রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপারেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ঋণ অনুমোদনের এক সপ্তাহ পরে তার সুদহার কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আগে সরকারের সার্বভৌম জামানতের বিপরীতে আইসিবিকে দেওয়া তিন হাজার কোটি টাকার ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ ঠিক করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বিকাল নাগাদ অর্থ ছাড় করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “চিঠি পেয়েছি, আজকে দুপুরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা সম্ভব হবে। আশা করছি বিকালের মধ্যে অর্থ ছাড় শুরু হবে।”
সুদহার কমানোর পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইসিবিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় বলে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।
গত ২৭ নভেম্বর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আইসিবিকে দিতে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণের পুরো অর্থের সার্বভৌম জামানত (সভরেইন গ্যারান্টার) হয়েছে সরকার।
গ্যারান্টার হওয়ায় কোনো কারণে আইসিবি ঋণের অর্থ ফেরত দিতে না পারলে সরকারকে তা পরিশোধ করতে হবে।
ঋণের অর্থের সুদহার ধরা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার (পলিসি রেট) অনুযায়ী। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সময়ে সময়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান নীতি সুদহার হচ্ছে ১০ শতাংশ।
পরে সুদহার ব্যাংক রেট অর্থাৎ ৪ শতাংশ নির্ধারণ করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করে আইসিবি।
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “অর্থ উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেন। গভর্নরও দ্রুত সম্মতি দেওয়ায় চার শতাংশ সুদে আইসিবি টাকাটা পাচ্ছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন তহবিলসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ তহবিল পরিচালনা করলে তার সুদহার ব্যাংক রেটে ধরা হয়।
বর্তমানে ব্যাংক রেট হচ্ছে ৪ শতাংশ। গত কয়েক মাসে নীতি সুদহার, রেপো, বিশেষ রেপো ও রিভার্স রেপো সুদহার বাড়লেও ব্যাংক রেট একই জায়গায় আছে।
গত নভেম্বর মাসে আইসিবির অনুরোধে সরকার এ ঋণের গ্যারান্টার হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে শর্তের কথা জানিয়ে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। আইসিবিকে দেয়া সরকারের গ্যারান্টির মেয়াদ হবে ঋণ দেওয়ার তারিখ থেকে ১৮ মাস।
সরকারের দেওয়া গ্যারান্টিপত্রে বলা হয়, আইসিবি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে যে মুনাফা দেয়, সেখান থেকে অপরিশোধিত বা বকেয়া ঋণ বা ঋণের উপর ধার্য সুদ সমন্বয় করা যাবে না।
শুধু ‘এ’ শ্রেণির শেয়ারে বিনিয়োগ
এর আগে আইসিবি চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানিয়েছিলেন, কিছু উচ্চ সুদের আমানত আছে আইসিবিতে। তাতে সুদ বাবদ বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। সেই উচ্চ সুদের আমানতের একটি অংশের ধারাবাহিকতা রাখবে না আইসিবি। অবশিষ্ট অর্থ ধাপে ধাপে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ছিল। কিন্তু সেই ধারা ছিল কেবল দুই সপ্তাহ। ১৪ অগাস্টের পরে বাজারে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়। এমনকি একদিনে সূচকের একশ পয়েন্ট হারানোর ঘটনাও বিনিয়োগকারীরা দেখেছেন।
পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বাজারে তারল্য প্রবাহে সংকট রয়েছে ও আইসিবিও বিনিয়োগ করতে পারছে না এমন দাবি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চায় প্রতিষ্ঠানটি।
ঋণ আবেদন পর্যালোচনা করতে গত ১৭ অক্টোবর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসি এর চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঋণ দিতে সম্মত হয়েছিল সরকার।
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপারেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ঋণ অনুমোদনের এক সপ্তাহ পরে তার সুদহার কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আগে সরকারের সার্বভৌম জামানতের বিপরীতে আইসিবিকে দেওয়া তিন হাজার কোটি টাকার ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ ঠিক করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে বিকাল নাগাদ অর্থ ছাড় করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “চিঠি পেয়েছি, আজকে দুপুরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা সম্ভব হবে। আশা করছি বিকালের মধ্যে অর্থ ছাড় শুরু হবে।”
সুদহার কমানোর পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আইসিবিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় বলে বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।
গত ২৭ নভেম্বর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আইসিবিকে দিতে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণের পুরো অর্থের সার্বভৌম জামানত (সভরেইন গ্যারান্টার) হয়েছে সরকার।
গ্যারান্টার হওয়ায় কোনো কারণে আইসিবি ঋণের অর্থ ফেরত দিতে না পারলে সরকারকে তা পরিশোধ করতে হবে।
ঋণের অর্থের সুদহার ধরা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার (পলিসি রেট) অনুযায়ী। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সময়ে সময়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান নীতি সুদহার হচ্ছে ১০ শতাংশ।
পরে সুদহার ব্যাংক রেট অর্থাৎ ৪ শতাংশ নির্ধারণ করতে সরকারের কাছে অনুরোধ করে আইসিবি।
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, “অর্থ উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেন। গভর্নরও দ্রুত সম্মতি দেওয়ায় চার শতাংশ সুদে আইসিবি টাকাটা পাচ্ছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন তহবিলসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ তহবিল পরিচালনা করলে তার সুদহার ব্যাংক রেটে ধরা হয়।
বর্তমানে ব্যাংক রেট হচ্ছে ৪ শতাংশ। গত কয়েক মাসে নীতি সুদহার, রেপো, বিশেষ রেপো ও রিভার্স রেপো সুদহার বাড়লেও ব্যাংক রেট একই জায়গায় আছে।
গত নভেম্বর মাসে আইসিবির অনুরোধে সরকার এ ঋণের গ্যারান্টার হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে শর্তের কথা জানিয়ে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। আইসিবিকে দেয়া সরকারের গ্যারান্টির মেয়াদ হবে ঋণ দেওয়ার তারিখ থেকে ১৮ মাস।
সরকারের দেওয়া গ্যারান্টিপত্রে বলা হয়, আইসিবি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে যে মুনাফা দেয়, সেখান থেকে অপরিশোধিত বা বকেয়া ঋণ বা ঋণের উপর ধার্য সুদ সমন্বয় করা যাবে না।
শুধু ‘এ’ শ্রেণির শেয়ারে বিনিয়োগ
এর আগে আইসিবি চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানিয়েছিলেন, কিছু উচ্চ সুদের আমানত আছে আইসিবিতে। তাতে সুদ বাবদ বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। সেই উচ্চ সুদের আমানতের একটি অংশের ধারাবাহিকতা রাখবে না আইসিবি। অবশিষ্ট অর্থ ধাপে ধাপে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়ছিল। কিন্তু সেই ধারা ছিল কেবল দুই সপ্তাহ। ১৪ অগাস্টের পরে বাজারে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়। এমনকি একদিনে সূচকের একশ পয়েন্ট হারানোর ঘটনাও বিনিয়োগকারীরা দেখেছেন।
পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বাজারে তারল্য প্রবাহে সংকট রয়েছে ও আইসিবিও বিনিয়োগ করতে পারছে না এমন দাবি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চায় প্রতিষ্ঠানটি।
ঋণ আবেদন পর্যালোচনা করতে গত ১৭ অক্টোবর অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সচিব ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসি এর চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঋণ দিতে সম্মত হয়েছিল সরকার।