alt

জাতীয়

চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড়ে আইএমএফের সম্মতি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চতুর্থ কিস্তিতে বাংলাদেশকে ৬৫ কোটি ডলার দিতে সম্মতির কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল।

একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো, আর্থিক খাতের সংস্কার ও অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে আগের ঋণের বাইরে নতুন করে ৭৫ কোটি ডলার দিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে সংস্থাটি।

এ ঋণ আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদন পেলে আগের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৬ সালে চার দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সমান কিস্তিতে পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।

ঢাকা সফরে থাকা আইএমএফের প্রতিনিধি দল বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় দিতে সম্মতির পাশাপাশি নতুন ঋণ নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা বলেছে।

’স্টাফ’ পর্যায়ের এ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা এবং তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফের আগামী নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে অনুমোদন সাপেক্ষে চতুর্থ কিস্তি ছাড় হবে। একইভাবে নতুন ঋণের বিষয়টিও পর্ষদ সভায় অনুমোদন নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মকর্তা পর্যায়ে সম্মতির বিষয়টি জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে রাজনৈতিক পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করা হয়। তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ধীর গতির হয়ে পড়েছে এবং মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই। অর্থপাচার বিশেষ করে ব্যাংক খাত থেকে অর্থ বের হওয়া চাপে পড়েছে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। পাশাপাশি রাজস্ব আয় কমার বিপরীতে সরকারি ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। এগুলোর চাপ পড়েছে আর্থিক খাতে।

এমন প্রেক্ষাপটে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার আভাস দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

ঢাকায় আসা ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও চতুর্থ কিস্তি ছাড় প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তৃতীয় কিস্তির মূল্যায়ন শেষে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নীতিমালা বাস্তবায়নে একমত হয়েছি। আইএমএফ পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, চতুর্থ কিস্তিতে ৬৫ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের পূর্বে সবশেষ তৃতীয় কিস্তির অর্থের ব্যবহার ও শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি দেখতে আইএমএফ মিশন ঢাকা সফর করে গত ৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর।

আইএমএফ বলেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্ষদ সভায় বসবে সংস্থাটি যাতে বাংলাদেশের বিষয়টি উঠবে।

চতুর্থ কিস্তিতে অর্থ পেতে চারটি বিষয়ে শর্ত দিয়েছে সংস্থাটি। এরমধ্যে রয়েছে অর্থনীতির বহির্চাপ সামাল দিতে রাজস্ব আদায় জোরদার করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি আরও সংকুচিত ভঙ্গিতে করা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে নীতিমালার বাস্তবায়ন।

‘বাদ গেল’ ৩ বিলিয়ন ডলারের আলোচনা

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তবর্র্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামাল দিতে আইএমএফ এর কাছে আরও তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ চাইবে বাংলাদেশ।

এরপর সংস্থাটির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও শুরু করেছিল সরকার। আর্থিক খাতের সংস্কারের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং নতুন শর্ত যোগ করে বাংলাদেশকে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব আইএমএফ।

সেই শর্ত ও আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন অনেকটাই অসম্ভব মনে করে পরে আর প্রস্তাব দেয়নি সরকার। তৃতীয় কিস্তির মূল্যায়ন করতে আসার সময়েও তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে।

সফরের শুরুতে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠক শেষে আরও তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার তো প্রথম প্যাকেজের। কিন্তু সংস্কার করতে হলে তো আমাদের ফান্ড লাগবে। আমাদের অনেক কিছু সংস্কার করতে হচ্ছে যেমন ব্যাংকিং খাত, রাজস্ব খাত। এগুলো করতে আমাদের ফান্ড লাগবে।’’

তবে বিস্তারিত আলোচনা শেষে দুই পক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘‘নতুন করে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণের আলোচনা সফলতা পায়নি।’’

এর বিকল্প হিসেবে ৭৫ কোটি ডলার দেওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা সফরে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকস বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ‘‘বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সমাধানে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ৭৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৭৫ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে।‘’

