alt

জাতীয়

সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন। এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি ভার্চ্যুয়াল বক্তব্য দেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে থাকবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। নাগরিকদের নির্বাচনের তারিখ না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়ায় সময় দিতে হয় না। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। যাঁরা ভোটার, তাঁরা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যাঁরা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন, তাঁরাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করুন।’

আগামী জানুয়ারি মাসে সংস্কারের জন্য গঠিত ১৫টি কমিশনের প্রতিবেদন জমা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কীভাবে রচিত হবে, তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে দেওয়া, নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা সহজ করে দেওয়া।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। এ জন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত। নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী সুপারিশ করবেন, তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে, ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।’

সব কমিশন বহু সুপারিশ তুলে ধরবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেই ব্যবস্থা করতে চাই।’

ন‍্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। ফ‍্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সব ধরনের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে নিয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম‍্য, মানবিক মর্যাদা ও ন‍্যায়বিচারের পথে ফেরাবার লক্ষ‍্যে কাজ করছি।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্র–জনতা অটুট সাহসে শিশু হত্যাকারী ও পৈশাচিক ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন নিষ্ঠুরতাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নকে সাহসী করে তুলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ আবার ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে।

ঐক্যই মূল শক্তি মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের ঐতিহাসিক মাত্রায় বলীয়ান করেছে। গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যেটা সব নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়—আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সব অধিকার প্রদান করতে বাধ্য। রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার অন্য কোনো পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত‍্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না।’

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সুযোগ যদি আমরা গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক হই, কিংবা অপারগ হই; তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের কোনো প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। আজকের ‘সংলাপের’ মূল লক্ষ্য হলো সবার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা দেওয়া যে আমরা এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া হতে দেব না। আমরা একতাবদ্ধভাবে এই সুযোগের প্রতিটি মুহূর্ত সর্বোত্তম কাজে লাগাব।’

ছবি

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: সাংবাদিকেরা আপাতত ঢুকতে পারবেন না, অস্থায়ী পাসও বাতিল

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনার তদন্ত শুরু

ছবি

‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ: ‘সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে’

ছবি

‘সংস্কারবিহীন নির্বাচন’ দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না : ইউনূস

আমান আযমীকে বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন বাতিল

ছবি

‘থার্টিফার্স্ট নাইটে ঢাকায় শব্দদূষণ শিল্প এলাকাকেও ছাড়িয়ে যায়’

ছবি

নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান

ছবি

সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

সঠিক তথ্য উপস্থাপন গুজব ছড়ানো প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে: পররাষ্ট্র সচিব

ছবি

‘উত্তম কৃষি চর্চা’র মাধ্যমে দেশের বাজারে এলো প্রথম কৃষিপণ্য

ছবি

আন্দোলনে আহতদের জীবনের পথ পালটে যাচ্ছে

ছবি

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি

ছবি

আগুনের সূত্রপাত তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক শিক্ষার্থীদের হাতে

ছবি

সচিবালয়ে আগুন: ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্য নিহত

ছবি

সচিবালয়ের আগুন ছড়িয়েছে ৪টি তলায়, নিয়ন্ত্রণে এসেছে ৫ ঘণ্টা পর

ছবি

সচিবালয়ের আগুন ৭ নম্বর ভবনে আগুন

উপসচিব পদোন্নতিতে আগের কোটা বহাল রাখার অনুরোধ

ছবি

রোহিঙ্গাদের সমাবেশ : শরণার্থী জীবন আর নয়, মায়ানমারে ফিরে যেতে চাই

দ্রুত নির্বাচনের জন্য এত মানুষ শহীদ হয়নি: আসিফ মাহমুদ

ছবি

জাহাজে খুন: লস্কর ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে ‘মাস্টারের অত্যাচারে’ এই হত্যাকাণ্ড

ছবি

সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

কমিশনের সুপারিশে প্রশাসনে অসন্তোষ, আন্দোলনে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা

ছবি

কয়েদি হত্যা মামলাতেও আসামি শেখ হাসিনা

ছবি

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং বিয়াম ফাউন্ডেশন চুক্তি স্বাক্ষর: পুনর্বাসন এলাকায় নতুন স্কুল চালু

ছবি

বিশ্বশান্তি কামনা বড়দিনের প্রার্থনায়

ছবি

চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুন : একজন বাগেরহাটে গ্রেপ্তার

ছবি

নিউজিল্যান্ডে হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস

ছবি

মানবতার বন্ধনে আবদ্ধের আমন্ত্রণে শুভ বড়দিন

ছবি

প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি

ছবি

শেখ হাসিনাকে ফেরানো: চিঠির পর কী

ছবি

জাহাজে খুন: লাশ হস্তান্তর, স্বজনদের আহাজারি

ছবি

ডিএফপির নতুন মহাপরিচালক খালেদা বেগম

ছবি

সাবেক ১১৯ বঞ্চিত কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে সচিব হচ্ছেন

ছবি

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লির জবাবের জন্য অপেক্ষা করছে ঢাকা

ছবি

দুদকের মানিলন্ডারিং মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক খাদ্য সচিব ইসমাইলকে

tab

জাতীয়

সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন। এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি ভার্চ্যুয়াল বক্তব্য দেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে থাকবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। নাগরিকদের নির্বাচনের তারিখ না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়ায় সময় দিতে হয় না। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। যাঁরা ভোটার, তাঁরা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যাঁরা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন, তাঁরাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করুন।’

আগামী জানুয়ারি মাসে সংস্কারের জন্য গঠিত ১৫টি কমিশনের প্রতিবেদন জমা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কীভাবে রচিত হবে, তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে দেওয়া, নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা সহজ করে দেওয়া।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। এ জন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত। নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী সুপারিশ করবেন, তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে, ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।’

সব কমিশন বহু সুপারিশ তুলে ধরবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেই ব্যবস্থা করতে চাই।’

ন‍্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। ফ‍্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সব ধরনের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে নিয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম‍্য, মানবিক মর্যাদা ও ন‍্যায়বিচারের পথে ফেরাবার লক্ষ‍্যে কাজ করছি।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্র–জনতা অটুট সাহসে শিশু হত্যাকারী ও পৈশাচিক ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন নিষ্ঠুরতাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নকে সাহসী করে তুলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ আবার ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে।

ঐক্যই মূল শক্তি মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের ঐতিহাসিক মাত্রায় বলীয়ান করেছে। গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যেটা সব নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়—আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সব অধিকার প্রদান করতে বাধ্য। রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার অন্য কোনো পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত‍্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না।’

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সুযোগ যদি আমরা গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক হই, কিংবা অপারগ হই; তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের কোনো প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। আজকের ‘সংলাপের’ মূল লক্ষ্য হলো সবার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা দেওয়া যে আমরা এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া হতে দেব না। আমরা একতাবদ্ধভাবে এই সুযোগের প্রতিটি মুহূর্ত সর্বোত্তম কাজে লাগাব।’

back to top