alt

জাতীয়

১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১: রায়েরবাজার বধ্যভূমি, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মিরপুর বধ্যভূমি

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দুদিন পর ১৮ ডিসেম্বর স্বজনহারা অনেকের মতো জগন্নাথ কলেজের বাংলার অধ্যাপিকা হামিদা রহমানকে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে গিয়েছিলেন স্বজনের লাশের সন্ধানে। ২ জানুয়ারি (১৯৭২) ‘দৈনিক আজাদ’-এ এই প্রত্যক্ষদর্শীর মর্মন্তুদ বিবরণ ছাপা হয়েছে।

হামিদা রহমান লিখেছেন, ‘আর একটু এগিয়ে যেতেই সামনে বড় বড় দুটো মস্ত মানুষ, নাক কাটা, কান কাটা-মুখের কাছে কে যেন খামচিয়ে মাংস তুলে নিয়েছে, হাত-পা বাঁধা। দুদিন পর্যন্ত লাশ দুটো ওখানে পড়ে ছিল। শনাক্ত হয়নি। ফর্সা বড় বড় দুটো মানুষের বীভৎস বিকৃত চেহারা এখনও ভেসে ওঠে। পরে ওখানকার বাসিন্দারা মাটিচাপা দিয়ে দিয়েছে।

‘আর একটু এগিয়ে যেতেই বাঁদিকে যে মাটির ঢিপিটি ছিল তারই পাদদেশে একটি মেয়ের লাশ। মেয়েটির চোখ বাঁধা। গামছা দুটো আজও ওখানে পড়ে আছে। পরনে কালো ঢাকাই শাড়ি। এক পায়ে মোজা। মুখ ও নাকের কোনো আকৃতি নেই। কে যেন অস্ত্র দিয়ে তা কেটে খামচিয়ে তুলে নিয়েছে। যেন চেনা না যায়। মেয়েটি ফর্সা এবং স্বাস্থ্যবান। লাশটা চিৎ হয়ে পড়ে আছে। বীভৎস চেহারার দৃশ্য বেশিক্ষণ দেখা যায় না। তাকে আমি চিনতে পারিনি। পরে অবশ্য শনাক্ত হয়েছে যে, মেয়েটি সেলিনা পারভীন। ‘শিলালিপি’র এডিটর। তার আত্মীয়রা বিকেল বেলায় খবর পেয়ে লাশটি তুলে নিয়ে গেছে।

‘আর একটু এগিয়ে যেতেই একটা উঁচুস্থানে বেশ কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে ঝুঁকে পড়ে কি যেন দেখছে। আমি উপরে উঠতেই একজন ভদ্রলোক হাত বাড়িয়ে আমাকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। সামনে চেয়ে দেখি, নিচু জলাভূমির ভেতর এক ভয়াবহ বীভৎস দৃশ্য। সেখানে এক নয়, দুই নয়, একেবারে বারো-তেরজন সুস্থ সবল মানুষ। একের পর এক শুয়ে আছে। পাশে দুটো লাশ, তার একটির হৃৎপি- কে যেন ছিঁড়ে নিয়েছে। সেই হৃৎপি- ছেঁড়া মানুষটিই হলো ডা. ফজলে রাব্বী। পাশের গাদাটিতে রমনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী আর ইত্তেফাকের সিরাজউদ্দিন হোসেন। পাশের একজন বললেন মুনীর চৌধুরীর লাশও এখানে ছিল। কবীর চৌধুরী সকালবেলা এসে দেখে গিয়েছেন। ‘প্রায় ঘণ্টাখানেক আমি সেখানে ছিলাম। আসতে পারিনি। একে একে সবাই এসে এখানে হাজির হচ্ছে। ডা. রাব্বীর লাশটা তখনও তাজা। জল্লাদ বাহিনী বুকের ভেতর থেকে কলিজাটা তুলে নিয়েছে। তারা জানতো যে, তিনি চিকিৎসক ছিলেন। তাই তার হৃৎপি-টা ছিঁড়ে ফেলেছে। চোখ বাঁধা অবস্থায় কাৎ হয়ে দেহটা পড়ে আছে। পাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। রাব্বী সাহেবের পা দুখানা তখনও জ্বলজ্বল করে তাজা মানুষের সাক্ষ্য দিচ্ছে। নাক-মুখ কিছুই অক্ষত ছিল না। দস্যু হায়েনার নখের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত।’