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ অর্থ দিতে কর্মকর্তা পর্যায়ে সম্মত হয়েছে আইএমএফ। নতুন করে ঋণ অনুমোদনের পাশাপাশি বিদ্যমান ঋণ কিস্তির ব্যবহারের মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছে দুই পক্ষ।

বাংলাদেশের বহি:খাতে চাপে রয়েছে অর্থনীতি এমনটি জানিয়ে আইএমএফ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, গণঅভ্যুত্থান, বন্যা ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণের কারণে বছর শেষে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

ছবি

গুমের ঘটনায় সাবেক–বর্তমান ২০ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রসিকিউটোরিয়াল উপদেষ্টা হলেন এহসানুল হক সমাজী

ছবি

টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠের পাশে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ভুয়া: রিউমর স্ক্যানার

ছবি

খাদ্যের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

ছবি

বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে মালয়েশিয়া: মন্ত্রী

ছবি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটা অংশ গ্রহনমুলক নির্বাচন হবে : রংপুরে বদিউল আলম মজুমদার

ম্যান্ডেট আছে সংস্কার শেষে নির্বাচনের : সিলেটে উপদেষ্টা সাখাওয়াত

ছবি

সংঘর্ষের দায় একে অপরের ওপর চাপাচ্ছেন সাদ ও জুবায়েরপন্থিরা

ছবি

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠনের উদ্যোগ সরকারের

ছবি

মিসরে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

ইজতেমা ময়দানের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে এক জনের বেশি চলাচল নিষেধ

ছবি

ইজতেমা: এটা শহীদ হয়ে জান্নাতে যাওয়ার জায়গা হতে পারে না- বললেন সারজিস

ছবি

দুই পক্ষের সংঘর্ষ: টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ খালি করার সিদ্ধান্ত

ছবি

বিশ্ব ইজতেমা: সাদপন্থিদের নিয়ে বৈঠকে ৫ উপদেষ্টা

ছবি

লেবানন থে‌কে ৯৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছে

ছবি

মিশরের পথে প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত: সিইসি

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার বাতিলের সুপারিশ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্তের সময় বাড়ালো ট্রাইব্যুনাল

২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে : প্রেস উইং

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘সাংঘর্ষিক’ নয়: অ্যাটর্নি জেনারেল

ছবি

পঞ্চদশ সংশোধনীর ৫টি অনুচ্ছেদ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়

আতসবাজি বন্ধ,ফানুস উড়ানো যাবে না : নিরাপত্তায় থাকবে বোম ডিসপোজাল ইউনিট

ছবি

২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলে আস্থা নষ্ট, তিন নির্বাচন নিয়ে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ

ছবি

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ জারির আগে পর্যালোচনার সময় বাড়ানোর আহ্বান টিআইবির

ছবি

ওবায়দুল কাদেরকে গ্রেপ্তারের তথ্য ছিল না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার আলাদা করার সুপারিশ

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ঐতিহাসিক রায়: পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু ধারা বাতিল

ছবি

নাম পরিবর্তন করে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ হবে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’: অ্যাটর্নি জেনারেল

ছবি

হাসিনা পরিবারের সদস্যদের ‘দুর্নীতি’ অনুসন্ধান করবে দুদক

ছবি

জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসি সম্পূর্ণ প্রস্তুত : নাসির উদ্দীন

ছবি

ইভিএমে নয়, ব্যালটে হবে জাতীয় নির্বাচন : সিইসি

ছবি

জনপ্রশাসনে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল ২ মাস

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ : হাইকোর্ট

tab

জাতীয়

চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড়ে আইএমএফের সম্মতি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চতুর্থ কিস্তিতে বাংলাদেশকে ৬৫ কোটি ডলার দিতে সম্মতির কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল।

একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো, আর্থিক খাতের সংস্কার ও অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে আগের ঋণের বাইরে নতুন করে ৭৫ কোটি ডলার দিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে সংস্থাটি।

এ ঋণ আইএমএফের পর্ষদে অনুমোদন পেলে আগের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।

আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৬ সালে চার দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সমান কিস্তিতে পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।

