দেড় দশক আগে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিজিবি দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) পিলখানায় অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ২২ ডিসেম্বর রোববার রাতে কমিশন গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন।’
৭ সদস্যের এ কমিশনে বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর দুইজন, সিভিল সার্ভিসের একজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক এবং পুলিশের শীর্ষ এক শীর্ষ কর্মকর্তা কমিশনে থাকছেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।
বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকা-ের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছেন ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদ- বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে কেবল হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।
ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি জোরাল হয়। ওই ঘটনার তদন্তে জাতীয় স্বাধীন কমিশন/কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গত মাসে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৫ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। কিন্তু ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান গত ১৫ ডিসেম্বর আদালতকে বলেন, পিলখানা হত্যা মামলার শুনানি চলছে আপিল বিভাগে। বিস্ফোরক মামলার শুনানি জজ আদালতে চলমান। তাই রিট আবেদনকারীর চাহিদা অনুসারে প্রস্তাবিত কমিটি গঠন আদালতের আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে আপাতত কমিটি গঠন সম্ভব হচ্ছে না। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারের সিদ্ধান্তে ‘বদল নেই’
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন নেই। রোহিঙ্গাদের কোনো অবস্থায় প্রবেশ করতে দিব না। যারা অসুস্থ, শুধু তারাই মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় পাচ্ছেন।’
রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা একজনকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন। আশা করি শিগগিরই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’ গত দেড় থেকে দুই বছরে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মায়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মায়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।
আগের সরকারের আমলে কয়েক দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নথিপত্র চালাচালি হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। উপরন্তু মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ সব ভেস্তে দিয়েছে। রাখাইনে তীব্র যুদ্ধের তীব্রতায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ চলার মধ্যে আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা দেয়, আর কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এলাকা এখন পুরোটাই ‘আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে’। তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় এজন্য বিজিবি যে তাদের সঙ্গে কথা বলবে, এর কোনো জায়গা নেই। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শিপে গিয়ে কথা বলতে হয় সেটাও আনঅফিসিয়াল।’
তবে সার্বিক সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে মায়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে দেশটিতে। প্রায় আট মাসেরও বেশ সময় ধরে দেশটির জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ-মায়ানমারের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার সীমানার পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির দখলে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
দেড় দশক আগে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিজিবি দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) পিলখানায় অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ২২ ডিসেম্বর রোববার রাতে কমিশন গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন।’
৭ সদস্যের এ কমিশনে বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর দুইজন, সিভিল সার্ভিসের একজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক এবং পুলিশের শীর্ষ এক শীর্ষ কর্মকর্তা কমিশনে থাকছেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।
বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকা-ের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছেন ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদ- বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে কেবল হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।
ক্ষমতার পালাবদলে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা পুনঃতদন্তের দাবি জোরাল হয়। ওই ঘটনার তদন্তে জাতীয় স্বাধীন কমিশন/কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গত মাসে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৫ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। কিন্তু ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান গত ১৫ ডিসেম্বর আদালতকে বলেন, পিলখানা হত্যা মামলার শুনানি চলছে আপিল বিভাগে। বিস্ফোরক মামলার শুনানি জজ আদালতে চলমান। তাই রিট আবেদনকারীর চাহিদা অনুসারে প্রস্তাবিত কমিটি গঠন আদালতের আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে আপাতত কমিটি গঠন সম্ভব হচ্ছে না। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারের সিদ্ধান্তে ‘বদল নেই’
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন নেই। রোহিঙ্গাদের কোনো অবস্থায় প্রবেশ করতে দিব না। যারা অসুস্থ, শুধু তারাই মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় পাচ্ছেন।’
রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা একজনকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন। আশা করি শিগগিরই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’ গত দেড় থেকে দুই বছরে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মায়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়ার পর থেকে কক্সবাজার ও উখিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাঁশ আর প্লাস্টিকের খুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করে রোহিঙ্গারা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মায়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতেও সই করে।
আগের সরকারের আমলে কয়েক দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নথিপত্র চালাচালি হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। উপরন্তু মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ সব ভেস্তে দিয়েছে। রাখাইনে তীব্র যুদ্ধের তীব্রতায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ চলার মধ্যে আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা দেয়, আর কোনো রোহিঙ্গাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এলাকা এখন পুরোটাই ‘আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে’। তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় এজন্য বিজিবি যে তাদের সঙ্গে কথা বলবে, এর কোনো জায়গা নেই। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শিপে গিয়ে কথা বলতে হয় সেটাও আনঅফিসিয়াল।’
তবে সার্বিক সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে মায়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে দেশটিতে। প্রায় আট মাসেরও বেশ সময় ধরে দেশটির জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ-মায়ানমারের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার সীমানার পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির দখলে বলে জানিয়েছে বিবিসি।