জুলাই আন্দোলন : সাবেক আইজিপিসহ সাড়ে ৯শ’ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

ডনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন অধ্যাপক ইউনূস

ছবি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের চীন সফর শুরু

ছবি

অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন আলী ইমাম মজুমদার

ছবি

অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন মামুন

ছবি

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত

ছবি

পুলিশ-র‌্যাব-আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত

ছবি

সাবেক এমপি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গ্রেপ্তার

ছবি

সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

ছবি

পৃথক হত্যা মামলায় সালমান, আনিসুল, ইনু, মেনন ও মামুন ফের রিমান্ডে

ছবি

ভোটার তালিকা হালনাগাদ: বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৯ লাখ তথ্য সংগ্রহের আশায় ইসি

ছবি

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস

ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা জানতে চেয়েছে জাতিসংঘ

ছবি

শিগগিরই ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে সরাতে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবে দুদক

ছবি

আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে: জাতিসংঘ দূত

বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে ট্রাইব্যুনালে জাতিসংঘের সহযোগিতা

ছবি

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কে চিড় ধরবে না : রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

ছবি

দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ডেপুটি গভর্নরের বাসায় নগদ টাকা ও সঞ্চয়পত্র উদ্ধার

ছবি

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

ছবি

রূপপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ শোধের সুরাহা হয়ে যোবে : রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত

ছবি

বায়ু দুষণে বছরে দেশে ১ লাখ ২ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু

ছবি

বিডিআর বিদ্রোহ : বিস্ফোরক মামলায় দুই শতাধিক আসামির জামিন

ছবি

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সময়সূচি অনুযায়ী নির্বাচন হবে: সিইসি

ছবি

সুন্দরবনে বেড়েছে হরিণ, তবে থেমে নেই শিকার

প্রশাসনের সব স্তরে ‘অনিয়ম ও অসমতা’ নিরসনের দাবি

বাংলাদেশকে নিয়ে ২০২৪ সালে ভারতীয় অপতথ্যের প্রবাহ: বিশ্লেষণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি

ছবি

শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের সংকট: আদিবাসী গ্রাফিতি বিতর্কে প্রতিবাদ

ছবি

বনের ক্ষতি ও পরিবেশ সংকট: সরকারি–বেসরকারি প্রকল্পের প্রভাব

ছবি

উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কোটার সমালোচনা

ছবি

এক বছরে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, মেয়েদের সংখ্যা বেশি

ছবি

লেবানন থেকে দেশে ফিরলেন আরও ৪৭ বাংলাদেশি

ছবি

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

ছবি

সাড়ে পাঁচ মাসে ৪০ মাজারে হামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ : প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

ছবি

পদ্ধতিগত সংস্কার ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘন থামবে না: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

tab

জাতীয়

১৮ ডিসেম্বর ১৯৭১: রায়েরবাজার বধ্যভূমি, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মিরপুর বধ্যভূমি

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের দুদিন পর ১৮ ডিসেম্বর স্বজনহারা অনেকের মতো জগন্নাথ কলেজের বাংলার অধ্যাপিকা হামিদা রহমানকে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে গিয়েছিলেন স্বজনের লাশের সন্ধানে। ২ জানুয়ারি (১৯৭২) ‘দৈনিক আজাদ’-এ এই প্রত্যক্ষদর্শীর মর্মন্তুদ বিবরণ ছাপা হয়েছে।

