জনতার বিপক্ষে ছিলেন। তাই তাকে উপদেষ্টা করে, আন্দোলনে নিহতদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে।’ বক্তারা আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল করতে সব রকম সমর্থন দেবে ছাত্র-জনতা। তবে তাদের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হলে করা প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’

**গণঅধিকার পরিষদের মশাল মিছিল**
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় শপথ চলাকালে বঙ্গভবন এলাকায় জড়ো হন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। পরে তারা সেখানে সেখ বশির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল করেন।

মশাল মিছিলে অংশ নেয়া গণঅধিকার পরিষদের এক কর্মী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি (সংসদ সদস্য) আফিল উদ্দিনের ভাইকে উপদেষ্টা পরিষদে কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না। কীসের ভিত্তিতে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকারে বশির উদ্দিনের ঠাঁই হলো?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।

শ্রমিক অধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মাহমুদুল হক শিপন বলেন, ‘দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আওয়ামী লীগ পন্থি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান দিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। আকিজ গ্রুপ ওই পরিবারেরই সদস্য। এখন যদি ওই পরিবারের থেকে উপদেষ্টা করা হয়, তাহলে তো অন্তর্বর্তী সরকারও আওয়ামী লীগের মতো হয়ে যাবে। তাই কোনো শিল্পগোষ্ঠী থেকে যেন কোনো উপদেষ্টা দেয়া না হয়, এজন্য আন্দোলন করছি।’

গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অবিলম্বে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সেখ বশিরকে অপসারণের দাবি জানান।

**ফারুকীকে নিয়ে হেফাজত**
মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘হেফাজতে ইসলাম’। সোমবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘হেফাজত আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)কে তেঁতুল হুজুর বলে ব্যঙ্গ করে সে (ফারুকী) চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। যা ক্ষমার অযোগ্য।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ একাধিক উপদেষ্টা পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন এবং সমর্থন জুগিয়েছেন। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠ সাবেক তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফারুকী।’

**ফেইসবুকে নেটিজেনরা**
এদিকে ফেইসবুকে সারজিস আলমের ওই পোস্টের পর কমেন্ট বক্সে নেটিজেনদের সমালোচনা শুরু হয়। কমেন্টে ইমরান মাহফুজ লিখেন, ‘আন্দোলনে নারী সমন্বয়ক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী নেই উপদেষ্টা হওয়ার মতো? মাদ্রাসা ও কলেজের সমম্বয়করা ফোকাসে নেই কেন? অন্যায্য আচরণ করলে গণঅভ্যুত্থানে গণ অনুভূতি ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যাবে।’

সারওয়ার হোসেন লিখেন, ‘উনারা কি জনগণের ভাষা বুঝেন না? নতুন বাংলাদেশের জন্য সাধ্যমতো পরিশ্রম করতেছি, অন্যদিকে প্রফেসর ইউনূস সরকার খুঁজে খুঁজে এলজি... (আওয়ামী লীগ) সমর্থকদের উপদেষ্টা বানায়। আমাদের চাওয়া বেশি কিছু নয়। ক্ষমতা আপনারা রান করেন, কিন্তু এই দেশের জনগণকে শাসন করতে তাদের চাপিয়ে দিবেন না।’

back to top