ঢাকা সফরে থাকা আইএমএফের প্রতিনিধি দল বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় দিতে সম্মতির পাশাপাশি নতুন ঋণ নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা বলেছে।

’স্টাফ’ পর্যায়ের এ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা এবং তাদের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফের আগামী নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে অনুমোদন সাপেক্ষে চতুর্থ কিস্তি ছাড় হবে। একইভাবে নতুন ঋণের বিষয়টিও পর্ষদ সভায় অনুমোদন নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মকর্তা পর্যায়ে সম্মতির বিষয়টি জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে রাজনৈতিক পালাবদলের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করা হয়। তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ধীর গতির হয়ে পড়েছে এবং মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই। অর্থপাচার বিশেষ করে ব্যাংক খাত থেকে অর্থ বের হওয়া চাপে পড়েছে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ। পাশাপাশি রাজস্ব আয় কমার বিপরীতে সরকারি ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। এগুলোর চাপ পড়েছে আর্থিক খাতে।

এমন প্রেক্ষাপটে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার আভাস দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

ঢাকায় আসা ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও চতুর্থ কিস্তি ছাড় প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তৃতীয় কিস্তির মূল্যায়ন শেষে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নীতিমালা বাস্তবায়নে একমত হয়েছি। আইএমএফ পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, চতুর্থ কিস্তিতে ৬৫ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের পূর্বে সবশেষ তৃতীয় কিস্তির অর্থের ব্যবহার ও শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি দেখতে আইএমএফ মিশন ঢাকা সফর করে গত ৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর।

আইএমএফ বলেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্ষদ সভায় বসবে সংস্থাটি যাতে বাংলাদেশের বিষয়টি উঠবে।

চতুর্থ কিস্তিতে অর্থ পেতে চারটি বিষয়ে শর্ত দিয়েছে সংস্থাটি। এরমধ্যে রয়েছে অর্থনীতির বহির্চাপ সামাল দিতে রাজস্ব আদায় জোরদার করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি আরও সংকুচিত ভঙ্গিতে করা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে নীতিমালার বাস্তবায়ন।

‘বাদ গেল’ ৩ বিলিয়ন ডলারের আলোচনা

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তবর্র্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিলে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান আহসান এইচ মনসুর। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ সামাল দিতে আইএমএফ এর কাছে আরও তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ চাইবে বাংলাদেশ।

এরপর সংস্থাটির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও শুরু করেছিল সরকার। আর্থিক খাতের সংস্কারের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং নতুন শর্ত যোগ করে বাংলাদেশকে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব আইএমএফ।

সেই শর্ত ও আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন অনেকটাই অসম্ভব মনে করে পরে আর প্রস্তাব দেয়নি সরকার। তৃতীয় কিস্তির মূল্যায়ন করতে আসার সময়েও তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে।

সফরের শুরুতে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠক শেষে আরও তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার তো প্রথম প্যাকেজের। কিন্তু সংস্কার করতে হলে তো আমাদের ফান্ড লাগবে। আমাদের অনেক কিছু সংস্কার করতে হচ্ছে যেমন ব্যাংকিং খাত, রাজস্ব খাত। এগুলো করতে আমাদের ফান্ড লাগবে।’’

তবে বিস্তারিত আলোচনা শেষে দুই পক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘‘নতুন করে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণের আলোচনা সফলতা পায়নি।’’

এর বিকল্প হিসেবে ৭৫ কোটি ডলার দেওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা সফরে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকস বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ‘‘বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সমাধানে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ৭৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৭৫ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে।‘’

সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় এ অর্থ দিতে কর্মকর্তা পর্যায়ে সম্মত হয়েছে আইএমএফ। নতুন করে ঋণ অনুমোদনের পাশাপাশি বিদ্যমান ঋণ কিস্তির ব্যবহারের মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছে দুই পক্ষ।

বাংলাদেশের বহি:খাতে চাপে রয়েছে অর্থনীতি এমনটি জানিয়ে আইএমএফ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, গণঅভ্যুত্থান, বন্যা ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণের কারণে বছর শেষে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

back to top