হামিদা রহমান লিখেছেন, ‘আর একটু এগিয়ে যেতেই সামনে বড় বড় দুটো মস্ত মানুষ, নাক কাটা, কান কাটা-মুখের কাছে কে যেন খামচিয়ে মাংস তুলে নিয়েছে, হাত-পা বাঁধা। দুদিন পর্যন্ত লাশ দুটো ওখানে পড়ে ছিল। শনাক্ত হয়নি। ফর্সা বড় বড় দুটো মানুষের বীভৎস বিকৃত চেহারা এখনও ভেসে ওঠে। পরে ওখানকার বাসিন্দারা মাটিচাপা দিয়ে দিয়েছে।

‘আর একটু এগিয়ে যেতেই বাঁদিকে যে মাটির ঢিপিটি ছিল তারই পাদদেশে একটি মেয়ের লাশ। মেয়েটির চোখ বাঁধা। গামছা দুটো আজও ওখানে পড়ে আছে। পরনে কালো ঢাকাই শাড়ি। এক পায়ে মোজা। মুখ ও নাকের কোনো আকৃতি নেই। কে যেন অস্ত্র দিয়ে তা কেটে খামচিয়ে তুলে নিয়েছে। যেন চেনা না যায়। মেয়েটি ফর্সা এবং স্বাস্থ্যবান। লাশটা চিৎ হয়ে পড়ে আছে। বীভৎস চেহারার দৃশ্য বেশিক্ষণ দেখা যায় না। তাকে আমি চিনতে পারিনি। পরে অবশ্য শনাক্ত হয়েছে যে, মেয়েটি সেলিনা পারভীন। ‘শিলালিপি’র এডিটর। তার আত্মীয়রা বিকেল বেলায় খবর পেয়ে লাশটি তুলে নিয়ে গেছে।

‘আর একটু এগিয়ে যেতেই একটা উঁচুস্থানে বেশ কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে ঝুঁকে পড়ে কি যেন দেখছে। আমি উপরে উঠতেই একজন ভদ্রলোক হাত বাড়িয়ে আমাকে উপরে উঠিয়ে নিলেন। সামনে চেয়ে দেখি, নিচু জলাভূমির ভেতর এক ভয়াবহ বীভৎস দৃশ্য। সেখানে এক নয়, দুই নয়, একেবারে বারো-তেরজন সুস্থ সবল মানুষ। একের পর এক শুয়ে আছে। পাশে দুটো লাশ, তার একটির হৃৎপি- কে যেন ছিঁড়ে নিয়েছে। সেই হৃৎপি- ছেঁড়া মানুষটিই হলো ডা. ফজলে রাব্বী। পাশের গাদাটিতে রমনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী আর ইত্তেফাকের সিরাজউদ্দিন হোসেন। পাশের একজন বললেন মুনীর চৌধুরীর লাশও এখানে ছিল। কবীর চৌধুরী সকালবেলা এসে দেখে গিয়েছেন। ‘প্রায় ঘণ্টাখানেক আমি সেখানে ছিলাম। আসতে পারিনি। একে একে সবাই এসে এখানে হাজির হচ্ছে। ডা. রাব্বীর লাশটা তখনও তাজা। জল্লাদ বাহিনী বুকের ভেতর থেকে কলিজাটা তুলে নিয়েছে। তারা জানতো যে, তিনি চিকিৎসক ছিলেন। তাই তার হৃৎপি-টা ছিঁড়ে ফেলেছে। চোখ বাঁধা অবস্থায় কাৎ হয়ে দেহটা পড়ে আছে। পাড় থেকে ধাক্কা দিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। রাব্বী সাহেবের পা দুখানা তখনও জ্বলজ্বল করে তাজা মানুষের সাক্ষ্য দিচ্ছে। নাক-মুখ কিছুই অক্ষত ছিল না। দস্যু হায়েনার নখের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত।’

back to top