ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং দেশের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা থেকে আখাউড়া লংমার্চ করেছে বিএনপির তিন অংঙ্গ সংগঠন। লংমার্চে নেতারা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন। তিন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই লংমার্চ দেশের অভ্যন্তরে তাদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টায় রাজধানীর নায়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে লংমার্চ শুরু করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আখাউড়া অভিমুখে লংমার্চে নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। লংমার্চে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ ও বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
গাড়িবহর ঢাকা থেকে বের হওয়ার পর থেকে সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, চিটাগং রোড, কাচপুর, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, মাধবদী, পাচদোনা, নরসিংদী, ইটাখোলা, বেলাবো, ভৈরব, আশুগঞ্জ, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের
নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ রাস্তার দুইধারে দাঁড়িয়ে লংমার্চকে স্বাগত জানায়। নেতাকর্মীদের হাতে নানা স্লোগান সংবলিত ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা দেখা গেছে।
বিকেল ৪টার দিকে লংমার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছায়। বন্দর এলাকায় সকাল থেকেই অন্তত আট-দশটি জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সমবেত হন। লংমার্চ আখাউড়া পৌঁছানোর পর সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়।
লংমার্চ ঘিরে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকায় তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও গ্রাম পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার জানান, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিজার্ভ ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুসমন্বয়ের মাধ্যমে লং মার্চ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। নেতাদের ভাষণে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের দাবি উঠে এসেছে।
উদ্বোধনী সভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পথসভায় ও সমাপনী সভায় ভারতকে উদ্দেশ করে নানা বক্তব্য দেন নেতারা। তারা ভারতের সাথে বন্ধুত্ব রক্ষার পাশাপাশি স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করার অঙ্গীকার করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
ঢাকায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হলেও তারা চায় বাংলাদেশসহ আশেপাশের দেশগুলো তাদের কথা শুনে চলুক।’ দিল্লির সাউথ ব্লক ‘বাংলাদেশের মানুষের রক্তের তেজ বুঝতে পারেনি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ওদের একজন নেতা বলেছেন, তারা চট্টগ্রাম দাবি করবে। ওরা চট্টগ্রাম দাবি করলে আমরা নবাব আমলের জায়গা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা দাবি করবো।’ চট্টগ্রাম দখল করতে আসলে আমরা চুপ করে বসে থেকে আমলকি আর চানাচুর খাব না এমন ব্যাঙ্গ করে বলেন, ‘আমরাও আমাদের শক্তি দিয়ে, আমাদের তেজ দিয়ে দেশকে রক্ষা করব।’
লংমার্চ শেষে বিকাল পৌনে ৫টায় আখাউড়া পোর্টে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। লংমার্চে বেশ কয়েকটি পথসভাও করে সংগঠনগুলো। লংমার্চটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে শেষ হয়। পথে বিভিন্ন জেলা উপজেলার নেতাকর্মীরা লংমার্চে যোগ দেন।
ভৈরব মোড়ের পথসভায় ও আখাউড়া স্থলবন্দর মাঠে সমাপনী সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ বিভিন্ন উপজেলার নেতারা।
সভায় মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনচেতা। তারা কোনো পরাশক্তির প্রভাব মেনে নেবে না। ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশকে আমরা বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে শোষণের শৃঙ্খল ছিঁড়ে ফেলতে হবে।’
এস এম জিলানী বলেন, ‘ভারত নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করে, কিন্তু বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার সব দোসরদের আশ্রয় দিয়েছে তারা।’
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জাতীয় পতাকা অবমাননা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিয়ে এর জবাব দেব।’
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং দেশের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা থেকে আখাউড়া লংমার্চ করেছে বিএনপির তিন অংঙ্গ সংগঠন। লংমার্চে নেতারা ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন। তিন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই লংমার্চ দেশের অভ্যন্তরে তাদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টায় রাজধানীর নায়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে লংমার্চ শুরু করে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আখাউড়া অভিমুখে লংমার্চে নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখা গেছে। লংমার্চে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ ও বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।
গাড়িবহর ঢাকা থেকে বের হওয়ার পর থেকে সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, চিটাগং রোড, কাচপুর, তারাবো, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, মাধবদী, পাচদোনা, নরসিংদী, ইটাখোলা, বেলাবো, ভৈরব, আশুগঞ্জ, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের
নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ রাস্তার দুইধারে দাঁড়িয়ে লংমার্চকে স্বাগত জানায়। নেতাকর্মীদের হাতে নানা স্লোগান সংবলিত ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা দেখা গেছে।
বিকেল ৪টার দিকে লংমার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছায়। বন্দর এলাকায় সকাল থেকেই অন্তত আট-দশটি জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সমবেত হন। লংমার্চ আখাউড়া পৌঁছানোর পর সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়।
লংমার্চ ঘিরে আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকায় তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও গ্রাম পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার জানান, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিজার্ভ ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুসমন্বয়ের মাধ্যমে লং মার্চ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। নেতাদের ভাষণে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের দাবি উঠে এসেছে।
উদ্বোধনী সভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পথসভায় ও সমাপনী সভায় ভারতকে উদ্দেশ করে নানা বক্তব্য দেন নেতারা। তারা ভারতের সাথে বন্ধুত্ব রক্ষার পাশাপাশি স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করার অঙ্গীকার করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
ঢাকায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হলেও তারা চায় বাংলাদেশসহ আশেপাশের দেশগুলো তাদের কথা শুনে চলুক।’ দিল্লির সাউথ ব্লক ‘বাংলাদেশের মানুষের রক্তের তেজ বুঝতে পারেনি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ওদের একজন নেতা বলেছেন, তারা চট্টগ্রাম দাবি করবে। ওরা চট্টগ্রাম দাবি করলে আমরা নবাব আমলের জায়গা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা দাবি করবো।’ চট্টগ্রাম দখল করতে আসলে আমরা চুপ করে বসে থেকে আমলকি আর চানাচুর খাব না এমন ব্যাঙ্গ করে বলেন, ‘আমরাও আমাদের শক্তি দিয়ে, আমাদের তেজ দিয়ে দেশকে রক্ষা করব।’
লংমার্চ শেষে বিকাল পৌনে ৫টায় আখাউড়া পোর্টে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। লংমার্চে বেশ কয়েকটি পথসভাও করে সংগঠনগুলো। লংমার্চটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে গিয়ে শেষ হয়। পথে বিভিন্ন জেলা উপজেলার নেতাকর্মীরা লংমার্চে যোগ দেন।
ভৈরব মোড়ের পথসভায় ও আখাউড়া স্থলবন্দর মাঠে সমাপনী সভায় সভাপতিত্ব করেন যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ বিভিন্ন উপজেলার নেতারা।
সভায় মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনচেতা। তারা কোনো পরাশক্তির প্রভাব মেনে নেবে না। ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশকে আমরা বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে শোষণের শৃঙ্খল ছিঁড়ে ফেলতে হবে।’
এস এম জিলানী বলেন, ‘ভারত নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করে, কিন্তু বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তার সব দোসরদের আশ্রয় দিয়েছে তারা।’
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জাতীয় পতাকা অবমাননা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিয়ে এর জবাব দেব।’