র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলসহ বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দপ্তরে গোপন নির্যাতন কেন্দ্র ও গুম খুনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে গুম ও খুনের ঘটনায় তদন্ত কমিশনের নির্দেশে আয়নাঘর হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সেসব গোপন নির্যাতন কেন্দ্র অপরিবর্তিত অবস্থায় এখনও রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারস্থ র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে থাকা নানা অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন, বর্তমান ডিজি। র্যাবের বিরুদ্ধে আনিত গুম, খুনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচারের প্রত্যাশা জানিয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন র্যাব প্রধান। অবশ্য এর আগে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
ডিজি র্যাব বলেছেন, গুম, খুন ও আয়নাঘর নিয়ে যত ধরনের অভিযোগ আছে কমিশন তা তদন্ত করছে। র্যাবের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি। তদন্তের রিপোর্টের পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাবের আয়নাঘর, ছিল কিনা জানতে চাইলে ডিজি বলেন, র্যাবের যে আয়নাঘরের বিষয়টা এসেছে। এটা ছিল এখনও আছে। তদন্ত কমিশন র্যাবকে নির্দেশ দিয়েছে, যে আয়নাঘর যে অবস্থায় আছে। ওই অবস্থায়ই (আলামত হিসেবে) রাখার জন্য। কোথাও এখন কোনোরকম পরিবর্তন, পরিবর্ধন যেন না করা হয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ঠিক ওইভাবে রেখেছি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে। সেইসব বন্দীশালাকে গোপন টর্চার সেল কিংবা আয়নাঘর নাম দেয়া হয়েছে।
তুলে নিয়ে সেইসব মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বহুদিন পর পরিবারের কাছে ফিরে গিয়ে তাদের নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। আবার অনেকেই এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের এখনও খবর মিলেনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে গত আগস্ট মাসে অবসর প্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন হয়।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দিন পর্যন্ত সময়ে কমিশনে যত অভিযোগ পড়েছে, তার বেশিরভাগই র্যাবের বিরুদ্ধে।
র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানিয়েছে, ২০০৪ সালে র্যাব সৃষ্টির পর থেকে র্যাব অস্ত্র উদ্ধার, মাদক বিরোধী কার্যক্রম, শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, জঙ্গি দমনসহ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার উপর হামলা, হত্যা, হত্যার নির্দেশদাতা ও নাশকতার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাবের টিম আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ৪ জন সাবেক মন্ত্রী, ১৭ জন সাবেক এমপি, সাবেক মেয়র ও চেয়ারম্যানসহ ৪০ জন, কাউন্সিলার মেম্বার ১৬ জন, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৮৩ জন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে ৩০, সরাসরি গুলিবর্ষণকারীসহ সর্বমোট ৩৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় লুট হওয়া অস্ত্র, গুলি উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগ এনে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ২০০৪ সালে এই বাহিনী প্রতিষ্ঠার পর পহেলা বৈশাখে রমনা বটমুলে নিরাপত্তা দেয়া, জুনে প্রথম অপারেশনে বন্দুকযুদ্ধে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার র্যাবের ডিজি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ভবিষ্যতে নিষ্ঠার সঙ্গে তার বাহিনী দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতি জানিয়ে, আজ পর্যন্ত যে সমস্ত মানুষ র্যাব দ্বারা নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছে। যেমন, নারায়নগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থী।
২০২১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র্যাবের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও সাড়া মিলেনি।
র্যাবের ডিজি র্যাব বিলুপ্তির বিষয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। সরকার যে সিদ্বান্ত নিবেন সেটাই পালন করব। আর র্যাবের পোশাক পরিবর্তন নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা চলছে। র্যাবের নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। পুলিশ ব্যাটালিয়ন আইন সংশোধন করে র্যাব গঠন করা হয়েছে।
হেলিকপ্তারে করে গুলি চালানো সম্পর্কে ডিজি বলেন, এনিয়ে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অনুসন্ধান করছে। আশাকরি প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
ভিডিও দেখে দুই হাতে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালানো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ি থেকে লিটন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এনিয়ে এই পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলসহ বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দপ্তরে গোপন নির্যাতন কেন্দ্র ও গুম খুনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে গুম ও খুনের ঘটনায় তদন্ত কমিশনের নির্দেশে আয়নাঘর হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সেসব গোপন নির্যাতন কেন্দ্র অপরিবর্তিত অবস্থায় এখনও রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারস্থ র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে থাকা নানা অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন, বর্তমান ডিজি। র্যাবের বিরুদ্ধে আনিত গুম, খুনের যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচারের প্রত্যাশা জানিয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন র্যাব প্রধান। অবশ্য এর আগে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
ডিজি র্যাব বলেছেন, গুম, খুন ও আয়নাঘর নিয়ে যত ধরনের অভিযোগ আছে কমিশন তা তদন্ত করছে। র্যাবের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি। তদন্তের রিপোর্টের পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাবের আয়নাঘর, ছিল কিনা জানতে চাইলে ডিজি বলেন, র্যাবের যে আয়নাঘরের বিষয়টা এসেছে। এটা ছিল এখনও আছে। তদন্ত কমিশন র্যাবকে নির্দেশ দিয়েছে, যে আয়নাঘর যে অবস্থায় আছে। ওই অবস্থায়ই (আলামত হিসেবে) রাখার জন্য। কোথাও এখন কোনোরকম পরিবর্তন, পরিবর্ধন যেন না করা হয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা ঠিক ওইভাবে রেখেছি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে। সেইসব বন্দীশালাকে গোপন টর্চার সেল কিংবা আয়নাঘর নাম দেয়া হয়েছে।
তুলে নিয়ে সেইসব মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বহুদিন পর পরিবারের কাছে ফিরে গিয়ে তাদের নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। আবার অনেকেই এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের এখনও খবর মিলেনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে গত আগস্ট মাসে অবসর প্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন হয়।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের দিন পর্যন্ত সময়ে কমিশনে যত অভিযোগ পড়েছে, তার বেশিরভাগই র্যাবের বিরুদ্ধে।
র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানিয়েছে, ২০০৪ সালে র্যাব সৃষ্টির পর থেকে র্যাব অস্ত্র উদ্ধার, মাদক বিরোধী কার্যক্রম, শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, জঙ্গি দমনসহ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করেছে।
সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার উপর হামলা, হত্যা, হত্যার নির্দেশদাতা ও নাশকতার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাবের টিম আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ৪ জন সাবেক মন্ত্রী, ১৭ জন সাবেক এমপি, সাবেক মেয়র ও চেয়ারম্যানসহ ৪০ জন, কাউন্সিলার মেম্বার ১৬ জন, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ১৮৩ জন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে ৩০, সরাসরি গুলিবর্ষণকারীসহ সর্বমোট ৩৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় লুট হওয়া অস্ত্র, গুলি উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগ এনে র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ২০০৪ সালে এই বাহিনী প্রতিষ্ঠার পর পহেলা বৈশাখে রমনা বটমুলে নিরাপত্তা দেয়া, জুনে প্রথম অপারেশনে বন্দুকযুদ্ধে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার র্যাবের ডিজি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ভবিষ্যতে নিষ্ঠার সঙ্গে তার বাহিনী দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতি জানিয়ে, আজ পর্যন্ত যে সমস্ত মানুষ র্যাব দ্বারা নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছে। যেমন, নারায়নগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থী।
২০২১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র্যাবের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও সাড়া মিলেনি।
র্যাবের ডিজি র্যাব বিলুপ্তির বিষয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। সরকার যে সিদ্বান্ত নিবেন সেটাই পালন করব। আর র্যাবের পোশাক পরিবর্তন নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা চলছে। র্যাবের নির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। পুলিশ ব্যাটালিয়ন আইন সংশোধন করে র্যাব গঠন করা হয়েছে।
হেলিকপ্তারে করে গুলি চালানো সম্পর্কে ডিজি বলেন, এনিয়ে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অনুসন্ধান করছে। আশাকরি প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
ভিডিও দেখে দুই হাতে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালানো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ি থেকে লিটন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এনিয়ে এই পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।